শ্রীমহাদেব
মাকে
মেরুদেশে ঝড় উঠছে
নেমে আসছে আকাশ হাতের মুঠোয়
গাভী চরছে মাঠে ময়দানে
দানা পানি সহ পরিযায়ী মন
ভেসে বেড়ায় হিল্লি দিল্লী আগ্রা হতে নায়াগ্রা
কত বদল ঘটছে রোজ
মা কেই শুধু বদলাতে দেখলাম না,
বাড়ি ফিরলে আশি পেরোনো মা
এখনও কড়াই চাপিয়ে আলু কাল্লা ভাজে
কিছুই হয়তো ফেরে না
যে মানুষদের দেখলাম তারা আর কখনও ফিরবে না জানি
স্থাণু হয়ে মুখ বুজে সময়
তাকে লাগাম পরাও
বেহায়া আদরে বাঁদর সেজে কি লাভ বলো,
সমস্ত কান্না আগামীকাল চাপা পড়ে যাবে মহাকালের দুরন্ত গ্রাসে।
মাটি
কেউ কি মাটি হতে চায়,
একমাত্র মাটি ছাড়া
বিজ্ঞাপনে সুন্দর হয়ে উঠছে দেহ
শুধু বিষিয়ে যাচ্ছে মন
শ্রাবণকে এখন বিশ্বাস হয়না আর
জল ঝরায় কিন্তু জল খসায় না
মিথ্যে মিথ মেঘ ভেসে বেড়ায় সর্বত্র
মন ভাঙে না,
সারাটা শহর জানে ক্যানাস্তারা পেটালে গেলে কী কী লাগে।
নৌকো
ভাসছি আর ডুব দিচ্ছি
অতল গহ্বরে
নৌকো হয়ে ভাসতে গিয়ে
একনদী জল পেরিয়ে এলাম ,কষ্ট নেই।
ঝলসে যাওয়া পাখি দেখছি রোজ
কেউ রৌদ্দুরে আবার কেউ আলোয় পুড়ছে
বালির পরে নাম ধুয়ে যাওয়া শব্দের দল
হুমড়ি খেয়ে বর্ষা পোষে
আমার নামহীন পোশাক কি রঙে তোমায় চুবিয়েছি জানে কি কেউ
অতল জলের বিক্ষিপ্ত জলরাশি
মেঘ ভাঙতে ভাঙতে এগিয়ে চলেছে নিষাদের দিকে।
খাদ পেরোলেই একটি একটি করে ঝরে পড়বে বিষণ্ণ রক্তকরবী।
মাছ
মাছ আমার খুবই প্রিয়
তবে তার চেয়েও প্রিয়
মাছেদের নোলক,
আঁশটে ঘ্রাণ আর মূর্খদের বক্তৃতা মালা।
শক্ত শালুকের শরীর বেয়ে এগিয়ে আসছে সাপ,অহংকার আর ঘৃণার মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে একা এক কৃষ্ণবর্ণ মেঘ,
একপা দুইপা হলুদ রঙা নেশা থেকে চুন খসিয়েছে
নির্মেদ উলঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে একা তবুও
মেঘমুক্ত আকাশের দিকে চেয়ে রয়েছে নিথর প্রদীপ ,অব্যক্ত দুধভর্তি কচি ধান
শরীরের আনাচে কানাচে গর্ত খোঁড়ে,
আমার একান্ত শৈশব
শরীর সেঁকে নেয় আগুনের আঁচে।
ত্রিবেনি
ঘাটের কাছে জল, ছল ছল
কিছু অস্থি হলুদে মেশানো
ছাই পাস উচ্চারণে কোচড়ে টান মারে,
পিছন ফিরে কারও অস্তিত্ব টের পাই না
কতশত গল্প বলেছে জল এভাবে
কোল খালি করা মা অথবা বাবা
ক্লান্ত অবসন্ন দেহে বাড়ি ফিরেছে
পায়ে পায়ে,
মুক্তি তখন আলোয় আলোয়
হলুদ ডানায় ভর করে বেসামাল পৃথিবী
প্রত্যয়ী ভাবনাতে ভাগ বসাচ্ছে আমার সকাল
ক্রমশ ভেঙে পড়তে গিয়েও ঠিকাদারি মন ভাবে বিভোর,
গৌর নিতাই মন সকাল সাঁঝে তামাক সাজে
পোড়া মাটির কলকেয়।
ঘুম পায় কিন্তু কান্না আসে না।
আনন্দের এসরাজ
এসরাজ থেকে একেকটি তার খুলে নিলে
কংকাল বেরিয়ে পড়ে
কংকাল থেকে গয়না খুলে নিলে
এক একটি শ্বাস দীর্ঘশ্বাস ,
ময়না উড়ে যায়
গাছ বেসামাল হলেও
কুড়ি থেকে ফুল ফোটে বিবর্ণ বেলায়।
নামহীন বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বন্দী রাজার অন্তর্বাস
বিষাক্ত হুল ফুটিয়ে বিচ্ছিন্ন বালিয়াড়ি
আজ সূর্য সেপাই
অরণ্যদিনে সারা পৃথিবীর মানুষ ভুলে যাচ্ছে
ব্যাথা কাকে বলে,
আমরা তো দুঃখবিলাসি
মশানের ধোঁয়াময় জীবন কত দামি বলে যায় মৃতদেহ ছুঁয়ে বসে থাকাও যত শান্তি,
যত আনন্দের,
সুখটুকু বিসর্জন দিলে শ্যাওলা ভাসে।

No comments:
Post a Comment