Wednesday, October 14, 2020
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ সুব্রত পণ্ডিত ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ সুশীল হাটুই ≈
অ্যাড্রিনালিন গ্রন্থি থেকে কেন
রসক্ষরণ হয়, প্রোটনকণারা সে-বিষয়ে
নীরব।
তবে ইলেকট্রনের অ্যালবাম খুললেই স্পষ্ট
হয়ে ওঠে, সাইটোপ্লাজমের ৫১ টা দরজায়
৫২ টা ফেভিকলনামা।
প্লাজামার বাৎসল্য বুবিট্রাপের পিনকোড
দিয়ে রেটিনার মাৎসর্য অনুবাদ করে।
আর ইচ্ছামৃত্যুর ইয়েলো জার্নি ফুলস্টপের
হলদে কোরাসে যোগ দিয়ে একেশ্বরবাদে
বিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
ফায়ারপ্লেসের শীৎকার নিম্বাস মেঘের
অ্যাকওর্ডিয়ান বাদনের ওপর নির্ভর করে না।
এই ভার্জিন দুপুরে ব্ল্যাকহোলের
হোলস্কোয়ারের অনার্য সম্পাদ্যগুলি এপিটাফ
মেখে ঘুমোচ্ছে।
ফিউজ বাল্বগুলি অন্ধকার অনুবাদের
আঁতরপ্রিনর না-পেয়ে মিশে যাচ্ছে জবাফুলের
সন্ন্যাসযোগে।
তারই সাইডএফেক্টে নিউরনের ক্লাসরুমে
ব্যান হয়ে যাচ্ছে বরফের রূপকথা।
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ অলোক বিশ্বাস ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ স্বপন রায় ≈
উদাসীন মল্ট
৮.
আমাদের গ্যাং, আমাদের উদাসীন মল্ট
আমি অবাকবিদ্ধ
জেনে তুমি অপাপ
তুমি ঠিক না আমি,
আমাদের গ্যাং
শোনো বাওয়াল
খয়েরি হচ্ছে, শোনোনা
আমরা কোয়েলে পা
রাখি, সঙ্গমটা দূরে হোক
যাদের পেট আছে
তাদেরও ঠাসা আছে ইলেকট্রন
নাভির কথা থাক,
উদাসীন মল্ট তাই শুয়ে আছে
খেত ছেড়ে উঠছে না
আমি বিদ্যুৎ,
তুমিও। চমকাই। মেশিনগুলো গরম না হলে
দাঙ্গা হতে
কতক্ষণ
আমাদের গ্যাং এই
সবকিছুর মানে বলে দিল, রুটি
গোল গরম, বলে দিল
খাও। বেঁচে থাকার মানে, খাও।
উদাসীন আমরা
সেইথেকে..
৯.
প্রস্তাব নেই,
কুহক আছে
পাঠ করার
আগে মনে হল
দরজাটা বন্ধ,
খোলেনি
প্রস্তাব আর
কুহকের ভেতরে খয়েরি রঙের দরজাটা
এমন নয় যে আপেলের
রঙ সেপ্টেম্বর
দরজার রঙ
মনপাওয়াসী
কুহক পেরিয়ে
যাওয়াই যখন দরজা খুলে দাঁড়াবে
আপেল প্রস্তাব
পড়বে
কুয়াশাকুহকান্ত
সে এক দুরন্ত
আপেল, সে এক আর্দ্র উদাসী, কানের পাতা দুটো রেখে যে চলে গিয়েছিল এটা সেটায়..
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ রঞ্জন মৈত্র ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ প্রদীপ চক্রবর্তী ≈
ঝরাপাতার হাওয়ায় নিরাবয়বের আকাশ
দেখছে তোমার সাড়াশব্দ
অলীক সোহাগী যাযাবর বুকের টানে
দু একটুকরো গান
বিষাদিত ছাদের আলসেতে
ঈষৎ ধোঁয়াশামাখা তবুও সহজাত গান
এক ফোঁটা দু ফোঁটা মুহূর্তের ছা - পোষা মানুষ
একটা অপেক্ষার কাছাকাছি
এসে থমকে দাঁড়িয়ে আছে পথ আগলে
ঝরাপাতার হাওয়ায় অনুচ্চারিত খনন নির্মীয়মাণ ত্রাণ শিবিরের মুখ
অস্ফুট , দিকচক্রহীন সংঘারামের গান
এই অশেষ বনের মধ্যবর্তী
এই শেষবার পাতার ঝরোকা ঠেলে
অমীমাংসিত মায়ের বুকের গন্ধ
ছড়িয়ে গেলো ...
স্থির বিজুরি যাযাবর মনে হয় ...
পিতৃপক্ষ
জল থমথমে বীজ লুকিয়ে থাকে ...
মাটির গভীর থেকে ওঠে ব্রীড়াবনত
সুহৃদ সঙ্গত আদি স্ফোট ওম
বীজের প্রাণ আজ মেখে নিই
খাদ্য - পানীয় নিঃশেষিত রসে
জল থমথমে ভাপ
মাতালের নিজস্ব পরিখা নিরাময়
কোথায় তবে উর্দ্ধ বা অধ:
বাঁকানো ঘোরানো দাগ
নিরক্ষরেখা যখন শূন্য ডিগ্রি ...
জল পড়ছে শুধু জল
কেবল জল পড়ছে জীবনের স্বাদে গন্ধে
বীজের মরিয়া বাসনা সকল
বস্তুদল প্রমাণিত
ললিত ভস্ম উপকার
প্রতি টোকায় দূর থেকে তাকে নতুন মনে হবে
আমাদের বসুধামুখী মফস্বল যেন
রামগিরি ,
ঠিক বুদ্বুদের মতো দেহকান্ডহীন ,
মূর্ধাহীন কয়েকটা বনবিভাগের মানুষ
শুধু তোমার জন্য
তোমারই নবীন অজাত ভ্রুণটাকে বলি ,
আগে ভাগে ভাবো , ভেবে দেখো
সত্যি জন্ম নেবে কি না ?
যারা একদা তোমার ছিলো ,
এখন আমারই ...
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ অনিন্দ্য রায় ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ বাপন চক্রবর্তী ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ কুশল ভৌমিক ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা≈ চিরঞ্জীব হালদার ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ সৌমিত্র রায় ≈
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ রফিকুল কাদির ≈
নৈমিত্তিক বিচ্ছিন্নতা আমাদের নেই
সাথে থাকি অহর্নিশ
যাদুমন্ত্রের মতো এক হয়ে যাদুকরের ভেতর
জীবনের প্রলুব্ধ ব্যকরণ পাঠ করে বুঝেছি-
ভালোবাসা কোন বিচ্ছিন্নতার সমীকরণ নয়
হতে পারে বিরহের অনুসিদ্ধান্ত!
তাই তাকে পাওয়ার চেয়ে ভয়ঙ্কর প্রলয়
কে জাগাতে পারে জগতে
এক যুগেরও বেশি সময়!
অদ্যাবধি আমাদের কামনা ও সংগ্রামের সুরে
একটি কথাই বাজে-
'পাশে থেকো! থেকো কাছে!
বুকের পাঁজর হয়ে-ই নয় থাকলে!
যদিও জানি, সে হাড় নয়, পাঁজর নয়
হৃদপিণ্ড বা করোটিও।
সে আমার সত্ত্বা।
অতি ক্ষুদ্র!
আমার আকাশ-
যার ভেতরে থাকে জীবন, কতশত পৃথিবী
চৌহদ্দির দখল নিয়েই থাকে সে
আহ্লাদে আটখান হয়ে
ভাসতে ভাসতে ঢুকে পরে
আমার ভেতরে
চেতনা লুপ্ত হয়
সাধারন নারীর অবজ্ঞায় দেখি-
হাতে মাধবীলতা, আটপৌরে শাড়ি, বাঙালি বাঁধন
ঘুরে বেড়ায় হৃদয়ের অলিন্দ-নিলয়ে
সমুদ্র, অনন্ত জলরাশি, ঢেউ
তার মুখের মতো- সফেদ! স্বচ্ছ!
আনত হই।
অবিশ্বাস্য আক্রোশে জাপটে ধরি
শব্দঘর ঢিপঢিপ করে বাজে
তন্ত্রীগুলো শান্ত হয়
কোন এক অপার আহ্বানের মতো
কৃষ্ণের বাঁশির মতো
মুহাম্মাদের আরাধনার মতো
যিশুর হাতের মতো
অবিনাশি শ্লোক শোনা যায়
তুমি যত দূরেই থাকো
যত দূরেই রাখি
প্রকৃতি যতই খেলুক বিচ্ছিন্নতার সাপলুডু
তবু তুমিই আমার পাঁজরে বাজো।
অন্তরে রোদ্দুর ছড়াও।
এই বিচ্ছিন্নতাকাল!
এই লকডাউন!
এই আণুবীক্ষণিক অমাবস্যা...
সেই কবে সূর্য উঠেছিল, জানিনা;
রাত্রির এ উৎযাপন, নিশীথ-সূর্যকেও হার মানিয়েছে
সূর্য ওঠে!
বাইরে আলোর মশাল- দেখে জানালা
দিনেরই ভিন্ন ভিন্ন ভাগে
সূর্য কোথায়?
সে তো কবেই ডুবেছে!
প্রকৃতি দেখি-
কখনো অন্ধকার; কখনো আকাশ
বইপত্র, মনিটর
আরও কি সব হাবিজাবি
একটা দিনেই আটকে আছি
একটা দিনেই আটকে গেছি
প্রিয়তমা! বন্ধু! মাতা বসুন্ধরা!
তোমার ভালোবাসার স্নিগ্ধতা
দূরের সমূল উৎপাটন
দূরকে আরও দূরে নিয়ে গেছে
আামাদের মতান্তরিত শ্লোক বিজারণ, বিশ্লেষণে
নতুন নতুন ক্ষার, অম্লে
ভাসিয়েছে ঘর
সংসারে আরোগ্য নেই!
অহংকার নেই!
কেবল আকুতি শুনি
অন্ধকার দেখি
দেখি ছড়িয়ে যাওয়া আতঙ্ক
এ কী মানুষের ঘর!
এ কী মানুষেরই বাঁচা!
সেই কবে কোন বৈশাখে
রোদে-জলে নেয়ে
সূর্যকে বলেছিলাম- আজ তবে যাই গুরুদেব!
এবার ঘরে ঢুকবো!
আজ মুখ ফিরিয়েছে ঘর
বসন্ত ফিরে গেছে কবে
কোন চৈত্র সংক্রান্তি নেই
বৈশাখের গান নেই
কেবল অভ্যেস মতো গুনগুন করছে কবি
শিল্পীরা গলায় তুলেছে মাদুলি
ভয়, আড়ষ্টতা বুকে পাঁজরে
- কাল যদি মরে যাই!
- যদি মেরে ফেলি ভাই, বন্ধু;
মুছে দিই পিতামাতার হাসি
তারপরও এ ক্রান্তিকালে বলি-
ভালোবাসি! ভালোবাসি!
স্বপ্নভুক দুঃস্বপ্নের মতো ছিনতাইয়ের স্বপ্ন দেখি
শান্ত পৃথিবীর স্বপ্ন
সবার সুখের দিন
ইরেজার ঘষে তুলে ফেলি- কলঙ্কের ছাই
সবই তোমার জন্য প্রিয়তমা
অন্তরে তোমাকে পাবার বাসনা
মানুষ থাকতে পারে না একা
হতে পারে না পর
সাতশো কটি ঘর তো আমারই ঘর
সাতশো কোটি হাসিই আমার উৎসমূল
ভালোবাসার জন্মান্ধ মাতা
তোমাকে ভালোবাসি।
এ বিচ্ছিন্নতা তোমাকে পাবার অবিরত বাসনা
তোমার চোখ দু'টি আবারও কাছ থেকে দেখতে চাই
খুব কাছ থেকে নিতে চাই শ্বাস
শরীরী ঘ্রাণ
যদিও মাঝখানে দূরত্বের নদী
নৈঋত যন্ত্রণা
তবু হাঁটতে থাকে- অনন্ত যাত্রার হারকিউলিস
পোড়া মাঠ, জঞ্জাল সময়, গ্রহণের সূর্য
পেছনে ফেলে, চলে যাও দূরে;
দিগন্তের ওপারে
এই তোমার নিয়তি
তোমার প্রেম
প্রণতি...
≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ দেবযানী বসু≈
বিশাল রতন ও মেঘনাদ তিন জন প্রবীণ বন্ধু একই অফিসে কাজ করে। বিশাল ও রতনের সম্প্রতি স্ত্রীবিয়োগ ঘটেছে। দুজনের স্ত্রীই সরকারি চাকরি কর্মরত অবস্থায় চলে যায় প্রচুর টাকা ফি এফ হিসেবে স্বামীদের হাতে দিয়ে। দুজনেরি ক্যান্সার ছিল। এদের মধ্যে মেঘনাদের অবস্থা তেমন ভালো নয়। ওর স্ত্রী বিভা গরীব ঘরের মেয়ে। মনপসন্দ যৌতুক দিতে পারে নি। এ নিয়ে মেঘনাদ চিরকাল একটু মনোকষ্টে ভোগে। মেঘনাদের স্ত্রী মতোই গৃহকর্মণিপুণা হোক কথায় কথায় এইসব সৌভাগ্যবান বন্ধুদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে মেঘনাদ যা শোনায় তাতে করে তার স্ত্রীর গ্লানি ও হীনমন্যতায় ভোগা এমন কিছু ব্যাপার না।
কুর্চি গাছের ফুলে উপচানো গেট। সামনে কালো বাইক কালো দুধেল গাইয়ের মতো দাঁড়িয়ে। সেইদিকে তাকিয়ে বিভা অন্যমনস্ক হয়ে যায়। প্রথম বিয়ে লোকে ভুল করে করে ফেলে অনেক সময়। বাবলি মরলে কি মেঘনাদের ভাগ্য খুলবে? নিজের বিবাহিতা মেয়েই উদ্যোগ নিয়ে বিয়ে দেবে হয়তো। ভাগ্যবানের বৌ মরে অভাগার গরু মরে এ তো সবাই জানে। মেঘনাদ কর্মসূত্রে বিশালদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েছে। টাকা পয়সা ততটা হলে বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ত সেরকম তো মেঘনাদের হয় নি। তাই আফশোস থেকে যায়।
এদিন বিকেলে মেঘনাদ হঠাৎ ফোন করে জানাল বাড়িতে ফিরতে দেরি হবে। আসলে মেঘনাদ দৌড়ল বিশালের বাড়িতে। সেখানে তখন বন্ধু বান্ধব পাড়া প্রতিবেশী জড় হয়েছে। রতনের চোখ মেঘনাদের দিকে পড়তে বললো- 'এই তো এসে গেছিস। কিন্তু এইমাত্র দলবল নিয়ে সব বেরিয়ে গেল। ঐ যে লোকাল উর্বশী সমিতি! দশটি হাজার টাকা খসিয়ে নিয়ে গেছে। বিশাল শালা বাড়িতে ক্যাশ রাখে না? তিন তিনবারের টাকা দেয় নি বোঝ! তিনবারের জন্য দশহাজার টাকা কমই তো বল। যাক গে আমরা সবাই মিলে মিটিয়ে দিলুম।' বলেই মেঘনাদের কাঁধ চাপড়ে দিল। মেঘনাদ লাজুক হেসে বলল ' চল রাস্তায় চা খাই গিয়ে।' সেই মুহূর্তে ভাবল বিভাকে এ খবরটা শোনানো যাবে কি? শোনালে কি যে হবে!















