Wednesday, October 6, 2021

শারদীয় সংখ্যা~প্রচ্ছদে শ্রীমহাদেব

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||  প্রচ্ছদে শ্রীমহাদেব












শারদীয় সংখ্যা ১৪২৮

::  সম্পূর্ণ সূচি ::

সম্পাদকীয় নয় কিন্তু | নীলিমা সাহা | সমীরণ ঘোষ | উমাপদ কর | পিনাকীরঞ্জন সামন্ত | স্বপন রায় | সুশীল হাটুই | রঞ্জন মৈত্র | যাদব দত্ত | অলোক বিশ্বাস | দেবযানী বসু | অভিজিৎ মিত্র | অনিন্দ্য রায় | রুদ্র কিংশুক  | রণজিৎ অধিকারী | প্রকাশ ঘোষাল | সৌমিত্র রায় | Karl Kempton | সুদীপ চট্টোপাধ্যায় | বাদল ধারা | জয়ীতা ব্যানার্জী | চিরঞ্জীব হালদার |  দেবাশিস মুখোপাধ্যায় | প্রদীপ চক্রবর্তী | রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় | সব্যসাচী হাজরা | সুকান্ত ঘোষাল | রণজিত্ পাণ্ডে | বাপন চক্রবর্তী | নীলিমা দেব | বিশ্বজিৎ দাস | অনুপ দত্ত | অনুপ মণ্ডল | উদিত শর্মা | নীলাব্জ চক্রবর্তী | তুলসীদাস ভট্টাচার্য | অভিজিৎ দাসকর্মকার | রুবি রায় |


শারদীয় সংখ্যা~শ্রদ্ধার্ঘ্য

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || শ্রদ্ধার্ঘ্য

সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন-এর শারদীয় সংখ্যা ১৪২৮,উৎসর্গ করলাম কবি বিনয় মজুমদার কে।



বিনয় মজুমদার

১৯৩৪ সালে বর্মার তেডো শহরে। পঞ্চাশের দশকের কিংবদন্তি কবি। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হয়েও সারাজীবন কাটিয়েছেন কবিতার সাধনায়। কবির শেষ জীবন বড়ো দুঃখের, অসুখে-নিঃসঙ্গতায়। মৃত্যুর বছর খানেক আগে তাঁকে দুটি বড়ো পুরস্কার-রবীন্দ্র পুরস্কার এবং সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার দেওয়ায় জাতির বিবেক যেন কিছুটা শান্তি পায়। ষাটের দশকেরপরে অসুস্থতার জন্য কবিতা লেখা কমে গিয়েছিল। মোট কাব্যগ্রন্থ কুড়ির কাছাকাছি, যার মধ্যে ফিরে এসো চাকা তাঁকে সবচেয়ে বেশি খ্যাতি দিয়েছে। জ্যোতির্ময় দত্ত একে 'গুপ্ত ক্লাসিক'বলেছেন। ' মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারসে উড়ে যায়', প্রবাদসম এই পঙ্ ক্তি মৌলিক। তাঁর চোখে, 'গণিত ও কবিতা একই জিনিস'। আমৃত্যু গণিত ও কবিতার দ্বারা তাড়িত। মৃত্যু: ২০০৬ সালে।



শারদীয় সংখ্যা~সম্পাদকীয় নয় কিন্তু

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || সম্পাদকীয় নয় কিন্তু  অভিজিৎ দাসকর্মকার 


সম্পাদকীয় নয় কিন্তু 

আস্তে আস্তে প্রতিকূলতা পার করে সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন-এর সাথে, আজ ৫ম বর্ষে পা রাখলাম এবং ১৪২৮, চতুর্থ শারদীয় সংখ্যা প্রকাশ করলাম ৩৮ জনের কবিতা এবং দীর্ঘ কবিতার বিশাল সম্ভার নিয়ে। যে সমস্ত কবিরা তাদের শব্দ দিয়ে সাজালেন এই শারদীয় সংখ্যা ১৪২৮,তাদের সকলকে আমার এবং পত্রিকার তরফ থেকে অসংখ্য ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানাই।

এই সংখ্যায় থাকছে সেই সব কবিদের কবিতা,যাঁরা শব্দে যুবক এবং অনেকে বয়সেও।এমনকী কবিতাকে প্রতি সময়ই আগের কবিতার রূপের বিবর্তন করে চেলেছেন,অনেকেই হয়তো এই আগের ধারাকে ভেঙে আবার এক নতুন ধারায় কবিতা গড়ার বিষয়টিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা মূলক কবিতা বলে থাকেন।সে যাইহোক,কবিতার বিনির্মাণ হোক বা Experimental Poetry ই হোক সবশেষে যেন কবিতা হয় ওঠে,এটাই আমাদের একমাত্র চেষ্টা হয়ে থাকে।

আর বিশেষ কিছু না। এই শারদীয় সংখ্যা থেকে আমরা নতুনভাবে পথ চলবো, সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন সম্পূর্ণভাবে আমন্ত্রিত সংখ্যা প্রকাশ করবে।তাঁদের লেখা,যাঁরা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে বলার চেষ্টা করবেন,যেন কবিতাকে আগের দিনের ফর্ম বা বাচনভঙ্গিকে কপি পেস্ট না করে স্বতন্ত্র প্রয়াস করবেন তাঁদের লেখা নিয়ে। তাতে কবি শব্দ যাপনে তরুণ হোক বা বয়সের মাপে কবিতা যাপনে তরুণ হোক।

সকলে ভালো থাকুন।সাহিত্যে থাকুন।শারদীয় সময় খুশি খুশি কাটুক,প্রার্থনা করি।


শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় নীলিমা সাহা

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় নীলিমা সাহা


মাধুকরী 


কখনও বর্ষণ কখনও দহন
বহনযোগ্য সহনই জীবন

দাহ্য, সে তো প্রাচীনকাল থেকে অব্যয়
                                হা-খোলা বাতাস 

রোধবতী মনেপ্রাণে জানে এসব

রঙের বেদনা উপছায়----কখনও 
ছদ্মবেশ, কখনও আভরণহীন 

হা চৈতন্য হা বিস্ময় !

মাধুকরী হয়ে থাকে দহনের গান...

২) 

আমি এখন উত্তর-ব্যাকরণের হাত ধরে
    
    আমি  এখন  আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে---

   উঠে পড়ার এই তো সময় ...

  বয়স ক্রমশ বাড়ছে দ্যাখো তোমার - আমার -
 পৃথিবীর, বাড়ছে দূরত্বও

  বিশ্বাস কথা রাখে না--ভোরের না,ইমনেরও না
 
ভাদ্রের হঠাৎ  আলো আর মেঘের কালোঝলক
---শব্দান্তরে বসে থাকা হাইফেন,ওদের 
   সরিয়ে  সংক্ষেপিত আলপথ ডাকে :
    নীল    ইমা..... নী...লি.....মা


শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় সমীরণ ঘোষ

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় সমীরণ ঘোষ
 


হুজুন


দৈত্যের গান যাকে ঝরনা শেখাচ্ছে
সেই তাওয়া 
সঙ্গত করছে হুহু পথিকের লাল
হারানো ঝুমকোর কান যেটুকু শুনছে
খোনা। স্মৃতির বরজ

কোণের আপেল। খাঁখা পোকার ছিদ্রে
বারান্দা কাচের শ্বাস। গলির বেড়াল
মোরগঝুঁটির শিস। সাতনলা। ছবিলা ছবিলা

দৈত্য গানের। ঝরনা বুনছে ধুধু কোপের গোধূলি 


অবান্তর বেগুনি ধুলোয় দৈত্যকে মুছে দেখলাম
এই অভিশাপ
কিন্তু উটের চামড়ার জুতো বালি ফুঁড়ে
বিস্ময়করভাবে চেয়ে

দৈত কী ফিরবে কোথাও। ন্যাতানো গোলক
কাগজের অনাবশ্যক। ফিসফিসে। সন্দেহব্যাকুল

হাড়ের কৃপাণ বালি খুঁড়ে পচা হাওয়াকে তুলছে 
দৈত্য কী ফিরবে
মরুহায়নার ডাক মেঘঅব্দি পৌঁছুবে বলেই
কালো চাঁদ। খেজুরপাতার মই

বালিঝড় হাতে বেদুইন মহড়ার অবান্তর 
লক্ষ্য করছে এক চোখে



মরসুম বসাচ্ছে শীত। সাদা পাঁজরের কুহু 
পাখি-খোঁটা  ছায়ার বিকেল
পোড়া চোলির সন্ধে। বেণীর ইস্পাত 
অপচীয়মান মেয়ে গোধূলিদীর্ঘ

ডাকনাম শিসের রাত্রি। মিউরং। দৈত্যের পুঁথি

টুঁটিচেপা তামার বিদেশ খুলে যায়



শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় উমাপদ কর

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় উমাপদ কর 



শিরোনাম রাখতে হবে এমন কোনও কথা নেই

 

১৯

বেলাশেষ। বেলাশেষে। বেলার শেষ। এসব কিছুই নেই আমার। বেলাবেলি থেকে যাই। থেকে যাব সূর্যকণায় দেহকোষ মিশিয়ে। দুপুরের ঘাড়ে বিকেল আরোহী; বেশিক্ষণ হাঁটতে পারে না দুপুরের শব। বিকেল সরীসৃপ, বুকে হাঁটে, শ্লথ, চায়ের গা-গরমে ব্যায়াম সারে। দুপুর জামা-প্যান্ট বদলে বিকেলের প্রথম ভাগ। গ্রীষ্মে, বর্ষায়, শীতে— যখন যেরকম। চপ্পলও।

বিকেলরও বেলা থাকে। বেলা বেলা এবং বেলা। থাকে নামতার গুণনে। কখনও হেলাফেলা হয় হয়তো মুঠি আলগা থাকায়। জিয়লমাছ হাতের তেলো থেকে পিছলেই যায়, যতই কম জল আর পাঁক হোক। ঘোলায় ঘোলা মিশে আরও ঘোলা। দুপুরের ঘামজল বাষ্প হতে হতে, হতে হতে চশমার কাচে মধু মধু। পাতনের শেষে মহুয়ায় মহুয়া, ম’ম’, ঘুমাঘুম, ঘুমোঘুমো। তাল-খেজুরের রস গেঁজিয়ে ওঠায় সূর্যের কণা কণা ইস্ট। বেলায় বেলায় বেলাতুতো খিদে, টান-টান।

ওয়াশরুমে অডিকোলনে বেলার স্নান, আমি ধুঁধুলের ছোবা দিয়ে শরীর ঘষে দিই। স্বচ্ছ জল ঢেলে সাফসুতরো করে সিংহাসনে বসাই। হৃদয়টা হাট করে খোলা। আমি ওরফে বিকেল বাদী আমিই বিবাদী, আমি সওয়ালকারী আমিই উত্তরদাতা। আমি পান, চুন, কয়েককুচি শুপুরি। বেলার দরবারে খেরোর খাতার সবগুলো পৃষ্ঠা উড়িয়ে আমি বেলাবেলি ঘুমোতে যাই, হতে পারে নিশ্চিন্তে, হতে পারে আশংকা মাথার বালিশ, আর পাশবালিশের তুলোগুলো ওড়ে একটা মশারি নির্মাণপ্রকল্পে।

 



২০


ঘরের আসবাব হয়েই রইলাম বছরভর। একই আসবাবে কতভাবে যে ঘর সাজানো যায়, তার সম্ভাব্যতার কথা তুমি হয়তো জানতে। কিন্তু সুন্দর লাগার ব্যাপারটা তোমাকে ভাবাতো, তোমাকে কিছুটা মৌনী। আমার এসবে প্যায়ারি কোনোদিনই ছিল না, আজও নেই। আজ শুধু চেয়ারে চেয়ার হয়ে বসে থাকি, খাটে শুই খাটের প্রেম-ফাঁদ জড়িয়ে। আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে ভুলে যাই কী করতে হবে! হেসে, আলমারিই আমাকে সমকক্ষ করে সিক্রেট লকার থেকে বার করে দ্যায় জীর্ণ পকেটবুক। কার কাছ থেকে যে লুকোতে চাই! টেবিলটাকে হৃদয় মনে হয়, তাকে বুকে কিংবা মাথায় কিংবা শরীরেই নয়, অন্য কোথাও এক করে নিই।

 

আসবাবের মতো আমারও ঘরেই ঘুরঘুর। মাঝেমাঝে ছেলে ব্লাডপ্রেসার চেক করতে চায়। আমি চেয়ারের হাতলে প্যাড-টা জড়াতে বলি। অক্সিমিটারে আঙুল দিতে বললে, বলি আলমারির হ্যান্ডেলে লাগাতে, একই তো কথা। ফুলদানির ফুল প্লাস্টিকের, জল দিতে হয় না, আমারও স্নান হয় না কতদিন!

 

একসময় বাড়িতে রংদার আসে। সমস্ত কাঠের আসবাব রং হবে। পুরোনোকে নতুনপ্রায়। প্রথমে সাফা, পরে পালিশ। শিরিষকাগজে ঘষলে জ্বলে যাই, বিন্দু বিন্দু রক্তকণা। স্পিরিটে গলানো গালায় পোঁছ মারলে ঠাণ্ডা লাগে আমার, খুব ঠাণ্ডা। রোদে রাখে, আবার পোঁছ, দ্বিতীয়-তৃতীয় দফা। সবশেষে টেবিলটা নিয়ে পড়ে। কী ঘষা, কী ঘষা! শরীরে কিছুই টের পাইনে। পালিশের পর পালিশ, আশ্চর্য, ঠাণ্ডার কোনো গপ্পোই নেই। হৃদয় যে কোথায় থাকে? আমার হৃদয় থাকে কোথায়!

 

শরীরে নয়া দেখনদারি, হৃদয়টা কি পুরোনোই রয়ে যায়!

 



শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় পিনাকীরঞ্জন সামন্ত

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||  কবিতায় পিনাকীরঞ্জন সামন্ত


কুয়াশা


এইমাত্র তারা বসিয়া দু'জনে কিঞ্চিত আলাপ পরিচয়ে বাজাইলো বাঁশি
সঙ্গোপনে আসিল মেঘ ও বৃষ্টি
হরতকি চালে কারা যেন ঘাসের আড়ালে ক্যামেরা সাজাইলো
অস্ফুট ধ্বনিতে ভাসাইলো সুর ও স্বর
খরগোশ বলিল আমি ও তুমি 
তাহারা বলিল প্রকৃতি ও কবি এবং 
যা কিছু নিখিল....অনবদ্য

মায়াবন বিহারীনী সাইরেনে... হাসিল কুয়াশা




ব্ল্যাক হোল ওয়েবজিন

ব্ল্যাক হোল ওয়েবজিনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কবির প্রতিভা.... আর সেই ক্যামেরা থকে বেরিয়ে আসে একজন কবি... অভিজিৎ দাস কর্মকার...
আপাতত 
কবিকে প্রয়োজন নেই, বদলে..... ঐ যে প্রতিভা সম্পর্কে যে চোখ দিগন্ত ছড়িয়ে আছে, 
সেখান থেকেই নেমে আসে যত বিপত্তি
যদিও
এইমাত্র ঘোষিত হলো পিঁপড়েরা সদলবলে আজ কেউ মিছিলে যাবে না....কারণ
মিছিল শব্দটি এখন কোনো আলটিমেট সলিউশন নির্ধারণ করেনা.....।

শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় স্বপন রায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় স্বপন রায় 



যাওয়া 

১.

ব্রিজ বা সাঁকো
দুটো দিকের সেলাই

এক সরে যাওয়া ছোট্ট স্টেশন
রেলের শব্দ মেশানো
যত চাওয়া

সারাংশ পড়ে থাকে
পচে
হিমঘর্ঘর
বা গান
বা এক তিল পাখির রচনা

দুটোদিকেই যাওয়া
আসায় জড়ানো
সেলাই চিক চিক করে 

চাওয়ামাত্রই ছিঁড়ে যায় না
সেলাইগুলো


২.

এটা বললে ওটাও বলা হয়
যাওয়া বাইরে
শরীরেও

পরা আর খোলায়
এটা,ওটা, একটা বাঁক
একগ্রাম কাঁচা-হলুদ রোদ
জুতো
ঢেকে রাখে,খুললেও রাখে

তুমি বললে 
পাখিটা উড়ে গেল

না বললেও,উড়ে যেত
গায়ের গন্ধ নিয়ে
গাঁয়ের ছেলে





শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় সুশীল হাটুই

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় সুশীল হাটুই



নৈঃশব্দ্যের প্রতিধ্বনি

দূর থেকে রোগা শব্দটা
হেঁটে আসছে। আমার চোখে চশমা নেই,
তবু স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি শব্দটার রং।

এ-বছর পেট ভরে বৃষ্টি হলো না,
তাই নৌকোর ঠোঁটে কুহু নেই।
আর মাঠ থেকেও শোনা গেল না,
সবুজ গুঞ্জরন।

রোদের অহংকারের ভিতরেই
আমি দেখছি, থালার জুঁই আর
ফ্যাকেশে জিবের দূরত্ব।

পাহাড়চূড়ায় নৌকাবিলাসপালা
রিমেক হচ্ছে।
পাসবুকে বাঘের ডাক থাকলে সবই সম্ভব।

দেখতে দেখতে শব্দটা আমার সামনে
এসে গেল। দেখছি,
শব্দটার গায়ে আবরণ নেই। তাকে
দেখে নগ্ন শব্দটাও উধাও।

আমি তাকে কবিতার পোশাক পরিয়ে দিলাম।

সে চুপ। তার নৈঃশব্দ্যের প্রতিধ্বনি
ছড়িয়ে পড়ছে আকাশে।



আইসক্রিমবিলাসপালা

মগজের থলথলে ক্যানভাসে
ফুটে উঠেছে ২১টা জিজ্ঞাসাচিহ্ন। এখন
৪ ইঞ্চি কফি খুন করা যেতেই পারে।

বৃষ্টি ঝরছে। এসো বর্ষা। বুমেরাং
হয়ে এলে, আমি তোমার ত্রিভুজে ব্যাংকান্নার
স্বরলিপি খুঁজব না।

ইচ্ছামৃত্যুর কপিরাইট ভীষ্মের
বুকপকেট থেকে চলে গেছে, আপডেটহীন
ডিভানের গর্ভকেশরে।

তাতে আমার কী? আমি শুধু হারিয়ে
যেতে চেয়েছি। ইচ্ছাজন্ম চেয়েছি এক-ঠোঙা
শিহরনের মায়াবী কুঞ্জবনে।

আমার এখনো অক্ষরবৃত্তের স্নানঘর
দ্যাখা হলো না।

আমি কীভাবে ইচ্ছামৃত্যু খুঁজব বলো,
আমার এখনো লাল ঠোঁটে
আইসক্রিমবিলাসপালা দ্যাখা হলো না...


শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় রঞ্জন মৈত্র

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||  কবিতায় রঞ্জন মৈত্র


মটর পনির 

টুকরো টুকরো স্বপ্ন কাটা
দুধসাদা জমায়েতে সবুজ দানারা 
বাকিটুকু চিরন্তন মশলাধারা 
আর থাম্বস আপে সিদ্ধ হচ্ছে 
ক্যাপসিকাম সিদ্ধকাম
ইমোজিতে বদ্ধ রান্নাঘর
তো আমার নয় 
দীর্ঘ সবুজের গায়ে মুখর সঙ্গম 
অখ্যাত ধারা
দানাগুলি মিশে আছে যোনিময় ক্যানভাসে
পদব্রজে দেখা করি 
অক্ষর নাড়াই চাড়াই ঢিমে আঁচে 
স্বপ্নের টুকরোগুলো রঙ মেখে ভাসছে স্রোতায়
রান্নার ইঙ্গিতগুলি বাজি করে অদেখা বাতাসে 
খানা লাগা রে মুসাফির ঝটপট
ভাঁড় মে যায়ে বাকি ট্রাফিক রুলের দুনিয়াদারি
               

নেবুলাইজার

এভাবে জমে যায়
শুকিয়ে আটকে ধরে ঘরেলু প্রণালী
একহাতে রসির নেশা অন্য হাতে আলনাজরি
একটা স্টে শন একটা শব্দ নয়া 
পাতা লাইনের ওপর লাপাতা ট্রেন
খনিটি রয়ে যায় 
বেলচা ও ফিমেল ওয়ার্ড 
কারা হাওয়া হয় 
নতুন ওভারব্রীজ এঁকে ফেলে শ্বাসনালী জুড়ে 
মনে মুখ থাকে না যে 
মুখে ফার্নেস ও কুলিং প্ল্যান্ট
নরম হয়ে আসছে চোখ 
জল করো জল করো 
নতুন শিশুর মতো হেঁটে যাবে নিঃশ্বাস ও নেশাড়ু 
                


শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় যাদব দত্ত

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় যাদব দত্ত 


দীর্ঘসুত্রতা 

ছবি ভাসিয়ে কেউ একজন ডাকছে 
বুকে যা গড়েছো এবার তা দিয়েও তুমি ডাকবে
তোমার মুখের থেকে বেশি জোর এই আলোর 
পথের ধারের কাঁটাগাছ ফু দিয়ে পিছনে ফেলবে 
চমৎকার আসছে যেনে শান্ত বাদাম গাছ কেঁপে
                                কেঁপে উঠলো তাহলে 

আতাগাছে  চালতাগাছে আর কথা নেই 
রোদের নরম পা এখন কেবলই উড়ুউড়ু 
চাইচাই চোখ জল ছড়াচ্ছে আকাশে আর হবে না
ওর শিশির এত সরল দাঁড় করানো যায় 
কেউ বলবে না হাতে হাত রেখেই দুর্বাঘাস হলো 
এঁটো মুখেই অহ্লাদ হলো দিনের প্রথম ফকির 
এই চারকোনা বাতাসে হাঁসের হলুদ পা পেরয় 
বুকের ষোলোআনা সব গানেই ঢুকে যায় 
নিরিবিলিতে ঘুম থেকে আবার ওকে তোলো 
দিনের সমস্ত জট ছাড়ানো ভাতের থালায় 
        

রিখ্টার স্কেল  

দুমদুম এদিক থেকে গিয়ে ওদিকে ফেরা নয় 
মাথার ওপরও গুড়গুড় করে ডাকছে
                                 কাদের ঘরের মেঘ 
চোখ থেকে কষ্টগুলো নামিয়ে রাখতে চাই 
ফুলতোলা চাদরের ভেতর বনের দরোজায় 
সিড়ির শরীর মন এখনো চকচক করে 
রাত পোহালো সরে আসা বলুক মনোভাব 
গালে টোকা দিয়ে ঘুমের নিস্পত্তি হোক 
মহুয়া গাছের মতো টুকটুকে ফুল পড়ুক 
একটু হেলে পড়া দিনের পর দিন দিয়েছো 
জল তবু তোমার এতো মাথা গরম কেন 
বাসকফুলের ইঞ্জিন ধার নাও 
টিয়ার ঝাঁক উড়ে গেলেও কেউ খুঁজে 
                            পাবে না বকবকম 
বাঁশির ফুটো তার চোখ এখনো টনটন 
সকালের ট্রেনে নামলো যে বউরিপাখি 
তার হাবুডুবু হলুদজল কে আর কতটা দেখলো 
পিপাসা ফস্কে যাচ্ছে  স্ক্রাপবুকে 
তবু চমৎকার ধরে রাখো ছায়া কলসি  


শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় অলোক বিশ্বাস

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় অলোক বিশ্বাস


বর্ণালী ঢাবা 

পোকাভর্তি কলমিশাক। পুরনো মাছভাজা। পাঁচমিশালি ডাল। দু'দিনের বাসী তরকারি। খুঁটিতে ধুকন্ত পাঁঠা। সব খাবারে ডালডার গন্ধ। নতুন ধরণের খিস্তাখিস্তি। অশ্লীলতার সংকরায়ন। ঝুলন্ত ক্যালেন্ডারে অর্ধনগ্ন নায়িকা। দুই মদ্যপ খেতে খেতে লিঙ্গ চুলকাচ্ছে। আকন্ঠ খিদের ড্রাইভার বিরক্ত ঢাবার অধর্মে। কিছু কাস্টমারের দেহে নয়া উপনিবেশবাদের চিহ্ন। মালিকের মেজাজে দাস ব্যবসার ইতিহাস। রাঁধুনিরা উনুনকে দোষ দিচ্ছে। টেবিলে উসখুসানো আরশোলা। সমস্ত গ্লাস নোংরা। মালিক ধমকাচ্ছে কাজের মেয়েকে। ঝাড়ুদার ধমকাচ্ছে মাছিকে। রুটি ফুলছে না আগের মতো। ভাত ফুটলেও নরম হচ্ছে না। মুরগী সরবরাহকারী পাওনার জন্য যাচ্ছেতাই ভাষা ছুঁড়ছে। মালিক ভাবছে পেছন ঘরে দু'চারজন উচ্চস্তনের বেশ্যা রাখবে। বিক্রি বাড়বে। লুকিয়ে চুরিয়ে বোতল বেচবে। হঠাৎ কোরে পঙ্গপাল ঘিরে ফেলছে। অভূতপূর্ব মেঘ আসছে। তোলাবাজ দলের সম্ভাবনা আছে। রাত্রে ঢাবাকে শিয়ালেরা দখল নেবে, পুরোহিত বলছে। বর্ণালী ঢাবা প্রত্যেক অঞ্চলে খুব পরিচিত...


বাজার অর্থনীতি 

প্রবহমান পারিবারিক কুয়াশা। ব্রা থেকে অবিরত দুর্গন্ধ। সারা বাড়ি ইঁদুর বিড়ালের গু-তে ভরা। স্তনের রেখায় মাছের আঁশ। স্তনের ভিতরে উড়ছে ধূসর বাদুড়। প্যান্টের পকেট ভর্তি পোড়াবাড়ি। স্যানিটারি ন্যাপকিনে কাক বসছে। কিচেনে ছুটছে বিদেশি মাকড়সা। বেসিনে নার্কোটিক মাখা শুকনো লালথুতু। কাজের মেয়েটা বিদেশি লিপস্টিক মেখেছে। পরিবারের মেয়েটা ডুবছে ব্ল্যাকহোলে। রাত্রে কেয়টিক ঘুম । ঘুমের আগে উল্টোপাল্টা চিন্তা। রাত্রে  বাগানে অস্থির পদশব্দ। বায়োলজিক্যাল যুদ্ধের কানাকানি। চিন্তাগুলো কার্নিশ পেরিয়ে কানাগলিতে হারিয়ে যাচ্ছে। পুরনো চিন্তার জায়গায় অন্য চিন্তা উঠলেও বাক্সবন্দি পেটেন্টে ফেঁসে যাচ্ছে। বিদেশি ওষুধে আর কাজ হচ্ছে না। ডাক্তারকে বলবো, ওষুধের পরিবর্তে অন্যকিছু দিতে। একই ওষুধ কতো বছর চলছে। ওষুধের ওপর অ্যালগি। অন্যকিছু পেলে হয়তো উল্টোপাল্টা চিন্তা থেকে মুক্ত হবে ভাতের হাঁড়ি...


শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় দেবযানী বসু

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় দেবযানী বসু 


শুভাকাঙ্খীরা ভালোবেসে 'জটিলা' ননদিনী 

জটিল জটিলতায় লতায় সুড়সুড়িপাতারা বেড়ে উঠছে না।
ফাইভ জির পরমান্ন ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছে দেবতা ও অসুরেরা মিলে। দু দলেরই ফার্স্ট গিয়ারে চলা ডাইনোসর। ঘুমে শুধু গড়িয়ে পড়ি খাদে। তেত্রিশ কোটি দেবদেবী সুদে আসলে বেড়ে জীবনবিমার টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের লিঙ্গে যোনিতে পরমাণু বোমা ফাটে রোজ। বারো হাত দেবতার তেরো হাত লিঙ্গ নিয়ে পথশোভা। জেলেরা চাষীরা জলে মাঠে কাজ করে লকডাউনের মানে বোঝে না। ব্রক্ষ্মার ন্যাংটো আত্মীয়রা খবরে খবরে কবরে কবরে খবরদারি করে।কপালে দুলালী দালালী সিঁদূর টিপ। বলির সম্পদ হতে চেয়ে চারণযোগ্যদের চিহ্নিত লাল দাগ পিঠে বয়ে বেড়ায়।





শুভাকাঙ্খীরা ভালোবেসে কুটিলা ননদিনী

ভিতর শরীরে স্বর্ণ চাপা দেখেছি। ক্রিয়াপদের কেন্নোমার্কা পদ।তাই ভর করে হাসপাতাল যাত্রা। তারপর শাটার টিপে আকাশ নামিয়েছি। বিশুদ্ধ সৌন্দর্য রতি রতি মেপে ঘিলুতে বসিয়ে নেওয়া। শরীর থেকে শরীরের দূরত্ব কিছুই না। তারো বেশি ঘিলুর দূরত্ব। সৎ কানামাছি কাউকে ভুল করে ছোঁয় না। পাতা দাও। আসন বানিয়ে নেব। সাগরজল ভেঙে জাহাজবাতি হারিয়ে গিয়েছে। বাঙালি বাঙালি করে হেদিয়ে মরছে হেদুয়ার জলে শ্রয়ডিঙ্গারের ব্যাঙ। গরমাগরম সিঙাড়া ছবি। মাল ছড়ানো মালদাভিস। মাল আমি পুরুষকেও বলি। গভীর সমুদ্রে স্তনের পার্শ্ববর্তী পেশিতে ফ্ল্যাপিং শক্তির রমরমা। রমণীয় রমণ শব্দটি ধাতব ল্যুমিনাকে তুলি বুলিয়ে চলেছে। রঙই শেষ কথা মেনে নিলে হাত তোলো।



শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় অভিজিৎ মিত্র

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় অভিজিৎ মিত্র 



নির্বোধ পঁচিশ

আকাশে এখনো ভাইরাসের গন্ধ
আগুন জ্বলবে
কোথায় দাঁড়িয়েছি বুঝিনি
পেটে রুটির স্বাদ মনে নেই
অক্সিজেন থমকে আছে
শুধু জানি রঙের মিছিলে আমার অধিকার
এ জন্ম কবে কখন হেঁটে ভ্যানিশ হবে
কোনদিন জীবাণুর আদিম থাবা ঘাড়ের ওপর
ধীরে ধীরে শক্ত হচ্ছি
এ জীবনে প্রশ্বাস ছাড়া কিছু চাই না
হঠাৎ শ্বাসহীন আগুন জ্বলবে
আমি আমরা দেখব না
অফুরান চুল্লী লাইন লম্বা হতে হতে দিল্লি অব্ধি
ভোর হলনার দেশে রাজার নীতি নয়
লাইনে লাশ দাঁড়াবে
একশ চল্লিশ কোটির আমি
ভাইরাসের হাতে মুখোশ-হীন ওটু-হীন
বৈশাখের কবিতাখাতা তুলে দিচ্ছি
একশ বছর পরেও সেই কবিতা
হয়ত কেউ কেউ পঁচিশ


পঁচিশের পর বাইশ

পঁচিশের পর যখন বাইশ আসে
আকাশ মুখভার করেছে
বাঁকানদী ডুবিয়ে দিয়েছে অর্ধেক বর্ধমান
দেওয়াল খসে খসে মাটির আধলা
আর আমি জবাকুসুম বলার আগেই
চারপাশ ডেল্টা ঘিরে ধরছে
এক চাপা আতঙ্ক
সবাই ডেল্টা চিনতে চায়,
যে দেশে ভ্যাকসিন নেই
শুধু মাইলখানেক লম্বা কুচকুচে মন কি বাত
ডেল্টা বই খুলে খাতা খুলে
ডি-বাই-ডিএক্স মাপতে শুরু করেছে
আস্তে আস্তে হাসপাতালের গলিতে দেখছি
লুডোর ছক্কা সাপ-মই ফুল-পঞ্জিকা
আর আকাশ জুড়ে অফুরন্ত বাণী
আমি রবি ঠাকুর শিখছি

জানি বাইশ এলেই
সে
মাঝরাতে আকাশের মেঘবাগানে
মিয়া কি মল্লার বাজায়
মুখভর্তি মুখোশের দাগ