Sunday, October 25, 2020

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||
| নভেলেট | 
অরিজিৎ চক্রবর্তী

                                         

ডারউইনের চিঠি ( অষ্টম পর্ব)

ঘরের ভেতর থেকে নন্দিনী সেনরা বাইরে বেরিয়ে এলো।

----" কি হয়েছে দাদা? বন্দুকের আওয়াজ হলো!"

----" ভয় পাবেন না।কেউ হয়তো এয়ারগান দিয়ে পাখি মারছে?"

---" জঙ্গলের পাখি এভাবে মারার কি দরকার! আপনারা বিষয়টাকে বন্ধ করতে পারেন না!"

----" একি আর আমার একার কম্মো। ওদের জীবন যাত্রার সঙ্গে শিকার জড়িয়ে আছে। নিষেধ  করলে শোনে না। কিন্তু আমাদের লালুকাকাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ও আবার কিছু না জানিয়ে পাখি মারতে বেরোলো নাতো! আমি একটু খুঁজে আসছি। তারপর আপনাদের লাঞ্চের ব্যবস্থা করছি।" এই বলে সম্মোহ বুলেটে স্টার্ট দিল।

----" আমি যদি আপনার সঙ্গে যাই আপত্তি আছে!" নন্দিনী সেন বললো।

---" না না, আপত্তি কেন! বসে পড়ুন।" সম্মোহ বললো।

সম্মোহ জঙ্গলের আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে এগিয়ে গেল। পেছনে নন্দিনী সেন সম্মোহের টি-শার্ট মুঠো করে ধরেছে। এবড়ো খেবড়ো রাস্তা। শব্দটাকে অনুসরণ করে সম্মোহ এগিয়ে যাচ্ছে। শালের জঙ্গলের অতি ক্ষীণ পথ ধরে সম্মোহ এদিক ওদিক অনেক খোঁজাখুঁজি করলো। লালুকাকার দেখা নেই। হঠাৎ জঙ্গলের ভেতর দেখলো শালাপাতা পারতে আসা জনা দশেক মেয়ে। সম্মোহ এগিয়ে গেল," কিরে বুলটি লালুকাকাকে দেখেছিস।

---- " দেখি নাই গো। তবে জঙ্গলের বন্ধুক চললো একবার!"বুলটি বললো। বাকি মেয়েরা খিলখিল হাসি ছড়িয়ে পাতা তোলার কাজে লেগে পড়লো।

---" আচ্ছা আমি এদের সঙ্গে এতো সাবলীল কি করে হলেন! যেন এদেরই কেউ একজন। আপনাকে এসে থেকে যত দেখছি অত ইন্টারেস্টিং লাগছে! লালু কাকা কোথায় যেতে পারে বলে আপনার মনে হয়!"

---" যেখানেই যাক। এবার আপনাদের লাঞ্চ দিতে হবে।ও বুঝে করুক গে।" সম্মোহ বললো।

সম্মোহ বাড়ির দিকে ফিরে আসছে। নন্দিনী সেন কে পেছনে বসিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে লীমার কথা মনে পড়ছে। এরকম বহুবার লীমাকে বসিয়ে সম্মোহ কত পথ যে চলেছে তার ইয়ত্তা নেই। তবে নন্দিনী সেন অনেক খোলামেলা। স্মার্ট। আর লীমা ততোটাই জড়োসড়ো।

নন্দিনী বারেবারে সম্মোহকে আঁকড়ে ধরছিল। হয়তো এরকম উঁচু নিচু রাস্তায় নিজেকে ব্যালেন্স করতে পাচ্ছেন না। তবে সম্মোহ নন্দিনীর স্তনের ধাক্কায় রোমাঞ্চিত হচ্ছিল। আসলে সম্মোহের প্রাণখোলা মনোভাবে প্রেম আর যৌনতা তাড়াতাড়ি সাড়া দেয়। এটাকে কোন দোষ হিসেবে সে দেখে না।

বাড়ি ফিরেই দুপুরের খাওয়া দাওয়ার তোড়জোড় শুরু করে দিল সম্মোহ। খানিকক্ষণ বাদে সবাই ডাইনিং-এ এসেছে।

---" সম্মোহবাবু আমরা এখন মহুয়া খাব। লাঞ্চ পরে হবে।" নন্দিনী বললো।

---" ঠিক আছে ম্যাডাম আপনি যেমন চাইবেন। বুলির মা ফাস্টকাটের মালটা বের করো।আর আইসের কিউব গুলো দাও। " সম্মোহ বলল।

ফাস্টকাটের মহুয়া। জল মেশানো নেই। বুঝে শুনে খাবেন। অল্প খাবেন। প্রথম পেগটা আমি বানিয়ে দিচ্ছি। বাকিটা আপনারা করে নেবেন"

--- "না না, আমরা ওসব পাড়বো না। আপনি থাকুন আমাদের সঙ্গে।কি বলছো নন্দিনীদি।" শতাক্ষী বলল।

--" অবশ্যই। সম্মোহবাবু আপনি থাকুন আমাদের সঙ্গে। আর মহুয়ার উদ্ভাসে আমাদের সম্মোহিত করুন।"

সম্মোহ হেসে ফেললো। বললো, " ঠিক আছে। আমি পেগ সাজিয়ে দেব। কিন্তু খাব না। আপনারা খাবেন।"

---" কেন কেন!! আমাদের কি এই মহুয়া পানের যোগ্য পার্টনার মনে হচ্ছে না!"

---" এরকম বলবেন না ম্যাডাম। আসলে লালুকাকা নেই। আমিতো আছি। খাব অন্য সময়। চলুন শুরু করুন।"

এরকম কতজনের আবদার যে সম্মোহকে রাখতে হয়! যারাই আসে এখানে বেড়াতে তারা সবাই অদ্ভূত ভাবে সম্মোহের প্রতি অনুরাগ ছড়িয়ে দিতে চায়। অথচ লীমা! একটা আস্ত ন্যাকাচোদা! মা- ভাই-সংসার নিয়েই জীবন কাটিয়ে দিল।

No comments: