চন্দ্রদীপা সেনশর্মা
একটি মুক্তগদ্য
আহ্ কো চাহিয়ে এক উম্র অসর হোনে তক
কৌন জীতা হ্যায় তেরে জ়ুল্ফ় কে সর হোনে তক'
--মির্জ়া গ়ালিব
দেখা হওয়ার কথা ছিল প্রথমদিনেই বেশ বোঝা
গিয়েছিল। আমি এক দুঃখের সাঁকোর উপর
দুলছিলাম, তুমি অন্যপারে প্রভূত অন্ধকার ভেঙে
উঠে এসেছিলে। আকাশের মতো ছড়িয়ে পড়া
খোলা চুল আর তার নিবিড় শূন্যতায় তোমার
দুচোখ নক্ষত্র ছুঁয়ে কালপুরুষ। অথচ কিছুই বুঝে
ওঠা হল না। এক পরম্পরার গাঁথনিতে ইঁটের
উপর ইঁট সাজিয়ে যেমন আর পাঁচটা সামাজিক
সম্পর্ক হয় এও তেমন। সম্পর্কে চোরাপথ ছিল,
হাইবারনেশনে ঘুমিয়ে থাকা এক অন্য সম্পর্কের
ঢেউ ঝকঝকে রোদের মতো ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে
উঠছিল। দেখা হয়েছিল অবশ্য গোধূলি এবং
সন্ধ্যার সম্মিলনের রঙে। বয়স দ্রুতগতিতে ছুটতে
ছুটতে একইজায়গায় থম মেরে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।
বহমান সেই সময় চুক্তিবদ্ধ করে, ধীরে ধীরে
কড়ায়ক্রান্তিতে অনিচ্ছা বদলে দিয়েছিল ইচ্ছের
জারদৌসি কাজের জমাট বুননে।
মধ্যবর্তী সাঁকোটি বেশ বয়স্ক, তিনদশক পেরিয়েছে
সে অর্থে। অতিসামান্য যে কয়েকবছর দীর্ঘ দীর্ঘ
ব্যবধানে সাঁকো পেরিয়ে আমরা এলাম গেলাম,
তার চিহ্ন মুছে যায়নি, হয়তো গেছে, নির্দিষ্ট করে
কিছুই বলা যায় না। শরীরের অভ্যন্তরে যে গুহা
থাকে, তার ভিতরে ছোট ছোট পুষ্করিণী থাকে, ঢেউ
থাকে নিশ্চুপ। হেমন্তের বন্য হাওয়ায় আর্দ্র রম্য
শীতে কেঁপে উঠলে বোঝা যায় ঢেউয়ের নগ্নতা,
ঝড়। তখন সাঁকো দুলে ওঠে, গূঢ় তমিস্রায়
তলিয়ে যায় তিলোত্তমার তৃতীয় নয়ন, শবের
শরীরে তন্ত্রে জেগে ওঠে শিব। সন্ধিপুজোর
আয়োজন, আরতি। প্রারদ্ধের মৃত্যু হয় জন্মান্তরের
নতুন গল্পে।
'Coz if love means forever, expecting
nothing returned
Then I hope I'll be given another whole
lifetime to learn'
--Joan Baez
চিনেছি কি তোমাকে জন্মান্তর ঘেঁষে? তুমি কি
বুঝেছ কতটুকু প্রাপ্তি কত অপ্রাপ্তির ভুল থেকে
গেল? এত ভুল হবে বলে বারবার সাঁকো পার হয়ে
যাতায়াত? না কি এই অবিনাশ যাত্রার মোহে
আবারও ফেরা? শেষ শূন্যতায় অতিরিক্ত কিছুই
নিয়ে যেতে চাই না। যে অসমাপ্ত ঘুঙুরের বোল
হারিয়ে গেল সাঁকো পারাপারে, হারিয়ে যাওয়ার সে
তৃপ্তিটুকু থাক। বন্ধকী সুর পড়ে আছে; ছাড়িয়ে
নিলে প্রারদ্ধের গাঁটরিটি বাহুল্যবর্জিত হতে পারে
আগম-নিগম ত্রিভুজচিহ্নে। আমেন ।।
'তোমাকে দেখেছি সেইখানে
জন্মান্তরের কাছে এসে
অথবা মৃত্যুর কাছাকাছি
গিয়েছে অনন্তে মেঘ ভেসে'
--কালীকৃষ্ণ গুহ
কৌন জীতা হ্যায় তেরে জ়ুল্ফ় কে সর হোনে তক'
দেখা হওয়ার কথা ছিল প্রথমদিনেই বেশ বোঝা
গিয়েছিল। আমি এক দুঃখের সাঁকোর উপর
দুলছিলাম, তুমি অন্যপারে প্রভূত অন্ধকার ভেঙে
উঠে এসেছিলে। আকাশের মতো ছড়িয়ে পড়া
খোলা চুল আর তার নিবিড় শূন্যতায় তোমার
দুচোখ নক্ষত্র ছুঁয়ে কালপুরুষ। অথচ কিছুই বুঝে
ওঠা হল না। এক পরম্পরার গাঁথনিতে ইঁটের
উপর ইঁট সাজিয়ে যেমন আর পাঁচটা সামাজিক
সম্পর্ক হয় এও তেমন। সম্পর্কে চোরাপথ ছিল,
হাইবারনেশনে ঘুমিয়ে থাকা এক অন্য সম্পর্কের
ঢেউ ঝকঝকে রোদের মতো ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে
উঠছিল। দেখা হয়েছিল অবশ্য গোধূলি এবং
সন্ধ্যার সম্মিলনের রঙে। বয়স দ্রুতগতিতে ছুটতে
ছুটতে একইজায়গায় থম মেরে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।
বহমান সেই সময় চুক্তিবদ্ধ করে, ধীরে ধীরে
কড়ায়ক্রান্তিতে অনিচ্ছা বদলে দিয়েছিল ইচ্ছের
জারদৌসি কাজের জমাট বুননে।
মধ্যবর্তী সাঁকোটি বেশ বয়স্ক, তিনদশক পেরিয়েছে
সে অর্থে। অতিসামান্য যে কয়েকবছর দীর্ঘ দীর্ঘ
ব্যবধানে সাঁকো পেরিয়ে আমরা এলাম গেলাম,
তার চিহ্ন মুছে যায়নি, হয়তো গেছে, নির্দিষ্ট করে
কিছুই বলা যায় না। শরীরের অভ্যন্তরে যে গুহা
থাকে, তার ভিতরে ছোট ছোট পুষ্করিণী থাকে, ঢেউ
থাকে নিশ্চুপ। হেমন্তের বন্য হাওয়ায় আর্দ্র রম্য
শীতে কেঁপে উঠলে বোঝা যায় ঢেউয়ের নগ্নতা,
ঝড়। তখন সাঁকো দুলে ওঠে, গূঢ় তমিস্রায়
তলিয়ে যায় তিলোত্তমার তৃতীয় নয়ন, শবের
শরীরে তন্ত্রে জেগে ওঠে শিব। সন্ধিপুজোর
আয়োজন, আরতি। প্রারদ্ধের মৃত্যু হয় জন্মান্তরের
নতুন গল্পে।
'Coz if love means forever, expecting
nothing returned
Then I hope I'll be given another whole
lifetime to learn'
চিনেছি কি তোমাকে জন্মান্তর ঘেঁষে? তুমি কি
বুঝেছ কতটুকু প্রাপ্তি কত অপ্রাপ্তির ভুল থেকে
গেল? এত ভুল হবে বলে বারবার সাঁকো পার হয়ে
যাতায়াত? না কি এই অবিনাশ যাত্রার মোহে
আবারও ফেরা? শেষ শূন্যতায় অতিরিক্ত কিছুই
নিয়ে যেতে চাই না। যে অসমাপ্ত ঘুঙুরের বোল
হারিয়ে গেল সাঁকো পারাপারে, হারিয়ে যাওয়ার সে
তৃপ্তিটুকু থাক। বন্ধকী সুর পড়ে আছে; ছাড়িয়ে
নিলে প্রারদ্ধের গাঁটরিটি বাহুল্যবর্জিত হতে পারে
আগম-নিগম ত্রিভুজচিহ্নে। আমেন ।।
'তোমাকে দেখেছি সেইখানে
জন্মান্তরের কাছে এসে
অথবা মৃত্যুর কাছাকাছি
গিয়েছে অনন্তে মেঘ ভেসে'
--কালীকৃষ্ণ গুহ


No comments:
Post a Comment