Thursday, January 30, 2020

এবার আমরা শুনবো আপনার কথা, আপনার কবিতা

সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস... দ্বিতীয় বর্ষ। তৃতীয় প্রয়াস ।

এবার আমরা শুনবো আপনার কথা।আপনার কবিতা। 
সুব্রত পণ্ডিত
সারা জীবন সাইকেল করে গৃহশিক্ষকতা করে চেলেছেন।কোন সুহৃদ প্রকাশক এখনো এগিয়ে আসেন নি তার কবিতা নিয়ে কাজ করার জন্য।
আমরা শোনাবো তাঁর না বলতে পারা কথা।আর পৌঁছে দেবো সকল পাঠকের কাছে।
আজ " আমরা শুনবো আপনার কথা আপনার কবিতা "-য় থাকছে কবি সুব্রত পণ্ডিতের কথা। বিষ্ণুপুর। বাঁকুড়া।










নমস্কার সুব্রত দা।
---আরে এসো এসো।
কেমন আছেন?
---ভালো গো। তুমি কেমন আছো?
ভালো আছি দাদা।
আপনিতো জানেন, সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিনের সম্পাদক অভিজিৎ দাসকর্মকার। " এবার আমরা শুনবো আপনার কথা, আপনার কবিতা "---- এই বিষয়টি নতুন সংযোজন করেছি। আপনার সাথে কিছু বলবো। আমরা পৌঁছে দেবো সকল পাঠকের কাছে।

১)  আপনি কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছেন?  আপনি কোন পেশার সাথে যুক্ত ? 

➤ আমি ইতিহাস নিয়ে M.A করেছি। জানোই তো ভাই আমি বরাবরই গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। 

২) কীভাবে কবিতায় এলেন?

➤ আবেগ ছাড়া সৃজনশীল সৃষ্টি হয় না। সমাজ-সংসারের বৈষম্য, আত্মকেন্দ্রিকতা, স্বার্থপরতা, সংকট, প্রেমহীনতা, প্রতিবাদ, একাকিত্ব প্রভৃতি ব্যক্ত করার তাগিদেই কবিতায় এসেছি।

৩) আপনি কবে থেকে কবিতা লিখছেন বা সাহিত্যের সাথে যুক্ত?

➤ ১৭-১৮ বছর বয়স থেকেই কবিতা লিখছি।এখনো লিখে চলেছি।

৪) আপনার প্রথম লেখা বা কবিতার কী নাম, কোন পত্রিকায় প্রকাশিত?

➤ প্রথম কবিতার নাম স্মৃতির মধ্যে নেই, তবে মনে আছে কান্তি হাজরা সম্পাদিত জনপ্রিয় কাগজ 'অভিযান' পত্রিকায় প্রথম আমার কবিতা প্রকাশ পায়। অবশ্যই 'সৈনিক' ছদ্মনামে। 

৫) যদি কবিতা বা সাহিত্যে না থাকতেন তবে আপনি কোন বিষয় নিয়ে থাকতেন?

➤ কাবিতা বা সাহিত্যে না থাকলে আমি খেলাধূলা নিয়ে থাকতাম।

৬) আপনার কবিতা জীবনে কার অবদান সবথেকে বেশি? 

➤ আমার কবিতা জীবনে বন্ধু মনিকা বিশ্বাসের অবদান সবথেকে বেশী।

৭) আপনার কাছে কোন ধরনের কবিতা বেশি প্রাধান্য পায়?

➤ যেসব কবিতায় অন্যায়ের প্রতিবাদ আছে, যেসব কবিতা মানুষকে ভালবাসতে শেখায়,  যেসব কবিতা মানুষের সংকীর্ণতা ও নীচতার সমালোচনা করে--- সেই সব কবিতা আমার কাছে প্রাধান্য পায়।

৮) আপনার প্রিয় কবিতার বই কোনটি, যা নিয়ে আপনার ভাল না লাগা সময়গুলো কাটিয়ে নিতে পারেন? 

➤ ভালো লাগা কাব্যগ্রন্থ অনেকগুলি। তবে রবীন্দ্রনাথের গীতবিতান পড়ে আমি অনেকটা সময় কাটাতে পারি।

৯) আপনি তো প্রায় ৩০ বছর সাহিত্যের সাথে যুক্ত। বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন কবিদের সাথে আপনি মিশেছেন। আমি শুনেছি চারনকবি বৈদ্যনাথ এবং বিকাশ দাস এনাদের সাথে আপনার ঘনিষ্ঠতাও ছিলো বেশ। এই সময়গুলোর কথা যদি আমাদের পাঠকদের জানান।

➤ প্রায় তিন দশক সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত। বহু কবি সাহিত্যিক  আমাকে ভালোবাসেন।বর্ষীয়ান কবিরা স্নেহ করেন, আর তরুণ কবিরা শ্রদ্ধা করেন।এটা বড়ো প্রাপ্তি।
        আমি চারণকবি বৈদ্যনাথের জীবনীগ্রন্থ ' একটি প্রচ্ছদ পটের গল্প'-র অনুলিখন করেছি দু-বছর যাবৎ। এরও আগে তাঁর চিঠি-পত্র ও কবিতার কপি করেছি বহুবছর ধরে। জীবনের শেষপর্বে চারণকবি বৈদ্যনাথ গ্লকোমায় ভুগছিলেন। ওনাকে সাহায্য করতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ। যখন লিখতে যেতাম তখন খাওয়াতেন।গান শোনার জন্য আমাকে বেশ কিছু ক্যাসেট ও নিজের টেপরেকর্ডার দিয়েছিলেন। দু-বছর পূজোতে জামা কিনে দিয়েছিলেন।তখন আমার বিশেষ জামা-প্যান্ট ছিল না।ওঁর সঙ্গে বাঁকুড়ায় বিভিন্ন কবি সম্মেলনে গেছি।অমন এক বিখ্যাত কবির সান্নিধ্য পাওয়া সৌভাগ্যের। তবে আক্ষেপ, চারণকবি বৈদ্যনাথের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় আমার থাকা হয়নি।
      আর কবি বিকাশ দাস,অসাধারণ মানুষ।মাঝে মাঝে আমার ভাড়াবাড়িতে হঠাৎ হঠাৎ চলে আসতেন। সঙ্গে কোন না কোন খাবার কিংবা বই আনতেন।আমাকে দিতেন।কবিতা শোনাতেন ও আমার কবিতা শুনতেন।বাড়ি করার পর গৃহপ্রবেশের দিন এসেছিলেন শুভেচ্ছা জানাতে। এর কিছুদিন পরেই তিনি প্রয়াত হন।

১০) এখন কবিতায় অনেকেই সিম্বল, ইকুয়েশন এমনকি খিস্তিও ব্যবহার করছেন।এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী?

➤ সময়ের সঙ্গে সব কিছুই পরিবর্তনশীল। কবিতাও যে বিভিন্ন দিকে বাঁক নেবে সে আর অবাস্তব কি? উত্তর আধুনিক কবিতায় সিম্বল, ইকুয়েশন, খিস্তি ইত্যাদি আসতেই পারে।তবে শর্ত হল 'কবিতা' হতে হবে।তা যেন কখনোই কবিতার নামে শ্লোগান বা ধারাভাষ্য হয়ে না ওঠে।চেতনায় আঘাত করাটাই আসল কথা।

১১)  আচ্ছা দাদা আপনি কেন কবিতা লেখেন?

➤  ব্যক্তিগত দুঃখ -বেদনা, আঘাত, অপমান, ভালোবাসা-- প্রকাশের মাধ্যমে আমার কবিতা।নিজের কথা বলতে গিয়েই হয়তো কখনো কখনো সমষ্টির হয়ে যায়।আমার তো বলার মতো স্ট্যাটাস নেই,বহু উপেক্ষিত মানুষ। তাই নিজের পরিচয়কে মর্যাদা দিতে কবিতা লিখি।এছাড়া অন্য বিষয়ে আমি অক্ষম। 

১২) আপনি কি কোনো সাহিত্য সংস্থার সাথে যুক্ত ? তার নাম? 

➤ আমি 'চারণকবি বৈদ্যনাথ সাহিত্য আকাদেমি ', 'নজরুল চর্চা কেন্দ্র ', ' বিবেকানন্দ স্টাডি সার্কেল', 'গণতান্ত্রিক লেখক-শিল্পী সংঘ' ইত্যাদি সাহিত্য সংস্কৃতি মূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছি।

১৩) আপনার লেখা main streem -এর তবুও শব্দবন্ধের দিক থেকে কিছুটা আলাদা। অনেকে আপনার কবিতাকে ধারালো কবিতা বলে। আপনার এ বিষয়ে মতামত যদি আমাদের বলেন---

➤ আমার কবিতা কেমন, সে ব্যাপারে পাঠক-পাঠিকার মতামতই গ্রহনযোগ্য।  এ ব্যাপারে গর্ব করার কিছু নেই। বরং আত্মসমালোচনা করতে ভালোবাসি।তাই কবিতা লেখার পর তরুণ কবিদের কাছেও পরামর্শ নিয়ে থাকি। আলোচনা করি। এখনো অনেক কিছু শেখার আছে, শিখছি।

১৪)  বিষ্ণুপুরের কোনো কবিকে নিয়ে কাজ করেছেন?  সে কবির নাম কী এবং কী কাজ করেছেন? 

➤ বিষ্ণুপুরের কবিদের নিয়ে তেমন কাজ কী আর করেছি। বিশেষভাবে কাজ করেছি চারণকবি বৈদ্যনাথকে নিয়ে। তাঁর জীবন ও সাহিত্য নিয়ে বেশ কিছু প্রবন্ধ ইতিমধ্যে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অপ্রকাশিত কিছু লেখাও রয়েছে।গবেষণার সুযোগ থাকলে ডক্টরেট হোতে পারতাম। কবি-সাংবাদিক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে লেখা প্রবন্ধের বই 'স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় : সৃষ্টি ও স্রষ্টা ' ২০১৯-এ প্রকাশিত হয়েছে। কবি বিকাশ দাস, বিল্বমঙ্গল গোস্বামী ও কার্তিক ঢক্-এর কবিতা নিয়ে সামান্য লেখালেখি করেছি।

১৫) আচ্ছা সুব্রত দা আপনি কী বিষ্ণপুর নিয়ে কোন কাজ করেছেন?  কী ধরনের কাজ করছেন যদি পাঠকদের জানান। ভালো লাগতো---

➤ বিষ্ণুপুরের 'সাহিত্য-সংস্কৃতি ', 'মন্দির টেরাকোটা', 'লোক-সংস্কৃতি' বিষয়ে ক্ষেত্র সমীক্ষাধর্মী বেশ কিছু কাজ করেছি। সে সব লেখা বেশ উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক মানিকলাল সিংহকে নিয়েও একাধিক প্রবন্ধ লিখেছি ও প্রকাশিতও হয়েছে। সংস্কৃতি কর্মীর দায়বদ্ধতা থেকে এসব কাজ করি। 

১৬) বিষ্ণুপুর, বা বিষ্ণুপুরের আসেপাশে কবি, বাঁকুড়া শহরের কবিদের তো পড়েছেন। এনাদের কবিতা আপনার কেমন লাগে?

➤ বাঁকুড়ার রবি গঙ্গোপাধ্যায়, ঈশ্বর ত্রিপাঠী, আলোক মণ্ডল, অনিন্দ্য রায় প্রমুখের কবিতা ভালো লাগে।আর বিষ্ণুপুরের চারণকবি বৈদ্যনাথ, বিকাশ দাস, বিনয় মিশ্র, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুশীল হাটুই, নির্মল রায়, দেবব্রত রায়, প্রদীপ কর, বিল্বমঙ্গল গোস্বামী, কার্তিক ঢক্ প্রমুখের কবিতা ভালো লাগে।
      অভিজিৎ,  তুমিও ভালো লিখছো।আমি তোমার শব্দ-বিন্যাসে আশ্চর্য হয়ে যাই।

১৭) আপনিতো লেখা লিখি করেছেন প্রিন্ট পত্রিকাতে। এখন বিভিন্ন webmag ও সাহিত্য জগতে বেশ ভালো কাজ করছে। এই ২টি ভিন্ন মাধ্যমকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

➤ প্রকাশনার খরচ বেশি। ফলে সার্কুলেশন খুব বেশি হয় না। কিন্তু ওয়েবম্যাগের মাধ্যমে সহজে বেশি সংখ্যক পাঠকের কাছে পৌঁছানো যায়। এটা একটা ভালো দিক।কিন্তু বই, পত্র-পত্রিকা প্রকাশের গল্পটাই আলাদা। দুটো এক্কেবারে আলাদা দিক। আমি বেশি প্রিন্ট পত্রিকাই পছন্দ করি।


১৮)  এখন অজস্র কবিতা লেখা হচ্ছে।বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশও হচ্ছে। কিন্তু তারপর আর কবিতাগুলির হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না।আপনার মতে এর কারণ কী? 

➤ সংবেদনশীল কবিতা মানুষকে টানবেই। কবিতার মধ্যে মায়া থাকতে হবে। কবিকে হোতে হবে সৎ। তাহলেই কবিতার পাঠক কবিতা মনে রাখবে।  এখন বহু অ-কবিতা লেখা হচ্ছে। কবিতার পাঠক আজও আছেন।  এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।


১৯) চারিদিকে কবিতার জন্য বিভিন্ন ম্যাগাজিন, সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে কবিদের সম্মান জানানো হচ্ছে। এতে কি কবিতার উন্নতি হচ্ছে?  এটাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

➤ স্বীকৃতি বা পুরস্কার কবি-সাহিত্যিকদের সামাজিক দায়বদ্ধ করে। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হলো বহু সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এখন বিষয়টিকে ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন।ফলে যোগ্যতাহীন ব্যক্তি খেতাব অর্জন করছেন, কিংবা লবির জোরে স্বীকৃতি আদায় করে নিচ্ছেন। এ রকম ছল-ছাতুরি বা প্রতারণা চলতে থাকলে সাহিত্যের ক্ষতি হবেই। অসৎ, অসামাজিক লোকেরাই এসব করেন।তাঁদের জন্য ধিক্কার জানাচ্ছি। 
      চারণকবি বৈদ্যনাথ কিংবা বিকাশ দাসের মতো মহান কবিরা প্রাপ্য স্বীকৃতি পেলেন না।অথচ এলেবেলে লোক পুরস্কার পেয়ে যাচ্ছেন!  আমি এই ভণ্ডামিকে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু আমার কথায় কাজ হবে কী?...

২০) দাদা আপনিতো দীর্ঘদিন সাহিত্যে আছেন।প্রতিদানে আপনি কী পেয়েছেন? 

➤ আমি সাহিত্যের সব বিভাগেই বিচরণ করি। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ লিখি।ক্ষেত্র সমীক্ষা যেমন করি, তেমনই বহু নৃত্যনাট্য,  গীতিআলেখ্য 'বলাকা', ' চারণকবি বৈদ্যনাথ আকাদেমি' -প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে প্রচারিত হয়েছে। সেই সূত্রে অনেকগুলি বেসরকারি পুরস্কারও পেয়েছি। শুকতারা পত্রিকা আয়োজিত গল্প প্রতিযোগিতায় আমি আন্তঃকলেজ প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছি।পেয়েছি 'অনামী' সাহিত্য পুরস্কার ২০০৪-এ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর' ও 'যুব কল্যান দপ্তর', এমনকি পৌর ছাত্র-যুব উৎসবে বহুবার কবিতা ও প্রবন্ধ লিখে পুরস্কৃত হয়েছি।এছাড়া পাঠক পাঠিকা ও সহযাত্রীদের ভালোবাসা তো পাই-ই।অন্ততঃ আমাকে কেউ খারাপ চোখে দেখে না।এটাই আমার গৌরব।তবে কোনদিন কারো তাবেদারি করিনা।সাংস্কৃতিক কর্মী হিসাবে কাজ করি।

২১) আপনি কি বিশ্বাস করেন কবিতা লিখে সমাজের পরিবর্তন সম্ভব?

➤ বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কবিতা লিখে সমাজের পরিবর্তন সম্ভব নয়। কারণ, মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। এতো সিনেমা,সিরিয়াল মানুষ দেখছেন, কিন্তু তাদের মধ্যে স্বার্থপরতা,সংকীর্ণতা মানুষকে অপমান করার প্রবনতাকে কমাচ্ছে কই? আবার সাহিত্য জগৎ দ্বিধা বিভক্ত। বিশ্বাস হারিয়ে গেছে।একে অন্যকে কুপোকাৎ করার জন্য কৌশল আঁটছে।এমন এক অস্থির সময়ে বড্ড বিষাদে দিন কাটছে। আমি রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ মতাদর্শে বিশ্বাসী। সব সময় পজেটিভ ভাবনা নিয়ে চলি।তাই মনে হয় একদিন মানুষ ভুল বুঝতে পারবেন।

২২) কবিতা লিখতে এসে আপনাকেও নিশ্চয়ই অনেক প্রতিকূলতার স্বীকার হতে হয়েছে? আমাদের পাঠকদের সতর্কতার জন্য কিছু বলুন।

➤ জীবনে প্রথম দরকার অর্থ-রোজগারের মতো কাজ, দ্বিতীয় প্রয়োজন পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং তারপরে সাহিত্য-সংস্কৃতি। তবেই এগিয়ে যাওয়া যাবে।
     আমার জীবনটাই পরিকল্পনাহীন। বহু উপেক্ষার মধ্যে দিন কাটাতে হয়েছে।তাই ৩০ বছর সাহিত্যের অঙ্গনে থেকে কিছুই করতে পারিনি।আর কোন শুভানুধ্যায়ী প্রকাশক আমার গ্রন্থ প্রকাশের জন্য এগিয়ে আসেন নি।এ জন্য আমার কোন ক্ষোভ নেই। প্রতিদিন ১৪-১৬ ঘন্টা টিউশন করে সংসার চালাই।কারো কাছে সাহিত্যের জন্য মাথা নিচু করবো না।

২৩)  আমাদের এবং সকল পাঠকদের কাছে আপনার বার্তা---

➤ আজকাল পাঠক সমাজ অনেক বেশি সচেতন।তবে বলি নিজের প্রতি সৎ থাকলে, সামজিক দায়বদ্ধতা থাকলে, অনেক ভালো কাজ করা যায়।
       এতো দীর্ঘ সাক্ষাৎকার এর আগে কেউ নেয় নি।তোমাকে অভিনন্দন অভিজিৎ। আমি চিরকালই আড়ালে থাকতে ভালোবাসি।আজ তুমি আমাকে উন্মুক্ত করে দিলে।
ধন্যবাদ সকলকে।ধন্যবাদ সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন।
এগিয়ে চলুক তোমার এই প্রয়াস অভিজিৎ। 

সুব্রত পণ্ডিত -এর কবিতা---

অ্যালবাম

জোড়া দেয়া কাচের দেয়ালে
আমরা দুই বৃদ্ধাশ্রম-যাত্রী ডলার ভাঙিয়ে ভাঙিয়ে
          ফেরি করি ড্রিমল্যান্ড-বাতি...
এক গুচ্ছ নোনা ঢেউ ভেজা শালিকের ভাঙা বাসায়
ঝরে ঝরে পড়ে।

পেড়ে আনি নষ্ট-চাঁদ।

তোমার রক্তস্রাব আর আমার ক্লান্ত স্বেদ
দর্শনীয় অ্যালবাম হয়ে ওঠে।



সার্কাস

প্যারিফ্যাশন কার্ডিগান স্কীনে ভেসে উঠতেই
পৃথিবীর বদলে যাওয়া দেখি।

মুর্খ মাছ খেলা করছে অ্যাকোরিয়ামে...

সার্কাস দেখতে আসে অভিনয় জড়িয়ে আসা
যৌনরাতের বাটিক- প্রিন্ট প্রজাপতিরা।


প্রজনন পর্ব

ট্রাপিজিয়াম ঘুড়িটি উড়তে উড়তে
হেভেন গার্ডেনে হাত বাড়ায়,
অন্য একটি ফিস ঘুড়ি তার স্বপ্ন খেয়ে ফ্যালে।

ডারউইন সাহেব থিসিস বের করতেই
একটি লাটাই স্বপ্ন ছাড়তে থাকে...

মাছেদের এখন প্রজননকাল চলছে।


ধন্যবাদ সুব্রত দা সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন  সকল পাঠকের তরফ থেকে আপনার ব্যস্ত সময়ের থেকে আমাকে এবং আমাদের পাঠকদের জন্য সময় বের করে আপনার মনের না বলতে পারা কথাগুলো আমাদের জানালেন। আমরা পৌঁছে দেব আপনার কথাগুলো সকলের কাছে।ভালো থাকবেন। এই ভাবেই সাহিত্যে থাকবেন। ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা রইল আপনার জন্য...

No comments: