Wednesday, February 9, 2022

নীপবীথি ভৌমিকের কবিতাগুচ্ছ

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||    নীপবীথি ভৌমিকের কবিতাগুচ্ছ


তরঙ্গ    

গভীর অরণ্য। চোখ ফেরানো দায়।
 যতদূর দেখা যায়, আলো আর আলোর উথালপাথাল তরঙ্গ

    কেউ কি তবে চিনে ফেলেছিল নিজেকে?
      হত্যা করেছিল স্বহস্তে নিজের মৃত্যু আর জন্মকে?

   চোখ বেঁধে রাখা তাই আমার।
     যাতে করে অন্ধ হওয়া যায় !

    গান্ধারী জন্ম নিয়ে বসে থাকা দিনগুলো
     আলোই চিনেছে শুধু
      আঁধার চেনা কি এত সহজ?

কাহিনী

 এ সমস্ত জীবনের গল্পে চরিত্রগুলো 
   বেশিরভাগ কাল্পনিক
  কাল্পনিক স্নান সারে
    রোদে ভিজিয়ে নেয় সময়ের যাঁতাকলে

      একটা পাখি হঠাৎ উড়ে  গেল
    কোনো এক প্রাচীন বৃক্ষের গোপন 
      কুঠুরি থেকে ,
      একমাত্র পাখিটিই বাস্তব। 
        
       সন্ধ্যে নামলে মাটি রঙের
      পৃথিবীটা আবার কালো হয়ে ওঠে
         গ্লাস আর তরলের আদরে

   চুমুকে চুমুকে সুরাও অনিবার্য হয়ে
    যায় কখনো দিনশেষে।


যা কিছু দৃশ্যে থাকে
    
  প্রতিটি মৃত্যুই আসলে হারিয়ে যাওয়া অতীত, যেখানে 
শিশু গাছেরা ঘুমিয়ে থাকে এক একটা জন্মের হাতে

    ছায়া আসে, 
     হারিয়ে যায় বৈকালিক স্রোতের গান
      খইফুল হাতে নিয়ে 
    আমরাও হারাই এভাবে স্রোত আর 
         সাঁতারের মাঝ বরাবর

   ঢেউ থেমে যায় জীবন পারে, নদী- জল- কোলাহল...

 পাহাড়ী রঙের মেয়ে       
       
      রঙচটা সন্ধ্যা নেমে আসে আজকাল 
    এ শহরে!
  নক্ষত্র চ্যুত আকাশ বাঁশি বাজায়
  বিষাদ- আঙুলে

    ধুন ওঠে আলি আকবরের সরোদে
     পাহাড়ী মেয়ে রঙের রাগে

       জ্বর থামলে আবার যাব ভেবেছি ওদেশে;
      মিথ্যে তাপমাত্রা আর মুখোশ ছেড়া
        রোগের পথ ডিঙিয়ে।

 
ঘর
  
  প্রতিটি দুঃখের পাশে আমি
  সুর বেঁধে রাখি।
   তানপুরার সা'কে ছুঁয়ে পঞ্চম বেজে 
        ওঠে  মর্মরে
      কখনো পরজে কখনোও বা বসন্তে...

     আমি সুর সাধিনি। জানি না তাকে
     একান্ত ‌গভীরে,
     তবু কেন যে মনে হয় বিষাদ প্রিয় হলে
   মাড়োয়া বয়ে যায় আমার নদী-জন্ম ঘিরে !

      প্রতিটি বিষাদের পাশেই আমার 
   ঘর বাঁধা থাকে সুর পঞ্চম ছুঁয়ে।


1 comment:

yusuf muhammed said...

প্রতিটি কবিতাই অনবদ্য।