Sunday, October 25, 2020

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||
| নভেলেট | 
অরিজিৎ চক্রবর্তী

                                         

ডারউইনের চিঠি ( অষ্টম পর্ব)

ঘরের ভেতর থেকে নন্দিনী সেনরা বাইরে বেরিয়ে এলো।

----" কি হয়েছে দাদা? বন্দুকের আওয়াজ হলো!"

----" ভয় পাবেন না।কেউ হয়তো এয়ারগান দিয়ে পাখি মারছে?"

---" জঙ্গলের পাখি এভাবে মারার কি দরকার! আপনারা বিষয়টাকে বন্ধ করতে পারেন না!"

----" একি আর আমার একার কম্মো। ওদের জীবন যাত্রার সঙ্গে শিকার জড়িয়ে আছে। নিষেধ  করলে শোনে না। কিন্তু আমাদের লালুকাকাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ও আবার কিছু না জানিয়ে পাখি মারতে বেরোলো নাতো! আমি একটু খুঁজে আসছি। তারপর আপনাদের লাঞ্চের ব্যবস্থা করছি।" এই বলে সম্মোহ বুলেটে স্টার্ট দিল।

----" আমি যদি আপনার সঙ্গে যাই আপত্তি আছে!" নন্দিনী সেন বললো।

---" না না, আপত্তি কেন! বসে পড়ুন।" সম্মোহ বললো।

সম্মোহ জঙ্গলের আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে এগিয়ে গেল। পেছনে নন্দিনী সেন সম্মোহের টি-শার্ট মুঠো করে ধরেছে। এবড়ো খেবড়ো রাস্তা। শব্দটাকে অনুসরণ করে সম্মোহ এগিয়ে যাচ্ছে। শালের জঙ্গলের অতি ক্ষীণ পথ ধরে সম্মোহ এদিক ওদিক অনেক খোঁজাখুঁজি করলো। লালুকাকার দেখা নেই। হঠাৎ জঙ্গলের ভেতর দেখলো শালাপাতা পারতে আসা জনা দশেক মেয়ে। সম্মোহ এগিয়ে গেল," কিরে বুলটি লালুকাকাকে দেখেছিস।

---- " দেখি নাই গো। তবে জঙ্গলের বন্ধুক চললো একবার!"বুলটি বললো। বাকি মেয়েরা খিলখিল হাসি ছড়িয়ে পাতা তোলার কাজে লেগে পড়লো।

---" আচ্ছা আমি এদের সঙ্গে এতো সাবলীল কি করে হলেন! যেন এদেরই কেউ একজন। আপনাকে এসে থেকে যত দেখছি অত ইন্টারেস্টিং লাগছে! লালু কাকা কোথায় যেতে পারে বলে আপনার মনে হয়!"

---" যেখানেই যাক। এবার আপনাদের লাঞ্চ দিতে হবে।ও বুঝে করুক গে।" সম্মোহ বললো।

সম্মোহ বাড়ির দিকে ফিরে আসছে। নন্দিনী সেন কে পেছনে বসিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে লীমার কথা মনে পড়ছে। এরকম বহুবার লীমাকে বসিয়ে সম্মোহ কত পথ যে চলেছে তার ইয়ত্তা নেই। তবে নন্দিনী সেন অনেক খোলামেলা। স্মার্ট। আর লীমা ততোটাই জড়োসড়ো।

নন্দিনী বারেবারে সম্মোহকে আঁকড়ে ধরছিল। হয়তো এরকম উঁচু নিচু রাস্তায় নিজেকে ব্যালেন্স করতে পাচ্ছেন না। তবে সম্মোহ নন্দিনীর স্তনের ধাক্কায় রোমাঞ্চিত হচ্ছিল। আসলে সম্মোহের প্রাণখোলা মনোভাবে প্রেম আর যৌনতা তাড়াতাড়ি সাড়া দেয়। এটাকে কোন দোষ হিসেবে সে দেখে না।

বাড়ি ফিরেই দুপুরের খাওয়া দাওয়ার তোড়জোড় শুরু করে দিল সম্মোহ। খানিকক্ষণ বাদে সবাই ডাইনিং-এ এসেছে।

---" সম্মোহবাবু আমরা এখন মহুয়া খাব। লাঞ্চ পরে হবে।" নন্দিনী বললো।

---" ঠিক আছে ম্যাডাম আপনি যেমন চাইবেন। বুলির মা ফাস্টকাটের মালটা বের করো।আর আইসের কিউব গুলো দাও। " সম্মোহ বলল।

ফাস্টকাটের মহুয়া। জল মেশানো নেই। বুঝে শুনে খাবেন। অল্প খাবেন। প্রথম পেগটা আমি বানিয়ে দিচ্ছি। বাকিটা আপনারা করে নেবেন"

--- "না না, আমরা ওসব পাড়বো না। আপনি থাকুন আমাদের সঙ্গে।কি বলছো নন্দিনীদি।" শতাক্ষী বলল।

--" অবশ্যই। সম্মোহবাবু আপনি থাকুন আমাদের সঙ্গে। আর মহুয়ার উদ্ভাসে আমাদের সম্মোহিত করুন।"

সম্মোহ হেসে ফেললো। বললো, " ঠিক আছে। আমি পেগ সাজিয়ে দেব। কিন্তু খাব না। আপনারা খাবেন।"

---" কেন কেন!! আমাদের কি এই মহুয়া পানের যোগ্য পার্টনার মনে হচ্ছে না!"

---" এরকম বলবেন না ম্যাডাম। আসলে লালুকাকা নেই। আমিতো আছি। খাব অন্য সময়। চলুন শুরু করুন।"

এরকম কতজনের আবদার যে সম্মোহকে রাখতে হয়! যারাই আসে এখানে বেড়াতে তারা সবাই অদ্ভূত ভাবে সম্মোহের প্রতি অনুরাগ ছড়িয়ে দিতে চায়। অথচ লীমা! একটা আস্ত ন্যাকাচোদা! মা- ভাই-সংসার নিয়েই জীবন কাটিয়ে দিল।

||বিশেষ সংখ্যা ≈ চন্দ্রদীপা সেনশর্মা ||

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||
চন্দ্রদীপা সেনশর্মা
আজ আপনাকে শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম দিদি।সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন-এর তরফ থেকে এবং আপনার সকল পাঠকের তরফ থেকে। 
ভালোবাসা নেবেন। ভালো থাকবেন। 


১৭ আশ্বিন, দুর্গানবমী রাত

কলকাতার বুক চিরে চওড়া সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ
অফিসবাড়ির মাথা গায়ে মরচে ধরছে রোদ রং
ধূসর আকাশ কালো হয়ে যেতে যেতে
পুজোর আলোর রোশনাইয়ে নগর কলকাতা,
কাছের শোভাবাজার রাজবাড়ি।
দুর্গানবমীর সান্ধ্য ভূপালিসুর,
সেই সুরে হারিয়ে যাওয়া লোকজন
ভিড়ে পা চালিয়ে মণ্ডপ থেকে মণ্ডপে--

শাঁখের বেজে ওঠা অলিগলি জুড়ে, সাঁঝপ্রদীপ
মগরিবের আজান

নবমীর মধ্যরাতে বিষণ্ন হচ্ছে দশমীর বেদনা।
দরবারী কানাড়ায় জন্মতিথির স্নানগন্ধে আগমনীর কান্না
মেডিকেল কলেজের ইডেন ওয়ার্ডে।
সম্পৃক্ত মেঘে মেঘে একপশলা আশীর্বাণী,
মণ্ডপে বীরেন্দ্রকিশোর ভদ্রের পাঠে
মাতৃবন্দনা; সুপ্রীতি ঘোষ গাইছেন :
'বাজলো তোমার আলোর বেণু...'

চোখ মেলে মাকে দেখল শিশুটি...


গতি

গতির উপর অক্ষর ছেড়ে দিলাম
গতি আহ্নিক এবং অক্ষ
গতি ভৌতবিজ্ঞানের পথ বেয়ে
কখনও শব্দের কখনও আলোর

গতি ভিন্ন গতি এক
গতি মন্থর গতি চঞ্চল

গতি পায়ের টো ছুঁয়ে পি টি ঊষা
ফ্লো জো বোল্ট

গতি হৃৎপিণ্ডে স্তব্ধ হলে ব্ল্যাকহোল


দমকা বাতাস

সেদিন তোমার শ্বাসনালিতে, ঠিক ওই শুরুর মুখে
দমকা বাতাস এসে ডানা মেলেছিল
তুমি তাকে গ্রহণ করবার আগে অ্যানজিওপ্লাস্টির
বেলুনের মতো প্রাণ গিলে নিয়েছিল।
হৃদয় আর তোমার এজমালি রইল না
কোনও এক ঝোড়ো বদ‍্যি নথিপত্রে
সিলমোহর আর সিগনেচারে কিনে নিল
তোমার ঔদ্ধত্য তর্ক
টিকটিকির লেজের মতো খসতে খসতে
নির্মোহ ভজনে উদ্বাহু নৃত্যের তালে :
'শ্যাম মানে চাকর রাখো জী...'
কালপ্রতিমা আর তার ভেসে যাওয়া ছাড়া
অন্য কোনো সাক্ষী ছিল না, হ্যাঁ, ওই দমকা বাতাস


দৌড়

দৌড় শুরু করেছ, নির্ধারিত মাপে, যেমন অন্যরা।
দৌড়তে দৌড়তে বুঝতে পারছ
পা পড়ছে না ঠিকমতো, হাঁটু নড়বড়ে। 
দৌড় শেষ করতেই হবে। তুমি জানো,
প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় কোনো ভিকট্রি স্ট্যান্ডে
উঠতে পারবে না। 
তোমার জন্য বাজবে না জাতীয় সংগীত।
শুধু দৌড়ে যেতে হবে ফিনিশিং লাইন টাচ করতে।
ফিনিশিং লাইন টাচ করে তুমি বোঝো ট্র্যাক 'ন ফিল্ডে
বহু আগেই ডিস্-কোয়ালিফাই হয়ে গেছে তোমার
লাইনটি...



Saturday, October 24, 2020

≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||

বিকাশ দাস সংখ্যা




আজকের সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন শারদীয় সংখ্যা নিজস্বতায় স্বতন্ত্র কবি বিকাশ দাসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে। বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি মানুষ আপনাকে শ্রদ্ধা জানালো। প্রণাম... 



≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ সুব্রত পণ্ডিত ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
সুব্রত পণ্ডিতের কলমে বিকাশ দাস:



বাংলা কবিতায় স্বতন্ত্র উচ্চারণের কবি বিকাশ দাস, প্রকৃত নাম হিমেন্দু বিকাশ দাস।লিখেছেন ইতুনদী, বিকাশ বিষ্ণুপুর, বিকাশ বৈরাগী, ছদ্মনামে। রবীন্দ্রনাথ ও বিভূতিভূষণে নিবেদিত প্রাণ। এই নিঃসঙ্গ কবি বড়ো বেশি আত্মমগ্ন, বড়ো বেশি বৈরাগ্য তাঁর কাব্যভাবনায়।প্রচার বিমুখ এই কবির প্রথম কবিতা সংকলন মর্মমূলে ছিল টান (সমাকৃতি,১৯৯৭) দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ—দেশ রাগে বাজো (পাখিরা ২০১৯), মৃত্যুর পর শ্রদ্ধা সংকলন নির্জন প্রান্তরে একা একা (প্রদীপ কর সম্পাদিত) । কাব্য সাধনার স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন সমাকৃতি সম্মান ও চারণকবি বৈদ্যনাথ সাহিত্য পুরস্কার। স্মরণযোগ্য কবিতা নির্মাণে বিকাশ দাস অনন্য প্রতিভা।  কবিকে প্রণাম।

≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ বিশ্বজিৎ দাস ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
বিশ্বজিৎ দাস
 


স্বপ্ন ক্রাইমের সূত্র

১.
একজন স্বপ্নের নেপথ্যে ভেসে যায়
ক্রাইমের অমিয় জেনেছে দোলনায়

ঘুমানো বালিশে চেপে রেখেছে দো-নলা
স্বপ্নবাজ
আশ্বিনের ঘোড়া একটু আগে
হয়েছে আহত, বলো সাদা হত্যার কাহিনী আর

রিপোর্ট লিখেছে শারদীয়া, অ্যাসিস্ট্যান্ট তাঁর
কি হল? কি হল শারদের অগোচরে?
পুজার দেহের ছবি এসেছে তদন্তে
হলুদের হাতে জেনেছে বকুল মৃত হাওয়া রাত...

২.
মূলত স্বপ্নের কাছে এ হত্যার ছবি
স্বপ্ন দেখা আর খুন চেপে যাওয়া সব
ঘটনাবলীর আড়ালে রয়েছে একটাই প্রস্তাবনা

বুকলের কাছে পুজা কিংবা নরম বস্তু প্রিয়তা
এসবই ছিল অস্তিত্বে; মনোরোগ সাসপেক্ট কিনা
বুঝতে পারে না অমিয়। শারদীয়াও অদ্ভুত হয়ে

তাকিয়ে রয়েছে শুধু, মাংসের ভিতরে
এ কোন গর্জন? এ স্নায়ুর কাছে কেন
পৃথিবীর সব থিয়োরি বাতিল হল?

শুধুই জ্যোৎস্নার অনুবাদ হয় রক্তাক্ত পুঁজে...

 


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ নিলয় নন্দী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
নিলয় নন্দী


সারমেয় কথা

লেজ নাড়ানোই ভবিতব্য ছিল।

মাথায় রক্ত উঠে যাওয়ার আগে সংকুচিত শ্বাদন্ত
ধারালো নখর আর অবিরাম ঘেউঘেউ...

এখন ইলাস্টিক হাড়, এখন পেডিগ্রি, নুয়ে থাকা
মেখে নেওয়া অনিবার্য ধুলো বা মাংসের ঘ্রাণ
ছায়া, সে যত অসৎ হোক, চিৎকার নয়
ঢুলন্ত দুপুরে হাই তোলে টেবিল ফ্যান
মাছি ওড়ে, ক্ষত খুঁজে নেয়।

শিকার সরে যায়। সরে যায় প্রবণতা অসুখ।
প্রকাশ্যে প্রভুভক্ত। আড়ালে নিরাসক্ত মুখ।


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ শম্পা মনিমা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
শম্পা মনিমা


ভাবনার আঁচল জড়িয়ে

খুব মনে পড়ে তোমার কথা
তাইতো ঘুমাইনা
ভুলি যাই তোমার কথা ঘুমিয়ে পড়লে
জেগে থাকি যতটা সময় ততক্ষণ তুমি থাকো
কতো কথা জমে আছে মুগ্ধ মৌন হয়ে
বলবো, উদাস বসা চোখ নিয়ে তুমি শুনবে
শুনতে শুনতে হাসবে,
হেসে উথলে উঠবে চোখে জল
গড়িয়ে পড়বে হাতের তালুতে
মুঠো খুলে ধরে রাখবো
হারিয়ে যাওয়া দিনে
কোথাও যখন পাইনা
মুঠো খুলে দেখি তুমি আছো
দেখা হবে,
নাইবা হলো এখন দেখা
কথা বলা অথবা তোমাকে পাওয়া
হয়ে যাবে বছরের বয়স হলে
গা তাপানো রোদ্দুর নোনাজলে
কিংবা স্নান করে পাবে ছোঁয়া –
দেখা নাও হতে পারে
মেঘেরা জড়ো হবে চোখে আলগোছে
ভাববো তুমি রয়েছো
তোমারও মনে আসবে পুরানো খাতা উলটে
ভাববে আনমনে – আমি তো ছিলাম
তুমি না হয় ভাববে
এভাবেই আমি ছিলাম, তোমার কাছে।


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ সুকান্ত ঘোষাল ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
সুকান্ত ঘোষাল



একটি এক অঙ্কের কবিতা

[ কোন চরিত্র কাল্পনিক নয়, পাঠক নিজের সঙ্গে মিল খুঁজে পাবেন ]

(প্রথম দৃশ্য)

পূর্ণচ্ছেদের পরবর্তী মুহূর্ত 
মধ্যরাত্রী 
বাসডিপো 
নিত্যযাত্রীর নিশ্বাস 
-
-
-
শুরু করার একটি প্রক্রিয়া 
উদ্ধৃতিচিহ্ন


(দ্বিতীয় দৃশ্য)

যুক্তাক্ষর
বাহুল্যপ্রাচুর্য
পাখি 
আশ্রয় 
শিকড়
-
-
-
মেষপালক অথবা মিছিলকারীর
কেশচর্চা


(তৃতীয় দৃশ্য)

'ত' এবং '৩'
দাঁতের ব্যবহার 
ধারাপাত 
তুমি , তোমরা , তৃতীয় 
-
-
-
মাত্রাজ্ঞান 


(চতুর্থ দৃশ্য)

সোস্যালমিডিয়া 
গুডমর্নিং
শুভসন্ধ্যা
ধর্মরাজনীতিমাস্কসাবানস্যানিটাইজার
-
-
-
এভাবেই আসছে 

[যবনিকা]


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ সোনালী মন্ডল আইচ ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
সোনালী মন্ডল আইচ


জন্মান্তর 

নিজের ঔরস বা গর্ভ ছাড়াও প্রাণের উন্মেষ সম্ভব
যদিও কে জন্মদাতা সে প্রশ্ন তো থাকবেই
কখনও কখনও সত্যের চেয়ে স্বপ্ন বেশি জোরালো, 

পুরোনো ছোপ লাগা বনের নীচে চাঁদ 
মাঠে ঘাটে লেগে আছে সাদা ঘন কুয়াশা 
দূরের আকাশ লাল আভায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠছে 

আরও দূরে দৃষ্টি যায়, কর্ষণ ও বীজ বপন শুরু 
ঝুরঝুরে মাটি ট্রাক্টর এর তলায় টালমাটাল, 

একজন মানুষ, কোমরে বীজের থলে, ডান হাতটা
উদার দরাজ ভঙ্গিতে অনেকখানি বাড়িয়ে মাপমতো 
অৰ্ধচন্দ্রাকারে বীজ ছড়াচ্ছেন, তিনিই স্রষ্টা।

জানি এই জন্মমুহূর্তে স্রষ্টাও নবজাতক 
আপন মনে 
আমি বাগদত্তা কেবলমাত্র মৃত্যুর কাছে 
আর তার আগমনের অবকাশে--
এই নশ্বর সৃষ্টির কাছেই এখন আমার 
কিছুটা নিশ্চিত সমর্পন চলছে ...


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়


উদ্যান থেকে বলছি
 
ভিনদেশের প্রেমিক বিমানবন্দরে পা রাখলে, 
যে কোনো নারীর স্তনে রজনীগন্ধা ফোটে। 
স্বার্থপর মানুষের বাগানে সন্ধে হওয়ার আগে
কেতকীর গন্ধ নামে,
 চুরি করে সাবলীল ঠোঁট! 

চুরি দেখে, 
কুপী জ্বলে ওঠে দীনদুঃখীর রান্নাঘরে!
যেন একটা আলো,
 চলে যেতে যেতে থমকে দাঁড়িয়েছে কয়েক মুহূর্তের জন্য !     

ভিনদেশের প্রেমিক বিমানবন্দরে পা রাখলে, 
যে কোনো নারীর মুখ 
ফুলবিক্রেতার ঝুড়িতে থাকা সবচেয়ে সতেজ গোলাপটির মত হয়ে যায়...
জানালায় নেমে আসে বাহারি পর্দা। 

≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ আমিনুল ইসলাম ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
আমিনুল ইসলাম



পথ

ওদিকটা বদ্ধ

    জানালা নেই
চোখ পারাপারে
নিষেধাজ্ঞা

১টা দীর্ঘ আড়াল
জমেছে মনে...
বরফের শুভ্রতা দিয়ে
ছড়িয়েছে শীতল স্নায়ুযুদ্ধ

নিজের সাথে নিজের
অন্যের সাথে পরের
এবং
দিকনির্ণয় যন্ত্রের মতোই
তাদের আচরণ!

ওইদিকেই দেয়াল...
শক্ত কঠিন
কংক্রিটের
যেখানে পৌঁছে গেলে
পিঠ ঠেকে যায়!

অভিমুখ বদলে যায় নদীর...



≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ শীর্ষা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা
শীর্ষা


রঙ ও খিদে

কালো রঙ আমাকে গ্রাস করে একটু একটু করে। রোজ। একটি ফুটফুটে জ্যোৎস্না মেখে রাত্রির বুকে মাথা রেখে হাওয়া খেতে বেরোই। আমার ললাটের সঙ্গে মালতীলতা পাতিয়ে গুটি গুটি পায়ের একটা কালো বেড়াল সিগারেট ধরায়। ঈর্ষার সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে জ্যোৎস্নারুটির সাদাকে আরাম করে চিবোয় সে। এরপর আমার সাদা দাঁতের দিকে তাকায়। সাদা চোখের মণির দিকে তাকায়। আমি না না করে উঠি চিৎকার আর ভয়ের সমন্বয় রেখে। কালো বেড়াল ওর হাঁ-টুকু নিয়ে তেড়ে আসে আমার দিকে। যন্ত্রণার কালো গন্ধ আমার পরাজিত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ধীরে ধীরে। ওঁ শরীরকাঠ দেখে সবটুকু সাদা খাবার পর আমার পিঠে কালো লোমশ চুলের ঝরনা এলিয়ে দিয়ে আরামের বমন তুলছে বেড়ালটি। ফিরিয়ে দিচ্ছে লালামাখানো সাদাকে। পরবর্তী ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য।



≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ মৌসুমী চৌধুরী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা
মৌসুমী চৌধুরী
 


অণুগল্প~বিপণন  


     "তেরে বিনা জিন্দগী সে কো-ই শিকওয়া নেহী"------- দুপুরের নিস্তব্ধতা খান খান করে সুরেলা রিংটোনটা ভাতঘুম ভাঙিয়ে দিল শ্রীতমার। একটা প্রবন্ধ পড়তে পড়তে সবে চোখটা একটু লেগে গিয়েছিল। অচেনা নাম্বার!.... 
---- হ্যালো, কে বলছেন?
---- শ্রীতমা, আমি দেবুদা বলছি। দেবরাজ বটব্যাল, "দৃষ্টিপাত" পত্রিকার সম্পাদক। ওই যে সেদিন সাহিত্যসভায় পরিচয় হয়েছিল...
         এত বিখ্যাত কবি তাকে ফোন করছে! একটু ঘাবড়ে যায় শ্রীতমা। 
---- ওহ্, হ্যাঁ হ্যাঁ.... বলুন বলুন। 
---- এই এমনি তোমার সাথে একটু কথা বলতে ইচ্ছে হল। সেদিন তোমার কবিতাটা কিন্তু খুব ভালোলেগেছিল আমার... নিপীড়িতা মেয়েটির কথা কী যে জোরালোভাবে তুলে ধরেছ তুমি! আমি তো মোহিত!
---- ধন্যবাদ। আপনার ভালোলেগেছে, এ তো আমার প্রাপ্তি ! তা মানে... আমার নাম্বরটা কার কাছে পেলেন, দাদা?
---- ওহ্...ওই বরুণের কাছে পেলাম। কেন তোমার কি আপত্তি আছে? 
---- না না, ঠিক আছে...
---- শোন, আমি কিন্তু একটা টার্গেট নিয়েছি। তোমাকে আমি কবি হিসাবে পরিচিত করাব। এটা আমার একটা মিশান বুঝলে?
      মনে মনে থমকে যায় শ্রীতমা তাকে কবি হিসেবে পরিচিত করাবে অন্য কেউ! তাহলে তার পড়াশোনা, শিক্ষা এসব কিছুই নয়? ভারী আজব লাগে কথাগুলো!
---- নাহ্... মানে আমি লেখালিখি করি শখে। তেমন সিরিয়াস কিছু নয়।
--- না না বিষয়টা এত হালকাভাবে নিও না। তোমার মধ্যে প্রবল সম্ভাবনা আছে। আমার মিশানে তোমাকে সচেতনভাবে আমার পাশে দাঁড়াতে হবে।
---- না... মানে....আমি ঠিক...
   অস্বস্তিকর লাগতে থাকে শ্রীতমার। এ আবার কী আপদ রে বাবা!
--- শোন শ্রীতমা, আমি সবাইকে দেখিয়ে দিতে চাই পাড়াগাঁয়ে থেকেও একজন কবি একদম আধুনিক ভাবধারায় কবিতা লিখতে পারে! আমার পত্রিকায় তোমাকে আমি এক নম্বর কবি হিসেবে তুলে ধরতে চাই।
      ভীষন রাগ হয়ে যায় শ্রীতমার। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,
--- কে বললো আমি পাড়াগাঁয়ে থাকি? আমি কলকাতার উপকণ্ঠে থাকি। আর...
--- ওহ্। সরি... সরি....শোন যেটা বলছিলাম, তোমাকে আপ-ডেটেড-কবিতা পড়তে হবে। তুমি কি সাম্প্রতিকতম প্রকাশিত আমার কবিতার বইটা সংগ্রহ করেছিলে সেদিন?
--- নাহ্....না তো।
--- ওহ্, আচ্ছা.. আমি লিঙ্ক দিয়ে দেব। অন-লাইনে অর্ডার করে দিও, পেয়ে যাবে বুঝলে?
        এবারে মুখ খোলে শ্রীতমা, 
--- কিন্তু আমি ঠিক আপনার কবিতার রসাস্বাদন করতে পারি না। মানে বুঝি না, বড্ড কঠিন লাগে!
--- আরে এজন্যই তো তোমাকে ফোন করা। আমার বইটা তুমি পড় । তোমার ভেতরে কবিতা  সংক্রান্ত যে সেকেলে সংস্কারটা আছে তাকে আমি ভেঙে দিতে চাই।
--- তার মানে!... আপনি নিজের বই কেনানোর জন্যই এতক্ষণ ধরে....
---- আরে না না, বিষয়টা এভাবে ভেব না। শোন না, একদিন এসো আমার ফ্ল্যাটে। পাঁচ-ছ' ঘন্টা তোমাতে-আমাতে কবিতা নিয়ে গভীর আলোচনা হবে। কবিতা বিষয়ে তোমার ভেতরে যে একটা রাবীন্দ্রিক-সংস্কার আর সাবেকী-মনন আছে তাকে আমি একদম ভেঙেচুরে দিতে চাই। হাঃ হাঃ হাঃ...
       কট্ করে ফোনটা কেটে দেয় শ্রীতমা।


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ কামরুল হাসান কামু ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা  
কামরুল হাসান কামু


মাঠের কাছে

 সটিগন্ধামাঠ কি কথা বলো?কেমন করে বলো?
 -ফিরে আসতে হয়।
 সেসব কাজলবর্ণা দিনে,প্রিয়াও অমন গন্ধ মেখে ডাকতো।
 থোকা থোকা কাশফুল বুকে,কেমন করে তাকাও?কেমন করে?
 -ফিরে আসতে হয়।
 সেসব রৌদ্রে,প্রিয়াও অমন করে মেঘরঙ মাখতো,ডাকতো আমায়।
 সমুদ্র দেখাতো নীল আঁচলে,মেঘফুল পরশে বউচি খেলতাম এই মাঠে।
 মনে পড়ে?পড়ে মনে?
 ও মাঠ,আরো ডাকো,ডাকো আমায়।


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ কাজী শোয়েব শাবাব ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা
কাজী শোয়েব শাবাব



টিকটিকি


কালো খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে ছোট্ট তেলাপোকা সাদা শরীর নিয়ে সময়ের সাথে হেঁটে যেতে যেতে— স্মৃতির মায়ায় পড়ে যায়। 
পেছনে ফিরে আসে অতীতের কাছে
বিগত খোলসের মুখোমুখি বসে থাকে, বসেই থাকে। 

এদিকে সময় চলে গেছে হেঁটে হেঁটে বহুদূর। 

ঘটনার মাঝখান অকস্মাৎ ঢুকে পড়ে টিকটিকি
খপ করে মুখে পুরে হেলেদুলে চলে যায়—
আরেক সময়ের অন্ধকারে।

≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ রাজা দেবরায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা
রাজা দেবরায়


শুধুই অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য !

সতীদাহ প্রথার পেছনেও মূলত অর্থনৈতিক স্বার্থ কাজ করতো । স্বামীহীনা মহিলার সম্পত্তি জীবিত অবস্থায় গ্রাস করা সম্ভব নয়, তাই এই (কু)প্রথা । তাছাড়া ভরণপোষণের দায়িত্ব কে নেবে ? সেটা মাথায় রেখেই এই (কু)প্রথার প্রচলন করা হয় ।

তাছাড়াও যখন সদ্যবিধবা স্ত্রীকে চিতায় তোলা হতো, তখন ওনার গায়ে থাকতো সমস্ত সোনা, রূপার অলংকার এবং এটাকেই নিয়ম বানিয়ে রেখেছিলো । সবাই জানে যে আগুনে পোড়ে সোনা, রূপা প্রায় নষ্ট হয় না । দাহ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এগুলিও তখন প্রাপ্তি ছিলো ।

পুরোটাই অর্থনৈতিক ব্যাপার !!!

আজকাল বিভিন্ন 'ডে'ও সৃষ্টি করা হয়েছে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যেই । আবেগকে পুঁজি করে গিফ্ট কেনাতে একপ্রকার বাধ্য করা হয় বলা যায় ! গিফ্টই সম্পর্ক অটুট রাখার বা নতুন সম্পর্ক গড়ার মাপকাঠি বা চাবিকাঠি, এরকম ধারণা সৃষ্টি করা হয়েছে পরিকল্পনামাফিক অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যকে চরিতার্থ করার জন্য ।

কর্পোরেট এইসব খুবই পরিকল্পিতভাবে করে বর্তমানে আরো দ্রুততার সাথে মুনাফা লুটে যাচ্ছে, আর প্রতিদিন অর্থনৈতিকভাবে আরো আরো বেশি স্ফীত হচ্ছে ।।


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ সৃজা রায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
সৃজা রায়



রাত দুপুরে...

খোশগল্পে টকবগিয়ে রাজার জামাই এলো।
রাজকন্যার সিঁথিপাটি, তেল লাগিয়ে পরিপাটি,
এমন সময় রাজপূরীতে ব্যাঘাত বিশাল হলো!
সৈন্য -সেপাই,দল বাগালো, 
দরজার পাশে কানাঘুষো।
এক যে আছে গুবরে পোকা, 
বজ্জাতি সব কাজ,
সয়ম্বরার সভায় আসে বিদঘুটে সব সাজ,
শুনছো সবাই!রাজামশাই!
ভীষন চটেছেন!
রাজপুরীতে শূলে চড়ানোর  নির্দেশ দিয়েছেন!
সবার হাবভাব ভয়ে টয়ে
পালিয়ে গিয়ে বাঁচে,
এমন কেন নির্দেশ দিলেন,
অতিথিদের কাছে?
গুবরে কেবল মুখ টিপে রয়,
আচার বিচার পরে,
রাজকন্যার স্বামী হবে,
তারই ফন্দি করে।
মন্ত্রের জোরে কেউ তাহারে,
বানিয়ে দিয়েছে এমন,
দেখতে নাকি সুপুরুষ সে,
এই তল্লাটে নেই তেমন!
রাজকন্যা প্রশ্ন করেন" উপায় তবে? 
তোমার শাপের শাপান্তরণ কিরমভাবে হবে?"
ভেবে বললো গুবরে পোকা,
রাস্তা একটাই আছে!
চুপ করে রও!
সান্ত্রী -মন্ত্রীর বাক্যটি যেন না সরে!
স্বস্তি দিয়ে বললেন রাজা, "বেশ,তোমার ইচ্ছা পূরণ হোক",
গুবরে তখন নির্ভয়েতে বলেই ফেলে,
রাতদুপুরে কাটতে হবে রাজার বিশাল গোঁফ!


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ পারমিতা ভট্টাচার্য ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা
পারমিতা ভট্টাচার্য


অশৌচলীলা

বদ্ধতার নামে জীবন কিনছি একমুঠো
চিলেকোঠার চিলতে দেওয়াল জুড়ে
পায়রা ওড়া ধুলো - সুখ...
বিন্দু বিন্দু সুখের ভৌমজল চুঁইয়ে
জোছনা স্নানে যাচ্ছে রাজপথ

অষ্ট বিভূতি জাগ্রত শালগ্রাম শিলা জুড়ে
অশৌচলীলা ...
গঙ্গা স্নানে লালবাতি, মনের স্থাপত্যের নিয়তি বেলায়

চঞ্চল মস্তিষ্কে বাসা বেঁধেছে কিছু দুরন্ত চড়াই
খড়কুটো ছাড়া আছেই বা কি গৃহস্থালী - কার্পণ্যে...

কাজল হয়ে গলে যাচ্ছে উষ্ণ মণ্ডলের ষড়যন্ত্র...
মেরুদণ্ড - হিমবাহে...

তুলসী - গঙ্গায় ধৌত মিথ্যা প্রপাত
আছড়ে পড়ছে বিসর্গ বিন্যাসে...


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ বিপাশা ভট্টাচার্য ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
বিপাশা ভট্টাচার্য


কবিতার কাছে ঋণ

যদি পারো, একথোকা কামিনী রেখে যেয়ো,
মাথার পাশে। উত্তরের জানলার কোণে...
বড় গুমোট হয়ে উঠেছে ঘর।
দমচাপা সন্ধ্যেয় সঙ্গ দিক
শুভ্র পবিত্রতা আর স্নিগ্ধ সুবাস।
অবসর মতো-- রেখে যেয়ো কাগজ কলম।
অক্ষরের কাছে আমার এক জীবনের ঋণ।
শুধু বর্ণমালার আশ্রয়ই বারবার-
পিছুটান হয়ে চেপে ধরেছে আঁচলপ্রান্ত।
কত প্রিয়জন, কত প্রতিশ্রুতি...
সব বিগতজনমের স্মৃতি মনে হয়।
খাদের কিনার অবধি পৌঁছে গিয়েও
তবু বারবার ফিরে ফিরে আসি।
কবিতা, তোমায় করেছি সাধন সঙ্গিনী।

≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়



ছোটগল্প~দৃষ্টি

প্রায় ছ’মাস বাদে করেদের বাড়ির খড়খড়ি দেওয়া জানালা খোলা দেখে পাড়ার লোকজন বেশ উৎসুক হয়ে পড়েছিল । শুধু তাই নয়, সেই জানালায় একটা মেয়েকেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল । বাড়িটা করেরা বিক্রি করে দিয়েছিল বলে পাড়ার সকলে জানত । তারপর থেকে বাড়িটা বন্ধই ছিল । তাহলে কখন নতুন লোকজন এলো আর জিনিষপত্রই বা এলো কবে ?

 সমাধান করে দিলো পাড়ার গেজেটার সান্টু । জিনিসপত্র সমেত বাড়ি বিক্রি করেছে করেরা । আর এদের জিনিস কিছুদিনের মধ্যেই এসে যাবে । এদের ফ্যামিলিতে আছে মা বাবা আর মেয়ে । আর বাড়ির পুরনো কাজের মেয়ে হারুর মা ।

কিছুদিন যেতে দেখা গেল এরা মিশুকে নয় । বাজারে বা পথে দেখা হলে সামান্য হেসে মুখটা অন্যদিকে করে চলে যায় বাড়ির কর্তা । বাকিরা কেউ বের হয় না বাড়ি থেকে । তবে মেয়েটি সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত ওই জানালার সামনে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকে । স্নান-খাওয়ার সময়টাও বাঁধা । মুখে সবসময় হাসি লেগে আছে । এই হাসি তার রূপকে আরও বাড়িয়ে দেয় ।

পাড়ার কমবয়সী ছেলে-ছোকরাদের যাতায়াত করেদের বাড়ির সামনের রাস্তায় বেড়ে গেছে । গ্রামের কর্তাব্যক্তিরা বেশ অসন্তুষ্ট মেয়েটির বাবার ওপর । তাদের বক্তব্য, ‘মেয়ে চরম নির্লজ্জ । আর বাপ তাকে শাসন না করে ধিঙ্গি হতে ইন্ধন জোগাচ্ছে ।’ এসব কথা বললেও তার নিজেরাও লুকিয়ে-চুরিয়ে ওই মেয়েকে দেখতে যায় ।

কেটে গেছে ছ’টা মাস । একদিন সান্টু ছুটতে-ছুটতে চন্ডীমন্ডপে এলো ।

‘তোমরা কি খবরটা শুনেছ ?’

নন্দীখুড়ো বলে, ‘কী করে শুনব বাবা ? তুমি হলে আমাদের গ্রামের গেজেটার । তুমি খবর না দিলে আমরা পাই কী করে ?’

‘ওই মেয়েটা গো, যারা এখন করেদের বাড়িটা কিনেছে ...’

সান্টুকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে নন্দীখুড়ো প্রায় ভেংচে ওঠে, ‘আবার কী করেছে ঐ গুণনিধি ?’

‘আহ্‌, আগে শোনো । ওই মেয়ে অন্ধ । ব্রেন টিউমার অপারেশনের পর তার দৃষ্টিশক্তি চলে গিয়েছিল । আজ কলকাতায় যাচ্ছে । একটা চোখ ম্যাচ করেছে । অপারেশন হবার দেখতে পেতেও পারে । মানে ডাক্তার তেমন সম্ভাবনার কথা বলেছেন 

গোটা চন্ডীমন্ডপ থমথম করছে । মানুষগুলোর ভেতর একটাই কথা ঘুরে-ফিরে আসছে । অন্ধ মানুষের অসহায় দৃষ্টি চিনতে না পেরে অনায়াসে তারা বেহায়া বলে দেগে দিয়েছিল মেয়েটাকে । এখন চোখ ফিরে পেয়ে সেই মেয়ে তাদের চোখের দিকে যখন তাকাবে, তাদের নির্লজ্জতা বুঝে নেবে না তো ?