Wednesday, October 6, 2021

শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় প্রদীপ চক্রবর্তী

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় প্রদীপ চক্রবর্তী 



দুনিয়াচক্র 

এক .

 মাহুল লতা জড়িয়ে আছে ছায়া 
দলে দলে উড়ে গেলো নীলাভ - বল্মীক 
বন আঁকড়ে পড়ে থাকলে হবে ? 

আলো আঁধারির জায়গা থেকে  শ্যাওলা ভেসে আসে , 
লালায় জড়িয়ে ধীরে ধীরে  গিলে নিতে থাকে , 
ষোড়শী'র ছেনালিকল্পে পঞ্চশরে বিদ্ধ যত অবমানব 
অনেকটা ব্লুমিং ব্লুমিং বুম 
রক্তের খাদ্যাভাবে নড়েচড়ে বসে ক্লোরোফিল ...

লণ্ঠনের শিখাটি হারিয়ে গেছে চিরহরিতের 

অযুত ছত্তীসগঢ়ী কামিন  ,  ঘাসের সদ্য শিশিরে প্রায় ভিজে যাওয়া ভ্রুণ বুনতে বুনতে চলে যাচ্ছে লালবাজারের দরজায় 

কত  ড্যাশ ভেঙে পড়লো  নির্মীয়মাণ নদীর মতো 
নিশি কলুষ কালিমা ভেঙে মায়াবী কোকেন নেশা পাঠায়  বসন্তসেনাদের 
নদীর ছোট ছোট বাচ্চাকাচ্চাকে আড়াল করে 
 উড়ালপুল 
মধ্যবর্তী পাখির মতো দূর থেকে ডেকে ডেকে যাচ্ছে  মেঘপত্রী 

নলকূপ ফুঁড়ে পাইপের রক্ত যেন উঠে না আসে নদীর বুকে 

ভাঙা সেতুর অপার খিলানের শেষ বিন্দু থেকে 
আমাদের ছায়া পড়ে একটা নরম সাদা তোয়ালের মতো 

এই চিহ্নটুকু ছাড়া নিরক্ষীয় গ্রীষ্মের প্রথম রাতে 
তোমার শরীর ডন কসাকের মতো শেখাচ্ছে , মনের নির্মমতা কত সুন্দর !

দুই .

সে - ও হাঁটে অছিলায় | পুরোনো বাড়িতে সন্ধের পর আর অন্ধকার হলো না , চাঁদও উঠলো না |

আজগুবি একটা আকাশ ঝুলিয়ে রাখে  
তার আঠারো মোকামে | 
খননকারীদের হাতের সযত্ন নাড়াচাড়াতেই আটকে আছে শাদা নিথর  দুটো বোতাম | মানুষের  হাড়ের 
তৈরী | 

তিরিশ বছর আগে শেষবার ডেকেছিল যারা আমাকে অনন্ত শকুনির আয়ু উপহার দিয়ে , কোনখানে চলে গেলো তারা ?

এই একটি রাত্রির জন্য তোমাকে ভোজ্য করে উপহার দিলে মেয়ে ! 
প্রজাপতি বাজারে বিশ্বায়ন ফিট না করা অন্ধদের দিকে চেয়ে আছে মূক কুরুরা | 

দ্রবীভূতান্তে দরজা খুলছে প্রাক শীতের বর্ষা | 

হাড়ের পাশা রয়েছে হেলে | শোলার নারী মাংস রক্তমাখা অস্থির মতো ভারী লাগে | 
শুধু এক ফিসফিস গুপ্তঘাতকের , উজ্জ্বল ব্যাকুল মুখচ্ছবি | মরণপণ শ্বাসরোধী | 

হে আচার্য , 
আশরীর ব্যাধিঘোর যার , পাকে - পাকে জড়িয়ে ধরেছে চেরা জিহ্বা ঘিরে লেহনের উদগ্র 
সরীসৃপ | আবার প্রণীত হতে দাও  অন্ধকারে | সুতাশঙ্খ সাপের মতো রক্তের ঘূর্ণায় মিশে যাক  জাদুজীবী বিষ | ব্যবহারপ্রবণ রাক্ষস অলক্ষে বেড়ে উঠুক | নিশীথরমণী খোলো আজ অজস্র হাড়ের মুখ , গুহ্যকেলি , হরেক সেলাই | 

সারমেয়ী , গৃধিনী , শৃগালী আর বায়সী জমেছে ঘরের দাওয়ায় রাত্রিশেষের নীলাভ পাত্রে | যখন খমকের  তাল যখন খিড়কির সমস্ত নিষেধ ,
 নগ্ন ধ্বস্ত হাল্কা ভায়োলেট কোন মানসিক রোগীর ...



3 comments:

Md. Muhaimin Arif said...

কবিতাগুলো কবি'র চিন্তার আকাশে সীমাহীন ঘুড়ি ওড়া যেন।
ভালো লেগেছে।
শারদীয় শুভেচ্ছা।

Sabyasachi said...

একজন লেখকের দীর্ঘ যাত্রায় সে ভাবনার পরবর্তনকে যে ভাবে ভাষার মুখে বোনে সেখানে প্রতিদিন তার চেতনগাড়িতে উঠে তার শানিত জিজ্ঞাসার, অনুভবের তরঙ্গের ধাক্কা নিতে প্রস্তুত হই। তুমি আমাকে বারবার প্রস্তুত করো। যে লেখক চিরন্তন বৃদ্ধি ও ক্ষয়কে উপলব্ধি করে নিজস্ব পথে প্রকাশ করতে পারে সে জিতে নিয়েছে পাঠকমনের দিন ও রাত্রিকে। ভালোবাসা!... সব্যসাচী হাজরা

Debjani Basu said...

বলশেভিক প্রদীপকে এই কবিতা লিখতেই হত। দুনিয়ার রুখু মাটি মাখা এই কবিতা চিরদীপ হয়ে থাকবে।