|| সাপ্তাহিক ব্ল্যালহোল ওয়েবজিন ||
|| ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...|| || দ্বিতীয় বর্ষ ||
১) আপনি কবে থেকে কবিতা লিখছেন বা সাহিত্যের সাথে যুক্ত আছেন? কিভাবে কবিতা লেখায় এলেন?
➤
আমি শূন্য দশকের। ২০০৫ সাল থেকে চর্চা শুরু করেছিলাম ঘরে বসে।২০০৬ এ কৃত্তিবাস প্রকাশন থেকে 'দেবযানীর স্বীকারোক্তি' নামে একটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়। এর আগে কখনো কোথাও কোনো পত্রিকায় লিখি নি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে সরাসরি তখনো দেখিনি। বই কবিতা পড়েছি। কবিতার পান্ডুলিপি দেখে ওনার পছন্দ হওয়ায় প্রকাশ করেছিলেন। ব্যস। এতে করে আমার আত্মপ্রত্যয় বেড়ে যায়। এবং ধীরে ধীরে কবিতা জগতের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হতে থাকে।তখন আমি চল্লিশোর্ধ্বা সংসারী নারী। একটি একান্নবর্তী পরিবার থেকে বসবাস উঠিয়ে ফ্ল্যাটবাড়িতে উঠে আসার পর সামান্য সময় নিজের করে হল। কিশোরী বেলার লেখা কবিতা ও গল্প যা কিনা খাটের তলায় অবহেলায় জমানো ছিল কোথাও প্রকাশিত হয় নি সাহিত্যের দন্ত্য স টুকুও ভুলে গেছি সেগুলো নাড়াচাড়া করতে করতে কবিতা লেখার ইচ্ছেটা চাগাড় দিয়ে ওঠে। আর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছি বলে ফ্লাটের অধিবাসীরা দুর্গাপূজার সময় সুভেনিয়ার বার করবে বলে কবিতা চাইত এবং আমাকে লিখতে হত। অতএব এই হল কিভাবে কবিতা লেখায় এলাম।
৯) আচ্ছা দেবযানী দি এখনতো অনেক তরুণ কবিরা ফেসবুক এবং বিভিন্ন ওয়েবজিন, প্রিন্ট পত্রিকা সব জায়গায় লিখছে।এদের মধ্যে অনেকের লেখা বেশ পরিনত। এমনকি এগিয়ে থাকা।এদের এই কবিতাগুলো পড়ে আপনার কী মনে হয়?
➤ পশ্চিমবঙ্গের শূন্যদশক প্রথমদশকের কবিদের কবিতা ততটা সম্ভব পড়ি। বূদ্ধদেব হালদার জুবিন ঘোষ সৈকত ঘোষ বিশ্বজিত অর্থিতা মন্ডল রাহুল গঙ্গোপাধ্যায় শীলা বিশ্বাস তানিয়া চক্রবর্তী এরকম অনেকেরই কবিতার সঙ্গে পরিচিত আমি। অলোক সরকার তাবিক পত্রিকা করেন। অনুপম মুখোপাধ্যায়ের বাক পত্রিকা পড়ি। এগিয়ে থাকাটা ভালো ব্যাপার। এদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ তো নিশ্চয় উৎসর্গকৃত প্রাণ হবে কবিতার জন্য। ক্রমশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলা কবিতাকে একটা সর্বগ্ৰাহ্য রূপ দেবেন। বাংলাদেশের অরবিন্দ চক্রবর্তী আরেকটি উল্লেখযোগ্য নাম। সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল পত্রিকাও বেশ শক্তিশালী পত্রিকা। শ্রেয়ন রায়চৌধুরীর নিবিড় পত্রিকা একটি এগিয়ে থাকা পত্রিকা। প্রতিশ্রুতিবান ও প্রতিভাবান কবিরা কবিতায় দীর্ঘদিন ধৈর্য ধরে চর্চা করে গেলে সাহিত্য জগৎ লাভবান হবে বৈকি। আসলে কবিতায় দুএকদিনে সাফল্য আসে না।বাঃ কৃতি কবি হওয়া যায় না। আবার জীবনের খেলায় অনেক কৃতি কবি অলক্ষে থেকে যান। আমি কোথাও হতাশার জায়গাগুলোকে পাত্তা দিতে চাই না। হঠাৎ আলোর ঝলকানিতে পিছলে যাওয়া নয় একাগ্ৰ হয়ে কবিতাযাত্রা এখনকার তরুণরাই করে দেখাবে। গল্পরসসমৃদ্ধ ঘনঘটনাময় কথা ও কাহিনীমন্ডিত কবিতা না লিখলেই ভালো। কবিতার স্বাভাবিক চরিত্র থাকবে অবগুণ্ঠনময়। অনেকে আবার এটাকেই ফুলিং গ্ৰাউন্ড ধরে নেন।
➤জোর যার মুল্লুক তার সেটা অর্থনৈতিক কি রাজনৈতিক কি সব ক্ষেত্রে একইরকম। সবই স্বজনপোষন আর টাকার খেলা। ভালো মানুষের পোয়েদের দিন গিয়াছে। ক্ষমতাবান কবিদের আচরণ চোখ রাঙানি এসব থাকবেই। তারা কাকে কখোন মাথায় তুলবেন কখোন পিঠ চাপড়াবেন আর কাকে এড়িয়ে যাবেন তা বোঝা দুঃসাধ্য। কবিতাকে কেন্দ্র করে লোভ দ্বেষ হিংসা ক্যাওস ল্যাং মারামারি চামচাগিরি চিরকাল ছিল আর থাকবেও। তবু তো কবি খুন আর রাঁবোর মত গোলাগুলির ব্যাপারটা চলে না বাংলার কবিদের মধ্যে।প্রতিভা খুঁজতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের কাছাখোলা অবস্থা। তোমায় সামনে পেয়েও খুঁজে বেড়াই মনের কানাগলি। এই যে একদল পুরষ্কার দিচ্ছে মঞ্চে হুড়োহুড়ি করছে এটাকে সদর্থে নেওয়াই ভালো। প্রাণ আছে। আমরা সজীব আছি এটুকু অন্তত প্রমাণিত হয়। ভষ্মে ঘি ঢালতে ঢালতে আগুনেও ঘি ছিটকে পড়বে একদিন। তবে একেবারে আনকোরা কাঁচা তরুণ কবিদের পুরষ্কার দেবার ব্যাপারে সময় নিলে ভালো হয়। এ সম্পর্কে দ্বিমতের অবকাশ নেই।
২০) কবিতায় জটিলতা এবং দূরুহতা এই বিষয়ে আমাদের পাঠকদের কিছু বলুন দিদি_____
➤ কবিতা শিল্প হিসেবে সবসময়ই জটিল এবং কুটিল গতির। সব কবির এবং পাঠকের রসোপলব্ধির স্তরভেদ থাকে। আজ যা জটিল আছে কাল তা নাও থাকতে পারে। কখনো কখনো অভিধান ব্যবহার করতে হতে পারে। কারণ আমরা সবাই সব শব্দের সঙ্গে পরিচিত নই। আবার কোনো কবিতা সামগ্ৰিকভাবে বোধগম্য হল না। এতে অনেকের অসুবিধা হয়। ধরুন চর্যাপদ একসময় কি ভীষনভাবে দুরূহ ছিল। কবিতা গিলে খাবার জিনিস নয়। কোনো একটা কবিতার কিছুটা চেতনায় ঝিলিক মারলেই সেই কবিতা সফল কবিতা। আর কবিতা লেখার শৈলীতে মারপ্যাঁচের দরুন দুরূহ হলে সেই ধরনের কবিতা নিয়ে আলাপ আলোচনা চর্চা চলতে পারে। তাতে করে শক্ত গিঁট খুলে যাবে।
➤পাঠককূল আছে? এই পত্রিকার সঙ্গে পরিচয় না হলে জানতাম না। অনেক মেইনস্ট্রিমের কবি আমাকে বলেছেন এভাবে লিখে জনগণের কাছে পৌঁছতে পারবে না। আমেরিকার এক কবি হালে পানি না পেয়ে সাহিত্য সম্পর্কে তেড়ে সমালোচনা করে এক প্রবন্ধ লিখলেন( ক্যান পোয়েট্রি ম্যাটার?) গানা জোইয়া। ঐ প্রবন্ধটি তাকে কবি খ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনি গ্ৰামে গঞ্জে তেলি মুদি কৃষক সবার কাছে পৌঁছে গিয়ে ঘুরে ঘুরে কবিতাপাঠ সেমিনার করছেন। আমি গৃহপালিত প্রাণী অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত জনপ্রিয় হবার রাস্তায় হাঁটতে পারলাম না। জনগণকে কিছু না দিয়ে তাদের কাছে প্রত্যাশা করা অপরাধ। মাসস্কেলে ইমেজ তৈরি করা হয়ে উঠেনি। এখন তো বিদায়ের সময় এসে গেছে। নতুন প্রজন্মের কবিরা অশেষ ধৈর্য নিয়ে কবিতায় থাকুন এটুকুই বলব।
|| ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...|| || দ্বিতীয় বর্ষ ||
|| এবার আমরা শুনবো আপনার কথা আপনার কবিতা ||
আজ "এবার আমরা শুনবো আপনার কথা আপনার কবিতা"-য় থাকছেন কবি দেবযানী বসু।দেবযানী বসু শূন্য দশকের কবি। দিদির লেখা বরাবরই চলমান ধারার বাইরে। দেবযানী দি আমাদের সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিনের দ্বিতীয় সংখ্যা থেকেই আমাদের সাথে রয়েছেন।
নমস্কার দেবযানী দি।
--- আরে এসো এসো অভিজিৎ।
আমি অভিজিৎ দাসকর্মকার,আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিনের নতুন যে বিষয় প্রতি মাসে ১০ তারিখ বের করছি "এবার আমরা শুনবো আপনার কথা আপনার কবিতা ",সেই বিষয়েই আপনার সাথে কথা বলার জন্য এসেছি।
কেমন আছেন দিদি?
----- দেখছি তো।বেশ সুন্দর কাজ করছো।
--- আরে এসো এসো অভিজিৎ।
আমি অভিজিৎ দাসকর্মকার,আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিনের নতুন যে বিষয় প্রতি মাসে ১০ তারিখ বের করছি "এবার আমরা শুনবো আপনার কথা আপনার কবিতা ",সেই বিষয়েই আপনার সাথে কথা বলার জন্য এসেছি।
কেমন আছেন দিদি?
----- দেখছি তো।বেশ সুন্দর কাজ করছো।
হ্যাঁ গো।ভালো আছি।
দিদি আপনার কাছে আমাদের কিছু প্রশ্ন আছে। আপনি যদি আপনার ব্যস্ত সময় থেকে আমাদের ওয়েবজিনকে ও আপনার পাঠকদের জন্য আপনার কথাগুলো বলেন।
----- নিশ্চয়ই।বলো।
দিদি আপনার কাছে আমাদের কিছু প্রশ্ন আছে। আপনি যদি আপনার ব্যস্ত সময় থেকে আমাদের ওয়েবজিনকে ও আপনার পাঠকদের জন্য আপনার কথাগুলো বলেন।
----- নিশ্চয়ই।বলো।
১) আপনি কবে থেকে কবিতা লিখছেন বা সাহিত্যের সাথে যুক্ত আছেন? কিভাবে কবিতা লেখায় এলেন?
➤
আমি শূন্য দশকের। ২০০৫ সাল থেকে চর্চা শুরু করেছিলাম ঘরে বসে।২০০৬ এ কৃত্তিবাস প্রকাশন থেকে 'দেবযানীর স্বীকারোক্তি' নামে একটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়। এর আগে কখনো কোথাও কোনো পত্রিকায় লিখি নি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে সরাসরি তখনো দেখিনি। বই কবিতা পড়েছি। কবিতার পান্ডুলিপি দেখে ওনার পছন্দ হওয়ায় প্রকাশ করেছিলেন। ব্যস। এতে করে আমার আত্মপ্রত্যয় বেড়ে যায়। এবং ধীরে ধীরে কবিতা জগতের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হতে থাকে।তখন আমি চল্লিশোর্ধ্বা সংসারী নারী। একটি একান্নবর্তী পরিবার থেকে বসবাস উঠিয়ে ফ্ল্যাটবাড়িতে উঠে আসার পর সামান্য সময় নিজের করে হল। কিশোরী বেলার লেখা কবিতা ও গল্প যা কিনা খাটের তলায় অবহেলায় জমানো ছিল কোথাও প্রকাশিত হয় নি সাহিত্যের দন্ত্য স টুকুও ভুলে গেছি সেগুলো নাড়াচাড়া করতে করতে কবিতা লেখার ইচ্ছেটা চাগাড় দিয়ে ওঠে। আর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছি বলে ফ্লাটের অধিবাসীরা দুর্গাপূজার সময় সুভেনিয়ার বার করবে বলে কবিতা চাইত এবং আমাকে লিখতে হত। অতএব এই হল কিভাবে কবিতা লেখায় এলাম।
২) যদি কবিতা বা সাহিত্যে না থাকতেন তবে কোন বিষয় নিয়ে থাকতেন ?
➤ এই প্রশ্নটি আমাকে করার উপযুক্ত প্রশ্ন নয়। আমি জীবনের এক তৃতীয়াংশ পার করে কবিতা লেখা শুরু করেছিলাম। আমি অনেক কিছু নিয়ে থেকেছি। সাঁতার, যোগব্যায়াম, সাইকেল চালানো, গান গাওয়া, পরীক্ষামূলক রান্নাবান্না , সন্তানপালন, ভ্রমণ ইত্যাদি। এখন কবিতা থেকে চলে যেতে পারি। বা যেতে হবে। পড়াশোনা নিয়েই থাকব যেমন আছি। খুব সাধারণ একজন গৃহবধূ। মাই স্কাই ইজ লিমিটেড। শিয়রে বয়সজনিত নানা বাধাবিঘ্ন।
৩) আপনার কবিতা জীবনে কার অবদানকে সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেন ?
➤ এইভাবে কেউ একজন শ্রেষ্ঠ অবদানকারী থাকে কী? তাহলে তো প্রথমেই বলতে হয় পারিবারিক অবদানটাই শ্রেষ্ঠ। আবার কবিতার জগতে অনেক কবি সাহায্য করছেন।তবু সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেব আশির দশকের কবিদের। প্রভাত চৌধুরী কবিতায় হাতেখড়ি করিয়ে দিয়েছিলেন।আর কবিতা ক্যাম্পাসের অলোক বিশ্বাস বইপত্রপত্রিকা পড়তে দিয়ে প্রচুর সাহায্য করেছেন। কবিতা লেখাতেও সাহায্য করেছেন।এটাই কবিতার পথ চলায় উল্লেখযোগ্য একটা দিক।
৪) কোন কবিদের লেখা আপনার পছন্দের? বা এমনও বলতে পারেন আপনার কাছে কোন ধরনের কবিতা বেশি প্রাধান্য পায়?
➤ ভাষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা মূলক কবিতা বেশি ভালো লাগে। তবে সেটাও শেষ কথা নয়। আবেগঘন কবিতা না হলেই হল। চিন্তায় মননে একটু বুদ্ধিদীপ্ত প্রকাশ ও রসময়তা থাকলেই মনের কাছে গ্ৰহণযোগ্য হবে। খুব তরল অবস্থার কবিতা পছন্দ নয়। সে সব তো এতদিন লেখা হল। ক্যান্ডিড ছবির মত। অ্যাবস্ট্রাক্ট ছাড়াও ভাষার অন্তর্লীন সূক্ষ্ম কারুময়তা ভালো লাগে। গল্প বলে বলে কবিতা লেখার কোনো মানে হয় না। ভাষা থাকবে সাম্প্রতিক। ভাষা সম্পর্কে কোনো ছুঁৎমার্গিতা থাকবে না। আবার বেদম ইংরেজি শব্দের ব্যবহারও ভালো লাগে না। কবির আসল পরিচয় তার কল্পনাশক্তির প্রাখর্যে। এ একেবারে মহাকাব্যের যুগ থেকেই চলে আসছে। শব্দের চমক থাকুক রান্নার ফোড়নের মত। পঞ্চাশের দশকের বারীন ঘোষাল একটি নতুন পথ দেখিয়েছেন শব্দ ব্যবহারের। এই সব করতে গিয়ে ব্যতিক্রমী কবিদের দল দূরতম নির্জন দ্বীপ হয়ে যাচ্ছেন জনগণ থেকে। দেরিদার বিপরীতে গিয়ে অ্যান্টি দেরিদা তত্ত্ব গড়ে উঠেছে। বৈদেশিক হাওয়া আমাদের কবিতায় মডিফায়েড হয়ে স্থানলাভ করেছে। কবিতার ভিতর অনবরত ভাষা ও ভাবনার পারমুটেশন কম্বিনেশন চলতে থাকে। কেউ শব্দ ভাঙতে ভয় পান কেউ শব্দ ভাঙাভাঙিতেই আত্মস্থ হয়ে আছেন। কবিতায় ভাষা নিয়ে স্পোর্টসম্যানশিপ খারাপ চোখে না দেখাই ভালো। আমাদের হাতে যে সব অস্ত্র আছে তার সুকৌশলী ব্যবহারেই কবিতায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা যাবে।
➤ এই প্রশ্নটি আমাকে করার উপযুক্ত প্রশ্ন নয়। আমি জীবনের এক তৃতীয়াংশ পার করে কবিতা লেখা শুরু করেছিলাম। আমি অনেক কিছু নিয়ে থেকেছি। সাঁতার, যোগব্যায়াম, সাইকেল চালানো, গান গাওয়া, পরীক্ষামূলক রান্নাবান্না , সন্তানপালন, ভ্রমণ ইত্যাদি। এখন কবিতা থেকে চলে যেতে পারি। বা যেতে হবে। পড়াশোনা নিয়েই থাকব যেমন আছি। খুব সাধারণ একজন গৃহবধূ। মাই স্কাই ইজ লিমিটেড। শিয়রে বয়সজনিত নানা বাধাবিঘ্ন।
৩) আপনার কবিতা জীবনে কার অবদানকে সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেন ?
➤ এইভাবে কেউ একজন শ্রেষ্ঠ অবদানকারী থাকে কী? তাহলে তো প্রথমেই বলতে হয় পারিবারিক অবদানটাই শ্রেষ্ঠ। আবার কবিতার জগতে অনেক কবি সাহায্য করছেন।তবু সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেব আশির দশকের কবিদের। প্রভাত চৌধুরী কবিতায় হাতেখড়ি করিয়ে দিয়েছিলেন।আর কবিতা ক্যাম্পাসের অলোক বিশ্বাস বইপত্রপত্রিকা পড়তে দিয়ে প্রচুর সাহায্য করেছেন। কবিতা লেখাতেও সাহায্য করেছেন।এটাই কবিতার পথ চলায় উল্লেখযোগ্য একটা দিক।
৪) কোন কবিদের লেখা আপনার পছন্দের? বা এমনও বলতে পারেন আপনার কাছে কোন ধরনের কবিতা বেশি প্রাধান্য পায়?
➤ ভাষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা মূলক কবিতা বেশি ভালো লাগে। তবে সেটাও শেষ কথা নয়। আবেগঘন কবিতা না হলেই হল। চিন্তায় মননে একটু বুদ্ধিদীপ্ত প্রকাশ ও রসময়তা থাকলেই মনের কাছে গ্ৰহণযোগ্য হবে। খুব তরল অবস্থার কবিতা পছন্দ নয়। সে সব তো এতদিন লেখা হল। ক্যান্ডিড ছবির মত। অ্যাবস্ট্রাক্ট ছাড়াও ভাষার অন্তর্লীন সূক্ষ্ম কারুময়তা ভালো লাগে। গল্প বলে বলে কবিতা লেখার কোনো মানে হয় না। ভাষা থাকবে সাম্প্রতিক। ভাষা সম্পর্কে কোনো ছুঁৎমার্গিতা থাকবে না। আবার বেদম ইংরেজি শব্দের ব্যবহারও ভালো লাগে না। কবির আসল পরিচয় তার কল্পনাশক্তির প্রাখর্যে। এ একেবারে মহাকাব্যের যুগ থেকেই চলে আসছে। শব্দের চমক থাকুক রান্নার ফোড়নের মত। পঞ্চাশের দশকের বারীন ঘোষাল একটি নতুন পথ দেখিয়েছেন শব্দ ব্যবহারের। এই সব করতে গিয়ে ব্যতিক্রমী কবিদের দল দূরতম নির্জন দ্বীপ হয়ে যাচ্ছেন জনগণ থেকে। দেরিদার বিপরীতে গিয়ে অ্যান্টি দেরিদা তত্ত্ব গড়ে উঠেছে। বৈদেশিক হাওয়া আমাদের কবিতায় মডিফায়েড হয়ে স্থানলাভ করেছে। কবিতার ভিতর অনবরত ভাষা ও ভাবনার পারমুটেশন কম্বিনেশন চলতে থাকে। কেউ শব্দ ভাঙতে ভয় পান কেউ শব্দ ভাঙাভাঙিতেই আত্মস্থ হয়ে আছেন। কবিতায় ভাষা নিয়ে স্পোর্টসম্যানশিপ খারাপ চোখে না দেখাই ভালো। আমাদের হাতে যে সব অস্ত্র আছে তার সুকৌশলী ব্যবহারেই কবিতায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা যাবে।
৫) আপনার প্রিয় কবিতার বই কোনটি, যা নিয়ে আপনি আপনার ভাল না লাগা বা অবসর সময়গুলো কাটিয়ে নিতে পারেন?
➤ আসলে এভাবে একজনের কোনো কবিতা বইতে মন আটকে থাকে না। প্রিয় কবিতার বই একটা কি করে হবে।অবশ্যই গীতবিতানের কথা মনে পড়বে সর্বাগ্ৰে। জীবনানন্দ দাশ, বিনয় মজুমদার এবং অমিতাভ মৈত্র , প্রভাত চৌধুরী, মলয় রায়চৌধুরী, ধীমান চক্রবর্তী, অলোক বিশ্বাস , প্রণব পাল, স্বপন রায়, উমাপদ কর তথা আশির দশকের প্রথাবিরোধী সব কবি, এবং প্রদীপ চক্রবর্তী, রিমি দে , গোলাম রসুল, রুদ্র কিংশুক এদের কবিতা আকর্ষণীয় মনে হয়। এমনকি শূন্য দশকের কবিরাও আমার প্রিয় কবি। তাদের থেকেও শিখি প্রচুর।
বি. দ্র. আমার অবসর সময় বলে কিছু নেই। সব সময় সংসারে নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে একের পর এক কাজ করে যেতে হয়। এ ভাবে এর মধ্যেই দুদশক ধরে কবিতা নিয়ে সামান্য ব্যস্ত আছি।
➤ আসলে এভাবে একজনের কোনো কবিতা বইতে মন আটকে থাকে না। প্রিয় কবিতার বই একটা কি করে হবে।অবশ্যই গীতবিতানের কথা মনে পড়বে সর্বাগ্ৰে। জীবনানন্দ দাশ, বিনয় মজুমদার এবং অমিতাভ মৈত্র , প্রভাত চৌধুরী, মলয় রায়চৌধুরী, ধীমান চক্রবর্তী, অলোক বিশ্বাস , প্রণব পাল, স্বপন রায়, উমাপদ কর তথা আশির দশকের প্রথাবিরোধী সব কবি, এবং প্রদীপ চক্রবর্তী, রিমি দে , গোলাম রসুল, রুদ্র কিংশুক এদের কবিতা আকর্ষণীয় মনে হয়। এমনকি শূন্য দশকের কবিরাও আমার প্রিয় কবি। তাদের থেকেও শিখি প্রচুর।
বি. দ্র. আমার অবসর সময় বলে কিছু নেই। সব সময় সংসারে নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে একের পর এক কাজ করে যেতে হয়। এ ভাবে এর মধ্যেই দুদশক ধরে কবিতা নিয়ে সামান্য ব্যস্ত আছি।
৬) আপনিতো ৯০ দশক থেকে লিখছেন । আপনার কবিতা main stream থেকে অনেকটাই আলাদা । আপনি ক্যানো main stream থেকে বেরিয়ে লিখছেন দিদি ? যেখানে আবহমান বা main stream এ লিখলে তো অনেক নাম ডাক সম্মাননা এমনকি পুরস্কারে বাড়ি ভর্তি হয়ে যায় । এই বিষয়ে কিছু বলুন দেবযানী দি---
➤ আবার বলছি আমি শূন্য দশকের। আসলে মেইন স্ট্রিম ব্যাপারটা কি আমি জানতাম না। আমি অন্ধের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম কবিতা লিখতে। আমার পুঁজি ছিল ঐ স্নাতকোত্তর বিদ্যা আর একটা কবিমন। পাথরচাপা ছিল লেখার আকাঙ্খা। আবহমানকালের কবিতার সংঙ্গে পরিচয় হল কবিতা প্রতিমাসে আর কবি সম্মেলন পত্রিকার মাধ্যমে। ঐভাবে লিখতাম। কিন্তু কোনো ইন্টারেস্ট পাই নি সমান্তরাল প্রচলিত কবিতা পড়ে। পঞ্চাশের দশকের সৃষ্ট ধারাবাহিক কবিতা পড়ে। একা একা আচমকা বইমেলায় প্রভাত চৌধুরীর স্টলে ঢুকে পড়লাম।কবিতাপাক্ষিক টিমের সঙ্গে পরিচয় হল। জার্নিটা প্রভাত চৌধুরী শিখিয়ে দিলেন। বলতে পারেন মেনস্ট্রিমের বাইরেই কবিজন্মের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হল।
হ্যাঁ ঠিক বলেছেন। মেইন স্ট্রিমে থাকলে এতদিনে হয়তো পুরষ্কার প্রাপ্তি ও খ্যাতি হত। খ্যাতি পাব এই চিন্তাও মাথায় স্ট্রাইক করে নি তখন। প্রভাত চৌধুরীর পোস্ট মডার্নিজম আর নতুন কবিতার কবিদল মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। আমি আমার কবিতার দিকচিহ্ন নিয়ে ঠিক আছি। কোনো আফশোস নেই। নিজস্ব আইডেন্টিটি তৈরিতে আমার খামতি যেন না থাকে।
পুরষ্কারের জন্য আমার কোনো লোভ নেই। ও সব পেলেই বা কি না পেলেই বা কি কিচ্ছু আসে যায় না। আমি অল্পবয়স্ক নই যে ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভয় পাবো। কেউ কবি বলে গ্ৰাহ্য করবে না ভেবে নিজের পছন্দের লেখার পথ ত্যাগ করব । লেখার আনন্দে লিখি। আর খামখেয়ালি মানুষ। যে দিন ইচ্ছে হবে লেখা বন্ধ করে দেব। আর তা ছাড়া কি এমন লিখলাম যে পুরষ্কার আশা করব সেটা সরকারি হোক কি বেসরকারি।
➤ আবার বলছি আমি শূন্য দশকের। আসলে মেইন স্ট্রিম ব্যাপারটা কি আমি জানতাম না। আমি অন্ধের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম কবিতা লিখতে। আমার পুঁজি ছিল ঐ স্নাতকোত্তর বিদ্যা আর একটা কবিমন। পাথরচাপা ছিল লেখার আকাঙ্খা। আবহমানকালের কবিতার সংঙ্গে পরিচয় হল কবিতা প্রতিমাসে আর কবি সম্মেলন পত্রিকার মাধ্যমে। ঐভাবে লিখতাম। কিন্তু কোনো ইন্টারেস্ট পাই নি সমান্তরাল প্রচলিত কবিতা পড়ে। পঞ্চাশের দশকের সৃষ্ট ধারাবাহিক কবিতা পড়ে। একা একা আচমকা বইমেলায় প্রভাত চৌধুরীর স্টলে ঢুকে পড়লাম।কবিতাপাক্ষিক টিমের সঙ্গে পরিচয় হল। জার্নিটা প্রভাত চৌধুরী শিখিয়ে দিলেন। বলতে পারেন মেনস্ট্রিমের বাইরেই কবিজন্মের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হল।
হ্যাঁ ঠিক বলেছেন। মেইন স্ট্রিমে থাকলে এতদিনে হয়তো পুরষ্কার প্রাপ্তি ও খ্যাতি হত। খ্যাতি পাব এই চিন্তাও মাথায় স্ট্রাইক করে নি তখন। প্রভাত চৌধুরীর পোস্ট মডার্নিজম আর নতুন কবিতার কবিদল মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। আমি আমার কবিতার দিকচিহ্ন নিয়ে ঠিক আছি। কোনো আফশোস নেই। নিজস্ব আইডেন্টিটি তৈরিতে আমার খামতি যেন না থাকে।
পুরষ্কারের জন্য আমার কোনো লোভ নেই। ও সব পেলেই বা কি না পেলেই বা কি কিচ্ছু আসে যায় না। আমি অল্পবয়স্ক নই যে ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভয় পাবো। কেউ কবি বলে গ্ৰাহ্য করবে না ভেবে নিজের পছন্দের লেখার পথ ত্যাগ করব । লেখার আনন্দে লিখি। আর খামখেয়ালি মানুষ। যে দিন ইচ্ছে হবে লেখা বন্ধ করে দেব। আর তা ছাড়া কি এমন লিখলাম যে পুরষ্কার আশা করব সেটা সরকারি হোক কি বেসরকারি।
৭) আচ্ছা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইজম বা স্ট্রাকচার ভাঙার মতবাদ এসেছে। আপনার কী মনে হয়, এই ইজমগুলোর উপর ভিত্তি করে কারো কবিতা চেঞ্জ হয়? নাকি কবিতা ইজমগুলোর নিয়মের ভিত্তিতে বিবর্তিত হোতে থাকে?
➤ ইজমগুলো থেকে ইজমগুলোর নিয়মের ভিত্তি কি আলাদা বস্তু? আসলে ভাবনার বিবর্তন নিয়ে প্রাবন্ধিকরা লেখেন আর লেখকরা তাঁকে অনুসরণ করেন। এখন বেশির ভাগ সময়ে লেখকরা নতুন যা আবিষ্কার করেন তাকে প্রতিষ্ঠা দিতে তত্ত্বমূলক প্রবন্ধ লিখতে বাধ্য হন। প্রবন্ধ ও রচনা মিলে পরিচিতি গড়ে ওঠে। এভাবে ক্লাসিক , ধ্রুপদী , রোমান্টিক, লোকসাহিত্য ডাডাইজম , আধুনিকতা , উত্তর আধুনিকতা, বাখতিনের দ্বিবাচনিকতা, অস্তিত্ববাদী কবিতা, অবয়ববাদী , ধ্বনিবাদ , অলংকারবাদ, সাহিত্যে মারক্সিজম ইত্যাদি নানা মতবাদের উদ্ভব হয়।
কবিতা লিখতে এসে যার যেটুকু মনে ধরবে সে সেভাবে নিজেকে তৈরি করে নেবে। কেউ জনপ্রিয় কবিতা লিখবে কেউ অপরিচিত কবিতা লিখবে। হ্যাঁ কবিতা লিখনশৈলী অবশ্যই পরিবর্তিত হয়। আর একই নিয়মে কেউ চিরকাল লেখে না। পালে সামান্য অপরিচিত আগন্তুক হাওয়া লাগলে কবিতা নতুন করে সৌন্দর্যময়ী হয়ে উঠতে পারে।
আসলে যুদ্ধটা তো নিজের সঙ্গে নিজের। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিজেকে উত্তরিত করার। কবিরা একে অপরের দ্বারা প্রভাবিত হতে হতে নিজেদেরকে ক্রমাগত পরিবর্তিত করতে থাকেন। আর প্রতিনিয়ত নতুন মতবাদের জন্ম হয়। মূলত উপন্যাস ইত্যাদি লেখার ক্ষেত্রে বাখতিন দেরিদা ফুকো নামক যারা যে সব মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এখন লাতিন আমেরিকার যাদুবাস্তবতা তাকে জনপ্রিয়তায় পিছনে ফেলছে। বাংলা সাহিত্য পাশ্চাত্য সাহিত্য তত্ত্বের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ায় আমরা বিবর্তনগুলো অনেক দেরিতে গ্ৰহণ করি। গ্ৰহণ করতে না করতেই বর্জনের সময় এসে যায়। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা ভালো যে অন্যদের কবিতা পড়েই কবিতা লিখতে শিখেছি। সামান্য কিছু অনুবাদ গ্ৰন্থ প্রবন্ধের পড়েছি।আর পত্রপত্রিকা পড়ে সাহিত্য চিনেছি।সব ভাসা ভাসা জ্ঞান। গুগল সার্চ করে লাতিন আমেরিকার বইগুলোর দামের দিকে তাকিয়ে থেকেছি। হায় ! সামর্থ্য এত কম! দিকপাল কালজয়ী পাশ্চাত্য প্রাবন্ধিকদের আমার পড়া হয়ে ওঠে নি এই ছোট্ট জোনাকির আলোর মতন কবিতা চর্চার জীবনে।কোথায় ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল আর কোথায় আমাদের নতুন কবিতা অপরকবিতার ধারনা। ধারাবাহিক কবিতার ভাবাবেগে আঘাত লাগে পাছে তাই শূন্য দশকের কবিরা জম্পেশ প্রবন্ধ লিখে উঠতে পারল না। আমি তো হাত পা ছাড়া গোছের হয়ে আনন্দে আছি কারণ আশির দশকের কবিদের মোড় ঘোরানো কবিতায় হেলান দিয়ে যা লেখবার লিখে ফেলেছি।
এর মধ্যে আমার কোনো কবিবন্ধু জানিয়েছেন যে আমার কবিতা অ্যান্টিপোয়েট্রি।
কবিতা লিখতে এসে যার যেটুকু মনে ধরবে সে সেভাবে নিজেকে তৈরি করে নেবে। কেউ জনপ্রিয় কবিতা লিখবে কেউ অপরিচিত কবিতা লিখবে। হ্যাঁ কবিতা লিখনশৈলী অবশ্যই পরিবর্তিত হয়। আর একই নিয়মে কেউ চিরকাল লেখে না। পালে সামান্য অপরিচিত আগন্তুক হাওয়া লাগলে কবিতা নতুন করে সৌন্দর্যময়ী হয়ে উঠতে পারে।
আসলে যুদ্ধটা তো নিজের সঙ্গে নিজের। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিজেকে উত্তরিত করার। কবিরা একে অপরের দ্বারা প্রভাবিত হতে হতে নিজেদেরকে ক্রমাগত পরিবর্তিত করতে থাকেন। আর প্রতিনিয়ত নতুন মতবাদের জন্ম হয়। মূলত উপন্যাস ইত্যাদি লেখার ক্ষেত্রে বাখতিন দেরিদা ফুকো নামক যারা যে সব মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এখন লাতিন আমেরিকার যাদুবাস্তবতা তাকে জনপ্রিয়তায় পিছনে ফেলছে। বাংলা সাহিত্য পাশ্চাত্য সাহিত্য তত্ত্বের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ায় আমরা বিবর্তনগুলো অনেক দেরিতে গ্ৰহণ করি। গ্ৰহণ করতে না করতেই বর্জনের সময় এসে যায়। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা ভালো যে অন্যদের কবিতা পড়েই কবিতা লিখতে শিখেছি। সামান্য কিছু অনুবাদ গ্ৰন্থ প্রবন্ধের পড়েছি।আর পত্রপত্রিকা পড়ে সাহিত্য চিনেছি।সব ভাসা ভাসা জ্ঞান। গুগল সার্চ করে লাতিন আমেরিকার বইগুলোর দামের দিকে তাকিয়ে থেকেছি। হায় ! সামর্থ্য এত কম! দিকপাল কালজয়ী পাশ্চাত্য প্রাবন্ধিকদের আমার পড়া হয়ে ওঠে নি এই ছোট্ট জোনাকির আলোর মতন কবিতা চর্চার জীবনে।কোথায় ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল আর কোথায় আমাদের নতুন কবিতা অপরকবিতার ধারনা। ধারাবাহিক কবিতার ভাবাবেগে আঘাত লাগে পাছে তাই শূন্য দশকের কবিরা জম্পেশ প্রবন্ধ লিখে উঠতে পারল না। আমি তো হাত পা ছাড়া গোছের হয়ে আনন্দে আছি কারণ আশির দশকের কবিদের মোড় ঘোরানো কবিতায় হেলান দিয়ে যা লেখবার লিখে ফেলেছি।
এর মধ্যে আমার কোনো কবিবন্ধু জানিয়েছেন যে আমার কবিতা অ্যান্টিপোয়েট্রি।
৮) এখন কবিতায় অনেকেই সিম্বল, ইকুয়েশন ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী?
➤ কবিতার শরীরকে নানা জ্যামিতিক বিভঙ্গ দেওয়া একটা সুপ্রচল ঐতিহ্য। নিম ও শ্রুতি সাহিত্য আন্দোলনের সময় থেকে তার চোখে পড়ে। এডওয়ার্ড ইস্টলিন কামিংসের 'সাউন্ড এন্ড স্পেসিং' ব্যাপারটাও গ্ৰহণযোগ্য হয়ে উঠল। পুষ্কর দাশগুপ্তরা এ সম্পর্কে পাঠককে অবহিত করতে চেয়েছিলেন। এই জিনিসটা নতুন কবিতায় আছে। শূন্য দশকের কবিরাও এভাবে অনেকে লিখেছেন। তো এইসব টাইপোগ্ৰাফি পোয়েমস এর দিন শেষ হয়ে গেছে। মহাদিগন্তের কবি উত্তম দাশ এ ধরনের কবিতা লিখেছেন। কবিতায় অংকের ব্যবহার, গানিতিক সংখ্যার ব্যবহার অনেক কবি করেছেন। অনিন্দ্য রায় অংকের সূত্র ও সংকেতগুলোকে কিভাবে মননশীল কবিতা লেখায় ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন।
সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে কবিতা লেখাও নতুন একটা দিক। তবে সংকেত চিহ্ন গুলো সম্পর্কে প্রভূত ওয়াকিবহাল থাকা দরকার। তাহলেই কবিতার মধ্যে প্রবেশ করা যাবে। রাহুল গঙ্গোপাধ্যায় এরকম কবিতা ইন্ট্রোডিউস করাতে চাইছেন বাংলা কবিতায়। এ সম্পর্কে আশাবাদী থাকাই ভালো একেবারে নস্যাৎ করে দেবার চাইতে। তবে অতিরিক্ত সিম্বল ও ইকুয়েশন ব্যবহার আবার সঠিক রস উপলব্ধিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। কে কোথায় কি বিষয়ে রসিক হয়ে উঠছে বোঝা মুস্কিল। মানুষ মারা বোমার রাসায়নিক সংকেত চিহ্নগুলো তো আমরা ভালোই মেনে নিয়েছি আর বহন করছি। একসময়ের মালার্মে বলেছিলেন কবিতা বলতে তিনি বোঝেন Ñ ।
➤ কবিতার শরীরকে নানা জ্যামিতিক বিভঙ্গ দেওয়া একটা সুপ্রচল ঐতিহ্য। নিম ও শ্রুতি সাহিত্য আন্দোলনের সময় থেকে তার চোখে পড়ে। এডওয়ার্ড ইস্টলিন কামিংসের 'সাউন্ড এন্ড স্পেসিং' ব্যাপারটাও গ্ৰহণযোগ্য হয়ে উঠল। পুষ্কর দাশগুপ্তরা এ সম্পর্কে পাঠককে অবহিত করতে চেয়েছিলেন। এই জিনিসটা নতুন কবিতায় আছে। শূন্য দশকের কবিরাও এভাবে অনেকে লিখেছেন। তো এইসব টাইপোগ্ৰাফি পোয়েমস এর দিন শেষ হয়ে গেছে। মহাদিগন্তের কবি উত্তম দাশ এ ধরনের কবিতা লিখেছেন। কবিতায় অংকের ব্যবহার, গানিতিক সংখ্যার ব্যবহার অনেক কবি করেছেন। অনিন্দ্য রায় অংকের সূত্র ও সংকেতগুলোকে কিভাবে মননশীল কবিতা লেখায় ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন।
সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে কবিতা লেখাও নতুন একটা দিক। তবে সংকেত চিহ্ন গুলো সম্পর্কে প্রভূত ওয়াকিবহাল থাকা দরকার। তাহলেই কবিতার মধ্যে প্রবেশ করা যাবে। রাহুল গঙ্গোপাধ্যায় এরকম কবিতা ইন্ট্রোডিউস করাতে চাইছেন বাংলা কবিতায়। এ সম্পর্কে আশাবাদী থাকাই ভালো একেবারে নস্যাৎ করে দেবার চাইতে। তবে অতিরিক্ত সিম্বল ও ইকুয়েশন ব্যবহার আবার সঠিক রস উপলব্ধিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। কে কোথায় কি বিষয়ে রসিক হয়ে উঠছে বোঝা মুস্কিল। মানুষ মারা বোমার রাসায়নিক সংকেত চিহ্নগুলো তো আমরা ভালোই মেনে নিয়েছি আর বহন করছি। একসময়ের মালার্মে বলেছিলেন কবিতা বলতে তিনি বোঝেন Ñ ।
৯) আচ্ছা দেবযানী দি এখনতো অনেক তরুণ কবিরা ফেসবুক এবং বিভিন্ন ওয়েবজিন, প্রিন্ট পত্রিকা সব জায়গায় লিখছে।এদের মধ্যে অনেকের লেখা বেশ পরিনত। এমনকি এগিয়ে থাকা।এদের এই কবিতাগুলো পড়ে আপনার কী মনে হয়?
➤ পশ্চিমবঙ্গের শূন্যদশক প্রথমদশকের কবিদের কবিতা ততটা সম্ভব পড়ি। বূদ্ধদেব হালদার জুবিন ঘোষ সৈকত ঘোষ বিশ্বজিত অর্থিতা মন্ডল রাহুল গঙ্গোপাধ্যায় শীলা বিশ্বাস তানিয়া চক্রবর্তী এরকম অনেকেরই কবিতার সঙ্গে পরিচিত আমি। অলোক সরকার তাবিক পত্রিকা করেন। অনুপম মুখোপাধ্যায়ের বাক পত্রিকা পড়ি। এগিয়ে থাকাটা ভালো ব্যাপার। এদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ তো নিশ্চয় উৎসর্গকৃত প্রাণ হবে কবিতার জন্য। ক্রমশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলা কবিতাকে একটা সর্বগ্ৰাহ্য রূপ দেবেন। বাংলাদেশের অরবিন্দ চক্রবর্তী আরেকটি উল্লেখযোগ্য নাম। সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল পত্রিকাও বেশ শক্তিশালী পত্রিকা। শ্রেয়ন রায়চৌধুরীর নিবিড় পত্রিকা একটি এগিয়ে থাকা পত্রিকা। প্রতিশ্রুতিবান ও প্রতিভাবান কবিরা কবিতায় দীর্ঘদিন ধৈর্য ধরে চর্চা করে গেলে সাহিত্য জগৎ লাভবান হবে বৈকি। আসলে কবিতায় দুএকদিনে সাফল্য আসে না।বাঃ কৃতি কবি হওয়া যায় না। আবার জীবনের খেলায় অনেক কৃতি কবি অলক্ষে থেকে যান। আমি কোথাও হতাশার জায়গাগুলোকে পাত্তা দিতে চাই না। হঠাৎ আলোর ঝলকানিতে পিছলে যাওয়া নয় একাগ্ৰ হয়ে কবিতাযাত্রা এখনকার তরুণরাই করে দেখাবে। গল্পরসসমৃদ্ধ ঘনঘটনাময় কথা ও কাহিনীমন্ডিত কবিতা না লিখলেই ভালো। কবিতার স্বাভাবিক চরিত্র থাকবে অবগুণ্ঠনময়। অনেকে আবার এটাকেই ফুলিং গ্ৰাউন্ড ধরে নেন।
১০) দেবযানী দি সাহিত্য করতে হোলে ছন্দ, অলংকার এই ব্যাকরণগত দিকগুলো সকল প্রজন্মের জন্য কতোটা জরুরি বলে আপনি মনে করেন ?
➤ অলংকারের ব্যবহার অবশ্যই জানা দরকার।প্রয়োগ করতে হবে। ছন্দ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। প্রয়োগ দরকার হলে করবে। সংস্কৃত বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণ ইত্যাদিতে জ্ঞান থাকা ভালো। বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী হিসেবে আমার সামান্য পড়া ছিল। সে সব ধূসর হয়ে এসেছে। এখন কেঁচে গন্ডূষ করতে হবে সব। কখনো কখনো অলংকারের বই নিয়ে বসি। এমনি এমনি পড়তে ভালো লাগে। আর ভাবি ভামহ দন্ডী আনন্দবর্ধনের অভিনব গুপ্তের লেখা সবাই পড়ুক। সংস্কৃত সাহিত্য বাংলায় অনূদিত সবাই পড়ুক।
➤ অলংকারের ব্যবহার অবশ্যই জানা দরকার।প্রয়োগ করতে হবে। ছন্দ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। প্রয়োগ দরকার হলে করবে। সংস্কৃত বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণ ইত্যাদিতে জ্ঞান থাকা ভালো। বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী হিসেবে আমার সামান্য পড়া ছিল। সে সব ধূসর হয়ে এসেছে। এখন কেঁচে গন্ডূষ করতে হবে সব। কখনো কখনো অলংকারের বই নিয়ে বসি। এমনি এমনি পড়তে ভালো লাগে। আর ভাবি ভামহ দন্ডী আনন্দবর্ধনের অভিনব গুপ্তের লেখা সবাই পড়ুক। সংস্কৃত সাহিত্য বাংলায় অনূদিত সবাই পড়ুক।
১১) এই সময় দাঁড়িয়ে আপনি নিজে কি ধরনের কবিতাকে প্রাধান্য দেবেন বা আগামী প্রজন্মকে পড়তে বলবেন ?➤ আমার কিছু বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। প্রত্যেক কবি তার নিজস্ব পিপাসা ও চাহিদা অনুযায়ী বই পড়বে। অবশ্যই পিছনে ফেলে আসা দিনের কবিতা লেখার কোনো মানে হয় না। আবার খুব একটা বিতিকিচ্ছিরি রকমের ভাঙাগড়াও ভালো লাগে না। এর মাঝামাঝি সামঞ্জস্য রেখে লিখতে হবে। লিখতে লিখতে কবিরা নিজেরাই বুঝে নেবে এই রসায়ন।পাঠক তৈরি করে নেওয়াও কবির কাজ। এজন্য কবিরা ঘরে বসে থাকলে হবে না। জনসংযোগ তথা পাঠকসংযোগ গড়ে তুলতে হবে। আমি অন্যকে কি বলব। নিজেই তো অসম্পূর্ণ হয়ে আছি। জীবন এত ছোট কেনে এই ভুবনে।
১২) কবিতায় বহুরৈখিকতা বিষয়ে আপনার তো ধারনা আছেই, এই বিষয়টি আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
➤ বহুরৈখিক মানে অনেক রেখা সমন্বিত। অনেকগুলি দৃষ্টিকোণ। মানুষের দার্শনিক ও ধর্মীয় চিন্তায় অদ্বৈতবাদের প্রতিষ্ঠা থেকে সরে দ্বৈতবাদ তৈরি হয়েছে -- তাই তোমার আনন্দ আমার পর তুমি তাই এসেছ নিচে। আবার দেখছি দিনের বেলায় বাঁশি তোমার বাজিয়েছিলে অনেক সুরে। এই অনেক পুরোটাই আসল কথা।
➤ বহুরৈখিক মানে অনেক রেখা সমন্বিত। অনেকগুলি দৃষ্টিকোণ। মানুষের দার্শনিক ও ধর্মীয় চিন্তায় অদ্বৈতবাদের প্রতিষ্ঠা থেকে সরে দ্বৈতবাদ তৈরি হয়েছে -- তাই তোমার আনন্দ আমার পর তুমি তাই এসেছ নিচে। আবার দেখছি দিনের বেলায় বাঁশি তোমার বাজিয়েছিলে অনেক সুরে। এই অনেক পুরোটাই আসল কথা।
বহুরৈখিক বলতে প্লুরালিজমকে বুঝি। একটি রেখার মধ্যে আরেকটি রেখার উদ্ভব। প্রতিটি পরিবর্তনশীলতার মধ্যে একটি আলাদা রেখা তৈরি হবে। আর দ্বৈতবাদ থেকে ক্রমশ নানাত্ববাদের দিকে সরে যেতে হবে। দার্শনিক লিবনিৎজ মোনাডোলজি মতবাদ এনেছিলেন। মোনাড মানে অসংখ্য। একটা বক্তব্যকে বহু দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে নেওয়া। এটা করতে গেলেই কেন্দ্রিয় ভাবনা থেকে সরে বহুরেখায় বা কোণে চিন্তাপ্রসূত বাক্য ও শব্দগুলি আলাদা হয়ে পড়ে। একটা জাম্পকাট সৃষ্টি হয়। কেন্দ্রাতিগ হয়ে পড়ে কবিতার লাইন। জ্যামিতি যারা বোঝে তারা এই কৌশলকে কাজে লাগাতে পারে ভালো। শিল্প সমালোচনার ক্ষেত্রে , সিনেমা তৈরির ক্ষেত্রে, উপন্যাস ও কবিতা নির্মাণের ক্ষেত্রেও এই বহুরৈখিকতা আসে। বাংলায় বহুস্বরিকতা বহুমাত্রিকতা ইত্যাদি শব্দও এর সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। কিন্তু অতিভাষ্য এসে গেলে পাঠ অস্বচ্ছ হয়ে পড়বে। যদিও জানি লেখক তত্ব মেনে লেখেন না। লেখার সময়ে একটি তাড়না বা প্যাশন কাজ করে। পরে কবিতাটি গোছানোর সময়ে বিনির্মাণবাদ কাজ করে। ঘসামাজা করার সময়ে গ্ৰহণ বর্জনের পর্ব চলে। তখনি ঠিক করে নিতে হবে শব্দভরা বাক্য বা বাক্যাংশ গুলোকে ভাষ্যের বহুত্বে কি করে নিয়ে আসব যাতে তার অতিভাষ্য না হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গ পাল্টাতে পাল্টাতে দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে যেতে যেতে তা বহুরৈখিক রচনা হয়ে পড়ে। কবিতায় গুরুশিষ্য পরম্পরা থাকে। এজন্য অগ্ৰজদের কবিতা পড়তে হয়।
আপাতত এটুকুই। আমার মোটা মাথায় এর বেশি আর কিছু ঢোকে নি।
আপাতত এটুকুই। আমার মোটা মাথায় এর বেশি আর কিছু ঢোকে নি।
১৩) আপনি কি বাংলা কবিতার বাইরে অন্য ভাষায় লেখা কবিতা পড়েন? যদি পড়েন কোন ভাষায় কোন কবির কবিতা পড়েন ? তাঁদের লেখার চিন্তাধারা বা স্মার্টনেশের সাথে আমাদের চিন্তাধারা এবং স্মার্টনেশের পার্থক্য কতটা?
একটু আধটু ইংরেজি কবিতা পড়ি এই নেটের মাধ্যমে। আমেরিকান পোয়েট্রি পোয়েটস অর্গানাইজেশন এইসব। ওরা সামাজিক সমস্যা ও রাজনৈতিক নানা ঘটনা নিয়ে কবিতা লেখে। এবং শব্দ নিয়ে ভাঙাভাঙিটা একেবারে নেই বললেই চলে। এখন পোস্ট মডার্নিজম এর ব্যাপারটা আর নেই। আমাদের মতো মধ্যবিত্তসুলভ প্যানপ্যানানিটা নেই। পরকীয়া ছাড়াও আরো হাজার রকম বিষয় আছে লেখার।তবে গুগলপ্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটু অসুবিধা হয়ে গেছে। নেটের অনেক কবিবন্ধুদের হারিয়ে ফেলেছি।এটি আমার অসচেতনতার ফল।
একটু আধটু ইংরেজি কবিতা পড়ি এই নেটের মাধ্যমে। আমেরিকান পোয়েট্রি পোয়েটস অর্গানাইজেশন এইসব। ওরা সামাজিক সমস্যা ও রাজনৈতিক নানা ঘটনা নিয়ে কবিতা লেখে। এবং শব্দ নিয়ে ভাঙাভাঙিটা একেবারে নেই বললেই চলে। এখন পোস্ট মডার্নিজম এর ব্যাপারটা আর নেই। আমাদের মতো মধ্যবিত্তসুলভ প্যানপ্যানানিটা নেই। পরকীয়া ছাড়াও আরো হাজার রকম বিষয় আছে লেখার।তবে গুগলপ্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটু অসুবিধা হয়ে গেছে। নেটের অনেক কবিবন্ধুদের হারিয়ে ফেলেছি।এটি আমার অসচেতনতার ফল।
১৪) আচ্ছা দিদি আপনি main streem থেকে অনেকটাই আলাদা করে লেখেন।এতে করে কী প্রথম প্রথম আপনার লেখা নিয়ে বিরোধিতা শুনতে হয়েছিলো? যদি আমাদের পাঠকদের একটু জানান---➤ না আমাকে কোনো বিরোধিতার মুখে পড়তে হয় নি। কারণ ২০০৬ এ এসে প্রথাবিরোধী কবিতা লেখার পত্রিকা প্রচুর বাজারে এসে গেছে। শব্দহরিণ এর মতো প্রচল পত্রিকাও আমার কবিতা নিয়েছে। যদি কেউ রিজেক্ট করে থাকে তা কবিতাটা ভালো লিখতে পারি নি বলেই করেছে। আমার চলতে কোনো অসুবিধা হয় নি। পৃথিবীগ্ৰাম ইন্টারাকশান পত্রিকা কবিতা নিয়েছে। সাহস জুগিয়েছে। জুবিনের খেপচুরিয়াস ভুলতে পারি না। র , কৌরব, কবিতা ক্যাম্পাস, ভিন্নমুখ , ইন্টারাকশান , কবিতাপাক্ষিক , অস্ট্রিক , ক্যামেলিয়া , সোমকদাস , অরূপ আচার্যর পত্রিকায় লিখেছি। কবি সম্মেলন এরকম নানা পত্রিকায় গ্ৰাহ্য হয়েছে। আর আমি পার্ট টাইমার কবির চাইতেও অধম। কবিতার জন্য সময় সেভাবে দিতে পারিনি। গলা অব্দি সংসারে ডুবে আছি। এর মধ্যেই হাঁকুপাঁকু করে যতটা পারা যায়।
১৫) আপনি তো লেখালিখি শুরু করেছিলেন প্রিন্ট মিডিয়ার হাত ধরে। এখন আমাদের মতো অনেক ওয়েবম্যাগেও বেশ লিখছেন । এই ২টি ভিন্নি মাধ্যমকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন দিদি ?আপনার কী মনে হয় web.mag, print media কে একসময় অতিক্রম করতে সক্ষম হবে?
➤ ব্যাখ্যা করার কিছু নেই। প্রযুক্তিগত কৌশলের সুযোগ সবাই নিতে চায়। ওয়েবম্যাগের লাইফ লঞ্জিভিটি ও অমরত্ব রক্ষা করা কষ্টকর। একটা বই বা পত্রিকা লাইব্রেরিতে বা কারো বাড়িতে থেকে যাবেই। দুটো মাধ্যমের মধ্যে লড়াই
➤ ব্যাখ্যা করার কিছু নেই। প্রযুক্তিগত কৌশলের সুযোগ সবাই নিতে চায়। ওয়েবম্যাগের লাইফ লঞ্জিভিটি ও অমরত্ব রক্ষা করা কষ্টকর। একটা বই বা পত্রিকা লাইব্রেরিতে বা কারো বাড়িতে থেকে যাবেই। দুটো মাধ্যমের মধ্যে লড়াই
এর ব্যাপার আছে নাকি। সার্ভার ব্রেকডাউনের বিপত্তিতে লেখা পিছিয়ে যায়। কখনো ভুল বাটন টিপলে ডিলিট হয়ে যায়। তবে ওয়েবম্যাগের বাড়বৃদ্ধি হোক এখন। যতই হোক একটা পত্রিকা প্রিন্টে বার করে যা আনন্দ তা অসাধারণ। ওয়েবম্যাগ অতিক্রম করে গেলেও প্রিন্ট মিডিয়া থাকবেই লিটল ম্যাগাজিনের জন্য। হয়তো প্রিন্ট মিডিয়ার আয়তন ছোট হয়ে যাবে। তবে আমি জানি তরুণ প্রজন্ম গুগল ড্রাইভে কম্পুতে পেনড্রাইভে অগাধ বিশ্বাস রাখে। বুদ্ধিজীবীরা আপাদমস্তক নেটজীবী হয়ে যাবে একদিন। পীযূষ বিশ্বাস ওয়েবম্যাগ নিয়ে ভাবছে বেশি। ওর জ্ঞান আছে। আমি যা বললাম তা স্বাভাবিক চিন্তা থেকে বললাম।
১৬) এখন অজস্র কবিতা লেখা হচ্ছে। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশও হচ্ছে। কিন্তু তারপর আর কবিদের হদিশ পাওয়া যায় না এমনকি কবিতাগুলোও না। আপনার মতে এর কারণ কী?
➤ জানি না এটা কি ব্যাপার। অতটা অবহিত নই।
১৭) চারিদিকে কবিতার জন্য বিভিন্ন ম্যাগাজিন, সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে কবিদের সম্মান জানানো হচ্ছে। উত্তরিয়। ফুলের তোড়া। মানে এখন ১টা,কথা প্রায়ই শুনতে পাই আগে কবিতা যাপন করার পর নির্বাচিত কবিকে সম্মাননা দেয়া হোতো।এখন অনেক সংস্থা সম্মাননা, বই প্রকাশ করে কবিতা লেখাচ্ছেন উঠতি কবিদের ।এই বিষয়টা আপনি কিভাবে দেখেন দিদি?
➤জোর যার মুল্লুক তার সেটা অর্থনৈতিক কি রাজনৈতিক কি সব ক্ষেত্রে একইরকম। সবই স্বজনপোষন আর টাকার খেলা। ভালো মানুষের পোয়েদের দিন গিয়াছে। ক্ষমতাবান কবিদের আচরণ চোখ রাঙানি এসব থাকবেই। তারা কাকে কখোন মাথায় তুলবেন কখোন পিঠ চাপড়াবেন আর কাকে এড়িয়ে যাবেন তা বোঝা দুঃসাধ্য। কবিতাকে কেন্দ্র করে লোভ দ্বেষ হিংসা ক্যাওস ল্যাং মারামারি চামচাগিরি চিরকাল ছিল আর থাকবেও। তবু তো কবি খুন আর রাঁবোর মত গোলাগুলির ব্যাপারটা চলে না বাংলার কবিদের মধ্যে।প্রতিভা খুঁজতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের কাছাখোলা অবস্থা। তোমায় সামনে পেয়েও খুঁজে বেড়াই মনের কানাগলি। এই যে একদল পুরষ্কার দিচ্ছে মঞ্চে হুড়োহুড়ি করছে এটাকে সদর্থে নেওয়াই ভালো। প্রাণ আছে। আমরা সজীব আছি এটুকু অন্তত প্রমাণিত হয়। ভষ্মে ঘি ঢালতে ঢালতে আগুনেও ঘি ছিটকে পড়বে একদিন। তবে একেবারে আনকোরা কাঁচা তরুণ কবিদের পুরষ্কার দেবার ব্যাপারে সময় নিলে ভালো হয়। এ সম্পর্কে দ্বিমতের অবকাশ নেই।
১৮) আপনার কতগুলো একক কাব্যগ্রন্থ আছে। এই কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে বা আপনার কবিতার মাধ্যমে আপনি পাঠকদের কি বার্তা দিতে চেয়েছেন?
➤ দেবযানীর স্বীকারোক্তি , স্বপ্নিল বর্ণমালা , তৃতীয়া পৃথিবী , আইভরি খাতা, নোনামিঠে জলচিহ্ন , রেডিওঅ্যাক্টিভ মিনারেল বৃষ্টি, চৌরেখাবতী পিরামিডের অরোরা, স্ট্রবেরিগন্ধার যোজনপথ।
মনের আনন্দে লিখে যেতে হবে। আমি কিছুই মেসেজ দিতে চাই নি। কবিতা পড়ার আনন্দে কবিতা পড়ুক সবাই। জীবনকে ভালোবাসার অপর নাম কবিতা। অতএব পাঠক দরকার পড়লে মেসেজ খুঁজে নেবে।
➤ দেবযানীর স্বীকারোক্তি , স্বপ্নিল বর্ণমালা , তৃতীয়া পৃথিবী , আইভরি খাতা, নোনামিঠে জলচিহ্ন , রেডিওঅ্যাক্টিভ মিনারেল বৃষ্টি, চৌরেখাবতী পিরামিডের অরোরা, স্ট্রবেরিগন্ধার যোজনপথ।
মনের আনন্দে লিখে যেতে হবে। আমি কিছুই মেসেজ দিতে চাই নি। কবিতা পড়ার আনন্দে কবিতা পড়ুক সবাই। জীবনকে ভালোবাসার অপর নাম কবিতা। অতএব পাঠক দরকার পড়লে মেসেজ খুঁজে নেবে।
১৯) আপনি কী বিশ্বাস করেন কবিতা লিখে সমাজের পরিবর্তন করা সম্ভব?
➤ সমাজে ও দেশে ঘটতে থাকা বিষয় নিয়ে কবি কবিতা লিখবে। বাদ প্রতিবাদ করবে। বর্ণনা করবে। ব্যঙ্গ করবে। তাতে সমাজ পরিবর্তিত হলে ভালো। বিপ্লব হলে ভালো। একটা ক্রান্তিকাল হলে তার উপর কবিতার প্রভাব এক রকম আর সমাজের স্থিতাবস্থায় কবিতার প্রভাব আরেকরকম পড়ে। কবিতা লিখে সমাজের পরিবর্তন যদি হাতেনাতে বা গরমাগরম নাও পাওয়া যায় তাতেও কোনো দুঃখ নেই। কবি তার আপন স্বভাবে লিখে যাবেই। বিপ্লবের কবিতা
➤ সমাজে ও দেশে ঘটতে থাকা বিষয় নিয়ে কবি কবিতা লিখবে। বাদ প্রতিবাদ করবে। বর্ণনা করবে। ব্যঙ্গ করবে। তাতে সমাজ পরিবর্তিত হলে ভালো। বিপ্লব হলে ভালো। একটা ক্রান্তিকাল হলে তার উপর কবিতার প্রভাব এক রকম আর সমাজের স্থিতাবস্থায় কবিতার প্রভাব আরেকরকম পড়ে। কবিতা লিখে সমাজের পরিবর্তন যদি হাতেনাতে বা গরমাগরম নাও পাওয়া যায় তাতেও কোনো দুঃখ নেই। কবি তার আপন স্বভাবে লিখে যাবেই। বিপ্লবের কবিতা
প্রতিবাদের কবিতা লেখা হবেই। তাদের কণ্ঠরোধ রাষ্ট্র করবে। তারা জেলে পচে মরবে। সমাজ কতোটা পরিবর্তিত হবে তা মাপার মাপকাঠি নেই। তবে ঐ আলোগুলোর সংস্পর্শে এসে আরেকটি নতুন আলোর জন্ম হবে। এটুকুই লাভ।
২০) কবিতায় জটিলতা এবং দূরুহতা এই বিষয়ে আমাদের পাঠকদের কিছু বলুন দিদি_____
➤ কবিতা শিল্প হিসেবে সবসময়ই জটিল এবং কুটিল গতির। সব কবির এবং পাঠকের রসোপলব্ধির স্তরভেদ থাকে। আজ যা জটিল আছে কাল তা নাও থাকতে পারে। কখনো কখনো অভিধান ব্যবহার করতে হতে পারে। কারণ আমরা সবাই সব শব্দের সঙ্গে পরিচিত নই। আবার কোনো কবিতা সামগ্ৰিকভাবে বোধগম্য হল না। এতে অনেকের অসুবিধা হয়। ধরুন চর্যাপদ একসময় কি ভীষনভাবে দুরূহ ছিল। কবিতা গিলে খাবার জিনিস নয়। কোনো একটা কবিতার কিছুটা চেতনায় ঝিলিক মারলেই সেই কবিতা সফল কবিতা। আর কবিতা লেখার শৈলীতে মারপ্যাঁচের দরুন দুরূহ হলে সেই ধরনের কবিতা নিয়ে আলাপ আলোচনা চর্চা চলতে পারে। তাতে করে শক্ত গিঁট খুলে যাবে।
২১) দিদি গতানুগতিক ধারার বাইরে লিখলেই বা একটু শব্দের কারিগরি দেখলেই একটা প্রচলিত কমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে দারুণ এক্সপেরিমেন্টাল লেখা। এই এক্সপেরিমেন্ট শব্দটা কবিতার জন্য কতটা প্রাসঙ্গিক বলে আপনার মনে হয়?
➤কোনো কবির পক্ষে নিজস্ব উদ্ভাবিত জঁর এর সঙ্গে সারাজীবন নিমগ্ন থাকা খুব কষ্টকর ও হাস্যকর। গত তিন দশক ধরে শব্দের কারিগরি দেখানো কবিতা ভুরি ভুরি লেখা হয়েছে। নিজের মস্তিষ্কে একটা ল্যাবরেটরি বানিয়ে রাখা ভালো আলুভাতে মার্কা কবিতা লেখার চাইতে। পরীক্ষা নিরীক্ষার কবি হিসেবে ছাপ তো আমার গায়ে লেগে আছে। এমনিতেই বাংলার জ্ঞান ও বিদ্যার খুঁটিপোতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসীনতা বাংলা কবিতার অনেক ক্ষতি করে চলেছে। এখনো ঔপনিষদিক সাম্রাজ্যবাদ কায়েম আছে। সুতরাং এক্সপেরিমেন্ট শব্দটাকে চিঁড়েচ্যাপ্টা করে কোনো লাভ নেই। ভালো প্রাবন্ধিক না হলে ভালো কবি হওয়া কষ্টকর। তর্ক বিতর্ক চলুক প্রবন্ধে প্রবন্ধে। আর সবাইকে বাঁকাতেড়া কঠিন কবিতা লিখতে হবে এমন ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। নতুন কিছু করার তাগিদে যারা লিখছেন তাদের অনুৎসাহিত করা কোনোমতেই উচিত নয়। এমনিতেই আমরা জীবনকে বাস্তবভাবে কাছ থেকে দেখার চাইতে বইপত্র ও বোতাম আঁটা সুশীল জীবনের মোড়কে থেকে দেখার চেষ্টা করি। মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা ভাষার নবাঞ্চল তৈরিতে সাহায্য করে।
➤কোনো কবির পক্ষে নিজস্ব উদ্ভাবিত জঁর এর সঙ্গে সারাজীবন নিমগ্ন থাকা খুব কষ্টকর ও হাস্যকর। গত তিন দশক ধরে শব্দের কারিগরি দেখানো কবিতা ভুরি ভুরি লেখা হয়েছে। নিজের মস্তিষ্কে একটা ল্যাবরেটরি বানিয়ে রাখা ভালো আলুভাতে মার্কা কবিতা লেখার চাইতে। পরীক্ষা নিরীক্ষার কবি হিসেবে ছাপ তো আমার গায়ে লেগে আছে। এমনিতেই বাংলার জ্ঞান ও বিদ্যার খুঁটিপোতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসীনতা বাংলা কবিতার অনেক ক্ষতি করে চলেছে। এখনো ঔপনিষদিক সাম্রাজ্যবাদ কায়েম আছে। সুতরাং এক্সপেরিমেন্ট শব্দটাকে চিঁড়েচ্যাপ্টা করে কোনো লাভ নেই। ভালো প্রাবন্ধিক না হলে ভালো কবি হওয়া কষ্টকর। তর্ক বিতর্ক চলুক প্রবন্ধে প্রবন্ধে। আর সবাইকে বাঁকাতেড়া কঠিন কবিতা লিখতে হবে এমন ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। নতুন কিছু করার তাগিদে যারা লিখছেন তাদের অনুৎসাহিত করা কোনোমতেই উচিত নয়। এমনিতেই আমরা জীবনকে বাস্তবভাবে কাছ থেকে দেখার চাইতে বইপত্র ও বোতাম আঁটা সুশীল জীবনের মোড়কে থেকে দেখার চেষ্টা করি। মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা ভাষার নবাঞ্চল তৈরিতে সাহায্য করে।
২২) দেবযানী দি আমি জানি আপনার কবিতার একটা ভালো পাঠককূল আছে। আপনি আপনার পাঠকদের কাছে কী প্রত্যাশা করেন ?
➤পাঠককূল আছে? এই পত্রিকার সঙ্গে পরিচয় না হলে জানতাম না। অনেক মেইনস্ট্রিমের কবি আমাকে বলেছেন এভাবে লিখে জনগণের কাছে পৌঁছতে পারবে না। আমেরিকার এক কবি হালে পানি না পেয়ে সাহিত্য সম্পর্কে তেড়ে সমালোচনা করে এক প্রবন্ধ লিখলেন( ক্যান পোয়েট্রি ম্যাটার?) গানা জোইয়া। ঐ প্রবন্ধটি তাকে কবি খ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনি গ্ৰামে গঞ্জে তেলি মুদি কৃষক সবার কাছে পৌঁছে গিয়ে ঘুরে ঘুরে কবিতাপাঠ সেমিনার করছেন। আমি গৃহপালিত প্রাণী অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত জনপ্রিয় হবার রাস্তায় হাঁটতে পারলাম না। জনগণকে কিছু না দিয়ে তাদের কাছে প্রত্যাশা করা অপরাধ। মাসস্কেলে ইমেজ তৈরি করা হয়ে উঠেনি। এখন তো বিদায়ের সময় এসে গেছে। নতুন প্রজন্মের কবিরা অশেষ ধৈর্য নিয়ে কবিতায় থাকুন এটুকুই বলব।
দেবযানী বসুর কবিতা_____
নন্দনবন হাঁকছে
গতবছরের আকাশ আরো রঙিন ছিল
সূর্যাস্তের লাবডুব
ছাইদানে চলন্ত বুদ্বুদ
ভিক্ষে না করে চলত যাদের তারাও জানলায় টোকা দিচ্ছে
অসময় খুঁড়ে সামান্য পারিজাত তুলে আনছি
মহান সভ্যতার ইকড়ি মিকড়ি চাম চিকড়ি
একদানা ভাত চোখে সর্ষেফুল ফুটিয়েছে অনেকের
ঝিমধরা ভাতের হোটেল
এমনকি মাছিরাও বিদ্রোহ জানাল
আমার আঙুলে টান ধরছে
মাছির পদবী নিয়ে ভাবগম্ভীর থাকতে চাই।
শ্রামন্য
নিবিড় মাকড়সা পায়ে মাড়িয়ে চলেছে অপরাধ
সূক্ষ্মতম লালায় জানলা স্বস্তিবোধ করে
কত উপমার সাস্টাঙ্গ প্রণাম উপমেয়কে
ঝরাপাতা হতে ইচ্ছুক পাতাদের পেকে ওঠার আগেই ঝরানো হল কলমের খোঁচায়
চাওয়া মৃত্যুর চোখে চোখ রাখতে রাখতে চকরঙ হচ্ছে চারপাশ
তথ্যভরা মৌচাককে মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয় না
বেগ চাপার ফুরসৎ কেউ চাইছে না
তার এক ভুঁড়ি কথা বুকে জমে আছে
লগে লগে পাথুরে জমি
পুকুরের ফর্সা খুঁড়ে যতটা মাছ আসত তার চেয়ে মানুষ এসেছে বেশি
ফলনের ধারে পেয়ারাগাছটি চুপচাপ
যাচঞার ফল ধরতে না ধরতেই বাতাস ওড়াল তোকে
সাদা সাপ গুটিয়ে হাতের তালুতে
একটা পরিপূর্ণ দেয়াল হওয়া কষ্টকর অসংখ্য চোখ ছিদ্র করেছে তাতে
দিগন্তের আবছাটুকু আত্মাকে আশ্রয় দিল
একটা মোটা ঘটনা তার মোটামুটি পেরিয়ে গেল
দুঃখের কিংবা সুখের কবিতা বিশ্রাম নেয় পথের ধারে
স্বর্গের কাকেরা এই নিয়ে চেঁচামেচি করে
গতবছরের আকাশ আরো রঙিন ছিল
সূর্যাস্তের লাবডুব
ছাইদানে চলন্ত বুদ্বুদ
ভিক্ষে না করে চলত যাদের তারাও জানলায় টোকা দিচ্ছে
অসময় খুঁড়ে সামান্য পারিজাত তুলে আনছি
মহান সভ্যতার ইকড়ি মিকড়ি চাম চিকড়ি
একদানা ভাত চোখে সর্ষেফুল ফুটিয়েছে অনেকের
ঝিমধরা ভাতের হোটেল
এমনকি মাছিরাও বিদ্রোহ জানাল
আমার আঙুলে টান ধরছে
মাছির পদবী নিয়ে ভাবগম্ভীর থাকতে চাই।
শ্রামন্য
নিবিড় মাকড়সা পায়ে মাড়িয়ে চলেছে অপরাধ
সূক্ষ্মতম লালায় জানলা স্বস্তিবোধ করে
কত উপমার সাস্টাঙ্গ প্রণাম উপমেয়কে
ঝরাপাতা হতে ইচ্ছুক পাতাদের পেকে ওঠার আগেই ঝরানো হল কলমের খোঁচায়
চাওয়া মৃত্যুর চোখে চোখ রাখতে রাখতে চকরঙ হচ্ছে চারপাশ
তথ্যভরা মৌচাককে মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয় না
বেগ চাপার ফুরসৎ কেউ চাইছে না
তার এক ভুঁড়ি কথা বুকে জমে আছে
লগে লগে পাথুরে জমি
পুকুরের ফর্সা খুঁড়ে যতটা মাছ আসত তার চেয়ে মানুষ এসেছে বেশি
ফলনের ধারে পেয়ারাগাছটি চুপচাপ
যাচঞার ফল ধরতে না ধরতেই বাতাস ওড়াল তোকে
সাদা সাপ গুটিয়ে হাতের তালুতে
একটা পরিপূর্ণ দেয়াল হওয়া কষ্টকর অসংখ্য চোখ ছিদ্র করেছে তাতে
দিগন্তের আবছাটুকু আত্মাকে আশ্রয় দিল
একটা মোটা ঘটনা তার মোটামুটি পেরিয়ে গেল
দুঃখের কিংবা সুখের কবিতা বিশ্রাম নেয় পথের ধারে
স্বর্গের কাকেরা এই নিয়ে চেঁচামেচি করে
দেবযানী বসুকে সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিনের তরফ থেকে অশেষ ভালবাসা, শুভেচ্ছা এবং শ্রদ্ধা রইল। দিদি আপনার ব্যাস্ত সময় থেকে আমাদের সময় দেয়ার জন্য আমরা আপ্লুত।ভালো থাকবেন। সাহিত্যে থাকবেন।

No comments:
Post a Comment