Wednesday, October 14, 2020

≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ দেবযানী বসু≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা
দেবযানী বসু



অণুগল্প~ জীবন জীবনের জন্য 

বিশাল রতন ও মেঘনাদ তিন জন প্রবীণ বন্ধু একই অফিসে কাজ করে। বিশাল ও রতনের সম্প্রতি স্ত্রীবিয়োগ ঘটেছে। দুজনের স্ত্রীই সরকারি চাকরি কর্মরত অবস্থায় চলে যায় প্রচুর টাকা ফি এফ হিসেবে স্বামীদের হাতে দিয়ে। দুজনেরি ক্যান্সার ছিল। এদের মধ্যে মেঘনাদের অবস্থা তেমন ভালো নয়। ওর স্ত্রী বিভা গরীব ঘরের মেয়ে। মনপসন্দ যৌতুক দিতে পারে নি। এ নিয়ে মেঘনাদ চিরকাল একটু মনোকষ্টে ভোগে। মেঘনাদের স্ত্রী মতোই গৃহকর্মণিপুণা হোক কথায় কথায় এইসব সৌভাগ্যবান বন্ধুদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে মেঘনাদ যা শোনায় তাতে করে তার স্ত্রীর গ্লানি ও হীনমন্যতায় ভোগা এমন কিছু ব্যাপার না।
কুর্চি গাছের ফুলে উপচানো গেট। সামনে কালো বাইক কালো দুধেল গাইয়ের মতো দাঁড়িয়ে। সেইদিকে তাকিয়ে বিভা অন্যমনস্ক হয়ে যায়। প্রথম বিয়ে লোকে ভুল করে করে ফেলে অনেক সময়। বাবলি মরলে কি মেঘনাদের ভাগ্য খুলবে? নিজের বিবাহিতা মেয়েই উদ্যোগ নিয়ে বিয়ে দেবে হয়তো। ভাগ্যবানের বৌ মরে অভাগার গরু মরে এ তো সবাই জানে। মেঘনাদ কর্মসূত্রে বিশালদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েছে। টাকা পয়সা ততটা হলে বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ত সেরকম তো মেঘনাদের হয় নি। তাই আফশোস থেকে যায়। 
এদিন বিকেলে মেঘনাদ হঠাৎ ফোন করে জানাল বাড়িতে ফিরতে দেরি হবে।  আসলে মেঘনাদ  দৌড়ল বিশালের বাড়িতে। সেখানে তখন বন্ধু বান্ধব পাড়া প্রতিবেশী জড় হয়েছে। রতনের চোখ মেঘনাদের দিকে পড়তে বললো-  'এই তো এসে গেছিস। কিন্তু এইমাত্র দলবল নিয়ে সব বেরিয়ে গেল। ঐ যে লোকাল উর্বশী সমিতি! দশটি হাজার টাকা খসিয়ে নিয়ে গেছে। বিশাল শালা বাড়িতে ক্যাশ রাখে না? তিন তিনবারের টাকা দেয় নি বোঝ! তিনবারের জন্য দশহাজার টাকা কমই তো বল। যাক গে আমরা সবাই মিলে মিটিয়ে দিলুম।'  বলেই মেঘনাদের কাঁধ চাপড়ে দিল। মেঘনাদ লাজুক হেসে বলল ' চল রাস্তায় চা খাই গিয়ে।' সেই মুহূর্তে ভাবল বিভাকে এ খবরটা শোনানো যাবে কি? শোনালে কি যে হবে!

No comments: