Monday, July 20, 2020

|| স্বপন রায়-এর দীর্ঘ কবিতা ||

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যালহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
|| দ্বিতীয় বর্ষ ||














স্বপন রায়

উপকবিতা-৫


আমি অনেকক্ষণ, তুমি কিন্তু নেই, তুমি পাল্লা খুলে ডেকেছিলে, তুমি কখন যেন  চ’লে গিয়েছ
পাল্লা খোলার শব্দে আর কিছু হোক বা না-হোক, কুকুরটা ডেকে উঠেছিল
এইচ.এম.ভি’র কুকুরটা
কুকুরের কাছেই ড্রপ খাচ্ছিল বৃষ্টি, আর আমি এসেছিলাম                              
আমার গায়ে ট্রেনের দাগ, তুমি মেঘে মেঘে চেরা রফি, কিশোর, মান্না দে’কে জানতাম, বিট্‌লস জানতাম না, সেই তখনকার কথা কুকুর যখন ডাকতো
তুমি বলেছিলে, আসলে কাঁদছে ও, ওর মালিকের শোকে কাঁদছে, আমি টিকিট’টা ছুঁড়ে ফেলতে ফেলতে ভাবি, শ্রমিকরা কেঁদেছিল?
এসে এসে বসন্ত এনেছিলাম। গিয়ে গিয়ে বর্ষা। তুমি পাল্লা খুলে ডেকেছিলে বর্ষার পাল্লা খুলে একদিন ডেকেছিলে তুমি
ট্রাকের নিচে একটা চিৎকার ফট্‌ করে লম্বা হয়ে গেল, খুব বৃষ্টি, ধুয়ে যাওয়া দাগের দিকে তাকিয়ে, খোলা ছেত্‌রে যাওয়া কোন কিছুর দিকে তাকিয়েআমি কেঁদে উঠিনি
কোনদিনও ডেকে উঠিনি...

উপকবিতা-৬

নদীর পাশে শহর, শহরের পাশে নদী হয়না। শহরে কেউ ডাকলে, নদীর জল থেকে সামান্য ছলাৎ সেই ডাকে, আর শীতসাজানো ঝরাপাতার পাতার তার

তারে ব’লে দিও, তার আর পর নেই, তারে আমি চোখে দেখিনি
ছাদে ছাদে মেলা
গান ভাবলে গান, বা চোখের কোণ দিয়ে দেখা ভাবলে বিদ্যুৎ চমকিয়া যায়
শহরের পাশে নদী তো
তো, জল জলছবি হয়ে বিকেল পেরোলে উলেন চাঁদ ওঠে
ছাদে ছাদে পামীর মালভূমি

ডাক খুলে, না প’ড়ে বিলিয়ে দিই, শুকনো হাওয়ায় কি যেন হয়
কি ভাবে যেন হয়
যেন হয়
হয়
পাতা, শাখা, প্রশাখা, ডাল, গুঁড়ি, শিকড়

তুমিরা

উপকবিতা-৭

কিছু হলে একটা কিছুই হয়, আর দুটো পাখি ওড়ার ফাঁকে
না-হওয়া ফাঁকটুকু
দরজার

আমি আসি, কিন্তু বলিনা
দেরী মাখা জিভে কথা আর বলা হয়না
আজান ভাসে
শাঁখের আহ্বান ওড়ে
‘তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার’
এইতো সময়
বলার
তুমি বা পাখি আর দরজার বাদামি রঙ
সন্ধ্যা হয় যখন
তখন সন্ধ্যাই তো হয়
দরজার ফাঁকে আটকে থাকে খুব ভয় পাওয়া চাউনি

ধর্মত...

উপকবিতা-

কিছু না বলার বাহানা এই দেয়াল। চরাচর গাঁথা, তাই পোস্টারে কাঁপছে নায়িকার ভেজা নাক, বৃষ্টি হয়েছিল, চুরুটের গন্ধ, কে যেন জ্বালাবার সময় ব’লেছিল, দেখা হবে। নায়িকার চোখও ভেজা।

আমি আজ যাবো। বা কাল মরে যাবো। তাহলে পরশু দাঁড়িও, দেয়ালে সামান্য হেলান দিয়ে, নায়িকাবিলোপ ক’রে তুমি, চোখের জল সেতো ওষুধে কাজ করছে, তোমার চোখের চেয়ে আর কি ওষুধ আছে যে সেই চুরুট ধরানো গম্ভীর লোকটাও অন্যমনস্ক হবেনা?

লোকটা কী বিপ্লবী, লোকটার কী হাঁপানি আছে?

দেয়ালে যেমন থাকে আকাশ, আঠা লাগানো, ফ্যাকাশে, আমি কিছু রোব্বারও রাখি সেখানে।মানে ছুটি। পালতোলা নৌকো, পাল্কি’র ইঙ্গিতথাকি বা না থাকি, রেখো আমায়, এক আঁজলা জল, এক পশলা বৃষ্টিতে

পরশু হয়ত চুরুটের গন্ধ মিশবে, দাঁড়িও কিন্তু। দুপাট্টা মেলে দিও কিন্তু, মেলামেশার জন্য...

উপকবিতা-

বৃষ্টিবদল হয়। রাস্তা যদি দূর, তো বদলে যাওয়া গায়ে আগুন লাগে। বৃষ্টি নেভায় না। আগুন আর তন্দুর খুব কাছাকাছি। তন্দুর থেকে কারখানার ভোঁ, আরো কাছে।যাতায়াতের পথগুলো এখন পুড়ছে, বৃষ্টি জড়িয়ে।

এর ভেতরেই কোথাও গ্যাসের বাতি ছিল, সন্ধ্যায় জ্বালানো হত। অনেকদূরে কোথাও গ্যাসচেম্বার, এরা ভাইবোন নয়, বাতি আর চেম্বার। এদের বাবা, মা এক। মানুষ।বানাতে বানাতে বৃষ্টিও গল্প হয়ে যায়

তার গায়ে আগুন লাগে। ফোন বাজছে হারিয়ে যাওয়া টেলিফোনের আতঙ্কে।বৃষ্টির মা মেঘ চিৎকার করছে

হাসছে রোদ, একফালি মেঘলা ছিঁড়ে



7 comments:

Unknown said...

মন ভরে গেল

jewel mazhar said...

Good poems

SOUMANA DASGUPTA. said...

খুব ভালো লাগল স্বপনদা। মুগ্ধ...

SOUMANA DASGUPTA. said...

খুব ভালো লাগল স্বপনদা। মুগ্ধ...

swapan roy said...

ধন্যবাদ

swapan roy said...

ধন্যবাদ

swapan roy said...

ধন্যবাদ