Showing posts with label শারদীয় ২০ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত. Show all posts
Showing posts with label শারদীয় ২০ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত. Show all posts

Friday, October 2, 2020

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||

চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা


আজকের সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন শারদীয় সংখ্যা প্রত্নতাত্ত্বিক চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে। বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি মানুষ আপনাকে শ্রদ্ধা জানালো। প্রণাম


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ সুব্রত পণ্ডিত ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
সুব্রত পণ্ডিতের কলমে পুরাতাত্ত্বিকবিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত :


প্রত্নতত্ত্ববিদ ও পুরাতত্ত্ববিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত একজন ইতিহাস সচেতন মানুষ। মানিকলাল সিংহের সঙ্গে তিনি আচার্য যোগেশচন্দ্র পুরাকৃতি ভবন - নামে সংগ্রহশালা তৈরি এবং আমৃত্যু সচিব ছিলেন। ক্ষেত্র সমীক্ষাই ছিল তাঁর সাধনা। রাঢ় সংস্কৃতি ও স্থানীয় ইতিহাস চর্চায় মগ্ন এই সারস্বত মানুষটি রেখে গেছেন ভারতের শিল্প -সংস্কৃতির পটভূমিকায় বিষ্ণুপুরের মন্দির টেরাকোটা, বিষ্ণুপুরের মন্দির টেরাকোটা, দক্ষিণ -পশ্চিমবঙ্গের মুর্তিশিল্প ও সংস্কৃতি প্রভৃতি গ্রন্থ।কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন মোহনলাল গোয়েঙ্কা সেবা পুরস্কার (১৯৯৭), খেয়ালী পুরস্কার (১৯৯৯),সোপান পুরস্কার ( ১৯৯৯), গাইডেন্স ফাউন্ডেশন সম্মান ( ২০০৮), বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ প্রদত্ত রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় পুরস্কার  (২০১০), চারনকবি বৈদ্যনাথ পুরস্কার (২০১০) এলাহাবাদ প্রদত্ত গীতাঞ্জলি শতবর্ষ স্মারক সম্মান (২০১৩), জি-বাংলা ২৪ ঘণ্টা প্রদত্ত সম্মান (২০১৪) প্রভৃতি। সদ্য প্রয়াত এই ইতিহাসবিদের জন্য আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ গৌরাঙ্গ মিত্র ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
গৌরাঙ্গ মিত্র


বিষ্ণুপুরি ঘরানার তিন কবি 

1) সুশিল হাঁটুই : সেবার বিষ্ণুপুরে গিয়ে, বিষ্ণুপুরি ঘরানার এক কবির সঙ্গে প্রেম হয়েছিল। সুশিল হাঁটুই, আমার প্রিয় সুশিলদা। ভালোবাসার মানুষ। তিনি মাথার উপরে টাঙিয়ে রেখেছেন নক্ষত্র খচিত একটি আকাশ। প্রতি রাতে আকাশ থেকে এক একটি নক্ষত্র পেড়ে আনেন, নক্ষত্রের আলো দিয়ে লিখে ফেলেন অবিশ্বাস্য  সুন্দর কিছু কবিতা। 
চেলপার্ক কালি বা মঁব্লাঁ কালি সে সব কবিতা লেখার কথা ভাবতেই পারে না। 

2) অভিজিৎ দাস কর্মকার: কবিতার বাংলা বাজারে আর একদিন দেখা হল বিষ্ণুপুরি ঘরানার আরেক কবির সঙ্গে। তার কবিতায় ভাব ও ভাবনার অবিশ্বাস্য সমাবেশ। তার কাছে একটি কোরা শব্দের অভিধান আছে। অভিধানটি সে মস্তিষ্কের কোষে কোষে স্থাপন করেনিয়েছে। অতএব, কোনো পুস্তক বিক্রেতার দোকানে, খুঁজতে যাবেন না। তার সবচেয়ে বড় পুঁজি, সে প্রবল আত্ম বিশ্বাস। সে ভাঙে, সে গড়ে সে বাঁকুড়ার ঘোড়ার গলা আরো একটু লম্বা করে দিতে পারে। 

3) কার্তিক ঢক: বিষ্ণুপুরের আরেক মণিমাণিক্য - কার্তিক ঢক।
কার্তিক ঠিক কার্তিকের মতো কবিতা লেখে। মাটির কণায় কণায় খুঁজে পায় কবিতা লেখার উপাদান। কার্তিক কোনো অসুর বধ করে না। আমরাই সবটুকু ভালোবাসা রুমালে বেঁধে তার কাছে নিবেদন করছি। 
 
কে যে কাকে আবিস্কার করেছে তা বিষ্ণুপুরি ঘরানার তিন কবি জানেন। মানুষের হৃদয় স্নিগ্ধ হতে হতে এক সময় জোৎস্না হয়ে যায়।

মরীচিকা

এই ক-দিন ধরে কেবল দূস্বপ্ন আর তুমুল বৃষ্টি। 
সব কিছু ছাপিয়ে আমি বাঁচতেই চেয়েছি। 
বাঁচার প্রয়োজন সে ভাবে নেই
তবু অভ্যাস আর আশা তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। 
মনে হয় আর দুদিন---
হয়তো কিছু একটা হবে। 
বাঁচা মানে মৃত্যুহীন মরুভূমিতে এক স্নিগ্ধ মরীচিকা
আমার সঙ্গে পায়ে পা মেলাও, চলো মরীচিকাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরি।



≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ উদিতশর্মা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
উদিতশর্মা


মৃত্যু এলে
 
মানুষের মৃত্যু হলে
বিধাতা নতুন করে এঁকে দেন মুখাবয়ব। 
বেশ তো ছিলো লোকটা 
দিব্য অনিমিখ থোবড়ায়
পায়চারি করতো ফেসবুকের ওয়ালে
চেটে নিতো ইউটিউবের দেওয়াল
ইনস্টাগ্রামের অ্যাংরি ইমেজ
কত করে বলেছি
স্মাইল প্লিজ 
কিন্তু কে শোনে কার কথা
গরম ইমোজিতে ভরিয়ে তুলতো
দৈনিক কথামালা 

এখন দেখ কেমন আলোক দীপ্ত হয়ে আছে
প্রোফাইল পিকচার জুড়ে 


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ চন্দ্রদীপা সেনশর্মা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
চন্দ্রদীপা সেনশর্মা


মুক্ত গদ্য~টবের তুলসী

প্রকৃতির প্রতিটি ফুটে ওঠাই পুষ্পসম।

নাগরিক জীবনের একচিলতে বারান্দায় প্রথম
শীতের রোদ পোহাতে চোদ্দবছর বাদে কলকাতায়।
রোদটুকু গায়ে নিতে নিতেই উল্টোদিকের বারান্দা
থেকে আধোবুলির ধ্বনি চোখ টেনে নেয়। ছোট্ট
শিশুটিকে খাওয়াতে ব্যস্ত মা। তার পরিশ্রম মুখের
হাসি মাতৃত্বের গর্ব সেও ফুটে ওঠা। বাচ্চাটি
বোধকরি আমার তাকানোর অপেক্ষায় ছিল। ছোট
হাত নেড়ে হেসে ওঠে। ঠোঁটে লেগে থাকা খাবার
তার মুখটিতে জীবনের যে প্রত্যয় আঁকে, তার মধ্যে
অদ্ভুত এক সততা আছে। আমিও হাত নাড়ি এবং
ভঙ্গিতে গুছিয়ে তুলি ভিন্ন ভিন্ন মুদ্রা, তার আকর্ষণ
হেতু। আমাদের ত্রিশ ফুট দূরত্বের এই মুখোমুখি
ভাব বিনিময় বাচ্চাটির মায়ের পরিশ্রম সামান্য
হলেও সহজ করে তোলে।
খাওয়ানো শেষ হলে মা-মেয়ে ঘরে চলে যায়।
জানলার কার্নিশে অপেক্ষারত কয়েকটি কাক
নেমে আসে। খুঁটে খায় খাবারের কীর্ণ দানাগুলি।
আমি ঘরে ফিরতে উদ্যত হই, হঠাৎ চোখ পড়ে যায়
তুলসীর টবে। এত রোদ একটু বেশিই তার জন্য,
সরিয়ে নিয়ে আসি ছায়ার কাছাকাছি। ক্ষতিগ্রস্ত
পাতাগুলো আলগা করেনি। টবের মাটিতে মিশিয়ে
দিই সার মনে করে। খুব সুন্দর জীবন গাছেদের,
আমাদের বাঁচিয়ে রাখে, হয়ে ওঠে নিজেদের বেঁচে
থাকার রসদ। একজন মহাপুরুষের কথা ভাবি।
একবেলা সামান্য আহার বাকিসময় তুলসী এবং
মধু গ্রহণ করেও দীর্ঘায়ু পেয়েছিলেন তিনি। গাছে
মানুষেও একরকম ভালোবাসা হয়। কলকাতার
বান্ধবীকে দেখি, নিজের থেকে গাছের পরিচর্যায়
বেশি ব্যস্ত। তার কথায় বারান্দা থেকে বাড়ির নীচে
মালির কাছে টবসমেত তুলসী আছে বছর দুয়েক।
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রোদ ছায়ায়।
আমার সঙ্গে তুলসীর সখ্য বহুদিনের। পাটনা
লখনৌ দিল্লি পাটনা। শেষবার পাটনা বসবাসের
সময়ে খ্রিস্টান সেই বউটির কথা মনে পড়ে।
এয়ার হোস্টেসের চাকরি ছেড়ে সংসার বাচ্চা
সামলে চলেছে। কত যত্নে আমার তুলসীর ছবি
তুলেছিল ও। বলেছিল, আপনি খুব স্পিরিচ্যুয়াল।
টবে ওরকম মোটা কাণ্ডের তুলসী কমই হয়। সে
তুলসীকে পরের শীতে আর বাঁচানো গেল না।
আমিও পড়লাম দীর্ঘ এক অসুখে। দেড়বছর। সুস্থ
হয়েও কিছু না কিছু চলছে, কলকাতায় ফিরেও।
তিনবছরে প্রতিবেশী বাচ্চাটি একটু বড়ো, বহু
পাখি বারান্দায় তার বন্ধু। টবে নতুন তুলসী আর
পুরোনো গাছটির মতো সমৃদ্ধ হয়ে উঠল না।
আমিও অতএব।

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ অভিজিৎ পালচৌধুরী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
অভিজিৎ পালচৌধুরী



জোনাকি আলো

সেই ধূসর-সবুজ অভিমান, 
জোনাকি আলো 
অন্ধকার যখন গাঢ়তর 
নিঝুম চারদিক, অন্তরীণ সময় 
বিস্মরণ ভাঙে বিমূর্ত ধূসর 

যে প্রবাহ নামে অতর্কিতে 
ভাসায় দু-কূল সবুজ ধূসরতায়
খড় কুটোর হদিশ আনে
নিরুদ্দেশের নৌকো 
নিমজ্জনের ছবি এঁকে  

সে প্রবাহে নিরন্তর উচ্ছেদের নোটিশ তর্জন-গর্জন মুখরিত কীট সভ্যতা 
কোথাও থিতু হওয়ার নেই 
নেই কি ভালবাসার সঞ্চয় 
বাধ্যতার বাতাসে গান বেজে উঠলে 
বিরুদ্ধতার আকাশ মেঘ জড়ো করে 

বিপরীত স্রোত 
দুলে ওঠে নৌকো, 
অবগাহন বিস্মৃত হয়, প্রবাহ কীট 
জোনাকি আলো হয়ে জ্বলে ।।

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ মন্দিরা ঘোষ ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
মন্দিরা ঘোষ


মুক্ত গদ্য~তুমিকথার বিকেল

আবার তুমিকথার মেঘ ফেরত এনেছে সবুজ পাখনার মফস্বল। 
ঘুমপাখিরা মহাকালের পোশাক ছেড়ে উঠে এসেছে রংচটা জমির আসরে।
আশ্বিনের আকাশ রোদ কুড়িয়ে আবার স্বাবলম্বী। 
বোধনের রং চুরি করে লুকিয়ে রাখছে শিউলি কাশ আর আলতাপাখির  ডানা।
নিষ্ঠার গায়ে বিষাদলিপিরা ফুটিয়ে তুলছে সমারোহ।
প্রদীপের আড়ালে  আজও দায়বদ্ধ প্রথার বানান।ভাঙা দেওয়ালের অন্ধকারে বাতিল গল্পের খাতা ভরিয়ে ফেলছে প্রাচীন বাদুড়ের দল। স্বীকারোক্তির ভোর  হিসেব চুকিয়ে সকাল মেলছে শিশিরমন্ত্রে।

শরত তবু আলোর গল্প বয়ে আনে। ঠোঁটে ঠোঁটে মিশুক আদর নিয়ে উড়ে যায় কাশফুলবিকেল।মেঠোঘামের নদীতে শালুকের আশনাই।
ঝিনুকবিলাসী চোখে এখনো  মোহরের ঘুম।ঠোঁটে  চোখে  মুদ্রার কাচ। 
মোমের শিখাজ্বরে রাতের রংমশাল। 

এখনো আগমনীরোদে লাজুক  বুকের ঢাল। তিল তিল বৃষ্টিফুলে ভরে ওঠে  নদীর পাড়।সন্ধের পয়ারে উসখুস কিশোরীফুল।
কেন যে আবার সকাল! 
কেন যে মগ্ন দুপুর গড়িয়ে গেলে একইভাবে বিকেল ফুরোয়!
সন্ধের আলোছায়ায়  সদ্য নাবালক রাত  যুবক হয়ে উঠলে আনচান হয় ভোরের পদ্মকুসুমে! 

একইভাবে  ফিরে ফিরে আসে বর্ষা শরত হেমন্ত এই অবেলার ঘামে!কেন যে আবার রাঙা ঠোঁটে  ডেকে ওঠে  কার্ণিশের পড়ন্ত রোদ! কেন যে আবার!

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ অরণ্যা সরকার ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
অরণ্যা সরকার


গল্প~মাংস
পাগুলো এখনও টলমল করে। গাঢ় বাদামী রঙ। মায়াদৃষ্টিতে বিস্ময়। চারপাশে খোপের মধ্যে ওর মত আরওঅনেকে। চোখ, কানের কিছু অংশ, গায়ের রঙের খানিক ঝলক ছাড়া কেউ কাউকে সম্পূর্ণ দেখতে পায় না। সামনে এগোতে গেলেই পা আটকে যায়। ইদানীং ওর পায়ের মধ্যে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয়। আসলে গতি তাড়া করে ওর পেশীকে। একটা দৌড়, যা বয়সের খুব স্বাভাবিক ক্রিয়া, একটা স্পর্শ, যা সে চেনে না, অথচ চায় সেই অচেনা ক্রিয়া ও প্রবণতা তো শরীরে নিয়েই সে জন্মেছে। শরীর ওকে ধাক্কা দিচ্ছে। উল্টো ধাক্কা দিচ্ছে ওর আকারের চেয়ে সামান্য বড় বাক্সটা। পেটভর্তি খাবার খেয়ে, শুয়ে আর দাঁড়িয়ে সে খানিকটা বড় হয়েছে। বাক্সটা তাই ওকে প্রায় জাপটে ধরে থাকে। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক স্কিম চলে, তার ব্যাবহারিক প্রয়োগ চলে। তাই লাবণ্য ছলকায় ওর শরীর থেকে। এই চার মাস বয়সেই বেশ ভরন্ত শরীর। নরম, পেশীবিহীন। দ্রুত বৃদ্ধির এই প্রকৌশলকে কেন ফেরাবে সভ্যতা ? ‘সময় কোথা সময় নষ্ট করবার ?’
এই প্রথম সে তার খোপ থেকে বের হল। বাইরের আলো প্রথমেই তার চোখ ঝলসে দিল। তারপর বিস্ময় বইতে বইতে সে চললো ট্রাকে চড়ে। মাংস কারখানা থেকে পথ ঢুকে গেল কসাইখানায়। তুলতুলে, দামী মাংস হয়ে সে শেষ করলো তার প্রথম ও শেষ পর্যটন। লোহার বড় গেট দিয়ে ঢোকার আগে তার গলা থেকে আচমকা বেড়িয়ে এসেছিল মত ধপধপে শাদা এক শব্দ, ‘হাম্বা’। একেই কি মুক্তকণ্ঠ বলে ?



 

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়


আঙুল

আমার ঘুম আসে না

যখন সারারাত জেগে জেগে

নিজেই দেখি নিজের পারলৌকিক ক্রিয়া


দেখি পৃথিবী ঘনীভূত হতে হতে

একসময় চোখের সামনে ধোঁয়া জমাট হয়ে ওঠে

অথচ কথা ছিল বদবায়ুস্তর

হেমন্তের অরণ্য ছেড়ে নতুন কোনো ঋতুতে চলে যাবে


মন্ত্রের ভেতর কারা কাঁসর ও ঘণ্টা বাজায়

আমার হাসি পায়, রাগ ধরে, শরীর টানটান হয়ে যায়


শুদ্ধ মন্ত্র কোনো জাতির একার সম্পত্তি নয়


তাল ও বাদ্য দিয়ে আমরা কেবলই

মানুষের দিকে আঙুল তুলেছি


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ রিতা মিত্র ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
রিতা মিত্র



ধূসর রঙের প্রজাতির

ধূসর রঙের প্রজাতির ডানায় লেগে আছে মেঘেদের যন্ত্রনা, টুপটাপ বৃষ্টির কান্না, আর কিছু এলোমেলো বাতাস। 
এযাবৎ যত জল গড়িয়ে গেছে সাগরের দিকে, সবই হিসেব বহির্ভূত
মেঘেরা কানাকানি কথা বলতে পারে না , তাদের কোনো সাঁকো নেই। 
তারা বিচলিত হলে বিদ্যুৎ ঝলসে ওঠে। 
মুহুর্তে আলোকিত হয় চরাচর। এই আলো অদ্ভুত এক ভীতি সঞ্চার করে সকলের হৃদয়ে। 
একটা সাদা পায়রার সন্ধান পাওয়া গেলে শান্তি বার্তা পাঠিয়ে দিতাম মেঘের দেশে, 
আর টুপটাপ বৃষ্টির জলে কাগজের নাও  ভাসিয়ে মাঝি সাজতাম।


আত্মবিশ্বাস

 ভিজে উঠছে আত্মবিশ্বাস,
টলমল পায়ে পথে নামি
এই মুহূর্তে একটা ডাঙার খোঁজ করছি
যা অবস্থান করবে ধরাছোঁয়ার বাইরে
হরবোলা পাখিকে আমার ঠিকানা বলে যাব না। 
দু:খের  লম্বা  লেজ তিমিরে বাসা বাঁধছে আনন্দে
দংশনের বিষ জমিয়ে রেখেছে অন্তরে। 
মোক্ষম সময়ের অপেক্ষা মাত্র


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


হাতে হাত

গাছ নিয়ে যারা ভেবেছিল তাদের অনেকেরই 
পায়ের নিচে থেকে সরে গিয়েছিল মাটি 
জানলায় হাত রেখে তারা সোজা দাঁড়িয়েছিল
আকাশ ছুঁতে যাওয়া তাদের মাথা 
শুধু গাছ দেখেছিল সারা দিনরাত

দিগন্তে নজর ছিল বলেই 
পায়ের দৃষ্টি হারিয়েছিল পথ 
পাখিদের সঙ্গে কোনো এক ভোরে ঘুম ভেঙেছিল
সবুজ জমি থেকে উঠে এসেছিল যে কন্ঠস্বর
সকালের বন্ধু বলে কাছে গিয়েছিল তারা
বুঝেছিল হাতে হাতে লেগে গেলে জোড়া
ফিরে পাবে সব্বাই মাটি। 



≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ গোবিন্দ ব্যানার্জী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা 
গোবিন্দ ব্যানার্জী 
 

রূপকথার কথক

সে সব অনেক পূর্বকালের কথা, 
এবং সবই নিশ্চিতভাবে সত্য ছিল। 
আমরাও বিশ্বাস করি কথামালার সব ঘটনা
মায় চরিত্রগুলো পর্যন্ত স ব সত্যি।
এ সব বলার সময় আমাদের দাদু-দিদিমারাও
তাইই বলতেন, তারা বলতেন -
"খুব আদিম সময় থেকেই সে সব বয়ে বয়ে এসেছে
আর তোমরাও ধারাটিকে বয়ে নিয়ে যাবে" -

এমনিই রোজ শুরু হ'ত সান্ধ্য কথকের রূপকথা,
তারপর রাতে স্বপ্নের ভিতরে এসে বসত
অদ্ভুত সব প্রাণী। 
বুড়ো কথক বলে যেত -
'কটিদেশ পর্যন্ত সে ছিল মানুষের মত
আর নিম্নদেশ ছিল ঘোড়াসদৃশ।'
তারপর আকাশ থেকে রং পেড়ে এনে 
তিনি সেই 'ঘোড়মানুষ'এর নিতম্বে বুলোতেন,
আর ঘোর লাগা চোখে সূর্মা টেনে বলতেন -
'এর সন্তান খুব চড়া দামে বিকোবে।'
তালপাতার ইয়া বড় পাখা বানিয়ে
ইচ্ছে মত ডানা জুড়ে দিয়ে বলতেন - 
'তারা ছিল শঙ্কর প্রজাতির,
ঠিক মানুষ নয়, আবার --
সেই পূর্ব যুগে পালিত প্রাণীদের সাথে যুবতী মেয়েরা-
এমন কি এ সব সত্যিই মানা হ'ত,
আমাদের অতীতেরা তাইই বলতেন। '

এখন আর খুঁজে পাইনা তাদের
সেই ছোটোবালাটা হাঁতড়ে বেড়াই রোজ -
তালপাতার পাখনা লাগানো
একটা পক্ষীরাজ ঘোড়া পেলে বেশ হ'ত -


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়


আদরশারদীয়া 

চঞ্চল হাওয়ায় ভেসে এসেছে তোমার ঘরে ফেরার খবর৷
সীমান্তে তোমার রাইফেল গর্জে ওঠে বারবার,
তবু আমিতো জানি তুমি কতটা শিউলির মত বিনয়ী! 
শাল্মলির মত নরম!

বনভাসি জোৎস্নায় অধরা চাঁদ আমাকে ঠাট্টা করে বিরহী রাধা বলে৷
 রাগ করি না, চাঁদকে বলি তোমার চন্দ্রকলা ধার দেবে? যাতে সে আমায় দেখে আর ফিরে যেতে না পারে৷

 টুকরো টুকরো  মেঘেরা যেন আকাশের গায়ে বেলোয়ারি ঝাড়৷
পৃথিবী   সোনার ঝাঁপি উপুড় করে দেয় আশ্বিনের আকাশে৷
সোনাগলা রোদে মাখামাখি হাসনুহানা, নদী তীরে কাশফুল৷
বকের পায়ের ছাপে, পানকৌড়ির ঠোঁটে, মুখে মুখে, রটে যায় বছর পরে দুগ্গা আসছে বাপের ঘরে৷

আমনের ক্ষেতে, পূজার ঢাকে, ছুটি ডাকে;
শত্রুর ঘেরাটোপ, বোবা টানেল, রেজিমেন্ট অতিক্রম করে তুমিও আসছ এক বজরা আদরশারদীয়া নিয়ে৷

আমার স্বপ্নগুলো শুয়োপোকা থেকে প্রজাপতি হচ্ছে,
আমার শরীরে খাজুরাহো বাসা বাঁধছে,
নবপত্রিকা স্নান সেরে নীল পদ্মের পাপড়ি ছিঁড়ে ঢাকছি উদ্ধত দেহবল্লরী৷

এক মাথা সিঁদুর দুপায়ের পাতা ভরা আলতাসোহাগ নিয়ে,
অপেক্ষা করছি তোমার জন্য৷
অপেক্ষা করছি সেই দূর্গা মন্ডপের, সেই হুলুধ্বনির, সেই ঢাকের বাদ্যির,
যেখানে আমার পাশটাতে সর্বক্ষণ তুমি ঘন হয়ে থাকবে, সশরীরে, আমার বোধের মধ্যে, চেতনে, অবচেতনে;
 
আমার আমার মধ্যে.......


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ শ্যামাশ্রী মুখার্জী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
শ্যামাশ্রী মুখার্জী


অলৌকিক ডাকঘর

আমাদের ফেলে আসা অতীত

আবছা হতে হতে

আরো মায়াজাল বিস্তার করে


নস্টালজিক শহরের ভেতর

হলুদ বসন্ত, ধূসর এজলাস

সম্পর্ক বর্ণমালা


বাঁকা চাঁদ ও শুকতারার নিস্তব্ধতা ম্লান হলে

ভেসে ওঠে আহির ভৈরব ---

গোত্রহীন এক অলৌকিক ডাকঘর



≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ শ্রীপর্ণা গঙ্গোপাধ্যায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
শ্রীপর্ণা গঙ্গোপাধ্যায়


ঘুমহীন  রাত্রিগুলি ভেলায় ভাসিয়ে দিই তাই  ...
 
জিজ্ঞাসা চিহ্নের মতো তোমার শরীর ।
আমি অনিবার্য গতিতে তাকে প্রদক্ষিণ করি ।
আহ্নিক গতির শেষে রাত নেমে এলে
কটুস্বরে  ডেকে ওঠে রাতজাগা পাখি ।
জেগে থাকে  রাত্রির  তৃতীয় প্রহর ।

আমি প্রথম পঙ্ ক্তি লিখি
দ্বিতীয় পঙ্ ক্তি  লিখি
তৃতীয় পঙ্ ক্তি লিখি
জিজ্ঞাসা চিহ্নটি তার পাশে এসে বসে।

পূর্ণচ্ছেদের  পর যে ঘুমটি আসে
আমার আর তার সাথে  দেখাই হল না ।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ নবনীতা সরকার ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
নবনীতা সরকার


অপঘাত

ভাতের মাড়ে ডুবে এলে চাঁদ
একটা প্রকোষ্ঠবিহীন 'আমি' এসে 
চুষে খায় পা। জাগতিক ধমনী জুড়ে
গিজগিজ করে ঘাতক অক্ষরজন্মের অক্ষমতা।
কাল পেড়িয়ে যতখানি প্রেম খুঁটে খেল চিল
তারই ছেঁড়া পালকে লিপিবদ্ধ খড়কুটোর সংসার,
আর ব্যবসায়ী সংগঠনের এক্কা দোক্কা।
যুগান্তর যোগ সাধনে কাষ্ঠবৎ শূন্যের গুণিতকেরা শুধু জানে-

আমরা বায়ু অন্বেষণের নামে আজীবন
আত্মশ্লাঘায় খুঁড়ে চলেছি
বিস্মৃতির পাতকুয়ো,
আসলে সব চরিত্রই ধ্রুবক এর অপঘাত।।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ তাপস গুপ্ত ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
তাপস গুপ্ত


চায়ের দোকানে মেঘ নেই

চায়ের দোকান ঘিরে মেঘ নেই
ঝুপ ঘন কুয়াশা চার চালা ঘিরে
তখন ব্যাধি হীন ভোর আর নির্মেদ ধোঁয়া
অলস সময় ধরে পাক মারে,
সূর্য ছেঁড়া পীত লাল আকাশ
আর পোড়া কয়লায় আঁকা হয় চারকোল
অথবা অ্যাক্রিলিকে স্বর্গ অভাগীর,
পাশে বসা কিশোর কাঙালি চোখে
না জানি কেন ঘোর ধোঁয়া ধুম জ্বর,
রব তুলে পাখি সব ডানা ঝাড়ে শিস কেটে
সাত রঙ অশ্ব রথ এখুনি
ধুলো ছোঁবে গেঁয়ো মৃত্তিকায়,
দূরে দুচাকার সাইকেলে লালমাটি
মিঠে রোদ মেঠো রাস্তায় দোল খায়
ব্যাকুল কিশোরী রাঙা শঙ্কায় বিনুনি ঝাঁকায়,
ঝোপের ভাসানো ঝিঁঝিঁ ডাক থেমে যায়
বীজধানে ভারী মেঠো বউ আলপথে
আনমনে লজ্জাতুর থমকায়,
গোলাপি গাল আরো ঘন লাল হয় ভৈরবী রোদে,
এই কুয়াশায়
কোনো মেঘ নেই চায়ের দোকান ঘিরে,
ঘনঘোর ফুটন্ত আগুন
আরো টগবগে চায়ের পাতায়,
কিশোর হাতের সেই
ধুমায়িত চা ঠোঁটের চুমু চায়,
 ঘন্টি  বাজে স্পষ্ট কিশোরী দুচাকায়
সিল্যুয়েটে ম্যুরাল হল গোলাপি ওড়নায়,

সোনালী বর্শার মত ভোরের সূর্য সুখ
কিশোর চোখ জুড়ে বিঁধেছে কন্যায়।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ ময়ূখ হালদার ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা 
ময়ূখ হালদার


অপেক্ষা 

প্রিয় মাটির জন্য অপেক্ষারত, ক্লান্ত... 

লাইটহাউসের মাথায় অন্ধকার আলো। 
জেগে আছি, নাকি ঘুমিয়ে পড়েছি-
বুঝতে পারছি না!

শিস দিতে দিতে একটা রেখা উঠে গেল অনামিকার পাঁচিল বেয়ে।
ডেকের ওপর সদ্য গজিয়ে ওঠা নক্ষত্র, 
উৎসব করছে কানামাছির দল
আর
আমি দেখছি- 
বন্দরে ফিরতে চাওয়া নাবিক
ক্রমশ মিশে যাচ্ছে নীল, গভীর নীলে...



≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ রাইমোহিনী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
রাইমোহিনী



৩রা মে ২০১৯/১৯শে বৈশাখ-১৪২৬

টেরাকোটার শাঁখে ফুঁ দিয়ে সেদিন ঝড়ের মধ্যে নেমে দাঁড়ালো রাইমোহিনী। জীবনকে আশ্বস্ত করবার আর কোনো উপায় নেই, তাই ঝড়ের মুখোমুখি–অন্ধের কিবা দিন কিবা রাত, তবু মাঝে মাঝে প্রতিযোগিতার গন্ধ পেলে বিস্মৃত অন্ধকার থেকে নতজানু মন খুঁড়ে বের করতে চায় শ্বাপদের জন্মভূমি।পিঠটান দেবার আগে দেওয়ালে চেপ্টে যাক জঙ্ঘার মাংসল ধিক্কার।চিৎ করা বুক হয়ে নিক মুষ্টিতন্ত্রের আঘাত; নীলিমার নীল কৃষ্ণ লুটিয়ে পড়বে দুর্বল পঙ্গুত্বের গায়ে , আরোগ্যের প্রার্থনার জন্য সাজানো অর্ঘ্যে সামর্থ্যেরা লিখে ফেলবে উপসংহার,তবুও শতছিন্ন ওড়নার শেষাংশ ছিঁড়ে আছড়ে পড়া সমুদ্রের ঢেউয়ে কলঙ্কের সব রক্তপাতকে দৃঢ়তায় ঘনপিনব্দ্ধ রূপ দেবে রাইমোহিনী।ঝড়ের বাড়তে থাকা গতিবেগের সঙ্গে অবিশ্বাসের অসহায়ত্ব জায়গা জুড়তে থাকে। আগ্নেয়গিরির বিনির্মাণতত্ত্বে যাজ্ঞসেনীরা যেখানে আজও অবিচল , সরীসৃপের পৃষ্ঠদেশে বিদ্ধ বল্কলের মত প্রতিস্পর্ধী সহিষ্ণুতায় একের পর এক নশ্বরতাকে অতিক্রম করে যায়। রাইমোহিনীর আগুনের মত খোলা চুল হাওয়ার তীব্রতায় উড়ে যায় আকাশের দিকে,ঝড় নেমে আসে ওর চোখে... শরীরে। হৃদপিণ্ডের বন্ধ দরজায় দহন শুরু হয়। কাঁচুলির গিঁট ঠেলে উঠে আসে উত্তপ্ত নাভিশ্বাস; আজ নারী আর প্রকৃতি একই সঙ্গে যেন উন্মাদ হতে চায়।

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ তনিমা হাজরা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
তনিমা হাজরা


ধরম

মুখ ঢেকে রেখেছো ঠাকুর, 
চোখও কি রেখেছো ঢেকে, 
দরজা দিয়েছো?? 

সব তরজার শুরু ও শেষে 
তোমাকেই সাক্ষী মেনে রাখি,
দারুব্রহ্ম টেনে নিয়ে যাই,
দীর্ঘ পথ, 
হে জগতের নাথ, 
বিপদে কি ছিলে সাথে, 
একাই তো হেঁটে এলাম, 
তুমিই তো সেই মূর্ত আত্মবিশ্বাস।।

তবুও তা টেনে ফেলে দিই 
 হারিয়ে দিগবিদিক, 
টেনে নিয়ে যাই 
সাজানো ধর্মরথ, 
এ আত্মহনন, এ খেলাসান, 
এ মৃচ্ছকটিক।