|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||
|| ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...|| || দ্বিতীয় বর্ষ ||
চন্দ্রদীপা সেনশর্মা
কেসি
মেয়ে জানালো কেসি ফিরেছে।
বড়ো উৎকন্ঠায় দু'মাস কাটল। হারিয়ে গিয়েছিল।
ওহ বলা হয়নি কেসি একটি মেনিবিড়াল,
হাইডেলবার্গে কয়েকমাস আমার মেয়ের
অবসরসঙ্গী। যদিও সে এক আলবেনিয়ান মেয়ের
পোষ্য। কিন্তু আমার মেয়েকে সে ভালোবেসেছে
ঢের। মেয়ের গায়ে, তার টেডিদের গায়ে কেসি কম
হুটোপুটি করেনি। তার মালকিন পড়ার সুবাদে
অন্য জায়গায় গেছে, সেখানে 'পেট ইজ নট
অ্যালাউড'! এ কী আমাদের দেশ, সব ককটেল,
মানুষ পশুপাখি। 'অতিথি দেবো ভবঃ'।
এদেশে অতিথির হাতেই রাজত্ব! তারা ছাঁকনি
চালনি দিয়ে অন্য অতিথি খুঁজে তাড়াতে ব্যস্ত।
মানুষের অবস্থা বেশ অসুবিধের, বিড়ালের? দূর
হচ্ছে জর্মানির কথা, কেসির কথা, বিদেশিনীর
জর্মান পোষ্য। এর মধ্যে আমাদের দেশ কোথা
থেকে এল? মালকিন ফিরে আসার আগেই আমার
কন্যাকে আখেন ফিরতে হল। ইন্টার্নশিপ শেষ,
আখেন সুডেন্ট ডর্ম, পোষ্য নৈব নৈব চ। ইহাও সত্য
না বলিয়া অন্যের সম্পত্তি নিজের ভাবিতে নাই।
আমি বললাম : কেসির কী হবে? কে দেখবে? মেয়ে
জানালো ওর ঘরে নতুন একটি ছেলে এসেছে,
তাকে মেয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে কেসির দায়িত্ব।
সামান্য ক'দিন আলবেনিয়ান ফিরছে। বললাম : ছেলে? কেন জানি না ভিন দেশের যুবক অন্যের
বিড়াল দেখবে ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না, যদিও মেনি। মেয়ে বুঝে ধমক দিল।
মাত্র সপ্তাহখানেক, মেয়ে আখেন, আলবেনিয়ান
ফিরেছে। ছেলেটি কেসিকে যত্নে রেখেছিল। কিন্তু
ওই মেয়েটির ভিসা রিনিউ হল না। বাধ্য হয়ে
মেয়েটি জর্মানিতে ওর মাসির বাড়িতে কেসিকে
রেখে আলবেনিয়া ফিরে গেল। মাসির বাড়ি
থেকেই একদিন কেসি হারিয়ে গেল। কান্নাকাটি
আখেন, হাইডেলবার্গ, আলবেনিয়া এমনকি
কলকাতায়। বিড়াল বাড়ি ছাড়ে মৃত্যু কাছাকাছি
এলে। কেসি তো বাচ্চা, সবে দুই, তবে কি গাড়ির
তলায় বা অন্য কোনো দুর্ঘটনা? দুশ্চিন্তা সবার,
ওর নরম শরীর যারা ছুঁয়েছে বা ছোঁয়নি, চোখের
মায়া, ডোরাকাটা রেশমের মতো লোম। মেয়েটি
আলবেনিয়া থেকে ফিরল ভিসা নিয়ে, খোঁজ
খোঁজ। না, কেসিকে কোথাও পাওয়া গেল না।
মেনিবিড়ালটি কাউকে না জানিয়ে হারিয়ে গেল।
ঠিক একইভাবে দুমাস বাদে ফিরেও এল। না, ওকে
কেউ প্রশ্ন করেনি, কোথায় গিয়েছিল। প্রশ্ন করতে
নেই (একদিন প্রতিদিন/মৃণাল সেন), একদিন বা
দু'মাস, মেনি বলে ওর কি স্বাধীনতা নেই? কেসি
একটি মেনিবিড়াল, 'তারে আমি ছুুঁয়ে দেখিনি
তার অনেক গল্প শুনেছি...' আনন্দে গেয়ে উঠি।
|| ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...|| || দ্বিতীয় বর্ষ ||
চন্দ্রদীপা সেনশর্মা
কেসি
মেয়ে জানালো কেসি ফিরেছে।
বড়ো উৎকন্ঠায় দু'মাস কাটল। হারিয়ে গিয়েছিল।
ওহ বলা হয়নি কেসি একটি মেনিবিড়াল,
হাইডেলবার্গে কয়েকমাস আমার মেয়ের
অবসরসঙ্গী। যদিও সে এক আলবেনিয়ান মেয়ের
পোষ্য। কিন্তু আমার মেয়েকে সে ভালোবেসেছে
ঢের। মেয়ের গায়ে, তার টেডিদের গায়ে কেসি কম
হুটোপুটি করেনি। তার মালকিন পড়ার সুবাদে
অন্য জায়গায় গেছে, সেখানে 'পেট ইজ নট
অ্যালাউড'! এ কী আমাদের দেশ, সব ককটেল,
মানুষ পশুপাখি। 'অতিথি দেবো ভবঃ'।
এদেশে অতিথির হাতেই রাজত্ব! তারা ছাঁকনি
চালনি দিয়ে অন্য অতিথি খুঁজে তাড়াতে ব্যস্ত।
মানুষের অবস্থা বেশ অসুবিধের, বিড়ালের? দূর
হচ্ছে জর্মানির কথা, কেসির কথা, বিদেশিনীর
জর্মান পোষ্য। এর মধ্যে আমাদের দেশ কোথা
থেকে এল? মালকিন ফিরে আসার আগেই আমার
কন্যাকে আখেন ফিরতে হল। ইন্টার্নশিপ শেষ,
আখেন সুডেন্ট ডর্ম, পোষ্য নৈব নৈব চ। ইহাও সত্য
না বলিয়া অন্যের সম্পত্তি নিজের ভাবিতে নাই।
আমি বললাম : কেসির কী হবে? কে দেখবে? মেয়ে
জানালো ওর ঘরে নতুন একটি ছেলে এসেছে,
তাকে মেয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে কেসির দায়িত্ব।
সামান্য ক'দিন আলবেনিয়ান ফিরছে। বললাম : ছেলে? কেন জানি না ভিন দেশের যুবক অন্যের
বিড়াল দেখবে ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না, যদিও মেনি। মেয়ে বুঝে ধমক দিল।
মাত্র সপ্তাহখানেক, মেয়ে আখেন, আলবেনিয়ান
ফিরেছে। ছেলেটি কেসিকে যত্নে রেখেছিল। কিন্তু
ওই মেয়েটির ভিসা রিনিউ হল না। বাধ্য হয়ে
মেয়েটি জর্মানিতে ওর মাসির বাড়িতে কেসিকে
রেখে আলবেনিয়া ফিরে গেল। মাসির বাড়ি
থেকেই একদিন কেসি হারিয়ে গেল। কান্নাকাটি
আখেন, হাইডেলবার্গ, আলবেনিয়া এমনকি
কলকাতায়। বিড়াল বাড়ি ছাড়ে মৃত্যু কাছাকাছি
এলে। কেসি তো বাচ্চা, সবে দুই, তবে কি গাড়ির
তলায় বা অন্য কোনো দুর্ঘটনা? দুশ্চিন্তা সবার,
ওর নরম শরীর যারা ছুঁয়েছে বা ছোঁয়নি, চোখের
মায়া, ডোরাকাটা রেশমের মতো লোম। মেয়েটি
আলবেনিয়া থেকে ফিরল ভিসা নিয়ে, খোঁজ
খোঁজ। না, কেসিকে কোথাও পাওয়া গেল না।
মেনিবিড়ালটি কাউকে না জানিয়ে হারিয়ে গেল।
ঠিক একইভাবে দুমাস বাদে ফিরেও এল। না, ওকে
কেউ প্রশ্ন করেনি, কোথায় গিয়েছিল। প্রশ্ন করতে
নেই (একদিন প্রতিদিন/মৃণাল সেন), একদিন বা
দু'মাস, মেনি বলে ওর কি স্বাধীনতা নেই? কেসি
একটি মেনিবিড়াল, 'তারে আমি ছুুঁয়ে দেখিনি
তার অনেক গল্প শুনেছি...' আনন্দে গেয়ে উঠি।

No comments:
Post a Comment