দীপান্বিতা সংখ্যা
সম্পাদক~সোনালি-এর অণুগল্প
টেকটকটাচ দৈনিক ব্লগ, সাহিত্য hut
গল্পের মধ্যেখানে
গল্পের মধ্যেখানে সেই লোকটা ছিল।
রোগাটে গড়ন , ফালিমত মুখখানায় খোঁচাখোঁচা দাড়ি।
গল্পে একটা মেয়েও ছিল। জাপানি । সুকিতামা । সিল্কের লালনীল জামা পরা।
মেয়েটা চেরিফুলেঢাকা পার্কের রাস্তা দিয়ে মনেস্টারির দিকে যেতেযেতে ভাবে, চোর দেশের বাইরে গেল কি করে? এতবড় মেটালের জিনিসটা।
ইন্টারপোলও ফেল?
কায়রোর ফ্লাইটে লোকটা হিসেব করছিল মনেমনে । এয়ারপোর্ট । ট্যাক্সি । এয়ার বেস , এল-নাসর সালাল-সালেম স্ট্রীট । সোজা গেলেই খান –এল-খালিলি বাজারের চৌহদ্দি । সেই অজস্র রঙ্গিন হুঁকো , গড়গড়া , কাঠের কাজ করা উট , ঘোড়া , পিরামিড , স্ফিংক্স, ইজিপ্সিয়ান দেবদেবী , গয়না , জামা ইত্যাদি ইত্যাদির স্তুপের মাঝে ঢুকে গেলে পকেটে কোহিনূর থাকলেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এত সামান্য পান্নার ড্রাগন।
ইঞ্ছিপাঁচেক সোনার পাতের ওপর একখণ্ড বিরাট পান্নাকে নিখুঁতভাবে কেটে বানানো ।
সাধে এত দাম দিতে রাজি সারা পৃথিবীর কালেক্টাররা ।
মন্দিরের মেজেতে মাথা নিচু করে আকিও, তিরিশ পেরোনো বৌদ্ধ ভিক্ষু। সামনে মনেস্টারির প্রধান সন্ন্যাসী।
“ নিজেকে এত নামিয়ে ফেললে ? টাকার লোভে ? ”
“আমি ভালভাবে বাঁচতে চাই –” মাথা তোলে মরিয়া আকিও।
“ আফ্রিকান-শাখা জানিয়েছে লোকটি মিশরে । বুঝলাম তুমিই অপরাধী ।
ড্র্যাগনকে জাগিয়ে তোলার মহামন্ত্র শিখিয়েছিলাম তোমায় । একটা ছিঁচকে চোরের হাতে তুলেদিলে ?”
মেয়েটা অস্ফুটে বলল, “ ড্র্যাগনকে জাগাবে ?”
“হ্যাঁ । প্রত্যেকবার চেকিঙয়ের আগে নিশ্চয়ই মন্ত্র উচ্চারন করেছে ।জীবন্ত ড্র্যাগন গুটিসুটি থেকেছে সুটকেসে। এক্সরেতে বিশেষ কিছুই দেখা যাবেনা। পরে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।”
“ড্রাগনের ক্ষমতা নেই নিজেকে রক্ষা করার ?”
“আছেনা? সে তো তথাগতের প্রাচুর্যের প্রহরী ।”
লম্বা ফ্লাইটে মিশর পৌঁছেছিল সুকিতামা ।
দেখেছিল কায়রোর ব্যস্ত বাজারের পিছনের মাঠে , জীবন্ত ড্র্যাগনের মুখ থেকে আগুনের শিখা ।
মাটিতে পড়ে রইল পিস্তলহাতে সেই লোকটা ।
আর জাগবেনা ।
ড্রাগন ফিরে গেল সোনার ফ্রেম এ।
সুকিতামা আস্তে সুস্থে মনাস্টেরির নিজস্ব প্লেন এ ওঠে জাপানের দিকে ফিরতে।
তথাগতর সামনে ধ্যানে নিস্পন্দ প্রধান ভিক্ষু।
তিনি নিশ্চিত জানেন ড্রাগন অক্ষত ফিরিয়ে আনবে ছোট্ট মানুষ সুকিতামাকে।
ওঁ মণিপদ্মে হুং


No comments:
Post a Comment