Saturday, August 22, 2020

| বিশেষ সংখ্যা || সুশীল হাটুই |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||

কবি সুশীল হাটুই ১টি পরিচিত নাম। সকলেই আমরা তাঁর কবিতার সাথে পরিচিত। সুশীল হাটুই এর ২ কাব্যগ্রন্থ ছিলই "পারফিউমের কোরাস " এবং মৎস্যকন্যার  ঘুমভাঙানিয়া মেঘমল্লার ", এ বছর আরো ১টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হলো " কফি with উর্বশী " ৬৪ পাতার ১টি সম্পৃক্ত বই, যা সত্যি এই সময়কার কবিতার প্রাসঙ্গিক ধারায় বহমান। 
কবি সুশীল হাটুই-কে পত্রিকার তরফ থেকে ধন্যবাদ,শ্রদ্ধা ও ভালেবাসা রইলো।   

সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন-এ ২০২০ র এখনো পর্যন্ত প্রকাশিত সুশীল হাটুই-এর কবিতা। আসুন পড়ি___

সুশীল হাটুই











                                    পিংপং বলের তাতা থইথই

পিংপং বলটি মাৎসর্যের দিকে ভেসে
চলেছে, এখন সে ব্যাকহ্যান্ড খেলবে না
ফোরহ্যান্ড তা নিয়ে ১টা রহস্য
উপন্যাস লেখা যেতে পারে,

পৃথিবীর গঠন পিংপং বলের
গঠনতন্ত্রের জেরক্স, কিন্তু আয়তন বিষয়ে কথা
বললে ৬৪ জি বি মেমোরি লাশ হয়ে যাবে,

পিংপং বলের স্বপ্ন মনখারাপ নিদ্রাহীনতা
অথবা নৃত্যকলা বিষয়ে দিগগজ শিমুলতুলো
কিছুই জানে না,

এর কারণ হতে পারে, কর্কটক্রান্তি রেখা
বিষুবরেখাকে /, /, এবং / বিষয়ে
যে রিপোর্টাজ দেয় তা অন্তঃসারহীন
বুদবুদ,

-সবের বাইরে যখনই চৌকো টেবিলে
সাদা পিংপং বলটি নাচতে শুরু করে, তখনই
মগজের সুহানা কোষে,

ঘুমন্ত বরফে আগুন জ্বলে ওঠে...


                                          আপেলের গৃহযুদ্ধ

সাবানের সঙ্গে গল্প করে
নীল স্নানঘর জ্যোৎস্নায় ভেসে গেল

জানতেই পারিনি আপেলের গৃহযুদ্ধ শুরু
হয়ে গেছে

জানলে কী--বা করতাম?

এই যে কাচের গ্লাসে লাল রং-এর সালসা,
এই গ্লাস আমি কখনো কভারড্রাইভ
করেছি?

বুঝতেই পারি না,
চাতক কেন মেঘতন্দুরি ভালোবাসে, আর
কেনই-বা আয়নার প্রচ্ছদে রূপের
অহংকার?

আজ দেখতে পাচ্ছি,
ফ্রক-কিশোরীর আঙুলে রক্ত। জাগরণ
দেখে হিংস্র ঘুম,

ভয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে। 


                            জুডাসের ছায়া

দাঁতের ফু'য়ে সধবা আপেলটি
নিভে গেল

তারপর থেকেই জুডাসের রোগা ছায়াটি
শিস দিচ্ছে :

এরপর কেউ 'নিউটন সংহিতা' পড়বেই না

ডাঁসানো-পেয়ারাগুলি কাঠবেড়ালির নকশি-
কাঁথা ভালোবাসে

আঙুরগুলি শেয়ালের বিষাদযোগ থেকে
খুঁজে নেয়, T-20- উল্লাস

কিশোরী শশাগুলি কেন কম্পিউটার
জানে না, সেই প্রশ্ন ওঠার আগেই,

জুডাসের ছায়াটি দৌড়োচ্ছে

একটা লাশ পড়ার পর, সবুজের ভিতর
মশাল জ্বেলেছে,

আপেলের রৌদ্র-সেনা। 

                                        ডার্ক ফ্যান্টাসি

আজ আমি সত্যি কথা- বলছি :
শীতের জ্যোৎস্না মাখা দুপুর আমাকে
একটা ডিভান উপহার দিল
আমি ডিভানের ডি থেকে ডিওডোরেন্ট
ভা থেকে ভায়োলিন আর থেকে
নখের খিদে অনুবাদ করলাম
আমি ডিভান পেয়ে আর কী করতে পারতাম
তা নিয়ে কাগজ এবং কলমের মধ্যে দূরত্ব
থাকতে পারে
তবে দূরত্বকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে পৌঁছে দিতে
আর্কিমিডিসের সূত্র কতটা সক্রিয়
আমি সে-সব ভাবিনি
কেননা ফুলদানির নক্ষত্র উপাসনা
থেকে জেনেছি, ডিভানের ওপর আলোকবর্ষ
হয়ে থাকা দুটি বিন্দুকে,
একটা ডার্ক ফ্যান্টাসি- ফেভিকলের
রাষ্ট্রনীতি শেখাতে পারে,

                        ম্যাক্সিম গোর্কির টেবিলল্যাম্প

আমার ডটপেনটি বিকেল হলেই
গোলাপফুলগুলিকে ফ্লাইংকিস পাঠায়। কিন্তু
জানি না, কেন সে সন্ধে হলেই টেলিভিশনটিকে
ভাম্পায়ার বলে ডাকে
আমি এখন দেখছি, টেলিভিশনটি রাগে
গরগর করছে
ওয়াশিংমেশিনের দুটো চোখ লাল,
ফ্রিজ থেকে বেরিয়ে আসছে ভয়ংকর হাসি,
.সি. রুমে উড়ে বেড়াচ্ছে প্রতিশোধের
ইস্তাহার
আমাকে ফিশফিশ করে নিঃসঙ্গ মাউথ-
অর্গানটি বলল,
ম্যাক্সিম গোর্কির ফেলে যাওয়া টেবিলল্যাম্পটি
মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠিয়ে সকলকে
সঙ্ঘবদ্ধ করছে
মাউথঅর্গানটি আরো বলল,
ওই টেবিলল্যাম্পের ম্যাসেজ যে-সব আঙুল
ডিলিট করছে,
শীতের আগেই সেই আঙুলগুলিকে মৃত
ঘোষণা করা হবে 


                                      রোদের জীবাশ্ম

বৃশ্চিকরাশির কলমটির সঙ্গে
কন্যারাশির ফুলদানিটি গন্ধের গতিবেগ
নিয়ে কথা বলছে

অথচ দ্যাখো ডাস্ট-অ্যালার্জির ভয়ে যে-সব
জানালা সারাদিনে বার-
চোখ খোলেনি, তারা কেমন আয়নার
ভিতর গ্যালাক্সি খুঁজছে

হারমোনিয়ামের হরস্কোপ থেকে
স্পষ্ট হয়ে উঠছে, সারোগেসি শব্দটি
মৎস্যগন্ধা দুপুরের বুকপকেটে কখনোই
পৌঁছতে পারবে না

কিন্তু তাই বলে কেন অমিত্রাক্ষর ছন্দের
অক্ষৌহিণী সেনা নদীর গৃহযুদ্ধের পাশে
ভোকাট্টা ওড়াল?

আজ মিডনাইটব্লু- কথা বাদ- দিলাম,
কিন্তু যে ফ্লুরোসেন্ট-ব্লু ল্যাম্পটিকে
জোনাকিরা চাঁদের যমজ বলে জানে---

রোদের জীবাশ্ম দেখার পরই তাদের
ভুল ভাঙছে,

অমাবস্যায় কিশোরী ল্যাম্পটি আলো দিচ্ছে...


                                  টেবিলফ্যানের অসুখ

অ্যান্টিপোয়ট্রি লেখার আগেই
টেবিলফ্যানের অসুখ ছড়িয়ে পড়ছে ঘরে
গা-বমি মাথা-ধরা লালচোখ জ্বর সব দেয়ালেই
ছড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর ব্লুপ্রিন্ট

তারই মধ্যে আমি
সিলিংফ্যানটিকে বলছি,সম্রাট অশোক,
তুমি আজ GOOD FATHER অমরেশ পুরি
হয়ে ওঠো

আমি বাড়িয়ে রেখেছি হাত, তুমি তোমার
হাওয়া-মেয়েটির হাত ছেড়ে দিয়ে বলো---
যা সিমরান যা...

আজ ১টা সামার ১০০ সামারের গ্যাংলিডার
হয়ে আমার দারুচিনি ত্বকে ডিটিপি করছে,
মৃত মাছের চোখ আর কুরুক্ষেত্রের
বোমাবাজি

তারই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কমে যাচ্ছে আমার
কলমটির শব্দের বেলুন ওড়ানোর
ইচ্ছা

আমার মগজ পুরো হ্যাং
হবার আগেই, আমি সাওয়ারের নীচে খুঁজে
নিচ্ছি বৃষ্টির যশোদা-বাৎসল্য...

                                          Wi-Fi জোনে শীতকাল     

অনেকগুলো পাসওয়ার্ড বদলের 
পরই Wi-Fi জোনে কুয়াশা পরা শীতকালটিকে
দেখতে পেলাম, আমি চিরদিনই আপেলকে
বড়ো মিঞা আর নাসপাতিকে ছোটো মিঞা
বলে ডেকেছি, কিন্তু তার জন্য ছেঁড়া হাওয়াই-
চটির কোনো সেফটিপিন আমাকে সন্দেহ 
করেনি, আজ আইবুড়ো চশমাটির কাছে চন্দ্র-
গ্রহণের সময় জানতে চাইলাম, কাগজের জঙ্ঘা থেকে মুখ তুলে,
পার্কার কলমটি ইন্টারনেট সার্চের কথা বলল,
আমি ওর কথা শুনিনি, কেননা রাজহাঁসের 
বিপরীতে ময়ূরপঙ্ক্ষী লিখতে আমি ভয় পাই 
না, এখন স্বরবর্ণের সন্ধ্যাহ্নিকের ওপর
দেখছি, আকাশে ১০ কোম্পানি মেঘ, ওই
ননসেন্স মেঘগুলোই সোনালি সাপ ছেড়ে
নিরক্ষর জানালাগুলিকে ঘুম পাড়িয়ে
দিচ্ছে...


                                               নাবিকের রাত্রিলিপি
চুম্বন ফেরানোর অপরাধে ফর্সা দুপুরে
মেঘ নেমে এল, অথচ টেবিলে শীতকাতর
কেকটি বৌদ্ধই আছে, একটা ছুরি-ও ব্রহ্মের
ঠিকানা দিতে পারে, ওরা বলেছিল, ফড়িং
পোষা অপরাধ, বিশ্বাস করিনি, গ্রামোফোনে
বর্ষা শোনার পরই দেখেছি, মাকড়সার মা
হওয়ার স্বরলিপি, আজ ঝি আসেনি বলে
বিছানা থেকে বেরিয়ে পড়েছে কাপ ভাঙার
শব্দ, বিকেল নামার আগেই জিজ্ঞাসাচিহ্নগুলি
দৌড়চ্ছে, নাবিকের রাত্রিলিপিতে কতটা
যাদুবাস্তবতা থাকে,



No comments: