Wednesday, October 6, 2021

শারদীয় সংখ্যা~দীর্ঘ কবিতায় অনিন্দ্য রায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||  দীর্ঘ কবিতায় অনিন্দ্য রায়


অশ্বত্থপাতার রাত

 

অশ্বত্থপাতার রাত, প্যাঁচা উড়ে এল ইহলোকে

এদিকে জ্বরের ঘোরে রুদ্ধদল গুণতে ভুল করি

তবে কি হবে না লেখা? লেখা আর হবে না জীবনে?  

দুচারটে অচল কড়ি চাপা থাকবে বালিশের নীচে?

এসব ভাবনায় আরও হাই ওঠে, জলপটি কপালে

শুকিয়ে এসেছে প্রায়, কাগজের মতো মাথাব্যথা   

 

উঠতে গেলে বিছানায় ঠেলে দেয় ধূর্ত মাথাব্যথা

আর কোনও বন্ধু নেই, শত্রু নেই বুঝি ইহলোকে

আবার তো সে-ই হাত রাখে স্নেহে আমার কপালে

আমিও শিথিল হই, নিজেকে দায়িত্বহীন করি

ঘুম আসে ঘন হয়ে, ঢুকে পড়ি ক্রমে তার নীচে

কখনও একম আগে অভিজ্ঞতা হয়নি জীবনে

 

চাঁদ কি উঠেছে আজ? গাছেগাছে পাতার জীবনে

মুখ উল্টে পড়ে আছে জ্যোৎস্না? ওদিকে মাথাব্যথা

তাকাতে দেয় না আর চোখ মুজে শূন্যতার নীচে

একা শুয়ে থাকি, বাজে কোথাও কি ঢোল ইহলোকে

নাকি ভ্রম সবকিছু! দূর থেকে অনুমান করি

নিজের দুর্বল হাত কোনওক্রমে ঠেকাই কপালে

 

একবার দাঁড়াতে চাই, হলে হোক যা আছে কপালে

এমন সুযোগ আসে হয়তো বা সবার জীবনে  

বাতাস ছাড়া তো নেই কেউ, তাকে আলিঙ্গন করি

এবং সে চুমু খায়, মনে হচ্ছে, কমছে মাথাব্যথা

মনে হচ্ছে, চাঁদ থেকে কেউ নেমে এসে ইহলোকে

প্যারাসিটামল রেখে গেছে কোনও অশ্বত্থের নীচে  

 

নিজের শরীর হাতড়ে খুঁজি সেটা অসুখের নীচে

এক বিন্দু, দুই, তিন... বিন্দু ঘাম জমেছে কপালে

আরোগ্য ছড়িয়ে আছে প্যাঁচাদের চোখে, ইহলোকে  

ট্যাবলেটের মতো ক্ষুদ্র, আগে তবে দেখিনি জীবনে   

নিরাময় মানে আমরা ভেবেছি সেরেছে মাথাব্যথা

তার লোভে জ্বরে পড়ি, তার জন্য কষ্ট ভোগ করি

 

আতিথি বানাই তাকে, দেহমধ্যে যত্নআত্তি করি

আর সে কোশের মধ্যে হিংস্র হয়, চেতনার নীচে

মহাবিস্ফোরণ ঘটে, প্রবল প্রতাপে মাথাব্যথা

অপস্মার হয়ে জাগে হাতে, পায়ে, ঘাড়ে ও কপালে

এমন ঝাঁকুনি, ভাবি, সব চাঁদ ডুবেছে জীবনে

একখানি বিশাল বৃত্ত প্রসারিত ইহলোকে  

 

যথেষ্ট বিক্ষোভ করি, ঘুষি মারি মাথায়, কপালে  

এই যন্ত্রণার নীচে যদি ফোটে কুসুম জীবনে

সেরে যায় মাথাব্যথা, ভোর হয় যদি ইহলোকে

 



1 comment:

Rudra Kinshuk said...

Sestina