Monday, August 30, 2021

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||

 ডারউইনের চিঠি 
পর্ব~২৩ (শেষ অংশ)
অরিজিৎ চক্রবর্তী

" A mathematician is a blind man in a dark room looking for a black cat which isn't there."----- 
                                                                                         Charles Darwin

অথচ আর ফেরা হয়না। ফেরাগুলো না ফেরার অন্ধকারে হারিয়ে যায়! শিকড় তার শাখাপ্রশাখা নিয়ে মাটির মধ্যে গভীর ভাবে গাছটাকে বাঁধে। বদ্ধমূল মানুষ নিজের মাটি, ঘর-গৃহস্থলি, প্রতিবেশী, পরিচিত দিগন্ত, আকাশ ছাড়তে চায় না।

সম্মোহ নিজেও কি ছাড়তে চায়? প্রয়োজনে দিন দুয়েকের জন্য বাইরে কোথাও গেলেও মনটা এখানেই যেন আটকে থাকে। সুতানের এই নির্জনতা! রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকার, ঝিঁঝিঁর ডাক এগুলোর বাইরে সম্মোহ আজকাল কেমন যেন অসহায়! জীবনের অঙ্ক যে কখনো মেলে না এবং তা অমীমাংসিত সেটা বুঝে গেছে সম্মোহ! আজকাল মনে হয় এই অমীমাংসিত অধ্যায়টাই জীবনের ধ্রুবক !

চলার পথের প্রতিটি বাঁকে একটা অদ্ভূত জিজ্ঞাসা সেমিকোলনের মতো আচরণ করে। আজকাল কেমন যেন নিজেকে চিনতে অসুবিধা হয়। বড্ড অচেনা লাগে।  সম্মোহ ভাবে সে সম্মোহ নয়! সে অন্য কেউ। তার আত্ম অনুভবের অনটন যতই চরমে উঠেছে, মন ততই ফিরে যেতে চেয়েছে আত্মজিজ্ঞাসার বিস্ময়ের দিকে? ঘটেছে বিপর্যয়! বেঁচেবর্তে থাকার ন্যূনতম শূন্যস্থান যখন কমে এসেছে আরো দ্রুত---স্বপ্নগুলো ততই আঁকড়ে ধরেছে তার পৃথিবীকে।

অনেক কথাই মনে পড়ে। আবার অনেক কথাই ভুলে যায় সন্মোহ। মনে পড়ে সেই থমকানো স্তব্ধ মেঘভর্তি বিকেলের কথা। গুপ্তঘাতকের মতো নৈঃশব্দ্যকে সঙ্গে নিয়ে সে এলো! ব্যাথামিশ্রিত গলায় লঘু স্বরে কিছু বলল। আবার চলেও গেল। 
এরপর থেকেই একটা অলীক ভয় সম্মোহকে তাড়া করে ফিরত সর্বদা, সর্বত্র। 

জীবনের উত্তরহীন প্রশ্নই বেশি। তাই,  কেন? 
কি কারণে?   কিভাবে?  এইসব জিজ্ঞাসার বাইরে দাঁড়িয়ে সম্মোহ যখন আকাশের দিকে তাকালো... ভাবল এই জীবনটাই বৃথা, এই জীবনটাই ধোঁকা , ঠিক তখনই একঝাঁক বক উড়ে চলে গেল সোজাসুজি দিকচক্রবালে।

 খেলা ভাঙার খেলায় শ্রম ও সঙ্গীতের মতো লীমা ঢুকে পড়ল জীবনের গণিতে। শ্রমের অপরিহার্যতা স্পষ্ট, সঙ্গীতেরও। কিন্তু গণিত? এ যে এক ধরনের চূড়ান্ত বিমূর্ততা। স্বতঃসিদ্ধ একটি পাঠের মতো -একটি সরলরেখার বাইরের কোনো বিন্দু থেকে ঐ সরলরেখার সমান্তরাল করে ঐ তলে একটিমাত্র সরলরেখাই আঁকা যাবে। এরকম একটি বক্তব্যকে ইউক্লিডের অন্যান্য স্বতঃসিদ্ধ থেকে যুক্তি দিয়ে প্রমাণিত অথবা অপ্রমাণিত করার প্রকল্প গ্ৰহণের কি মূল্য থাকতে পারে ব‍্যাক্তিজীবনে অথবা সমগ্ৰ মানব জীবনে? অথচ ঘটেছে এমনটিই। অনেক সময় মনে হয়ছে শ্রম বা সঙ্গীতের মতো বিমূর্তকরণের দিকে মানুষের টান স্বভাবজ।

----" ফর গডস সেক সম্মোহ, সে সামথিং" সম্মোহ প্রায় চিৎকার করে উঠল! আবার ভয়টা সামনে এসে দাঁড়ালো। সম্মোহ ক্ষণিকের মধ্যে ঘেমে উঠলো। শ্বাসকষ্ট শুরু হলো। আবার একটা ঝড়ো হাওয়া সমস্তটাই জুড়িয়ে দিল।

"...এখন আমি এমন একটা পর্যায়ের মধ্যো দিয়ে চলেছি যখন ভাবনার ধারা বিচিত্র থেকে বিচিত্রতর পথে বইয়ে দেওয়া সম্ভব। মাথার উপর কোনো কর্তৃত্ব নেই। শুধু ক্ষণকাল চিরকালের সঙ্গে পার্থিব বাস্তবতার অবাস্তব সঙ্গী হয়ে উঠেছে কেউ। আবেগ স্থির নয়,বিভাজ‍্যও নয়। মুহূর্ত চালিত 'point of time' দ্বারাই আমি আমার অবস্থান কেন্দ্রিক..."

দিন গড়িয়ে সন্ধ্যে হল। লালুকাকা চা নিয়ে এলো। বলল, " বাবু দুপুরে ভাত-তড়কারি ঢাকাই পড়ে আছে। খেলেনি?"

---- "না! খেতে ইচ্ছে করেনি। রাতে খেয়ে নেব।"

----" কেন গো! শরীর খারাপ হলো নাকি?"

----" না গো! এমনিই ইচ্ছে করল না।"

লালুকাকা চলে গেল। বুঝল তার বাবুর মুডটা ঠিক নেই।

টেবিলের ওপর বিয়ের কার্ডটা তখন প্রজাপতির মতো ডানা ঝাপটাচ্ছে! কি দরকার ছিল এটা পাঠানোর। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়া ছাড়া এর মধ্যে কোনো আবেগ খুঁজে পাচ্ছে না সম্মোহ। সম্মোহ ঠিক করতে পারছে না কি করবে? এই আমন্ত্রণে সেকি সাড়া দেবে? নাকি একটা কিছু উপহার কিনে পাঠিয়ে দেবে। সকাল থেকেই এই একটা বিয়ের কার্ড সম্মোহকে বড্ড বেশি এলোমেলো করে দিয়েছে। কিছুতেই যেন মনটাকে স্থির করতে পারছে না।

জীবনের দুই প্রান্তে পরস্পরকে পছন্দ করা দুজন মানুষ কিভাবে আলাদা হয়ে যায়, কিভাবে তারা একে অপরের প্রতি দূরত্বের দায় নিয়ে বেঁচে থাকে, এটাই যেন সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার! তবু জীবন এগিয়ে যায়। কেউ অন্যকোন প্রিয়জনকে খুঁজে নেয়। ফেলে আসা মানুষটির প্রতি  কখনো কখনো অনুকম্পা থাকে। তার থেকে বেশি কিছু নয়।সম্মোহ দেখে কার্ভের মধ্যে একটা ফোন নম্বর দেওয়া আছে। একবার ভাবে ফোন করবে। ফোন করে খানিকটা ঝগড়া করবে। গালিগালাজ করবে। কিন্তু ইচ্ছে করে না।কারণ ইচ্ছের অধিকার থেকে সে সে এখন বহুদূরে। 

রাতের জ্যোৎস্নালোকিত জঙ্গলে হাঁটতে বেরোয় সম্মোহ। তার হাঁটা পথের রিক্ততায় জঙ্গল যেন হো হো করে হেসে ওঠে। দূর থেকে ভেসে আসা মাদলের শব্দ যেন হেরে যাওয়ার সুর হয়ে কানে বাজে। কেউ নেই। চারপাশে কেউ নেই। শুধু এই জঙ্গলের অবারিত আশ্রয় আছে। একটা কুকুর পিছু পিছু আসছে থাকে। সম্মোহ অন্যমনস্কতার মধ্যে হঠাৎ খেয়াল করে কালু আসছে তাকে অনুসরণ করে।

কালো কুকুরকে ভয়ঙ্কর ভৈরবের পুনর্জন্ম বলেও অভিহিত করা হয়। মহাভারতে যুধিষ্টির অনুরোধ করেছিলেন ধর্মরূপী যে কুকুরটি তার মহাপ্রস্থানের পথে সঙ্গী ছিল তাকেও যেন স্বর্গলাভের সুযোগ দেয়া হয় । যম জ্যেষ্ঠ পান্ডব যুধিষ্ঠিরের সত্যতা পরীক্ষা করার জন্য এই রূপটি নিয়েছিলেন। হয়তো এই  বিশ্বস্ততম পৃথিবীর আদিম সঙ্গীটিই আজ সম্মোহকে পৌঁছে দেবে কোনো অতীন্দ্রিয় একাগ্ৰতায়! সেখানে লীমা নেই, বিকাশ নেই, লালুকাকা নেই, সাধন নেই, কেউ নেই। শুধু একটা বিবর্ণ টেবিলের উপর জ্বলে থাকা টেবিলল্যাম্পের নিচে এলোমেলো অক্ষরে লেখা একটা চিঠি আছে...


Saturday, August 28, 2021

Poems Of Karl Kempton

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || Karl Kempton .Oceano.California.

This is the first time that the Saptahik Blackhole Webzine has published  poems by Karl Kempton. We expressed our love to you Mr. karl Kempton, from our magazine.  Stay well.



1.

closing night

 

crow clans

air swim

towards

bowing

horizon

 

who

offers

the

sun

up

prayer

 

air paths

each

day

unpredictable

 

hawks

or

play

 

i ask

what letters

they write

 

one

strokes

M

to

V

 

in my

mind’s eye

black

spots

cross

the

moon

 

the

floaters

in

my

left

eye


2.

high night

 

moon mid sky

opposing

pole

star

 

“as

the

crow

flies”

2

miles

west

along

the

equinox

line

ocean

roar

carried

east

in

slight

breeze

 

i

stand

on

+

3.

how to draw silence

 

other than

from its well

of no mind

 

you hand a blank page

in a white room window open

to a breezeless moment

in no where

 

all shoved into a passing car

with the last echo

of the hand waving goodbye

that handed the blank page

sounding the moment

 

none of this can camouflage

breath

heart beat

blood flowing

mind’s

unstoppable

monologue

 

other than

 

left

behind

in

the

ascent

through

the

heart

oriented

to

the

pole

star

mouth

of

the

well

4.

the net of institution for seekers

flypaper for flies

 

after all the seeking

after all the devotion

after all the acts placed on the altar of sacrifice of no reward

after all the doings of undoings & undoings of doing undoings

 

perhaps in a moment of stilled good fortune

or earned grace the miser offers

 

the coin of nothing

 

the

full

moon’s

secret

 

the token earned to see with

the monocle of the moon

 

to hand over for the passage over

 

that hand holding the paid passage

pulls the token inside out

 

the other shore appears from

 

point of pointlessness to horizon

of nothing’s circumference

 

all

woven

with

 

the

weft

cords

 

&

 

warp

chords

 

of

 

emptied

emptiness


5.

the imaginary membranes of separateness

 

 

with the cutting of the rope the storm ended

the ocean calmly sighed into a rare cleansed mirror

 

following the finish line of a final circumnavigation

into the mouth of expanding radiance harbor

 

endurance faded crossing indentations & embossments

on the plains of discontentment &contentment

 

they found shelter in the hidden crag

of betweens pitching their tents

 

at the mountain’s base

with canvases of nothing

 

where stood the unexpected clock

with circumambulating hands

 

their calligraphic brushes

stroking majestic stoic zen circles

 

the center was missing the open secret

the moment when appears the revealers

 

their phenomena the accelerator

colliding opposites in slow motion

 

all essential particles identical light

the illumination seen throughout the all

 

halving the circle of eternal time

the bows of revelation

 

unleashed their arrows of light

into hearts not closed to the moment

 

the imaginary membranes

of separateness burst into flame

 

the universe of locked puzzle pieces unfolded

icons covering refreshing pools of the sweetest water

 

fed from the one’s artesian spring

on the mountain top few heroes reach


6.


an idol

 

 

is

not

 

an

idol

 

nor

 

worship

rote

 

when

 

o

 

is

the

famous

drop

 

holding

the

ocean

of

love

 

embracing

&

permeating

creation

 

the

serene

reflecting

pool

 

in

front

the

house

of

 

love

 

reflects

on

 

all

afloat

 

in

the

lover’s

heart

 

on

the

lip

of

the

pond

 

the

diving

board

rings

 

the

beloved’s

name

 

another

lift

off

 

soft

as

a

 

rose

marigold

or

lotus

 

petal

 

spiraling

 

off

the

altar

 

through

lovingly

repeated

mantra

atmospherics

 

to

clear

the

way

for

 

the

beloved

centered

in

every

 


he

 

 

a

 

 

r                 t








Sunday, August 22, 2021

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||      

অরিজিৎ চক্রবর্তী-র   ডারউইনের চিঠি  পর্ব~২২

সন্মোহ দেখল তাকে।

খুব নিচু স্বরে বলল, তোমার ভাবনাগুলোকে আমি এনডোর্স করছি না। তবে এখন যা ভাবার আমি ভাবব। যা বলার আমি বলব। তুমি চুপ করে শুনবে। প্রতিবাদ করবে না। প্রতিরোধ করবে না। মেঘে ঢাকা তারার ভেতর থেকে এগিয়ে আসবে চাঁদের মতো।পাটভাঙা দুধে আলতা শাড়িতে খোলাচুলে তুমি হয়ে উঠবে সিন্ডারেলা!

আচমকা উচ্চকিত হাসিতে চারিদিকের নিস্তব্ধতা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। একদলা ঘৃণা ছড়িয়ে কেউ বলে ওঠে, ছিঃ! প্রতারক! স্বার্থপর! অমানুষ!

সন্মোহ চেঁচিয়ে উঠলো, " তুমি আসলে কেউ নও! তুমি প্যারানইয়া! সন্দেহবাতিকগ্ৰস্থ রুগি! 

---- ঠিক বলেছ। একজন সুস্থ মানুষকে রুগি বলে চালিয়ে দেওয়ার সহজ প্রতিহিংসা তোমার মধ্যে ছাড়া আর কার মধ্যে থাকবে!

"মুহূর্তের নির্বাপন চাইছি আর দশবার চটজলদি
"গীতা"উচ্চারণ করছি... তুমি শুনছ "ত্যাগ"

অরিজিতের লেখা কবিতার দুছত্র মনে পড়ে যায় সম্মোহের। মনে পড়ে যায় আরও অনেক কিছু। 

মহাদেবের কথায় ব্রক্ষ্মা লজ্জা পেলেন এবং একই সঙ্গে অনলের ন্যায় প্রজ্জ্বলিত হয়ে উঠলেন। তারপর বললেন, " কাম যেমন আপনার সন্মুখে আমাকে শরাঘাত করল, তার ফল সে পাবে। এই কন্দর্প অহঙ্কারে মত্ত হয়ে অতি দুষ্কর কাজ করতে গিয়ে আপনার নয়নানলে ভষ্মীভূত হবে।"

এই শাপ শুনে ভীত কাম ব্রক্ষ্মাকে বললেন, " আমার কি দোষ প্রভু? আপনিই বলেছিলেন যে, "আপনি, বিষ্ণু এবং মাহেশ্বরও আমার বশবর্তী হবেন। আমি তো তারই পরীক্ষা করছিলাম। আমি নিরপরাধ। আমার শাপ মোচন করুন।"

ব্রক্ষ্মা বললেন," তুমি মহাদেবের নয়নাজলে ভষ্মীভূত হয়ে আবার তারই অনুগ্ৰহে শরীর ফিরে পাবে।"

---- গাঁড় মারানোর কেত্তন!" সম্মোহ অস্ফূটে বলে উঠলো। আজ যেন চিন্তার কোন মাথামুন্ডু নেই।"

একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন এল। ট্রু-কলারে ভেসে উঠলো, অলিভিয়া দত্ত।

---- "হ্যালো!"

---- "হ্যাঁ হ্যালো, আমি অলিভিয়া দত্ত বলছি ব্যারাকপুর থেকে। আপনার ওখানে আগামী শুক্রবার রুম পাওয়া যাবে?"

---- "হ্যাঁ, পাওয়া যাবে। কটা রুম লাগবে?"

----- "একটাই ডবল বেড। আমি আর আমার মা যাব। সঙ্গে জিল। পেট অ্যালাও তো!"

---- "না না, হবে না।"

-----" জিল খুব ভালো। সহবত জানে। আপনাদের কোন অসুবিধে করবে না। প্লিজ না বলবেন না।"

----" আচ্ছা ঠিক আছে। দায়িত্ব আপনার। কাউকে আবার যেন কামড়ে-টামড়ে না দেয়!"

---- " আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। কোনো অসুবিধা হবে না। আমি কিছু এ্যাডভান্স পাঠিয়ে দিচ্ছি।"

-----" লাগবে না। চলে আসুন। এটা কি আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নং?"

-----" হ্যাঁ, এটাই।"

 -----"আমি লোকেশন পাঠিয়ে দিচ্ছি।"

----" ঠিক আছে। অনেক ধন্যবাদ। আর একটা কথা, সঙ্গে ড্রাইভার থাকবে। ওর থাকার একটা ব্যবস্থা করবেন প্লিজ।"

-----" শুনুন রুম চার্জ পনেরো শো। এখানে এসির কোনো ব্যবস্থা নেই। ড্রাইভার রুম পাঁচশো। খাওয়াদাওয়া আলাদা। আপনার জিল বিড়াল কিংবা কুকুর যাইহোক ও যদি আপনাদের সঙ্গে থাকে, সেক্ষেত্রে আমরা চাদর বালিশের ওয়্যার প্রোভাইড করবো না। আপনাদের করে নিয়ে আসতে হবে। কারণ, বড় সমস্যা হয় এদের নিয়ে। দাঁত দিয়ে কেটে ছিঁড়ে দেয়।"

---- না না, আপনি একেবারেই চিন্তা করবেন না। ও খুব জেন্টল!"

-----"সে হোক। তাও ওগুলো সঙ্গে নিয়েই আসবেন। ঠিক আছে। রাখি তাহলে,  ভালো থাকবেন।

সম্মোহ ফোনটা রেখে আকাশের দিকে তাকাল। তাকিয়েই থাকল! যেন চারপাশে একটা ঘোর লেগে আছে। আকাশের তারা গুলোকে কেমন যেন সেলাই করা সারি সারি বিস্ময়চিহ্নের মতো লাগছিল! জীবনের বিস্তারিত আয়োজনে কোথায় যে কী অভিজ্ঞতা বা অনুষঙ্গ সমাহৃত হয়ে থাকে তা আগে থেকে বোঝা যায় না।

মজার ব্যাপার এই, আমাদের আচরণের মূল নিয়ন্ত্রক মস্তিষ্ক। আরো বিশদ ভাবে বলতে হয় মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র। মানসিক অস্থিরতার গভীরে ডুবে থেকেও কী করে যে নিজেকে সৃজনশীলতার শীর্ষে নিয়ে বসাতেন ভ্যান গখ, সে এক বিস্ময়। এক অস্থির মুহূর্তে নিজের কান কেটে তিনি পাঠিয়ে দেন জনৈকা নগরকন্যাকে। তারপর আত্মপ্রতিকৃতি আঁকেন!

আজ কি এমন হলো সম্মোহের! ঘুরে ফিরে বিভিন্ন ভাবনা আর কথার মিথোস্ত্রিয়া ঘটে চলেছে মনে, মনের গভীরে। সেখানে হয়তো মন কিংবা  মন্তব্য নেই। কেবল একটা অস্থিরতা আছে।কিছুতেই যেন নিজেকে শান্ত করতে পারছে না। তবে কি এবার একজন মনোবিদের সাহায্য নিতে হবে সম্মোহকে!

ফেসবুকে একটা নটিফিকেশনের শব্দ হলো টিং। সম্মোহ খুলে দেখল অনলাইন কাগজ গুলোর সেই একই ঝালমুড়ির গল্প!

বলিউডের প্রথমসারিতে ইতিমধ্যেই নিজের নাম পাকিয়ে নিয়েছেন বঙ্গতনয়া শ্রেয়া। যার হট মুভসের আভায় মুগ্ধ সাইবারবাসী। এককথায় বলিউড মাতিয়ে রেখেছেন বাঙালি কন্যা। সম্প্রতি পছন্দের ডেস্টিনেশন মলদ্বীপ গিয়ে একগুচ্ছ ছবি শেয়ার করেছেন। ব্রালেট-মিনিস্কার্টে খোলামেলা শরীরে ঝড় তুললেও পোশাকের উপর স্পষ্ট শরীরের হাড়। মৌনির এই সুপারহট ছবি দেখেই কটাক্ষ করেছেন সাইবারবাসী।

বিষয়টা পড়তে পড়তে শ্রেয়ার শেয়ার করা ছবিগুলো দেখতে ইচ্ছে করে সম্মোহের। নারীর এই শরীরী ভঙ্গিমা শিল্পীর চেতনায় কত ধরনের মোটিভ রচনা করে! সম্মোহ হাতের কাছে একটা কাগজে কয়েকটা লাইন ড্রইং- এর আঁকিবুকি কেটে নেয়। তারপর অদ্ভূত ভাবে খানিকটা শান্ত হয়ে যায়। অনেক দিন বাদে আবার ছবির কাছে যেতে ইচ্ছে করে। ছবি আঁকাটাই এক সময় জীবনের প্যাশন ছিল! আজ সবটাই অতীত।

ছবি ঘুমন্ত। অথবা সে নিদমহল। ঘুমন্ত বাক স্বয়ং।তার মধ্যে গা-ঢাকা দিয়ে উপস্থিত এই যে প্রচ্ছন্ন অনাদি রূপটি-- সদাসর্বদা সে অপেক্ষমান গা-ঝাড়া দিয়ে সজীব ও সক্রিয় হয়ে উঠবার জন্য!  তাই চিত্রকলা সান্দ্র অনচ্ছ ছায়াঘন। আমাদের দৃষ্টিপাত তাতে, মাত্র তাতেই, সংলগ্ন হয়ে যায়! 

একজন শিল্পীর ন্যুডস্টাডি করার সময় এই দেখা গুলোই অনপেক্ষ এবং সাপেক্ষ। অর্থাৎ পার্থিবে বিরাজমান দ্রষ্টব্যগুলি হল অনুকার্য, আর অনুকারক হল অনুকৃতির আদর্শে উদ্বুদ্ধ রূপসাদৃশ্যের ন্যায় মেনে সৃষ্ট ভিন্ন ভিন্ন চিত্র-ভাস্কর্য এবং সাহিত্য-কর্ম।

রবীন স্যারের কথাগুলো আজও মনের মধ্যে গেঁথে আছে সম্মোহের। আজকাল ছবি আঁকার ইচ্ছেটা হারিয়ে ফেললেও ভেতরের উজ্জীবনটা রয়ে গেছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে। তাই তো আজও কয়েকটা আঁচড়েই জীবন্ত হয়ে ওঠে সম্মোহের অনায়াস লাইন ড্রইং।
মাঝেমধ্যে সে সব ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে সম্মোহ। অনেক প্রশংসা পায়। পুরনো বন্ধুরা দু-একজন যারা ফ্রেন্ডলিস্টে আছে, তারা সম্মোহকে আবার ছবি আঁকায় ফিরতে বলে।