Showing posts with label ষাটের যুবক. Show all posts
Showing posts with label ষাটের যুবক. Show all posts

Tuesday, June 17, 2025

ষাটের যুবক | অনুরূপা পালচৌধুরী

|| ব্ল্যাকহোল পত্রিকা || ষাটের যুবক || পর্ব: ৪ ||



ষাটের যুবককে ৩য় চিঠিবাষ্পের সিন্দুক___

কল্যাণী থেকে 

         ৩য় চিঠির আস্তানায় আপাদমস্তক দুপুরটার রিংটোনে এখন আপনি অবসাদের কালবৈশাখী। অপেক্ষার ইমারতে এক একটা নূপুরের ফণায় গুনে ফেলছি নীলকণ্ঠ প্রজাপতির লোপাট বুকের শীতঝালর। 
ষাটের যুবক___ আপনাআপনি চোখ কেনো ভিজে ওঠে? জানি সে সুরম্য নদীতে আপনার দায়ভার নেই। দায় নেই মধ্যবিত্ত আমিটার অদ্ভুত আবদারচিহ্ন বাঁচাবার। না হয় একটু অন্ধকারের আরো ঘনিষ্ঠ জন্ম হোক। এ অন্ধকার আমার চিরকালীন অভ্যাসের দ্বার। দ্যাখো আঠাশের শিমূলতরবারি প্রসবহীনতায় সাতমহলা জিভের শিলমোহরে ডুবছে। প্রতিদিন নিজেকে ১বার করে পুড়িয়ে নেই আপনার রোমশ বুকের কাঁচাপাকা নিঃশ্বাসের প্রহরে। 

কথা ছিলো আসাযাওয়ার অমীমাংসিত রোদ্দুরের ছায়ায় আমার ঘরের অসুখে লেগে থাকা মাটির শীততাপে তোমার নিয়ন্ত্রিত সুখের পারদ। জানেনতো, এ শহরের অচেনা ডানায় প্রজাপতিসন্ধ্যা একান্তে জ্বলছে মৃতদেহের আড়ালে। মোচড়ানো আকাশের লালচে চোখে আমার স্বেচ্ছাচারী জীবাশ্ম শুধু তোমারই প্রশ্রয়। কতবার ভেবেছি মুখোমুখি টেবিলের ইতিহাসে পালটে দেবে তুমি এই শহরের গল্প। আজকাল চোখের ভারের চেয়ে বুকের ভার বেশী। সে ব্যাথারা কাঁদায় না। শুধু জল হয়ে গলে পড়ে দুরূহ সাদা অরণ্যের ভাঁজে। তবু আগামী দুপুরগুলো জন্ম দিই একান্ত আমার রক্তমাখা আঁতুঘুমের শরীরে। তবু কি আসবেন না আমার ভূপৃষ্ঠস্থ সূর্যসারির সমান্তরাল কবিতার তীব্র দেশান্তরে?
 
বি.দ্র. কাল দুপুরের আপেক্ষিক দক্ষিণা বাতাসের গভীরে আজকের সকাল পেড়িয়ে দুপুর। দুপুর প্রসূত সন্ধ্যা এখন রাতের অনুচর আর কাতারে কাতারে আমিটা সত্যি ভীষণরকম ভালো আছি। 
 

                      ইতি
       জন্মান্ধ কুয়াশার পুনর্জন্ম

Tuesday, June 10, 2025

ষাটের যুবক | অনুরূপা পালচৌধুরী

|| ব্ল্যাকহোল পত্রিকা ||  ষাটের যুবক || পর্ব: ৩ ||



রাণাঘাট থেকে 

গভীর দুপুরে আমার ষাটের যুবককে লেখা ২য় চিঠিবাসর।

ষাটের যুবক___

                     ১ম বাসর খামবন্দী রেখেই ২য় বাসরের অপেক্ষা না করে যুবকজ্বরের অন্তিমশয্যায় ১খানা খানাখন্দের ঘর জমা রাখলাম। অজুহাতের শরীর ছিন্ন করে হাজার ভীরে আমার চোখের দালান অস্পষ্ট হয় নীলকণ্ঠ প্রজাপতির হাড়গোড়ের  উপত্যকায়। তুমি কি বুঝেছিলে অবসাদহীন মেঝের ফাপা শূন্যতাবোধে নিষিদ্ধ মোমজামার বরাদ্দ আগুনের সলতেটাকে? এ যাবৎকাল দেখা হবে কিনা জানি না। যদি দেখা হয় শুধু হাতের কেলভিনে জমানো কিছু উষ্ণ পালকের গঙ্গা বইয়ে দিতে চাই।

আমার ষাটের যুবক! আপনাকে লুকিয়ে লুকিয়ে বহু দেখেছি আর ভেবেছি এ আমার সর্ব কালের যুবাপুরুষ।আমার ঘরভরা বসন্তের সংসার। হাতাখুন্তির টুংটাঙে আমার ছন্দহীন অক্ষরের অন্তর্বাসে আপনিটা বড্ড তুমি পাগল হয়ে ওঠে যখনতখন। আপনার ১টা পোস্টে দোকানঘরের শেয়ার মার্কেট,দালাল,ধোঁয়া ওঠা ভাঁড়ের স্টেশন চত্বর, গুঁড়ো বিস্কুটের সোদা প্রসূতি হাসপাতাল থেকে শুরু করে কুমারী মায়ের নষ্ট ভ্রূণ,বেশ্যার রোমাঞ্চিত প্রিপেইড ঘন লাশ আর অন্ধকার গলির আমিতে বড্ড লড়াই চলে।হাজার লাইক, শেয়ারের স্রোতে ভাসতে ভাসতে শীতবস্ত্রের সশস্ত্র পাহাড়ায় আপনার সাদা পাজামার সখে ঘুরপাক খায় আমার আঠাশ বসন্তের মাছভাত।

ষাটের যুবক....দুর্ভাগ্য আর কি হতে পারে? সৌভাগ্যের দরজায় এখন আর লেবুলঙ্কার আচার শুকাই না। আগামীর দুপুরঘন ছাদটা বন্দক দিলাম। বিনিময়ে সাথে থাকার লোভে হাইতোলা আঁচলের প্রতিশ্রুত উদ্বেগের মজ্জাঘড়ির দূরস্থ সময়। ষাট বাষ্পের বাষ্পীয়রথের শুকনো গোলাপ এখনো জমা পড়ে আছে কোন ১ অংক খাতার শেষ পাতায়। আগামী ৩০ বসন্তের গচ্ছিত গোলাপি শহরে আমাদের বেপরোয়া পতাকাপথ হেঁটে যাবে বিজয় উল্লাসে।মনে পড়ে, বাবা কেজিদরে পুরনো খাতা বিক্রি করলে আমার ভীষণ কষ্ট হতো। কিন্তু নতুন কাগজের গন্ধ অভিলাষী অভুক্ত সুখে সে দুঃখ ভুলে যেতাম। সে গন্ধধ্বনি বরাবরই আমার বড় প্রিয়। সে প্রিয়তার প্রথম কবিতা মানসী হোচট খেতে খেতে এখন ঘন ভাতের দাবী অবশ্য করে না।তবে আপনার আসার অপেক্ষায় প্রতিদিন একটু একটু করে রোদআলতায় পা বুলায়।

অবশেষে বলি, অগোছালো আয়নার আয়ুঘরে ধারাবাহিক চুমু খেলেও এ শহরের নির্ঘুম বেহালা শিহরিত হয় না।    

                               ইতি

                 জন্মান্ধ কুয়াশার পুনর্জন্ম।


Thursday, May 1, 2025

ষাটের যুবক | অনুরূপা পালচৌধুরী

|| ব্ল্যাকহোল পত্রিকা ||অনুরূপা পালচৌধুরী || ২য় পর্ব



ষাটের যুবক,

আমার শব্দ বরাদ্দ উপবাস আপনার প্রিয় শহরের দেয়াল লিখন। নেশাহীন লাল পতাকার গভীরে ভারী হয়ে আসা কথারা থতমত বাড়ীর খড়কুটো আঙুলে হেঁটে বেড়ায় ১ নাগরিকঘন বিষন্নতা।   মনে পড়ে যায় আপনার এলোমেলো আঙুল বিক্রির ফতোয়া। উচ্চারিত চেতনার ফোঁটা ফোঁটা জলে আমি পাঠাচ্ছি আপনাকে হাঁসের পালকে প্রশস্ত নিউরোণ রঙের ধবধবে দাঁতের হাঁসফাঁস। আমায় স্বেচ্ছামৃত্যুর পরোয়ানা জারি করলেন অথচ আজীবন ভালোবাসার ক্ষতবিক্ষত কলমে আত্মহত্যার বিপ্লব নিভে যাচ্ছে পায়ের পাতার ফলকে। পরিযায়ী ঠিকানা সরিয়ে বুনিয়াদি বিকেল লিখে দিলেন আর মানসী তখন মুন্সি অথবা মুনস্ কিংবা দুহাতে সরব হত্যার গোলামে হৃৎপিণ্ড পুড়িয়ে দিলো সস্তার ভাত-বালিশে।

আমি তো কবি হতে চাইনি যুবক! যুবকত্বের চৌকাঠ পেড়িয়ে শুধু হাতা-খুন্তির টুং-টাঙে না হয় শয়ে শয়ে কবিতার ফসিল হয়েই আপনার অভ্যেসের জল,মাটির বারুদমাখা এঁটো প্রলাপের চড়াই বোনা সকাল সাজতাম। অথচ আপনি তীব্র ভর্ৎসণায় ছুঁড়ে ফেললেন আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ। তীব্র নোনা ঢেউয়ে ভিজে যাওয়া আমাকেই আবার বুকে রাখলেন আর আমি খুলে ফেললাম অজস্র শব্দের জমে যাওয়া নীলনদ। আমার ষাটের যুবক! নিদারুণ চোখের সুতোয় অবসরমাখা দুপুরগুলিতে পায়ে পায়ে পালটে যায় তর্জনী থেকে মধ্যমা। তখন উৎসবের আলোতে গলে যায় উল্লাসের মেঘসম্ভাব্য ক্ষয়মুখ। কথার পাশে শুয়ে থাকা ডানার স্তাবক প্রজাপতি কিংবা ব্রহ্মা কোনোটাই নয়।

শুধু যাকিছু ব্যক্তিগত উপান্ত যুবক
নির্বাসিত কোনো ১নদী ভাবো 
ছায়া হয়ে ছিঁড়েছো আলোর নুপুর 
এসো হে গভীর কলমের ক্রীতদাস
তবু আমি ১ সহজ কোলাজ______


                                    ইতি
                     জন্মান্ধ কুয়াশার পুনর্জন্ম



রাণাঘাট
১৮/৪/২০২৫


Wednesday, April 23, 2025

II ষাটের যুবক II অনুরূপা পালচৌধুরী

|| ব্ল্যাকহোল পত্রিকা || অনুরূপা পালচৌধুরী: প্রথম পর্ব



ষাটের যুবক,

ভেবেছিলাম আর কোনো চিঠিবৃত্তই আপনার পাঠক্রম ঘেমে মায়াবী হাত হবে না। যারা বলেছিলো, আজীবন ভালোবাসার অর্থনৈতিক মন্দার কথা সেখানে যুবকত্বের অমরত্ব প্রতিষ্ঠায় জোনাকি রঙের নির্জন ক্ষেত্রফল উঠছে আকাশ জুড়ে। ভুলে যাওয়া ১ উপবাসী অপরাধ যে অপরাধে ভালো আছির ঠিকানায় যানজট লেগে যায় ক্রমাগত। অবসাদের ঘড়ি বেয়ে দু-একটা চোখের দাগ আপনার প্রিয় দিন। বিজয়গড়ের উল্লাসিত পতাকার পদার্পন ঘেটে আজো উড়ে যাচ্ছে কোনো ১দেহাতি সন্ধ্যা জমানো জীবনদানি থেকে উঠে আসা না বলা যাবতীয় উপকূলের বকেয়া ডালপালা। আমি তো জানি কেমন থাকার প্রশ্নউত্তর! একাকীত্বের আল্পনায় আস্ত বৃক্ষস্রোত, যার জানলায় নৌকা চিহ্নের যুবকবন্যা বাঁধা থাকে।

আমার ষাটের যুবক, আজকাল অনেকটা সূর্য ভেজা পিরামিড মনে হয় আপনাকে। আজো নীল ছবির জিহবা কুড়িয়ে নিচ্ছেন ঝিনুকের আঁচর অথচ আঙুলে ১খন্ড কুয়াশার ক্ষয়। জানি, চিঠি ভেবে ভুল করবেন না তবু বলি, বেশ আলো অন্ত অগছালো মানসী বিভাগের বীজমন্ত্রে আগুনশোক দাহো হলো। ঘরভর্তি বয়সের চিলেকোঠায় চড়াই পোষা কাব্যজল।  আপনি সমারোহে ঘর ঘর গন্ধটা তীব্র হচ্ছে। ইঁট বালির ফাঁক ফোঁকরে লেগে যাচ্ছে মায়াহীন এক জ্বর। অবিকল আয়নার বিপরীতে ঠোঁট, চোখ, মুখ, জিভের গন্ধগুলো আর আলাদা করা যাচ্ছে না। বহুদিনপর দেখলাম আমার সেই ব্যাথার গন্ধরা আজো স্বচ্ছ কীটের মতোই উদ্যোগী। জানেন তো, অসমাপ্ত দেওয়ালের ওপারে যে দেওয়াল বোনা হয় তাতে বসন্তের ছায়া লুকিয়ে যায়। 

পুনশ্চঃ কোনো বেহালাদীপ্ত আগুনের অন্ধকারে সহস্র সংখ্যার এপাড় থেকে কোনো উত্তম পুরুষ কখনো শতাব্দীর সিংহাসনের দাবীদার হতে পারেনি।
 
                               ইতি 

              জন্মান্ধ কুয়াশার পুনর্জন্ম


রাণাঘাট
২১/০৩/২০২৫