Monday, August 31, 2020

| অনুবাদ সংখ্যা | মলয় রায়চৌধুরীর |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||

আজ অনুবাদ সংখ্যায় থাকছে জন অ্যাশবেরি (John Ashbery) বর্ষীয়ান মার্কিন কবি। অনুবাদ করেছেন মলয় রায়চৌধুরী

জন অ্যাশবেরি-র তিনটি পোস্টমডার্ন কবিতা ( ১৯২৭ - ২০১৭ ) । 

অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী   


আমি দেখতে পাই, অন্ধ লোকটা বলল, হাতুড়ি আর করাত মাটিতে রেখে    


ওই পুরোনো সঙ্গীতে কিছু চারুতা আছে

ও তার দিকে টান পাবে যখন রাতের বাতাস তাকে     উন্মোচন করবে :

দূরে থাকতে ভালো লাগে ; পাথরগুলো হেলে পড়ে ;

গর্জন ছাপিয়ে পাহাড়ের বিষাদ নিজের জায়গায় 

রান্নাঘরগুলোর কিনউ উজ্বল কাঁথার মতন স্মৃতি

লাল রঙের এক থোক কাচা কাপড়ের । কিন্তু মোটরগাড়িটা কি

কখনও টেনে নিয়ে যাবে আর সব সময়ে তেজি যখন ও

সিঁড়ির মাঝে প্রেরণা পেলো

আর পাঁউরুটির স্লাইসে কেউ জ্যোতিষের ফোয়ারা খুলে দিলো

যতক্ষণ না তা মানুষের আদল নিলো, নির্বোধ, পকেট ফাঁকা

হয়তো, খুব সম্ভবত সেখানে দাঁড়িয়ে ।


তুমি কি দেখতে পাচ্ছো না এই বিশ্রাম-থেকে-দূরের প্রয়োজনগুলোর বিরতি ?

আর বাতাসে প্রতিবেশিরা আর সেরকমই মেনে নেয়

ব্যাপারটা কঠিন, এক ধরণের মাইলফলক ?

যাতে পরদাগুলো যতোটা পারে চারুতা দিতে পারে

মনোরম দৃশ্যগুলোকে : এক উপচে-পড়া মলকুণ্ড

দরবার জীবনের স্মৃতিতে, লজেঞ্চুষ, সিগারেট,

তাছাড়া আর কী । এটা কেমনতর, একটার বেশি কি রয়েছে,

দয়ালু, লোকেরা কি চিরকালের জন্য প্রান্তে যেতে চায়

বিভিন্ন জিনিসের, এমনকি সুন্দরগুলোর, আর যখন তা ঘটে

আমরা কি সবাই একসঙ্গে আকা থাকবো । বর্ম

এই জিনিসগুলোর চিন্তায় নিজেকে দেখেই হাসে

তবু দূরত্বগুলো সবসময়ে বাড়তে থাকে

মাঝখানে সবকিছু নিয়ে, মাঝখানে

উঁচু বেড়াগুলো মনে হয় জানে জীবন কি জিনিস :

এক অর্পণ যা এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকে । আর আমরা স্বপ্ন দেখি ।


 

একটা মাছি


আর তবু আমি আপনা থেকেই দেয়ালের ওই জায়গাটা দেখি--

সময়টা যথার্থ, কিন্তু দূরে --

অনুমতিটা টকে গেলো--

সেটাই সময়কালে আসে কিন্তু বয়স বাড়লে নয়,

মার্বেলের গুলিগুলো পাশপকেটে আটক,

আজকের ভঙ্গিমা আমরা ভালোভাবে জানি তা হলো

গতকালের বিলিব্যবস্হা  আর পাকা ভবিষ্যবাণী --

ঘোরবার সময়ে থেমে না-যাওয়া,

যেমন একজন আহ্লাদী নকশাকার নিজের টেবিলে বসে থাকেন ।


কারণ, এর কারণ হলো :

কৌতূহলী লোকটা আবার নিজের চুল পরিষ্কার করছে

নিজের পায়খানায় বসে আয়নায় একটা চোখ দেখতে পেলো

( বন্ধুগণ ব্যাপারটা ভালোভাবেই এসেছে

একবারের জন্যে যেমন দেয়া হয়েছে এখানেই আর আমি হাতে সময় নিয়ে

একবারের জন্যে, লেখালিখির জন্য পরিত্যক্ত, আর কতোটা

সময় গেছে শব্দদের নষ্ট করার জন্য,

যা তোমাকে খরচ করতে হতো কিংবা খেসারত দিতে হতো

মোটরগাড়িতে আশু রাত্রিভোজনের সীমাহীন

গাড়ির কাচে বয়ে চলেছে আলো

একটা বড়ো সফলতা

আমি অনুমান করতে পারি কিন্তু এক্ষুনি গ্রাহ্য করতে পারছি না,

সময়ের দিকে দেখবেন না ) আর সময়

তোমার খোঁজে পেনসিলভিয়ানা আর নিউজার্সি থেকে

ভালোভাবে ভ্রমণ করতে পারে না

নিজের চুলকে হালকা হলদে রঙে রাঙায়

খড়ের দেয়ালগুলোকে রঙ করে আর আয়না

বারান্দায় সকালের সূর্যের আলোকে বিপথগামী করে

সরাসরি জাজিমের ওপরে

ব্যাপারটা হলো জগতে এই জায়গাগুলো,

ভাড়া থেকে মুক্ত,

মালপত্রের, খাবারের, তোমার সঙ্গ দেবার এক অভিধান

ঈর্ষায়

কিন্তু দিনটাও এমন যখন আমরা একত্রিত হলুম

চুক্তি সাক্ষরিত হলো

আর সবকিছুই দীর্ঘ দুপুরের সমুদ্রতীরে সহজ হয়ে উঠলো

কাঁধকে ঢুকিয়ে দেয়া হলো মন্হরতরঙ্গে জুতোজোড়া খুলে

যাতে আমরা এখন বেঁচে থাকতে পারি কিছুটা

কৌতূহল আর আশায়

জলাশয়ের মতন যা দ্রুত জোয়ারের অংশ হয়ে ওঠে


সূর্য যখন অস্ত গেলো


একবার কারোর ভালোবাসা পেয়ে -- নিশ্চিত

তাতে এক স্হায়ী শুভত্ব আছে,

আমরা যদি পরিস্হিতিগুলো জানতে নাও পারি

কিংবা বহুকাল আগে ঘটে গেছে যাতে কোনো তফাত হয় না ।

প্রচুর সূর্যালোকের মতন কিংবা মিষ্টি-আঠালো প্রাচুর্যের মতন, 

চিনি দেয়া জিনিসের -- কে তোমাকে বলতে পারে তা ভুল ?

তোমাদের দলে কারা-কারা অন্ধকারে মুড়ে দিতে পারে উদাস

গানকে যা বাজতেই থাকে, যা পৃথিবীর আরম্ভ থেকে বেজে চলেছে ?


তবু, নিজের মানসিকতায় বাঁধা পড়ে যাওয়া, যা মনে হয়

সমভূমির মতন বিশাল, যাতে বলে দেয়া হয় যে

এর দিগন্তগুলো কৌতুকপ্রদভাবে সীমাবদ্ধ,

আর সেখান থেকেই উঠে আসে সমস্ত বিষাদ, সেই অবনত

ঝর্ণার পালকের মতন : তাকি জ্ঞানকে উচ্ছিন্ন করে না

ভালোবাসার বিভিন্ন বিন্যাস থেকে, তাদের ছোট করে তুলে

একটা শাদা উদাসীন ত্রিপার্শ্ব কাচে, এক ছাদহীন প্রেম ফাঁকায় দাঁড়িয়ে

প্রকৃতির শক্তিতে জড়ানো ? আর অনেকে এই দৃষ্টান্তে দেখতে পায় তা কেমন করে ওঠে

আস্তে আস্তে উদাসীন স্বর্গের দিকে, সেই সমস্ত পাণ্ডুর কুহক ?

পাখির গানের মতন ধুয়াটা এলোমেলো, তা অপরিচিতের মতন চুয়ে পড়ে

এখান থেকে বেরোনো পরিচিত কাঠামোর মাঝে

স্হির পরিচিত পরিধিতে আর কম নিশ্চিত প্রবণতায় :

তা আগেই নিজের পথ তৈরি করে নিয়েছিল। সন্ধ্যার চিত্তবিনোদনে।

এমন সময়ও হয় যখন সঙ্গীত আমাদের কাবু করে ফ্যালে,

আচমকা হতবুদ্ধিকর নৈকট্যে আসে, আমার কবজির ওপর বইতে থাকে ;

যে সত্যি আর নোংরা কথাগুলো তুমি রাতের বেলায় ফিসফিস করে বলো

যেমন বই বন্ধ হয়ে যায় নষ্ট চাদরের মতন, একটা কলঙ্ক

সময় থেকে ছিঁড়ে নেয়া সব রকমের দ্যোতনা আর ফেলে দেয়া

কুয়োর ভেতরে মণিরত্নের মতন ; জবাবটা, এছাড়াও,

আমার মাথায় যে প্রশ্ন জেগেছিল কিন্তু আমি তা ভুলে গেছি,

ব্যতিরেকে যেভাবে কোনো-কোনো জিনিস, কোনো-কোনো রাতে, জুটি বাঁধে ।




Thursday, August 27, 2020

| বিশেষ সংখ্যা | প্রকাশ ঘোষাল |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||

কবি প্রকাশ ঘোষাল, আসানসোল বাসী,  ৯০ দশকের কবি। কবির আত্মপ্রকাশ মিহির আচার্য্যের "লেখক সমাবেশ"___ এপার বাংলা ওপার বাংলা -র পত্রিকার হাত ধরে। কবির ১টি কাব্যগ্রন্থ আছে " জন্মদিনের মতো বৃষ্টি " —— কবিকণ্ঠ প্রকাশনী থেকে ২০০২ সালে প্রকাশিত। কবির কবিতা এইসময়কার আঙ্গিকে, কবিতার গঠন ও বাচনভঙ্গিতে।  

আসুন পড়ি___



প্রকাশ ঘোষাল-এর কবিতা

১.
হাড় 

রোজ সকালবেলায় শৃঙ্খলা রোদ এসে
বাচ্চাদের অরণ্য পার করে দেয় 
বিষন্ন অর্কিড কোলে একা একা  বসে থাকে ব্যালকনি
সমুদ্রে ভেসে যায় চাঁদের ক্ষয়াটে হাড় 

২.
বিষ্ময়চিহ্ন

ঘুমন্ত জ্বরের কোন স্ক্রিনশট নেই
গতজন্মের দেহ থেকে ছিটকে পড়ছে সাবালক অক্ষর। 
বিষ্ময়চিহ্নের ভেতর মাঝেমাঝে পাশ ফিরে শোয় আশ্চর্য পৃথিবী। 

৩.
স্বপ্নমঙ্গল

হাড়গোড় নিয়ে স্বপ্নমঙ্গল লিখে চলেছে এক দার্শনিক 
এ জন্মে নুন পাহাড়ের আর সমুদ্র দেখা হলো না
ও আয়না জীবন মুন্ড বাইরে রেখে চলো 
ঈশ্বরের শ্বাসকষ্ট দেখে আসি। 

৪.
লগইন

গোলাপের শো-রুম থেকে বেরিয়ে আসছে নিওপ্রিন দম্পতি 
লম্বা জিভের ভেতর মেরুপ্রদেশের গান
কঙ্কাল স্বেচ্ছাসেবক বুকপকেটে গুঁজে দিচ্ছে ধন্যবাদ 

আঃ ভিবজিওর ঘুম কয়েকশো তারার চোখ 
দূর থেকে উড়ে আসছে চতুর মাইক্রোসফট 
নিশাচর লগইন হেলথ্ ওকের ছায়া। 

৫.
আয়ুলিখন

এবং জানি না কিভাবে এলাচ ভোর উঠে যায় গাছের পাতায় 
কখন যে সন্ধেতারা দোল খায় শান্ত শাখায়, কিভাবে বদলে যায় ভাঙা চেয়ারের ঘুম 
অথচ মাথার বাকল খুলে দেখি হাজার হাজার স্কাইলাইটের রং 
ময়ুর মুদ্রায় ফুটে ওঠে চুম্বন শীৎকার,শরীরই বসতভূমি হাত ও চোখের কাঙাল পরাগ, 
জিভের নিচে নিঃস্বতার অনুবাদ শুধু ছুঁতে চায় জীবনের সন্ধি সমাস
মৃত বছরের আয়ু ঝুঁকে পড়ে 
অনন্ত প্যারাফিন লিখে চলে লিকলিকে পৃথিবীর ঝর্ণা যাপন।

৬.
গর্বিত শামুক 


দিন ও রাত্রির মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে বাঘেরা ক্যারাম খেলছে 
সন্দেহ আর যন্ত্রনার ফাঁক দিয়ে পন্ডিত শেয়াল বাজারে ছুটছে
সেয়ানা চিংড়ির সম্মতি না পেলে সমস্ত সিগন্যাল অফ
ঠিক দশটায় যে যার দাঁড়ে দোল খাবে জেনারেল সিফট 
দৃশ্যমান হিংস্রতার টেলিকাস্ট দেখতে দেখতে বিছানায় শুয়ে পড়বে গর্বিত শামুক।

৭.
তিন সেকেন্ড শূন্যতা


শাদা অভিমান।টকঝাল ছিল না যে জোর করে বলা যায় না
একটা নেউল রঙের চাঁদ আটকে ছিল বাসি জানলায় 
কয়েকটা আরশোলা এখনো ভাবছে আমার মৃত্যুর পর কোথায় বসবে তারা
তিন সেকেন্ড শূন্যতায় 
বেহুঁশ উড়ে গেলে স্যাটেলাইট ছুঁয়ে ফেলবে দুনিয়ার বোকামি 
সমস্ত ছদ্মনাম সর্বনাম মিলেমিশে ছুটে যাবে ইঁদুর ভর্তি ট্রেন

Saturday, August 22, 2020

| বিশেষ সংখ্যা || সুশীল হাটুই |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||

কবি সুশীল হাটুই ১টি পরিচিত নাম। সকলেই আমরা তাঁর কবিতার সাথে পরিচিত। সুশীল হাটুই এর ২ কাব্যগ্রন্থ ছিলই "পারফিউমের কোরাস " এবং মৎস্যকন্যার  ঘুমভাঙানিয়া মেঘমল্লার ", এ বছর আরো ১টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হলো " কফি with উর্বশী " ৬৪ পাতার ১টি সম্পৃক্ত বই, যা সত্যি এই সময়কার কবিতার প্রাসঙ্গিক ধারায় বহমান। 
কবি সুশীল হাটুই-কে পত্রিকার তরফ থেকে ধন্যবাদ,শ্রদ্ধা ও ভালেবাসা রইলো।   

সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন-এ ২০২০ র এখনো পর্যন্ত প্রকাশিত সুশীল হাটুই-এর কবিতা। আসুন পড়ি___

সুশীল হাটুই











                                    পিংপং বলের তাতা থইথই

পিংপং বলটি মাৎসর্যের দিকে ভেসে
চলেছে, এখন সে ব্যাকহ্যান্ড খেলবে না
ফোরহ্যান্ড তা নিয়ে ১টা রহস্য
উপন্যাস লেখা যেতে পারে,

পৃথিবীর গঠন পিংপং বলের
গঠনতন্ত্রের জেরক্স, কিন্তু আয়তন বিষয়ে কথা
বললে ৬৪ জি বি মেমোরি লাশ হয়ে যাবে,

পিংপং বলের স্বপ্ন মনখারাপ নিদ্রাহীনতা
অথবা নৃত্যকলা বিষয়ে দিগগজ শিমুলতুলো
কিছুই জানে না,

এর কারণ হতে পারে, কর্কটক্রান্তি রেখা
বিষুবরেখাকে /, /, এবং / বিষয়ে
যে রিপোর্টাজ দেয় তা অন্তঃসারহীন
বুদবুদ,

-সবের বাইরে যখনই চৌকো টেবিলে
সাদা পিংপং বলটি নাচতে শুরু করে, তখনই
মগজের সুহানা কোষে,

ঘুমন্ত বরফে আগুন জ্বলে ওঠে...


                                          আপেলের গৃহযুদ্ধ

সাবানের সঙ্গে গল্প করে
নীল স্নানঘর জ্যোৎস্নায় ভেসে গেল

জানতেই পারিনি আপেলের গৃহযুদ্ধ শুরু
হয়ে গেছে

জানলে কী--বা করতাম?

এই যে কাচের গ্লাসে লাল রং-এর সালসা,
এই গ্লাস আমি কখনো কভারড্রাইভ
করেছি?

বুঝতেই পারি না,
চাতক কেন মেঘতন্দুরি ভালোবাসে, আর
কেনই-বা আয়নার প্রচ্ছদে রূপের
অহংকার?

আজ দেখতে পাচ্ছি,
ফ্রক-কিশোরীর আঙুলে রক্ত। জাগরণ
দেখে হিংস্র ঘুম,

ভয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে। 


                            জুডাসের ছায়া

দাঁতের ফু'য়ে সধবা আপেলটি
নিভে গেল

তারপর থেকেই জুডাসের রোগা ছায়াটি
শিস দিচ্ছে :

এরপর কেউ 'নিউটন সংহিতা' পড়বেই না

ডাঁসানো-পেয়ারাগুলি কাঠবেড়ালির নকশি-
কাঁথা ভালোবাসে

আঙুরগুলি শেয়ালের বিষাদযোগ থেকে
খুঁজে নেয়, T-20- উল্লাস

কিশোরী শশাগুলি কেন কম্পিউটার
জানে না, সেই প্রশ্ন ওঠার আগেই,

জুডাসের ছায়াটি দৌড়োচ্ছে

একটা লাশ পড়ার পর, সবুজের ভিতর
মশাল জ্বেলেছে,

আপেলের রৌদ্র-সেনা। 

                                        ডার্ক ফ্যান্টাসি

আজ আমি সত্যি কথা- বলছি :
শীতের জ্যোৎস্না মাখা দুপুর আমাকে
একটা ডিভান উপহার দিল
আমি ডিভানের ডি থেকে ডিওডোরেন্ট
ভা থেকে ভায়োলিন আর থেকে
নখের খিদে অনুবাদ করলাম
আমি ডিভান পেয়ে আর কী করতে পারতাম
তা নিয়ে কাগজ এবং কলমের মধ্যে দূরত্ব
থাকতে পারে
তবে দূরত্বকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে পৌঁছে দিতে
আর্কিমিডিসের সূত্র কতটা সক্রিয়
আমি সে-সব ভাবিনি
কেননা ফুলদানির নক্ষত্র উপাসনা
থেকে জেনেছি, ডিভানের ওপর আলোকবর্ষ
হয়ে থাকা দুটি বিন্দুকে,
একটা ডার্ক ফ্যান্টাসি- ফেভিকলের
রাষ্ট্রনীতি শেখাতে পারে,

                        ম্যাক্সিম গোর্কির টেবিলল্যাম্প

আমার ডটপেনটি বিকেল হলেই
গোলাপফুলগুলিকে ফ্লাইংকিস পাঠায়। কিন্তু
জানি না, কেন সে সন্ধে হলেই টেলিভিশনটিকে
ভাম্পায়ার বলে ডাকে
আমি এখন দেখছি, টেলিভিশনটি রাগে
গরগর করছে
ওয়াশিংমেশিনের দুটো চোখ লাল,
ফ্রিজ থেকে বেরিয়ে আসছে ভয়ংকর হাসি,
.সি. রুমে উড়ে বেড়াচ্ছে প্রতিশোধের
ইস্তাহার
আমাকে ফিশফিশ করে নিঃসঙ্গ মাউথ-
অর্গানটি বলল,
ম্যাক্সিম গোর্কির ফেলে যাওয়া টেবিলল্যাম্পটি
মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠিয়ে সকলকে
সঙ্ঘবদ্ধ করছে
মাউথঅর্গানটি আরো বলল,
ওই টেবিলল্যাম্পের ম্যাসেজ যে-সব আঙুল
ডিলিট করছে,
শীতের আগেই সেই আঙুলগুলিকে মৃত
ঘোষণা করা হবে 


                                      রোদের জীবাশ্ম

বৃশ্চিকরাশির কলমটির সঙ্গে
কন্যারাশির ফুলদানিটি গন্ধের গতিবেগ
নিয়ে কথা বলছে

অথচ দ্যাখো ডাস্ট-অ্যালার্জির ভয়ে যে-সব
জানালা সারাদিনে বার-
চোখ খোলেনি, তারা কেমন আয়নার
ভিতর গ্যালাক্সি খুঁজছে

হারমোনিয়ামের হরস্কোপ থেকে
স্পষ্ট হয়ে উঠছে, সারোগেসি শব্দটি
মৎস্যগন্ধা দুপুরের বুকপকেটে কখনোই
পৌঁছতে পারবে না

কিন্তু তাই বলে কেন অমিত্রাক্ষর ছন্দের
অক্ষৌহিণী সেনা নদীর গৃহযুদ্ধের পাশে
ভোকাট্টা ওড়াল?

আজ মিডনাইটব্লু- কথা বাদ- দিলাম,
কিন্তু যে ফ্লুরোসেন্ট-ব্লু ল্যাম্পটিকে
জোনাকিরা চাঁদের যমজ বলে জানে---

রোদের জীবাশ্ম দেখার পরই তাদের
ভুল ভাঙছে,

অমাবস্যায় কিশোরী ল্যাম্পটি আলো দিচ্ছে...


                                  টেবিলফ্যানের অসুখ

অ্যান্টিপোয়ট্রি লেখার আগেই
টেবিলফ্যানের অসুখ ছড়িয়ে পড়ছে ঘরে
গা-বমি মাথা-ধরা লালচোখ জ্বর সব দেয়ালেই
ছড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর ব্লুপ্রিন্ট

তারই মধ্যে আমি
সিলিংফ্যানটিকে বলছি,সম্রাট অশোক,
তুমি আজ GOOD FATHER অমরেশ পুরি
হয়ে ওঠো

আমি বাড়িয়ে রেখেছি হাত, তুমি তোমার
হাওয়া-মেয়েটির হাত ছেড়ে দিয়ে বলো---
যা সিমরান যা...

আজ ১টা সামার ১০০ সামারের গ্যাংলিডার
হয়ে আমার দারুচিনি ত্বকে ডিটিপি করছে,
মৃত মাছের চোখ আর কুরুক্ষেত্রের
বোমাবাজি

তারই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কমে যাচ্ছে আমার
কলমটির শব্দের বেলুন ওড়ানোর
ইচ্ছা

আমার মগজ পুরো হ্যাং
হবার আগেই, আমি সাওয়ারের নীচে খুঁজে
নিচ্ছি বৃষ্টির যশোদা-বাৎসল্য...

                                          Wi-Fi জোনে শীতকাল     

অনেকগুলো পাসওয়ার্ড বদলের 
পরই Wi-Fi জোনে কুয়াশা পরা শীতকালটিকে
দেখতে পেলাম, আমি চিরদিনই আপেলকে
বড়ো মিঞা আর নাসপাতিকে ছোটো মিঞা
বলে ডেকেছি, কিন্তু তার জন্য ছেঁড়া হাওয়াই-
চটির কোনো সেফটিপিন আমাকে সন্দেহ 
করেনি, আজ আইবুড়ো চশমাটির কাছে চন্দ্র-
গ্রহণের সময় জানতে চাইলাম, কাগজের জঙ্ঘা থেকে মুখ তুলে,
পার্কার কলমটি ইন্টারনেট সার্চের কথা বলল,
আমি ওর কথা শুনিনি, কেননা রাজহাঁসের 
বিপরীতে ময়ূরপঙ্ক্ষী লিখতে আমি ভয় পাই 
না, এখন স্বরবর্ণের সন্ধ্যাহ্নিকের ওপর
দেখছি, আকাশে ১০ কোম্পানি মেঘ, ওই
ননসেন্স মেঘগুলোই সোনালি সাপ ছেড়ে
নিরক্ষর জানালাগুলিকে ঘুম পাড়িয়ে
দিচ্ছে...


                                               নাবিকের রাত্রিলিপি
চুম্বন ফেরানোর অপরাধে ফর্সা দুপুরে
মেঘ নেমে এল, অথচ টেবিলে শীতকাতর
কেকটি বৌদ্ধই আছে, একটা ছুরি-ও ব্রহ্মের
ঠিকানা দিতে পারে, ওরা বলেছিল, ফড়িং
পোষা অপরাধ, বিশ্বাস করিনি, গ্রামোফোনে
বর্ষা শোনার পরই দেখেছি, মাকড়সার মা
হওয়ার স্বরলিপি, আজ ঝি আসেনি বলে
বিছানা থেকে বেরিয়ে পড়েছে কাপ ভাঙার
শব্দ, বিকেল নামার আগেই জিজ্ঞাসাচিহ্নগুলি
দৌড়চ্ছে, নাবিকের রাত্রিলিপিতে কতটা
যাদুবাস্তবতা থাকে,