Tuesday, August 10, 2021

বিশেষ সংখ্যা~পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||         

উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান সাহেব ও সুরের দেবী লতাজী.....
" কমবখ্ত কভী বেসুরি নহীঁ হোতী "
পুষ্পিত মুখোপাধ্যায় 



লতা মঙ্গেশকরের মতে উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খানের মতো শিল্পী প্রতিদিন জন্মান না। 
লতাজী বলেছেন "আমার পরম সৌভাগ্য,আমি সামনে বসে উস্তাদজীর গান শুনেছি। উনি আমাকে নিজের মেয়ের মতো স্নেহ করতেন। বলতেন "লতা তুম মেরী বেটি হো " ।
   উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান সাহেব লতাজীর পিতা পন্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকরের মৃত্যুবার্ষিকীতে একবার সঙ্গীত পরিবেশন করেন। 

লতাজী স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেছেন "আমার মনে আছে উস্তাদজী প্যান্ডেলে সামনের সারিতে বসেছিলেন আর আমি মঞ্চে গাচ্ছিলাম। আমার কপাল ঘামে ভিজে গেছিল এবং পা কাঁপছিলো। যাইহোক,কোনো রকমে আমি গান শেষ করি,ধড়ে প্রাণ ফিরে আসে। আমি গান গাওয়ার সময় কখনো নার্ভাস হতাম না। কিন্তু সেদিন ভীষণ নার্ভাস বোধ করছিলাম,'কেননা খান সাহেব সামনে বসেছিলেন। আমার পর উস্তাদজী এমন সঙ্গীত পরিবেশন করেন আকাশ বাতাস গুঞ্জরিত হয়ে ওঠে। খান সাহেব প্রথমে খেয়াল গায়িকিতে একটা রাগ শোনান,তারপর অভূতপূর্ব,অকল্পনীয়  সঙ্গীত প্রদর্শন করেন। তারপর উস্তাদজী ঠুমরি পেশ করেন,ঠুমরিতে উনি সারা বিশ্বে অদ্বিতীয় ছিলেন। পন্ডিত দীনানাথজীর স্মৃতিতে আয়োজিত এই সমারোহে খান সাহেব রাগ ও ঠুমরির পর গ়জ়লও শোনান। সে এক স্মরণীয় অনুষ্ঠান ছিলো। "
  খান সাহেব লতাজী সম্পর্কে বলেছিলেন "কমবখ্ত,কভী বেসুরি নহীঁ হোতী। ওয়াহ্! ক্যায়া অল্লাহ্ কী দেন হ্যায় " ।পন্ডিত যশরাজজীকেও খান সাহেব লতাজী সম্পর্কে একথা বলেছিলেন। 

লতাজী আরো বলেছেন .."আমি পন্ডিতজীকে বলেছিলাম যে উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান সাহেব আমাকে ' কমবখ্ত 'বলেছিলেন। একথা শুনে পন্ডিত যশরাজজী বেশ জোরের সঙ্গে বলেছিলেন.."হ্যাঁ ,উস্তাদজী তোমাকে 'কমবখ্ত ই বলেছিলেন। "  লতাজী বলেন 'এমনিতে তো 'কমবখ্ত 'এর অর্থ ভিন্ন,কিন্তু খান সাহেবের মতো মহান শিল্পীর এটা কোড,যেটাকে আমি আমার মহা সৌভাগ্য মনে করে থাকি। সুর সঙ্গীতের এতো বড় মহান শিল্পী আমার সম্পর্কে বলেছিলেন।  আমি সুরেই গাই,সুর থেকে কখনো বিচ্যুত হই না। উস্তাদ খান সাহেবের উক্ত বাক্যটি আমার কাছে পরম আশীর্বাদ স্বরূপ। "

     
                                                   (কমবখ্ত ...সাধারণ অর্থে বলা হয় 'হতভাগী ')


Sunday, August 8, 2021

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||

অরিজিৎ চক্রবর্তী-র
ডারউইনের চিঠি  পর্ব~২০

-----" তুই এখনো ফুলটো হয়ে আছিস লীমার জন্য! চোরাস্রোত বয় কেবলই চেতনাময়... হাহাহা..."

---" দাঁত না কেলিয়ে মালটা শেষ কর! শোন বর্তমানে আমার কোনো স্রোতটোত নেই ওর জন্য। সামান্য করুণা আছে। ওর কথা ভাবলে কষ্ট হয়। রাগ হয়! গালি দিতে ইচ্ছে করে। আমি এই বেশ আছি।‌নিজের মতো স্বাধীন!"

----" আহা! রাগ করিস কেন!"

---" শোন বাল, নেশাটা চটকাশ না! অন্য কথা বল।"

বিকাশ সম্মোহকে প্রসঙ্গ পাল্টে বলল, " মুরগির ঝোলটা বেশ ভালো রেঁধেছে। জমে গেছে বন্ধু! আমি আর মহুয়া নেব না। মাথাটা ঝিমঝিম করছে।"

----" ঠিক আছে। তাড়াহুড়ো করিস না। মাংস ভালো লাগলে মাংসটাই খা। একটু ভাত দিতে বলি!"

----" তা বলতে পারিস। খিদেও পাচ্ছে বেশ।"

----" ধলু, ধলু রে..." সম্মোহ ধলুকে ডাকে।

----" কত্তা বলেন।"

----" ওকে একটু ভাত আর মাংস দে।"

---" ঠিক আছে কত্তা এখুনি দিচ্ছি।"

---"বিকাশ, তুই কখনো প্রেমে পড়েছিস কারোর!"

----" হ্যাঁ, তোর প্রেমে পড়েছি বারবার!"

----" দুশশশ শালা! নায়িকাদের কথা বল। তোর কৈশোর কালের কিংবা যৌবন কালের কোনো নায়িকা! যে এখনো তোর স্মৃতিতে ফিরে ফিরে আসে!"

---- আছে তো! আলেয়া সেন! জীবনানন্দের বনলতা সেন আর আমার আলেয়া সেন!"

----" বিকাশ আপনি নেশা করেছেন? বিকাশ, তাকে কোথায় খুঁজিয়া পেলেন!" 

--- " উনি স্বপ্নে এলেন গেলেন... "

----" বিকাশ আপনি ইহা দেখে শুধু বালগুলো ছিঁড়লেন!" 

সম্মোহ আর বিকাশ একসঙ্গে হোহোহোহো... শব্দে হেসে উঠলো। সেই হাসি যেন থামতেই চায় না!

তারপর কখন যে খাওয়াদাওয়া শেষ করে সিগারেটে সুখটান দিয়ে খুনসুটি করে দুজনে তালাইয়ের উপর শুয়ে পড়েছে, তা আর কারো হুঁসে নেই। আর হুঁসে থাকার দরকারটাই বা কি! বরং জীবনে মাঝেমধ্যে এরকম বেহুঁশ হওয়াটাই সঙ্গত! এ্যাতো হুঁশে থেকেই বা কি হলো বিকাশের! 

অন্ধকার প্রথমে পাতলা ফিনফিনে হয়ে আছে। আসলে তা সম্মোহের ঘুম। বেশ কিছুক্ষণ ধরে সে বুঝতে পারছিল না যে চেষ্টাকৃত স্বপ্নভঙ্গ, না কোনও বাহ্যিক কারণে তার ঘুম ভেঙে আসছে।সে কি কিছু শুনেছে? কোনও শব্দ? কান্না? নিশ্চিত হতে না হতে আবার চোখ বুজে আসে অবসন্ন অবশিষ্ট ঘুমে।স্বপ্নের বাকিটুকু তখন সে দেখতে থাকে।

ব্লাউজের হুক খুলতেই শেখনি এখনো!

--- শিখিনি তো! তুমি শিখিয়ে দাও!

----অত শেখাতে টেখাতে পারব না! নাও খুলে দিলাম!

সম্মোহ বুকের ভেতর মুখটা গুঁজে দেয়। তারপর মুখের ভেতর মাংসল পিন্ডটা ঢুকিয়ে বাচ্চা ছেলের মতন চুষতে থাকে! লীমা নিজেকে আরো আলগা করে দেয়! তারপর ধীরে ধীরে নাভিতে একটা হালকা কামড় দিয়ে যোনিমুখ চুষতে থাকে। আর ঠিক তখনই লীমা নিজেকে আর সামলাতে পারে না! ... ওওও বেবী...ইইইই... লীমার এই কামোদ্দীপক উচ্চারণে সম্মোহ নিজেকে আরো ঘনীভূত করার চেষ্টা করে! আবার ভয় হয়! অতি উত্তেজনায় যদি বীর্য বেরিয়ে যায়! তাহলেই সব শেষ! হেরে যাওয়া! সম্মোহ তাই নিজেকে সব কিছুর থেকে একটু দূরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে! ভাবনাকে পাল্টে ফেলতে চায়! তবু একসময়  নিরুপায় যৌনতার মতো আত্মসমর্পণ করতে হয়! ঘেমো পিঠের উপর লীমার হাত আঁকিবুকি কাটে। 

---কত্তা ও কত্তা ওঠেন এবার বেরোতে হবে। আমি সঙ্গে যাব। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এরপর হাতির ভয় আছে! ওঠেন কত্তা! 

ধলুর ডাকে ঘুমটা আবার ভেঙে যায়। সম্মোহ চোখ খুলে অনুভব করে লিঙ্গটা শিলনোড়ার মতো শক্ত হয়ে আছে! কিঞ্চিৎ অস্বস্তি কাটিয়ে বিকাশকে ডেকে তোলার চেষ্টা করে সম্মোহ। বিকাশ ঘুমে একেবারে অচেতন। 

ধলু বাইকে উঠে বসে। মাঝে ঘুমন্ত বিকাশকে বহুকষ্টে বসিয়ে দিয়ে, সম্মোহ ঠিক পেছনেই উঠে বসে। ধলু বাইক চালিয়ে সম্মোহের বাড়ির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। পাহাড়ি বাঁকের মতন আঁকাবাঁকা রাস্তায় ধলু ছাড়া বাড়ি ফেরা প্রায় অসম্ভব ছিল। মিনিট কুড়ির মধ্যে বহু বিপদের ঝুঁকি নিয়ে সম্মোহ বিকাশকে নিয়ে বাড়ি ফেরে। বিকাশ তখনও প্রায় অচেতন। 

বিকাশকে বিছানায় শুইয়ে সম্মোহ বুলির মাকে এক বোতল জল দিয়ে যেতে বলে। বুলির মা জল নিয়ে এলে, বিকাশের চোখেমুখে জলের ছিটে দেওয়া হয়।মাথা ধুইয়ে দেয় ধলু। 

----" আজ রাতে আমার বিকাশের রান্না করার দরকার নেই। শুধু ধলুর আর তোমাদের রান্না করো। ধলু রাতে এখানেই থাকবে। কাল সকালে বাড়ি যাবে। ওকে পাশের ঘরটা খুলে দাও। ওখানেই রাতে শুয়ে পড়বে। এখন একটু কড়া করে চা বানিয়ে আমাকে আর ধলুকে দাও।

সম্মোহের কথার বুলির মা মাথা নেড়ে চলে যায়।

---" কত্তা চিন্তা করবেন না। আপনার বন্ধুর ঘুমটা ঠিক মতো হলেই চাঙ্গা হয়ে যাবে। আসলে অভ্যাস নাই তো! তাই নেশাটা ধরে লিয়েছে।"

--- " যাই বল ধলু, মহুয়াটা কিন্তু একঘর ছিল! আমাকেও ধরে লিলো!"

----" কত্তার ভালো লেগেছে এতেই আনন্দ। যাইহোক অনেকদিন পর এলেন এদিকে।"

-----" ঠিকই বলেছিস, আজকাল আর তেমন যাওয়া হয়না তোদের ওদিকটায়। বিকাশের জন্যই যাওয়া। তবে জানিস অনেকদিন পর তোদের ওখানে গিয়ে ভালোই লাগল। যা চা খেয়ে হাতমুখ ধুয়ে বিশ্রাম কর। আমার কাছে একটা বিলাতি আছে, তুই আর লালুকাকা দু'জনে খেয়ে নিস। ওই তাকের ভেতর আছে, নিয়ে যা।"

---- " লালুকাকাকে দেখছি নি! কই গো?"

----" আছে আশপাশে। চলে আসবে। "

সম্মোহ ধলুকে পাশের ঘরে পাঠিয়ে নিজে জামাকাপড় ছেড়ে স্নান করে ফ্রেস হয়। তারপর আলো নিভিয়ে বিকাশের পাশে শুয়ে পড়ে।‌ শরীরটা বড্ড ক্লান্ত। আজকাল বয়সের ভার এই সব বেলেল্লাপনার ধকল নিতে পারে না।

তবু অনেকদিন পর আজ সম্মোহের আবার ডাইরি লিখতে ইচ্ছে করল। সেই চিরচেনা লালরঙের ডাইরি। সম্মোহ আজকাল কালেভদ্রে লেখে।‌আজ আবার লিখল...

একটা সময় ছিল যখন আমরা সকলে ছিলাম দারিদ্রের মহিমায় পঞ্চমুখ। দারিদ্রকে অভিশাপ মনে না করে আশির্বাদ বলেই মেনে নিতাম। যেমন কাজি নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, "হে দারিদ্র তুমি মোরে করেছো মহান।" পূর্বে ধারণা ছিল দারিদ্র মানুষকে গুণগত বৈশিষ্ট্য দ্বারা তার অন্তর্নিহিত শক্তি পূর্ণ প্রকাশ করে সমাজে প্রতিষ্ঠা এনে দিত। কিন্তু বর্তমান কালে সাধারণ ধারণা দারিদ্র্য মানুষকে অমানুষ করে তোলে এবং তাঁর অন্তর্নিহিত শক্তি অঙ্কুরেই বিনাশ করে। এই দারিদ্রের পঙ্কিল আবর্ত থেকে আজকালকার সমাজবিরোধী, উগ্ৰপন্থী ও পরস্বাপহারীদের উৎপত্তি। এক সময়কার দারিদ্রের সুফল আজ সমাজঘাতী কুফলে পরিণত।

এতদূর লেখার পর সম্মোহের মনে হলো এইসব জ্ঞান চুদিয়ে কোনো লাভ নেই। শুধু নিজেকে বিজ্ঞ ভাবার গাম্ভীর্য আছে! হাসি পেল নিজের প্রতি। তারপর বিকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, " কমরেড বিকাশ এবার উঠে পড়। আমাদের বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।"

Saturday, August 7, 2021

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈অনুপ মণ্ডল

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||








অনুপ মণ্ডল


মগ্নপথ 

শূন্যে মিলিয়ে গিয়ে না ফেরাটা প্রায় অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গেছে
কী আশ্চর্য!গাছের একটা পাতা পর্যন্ত নড়ল না
চাঁদের আঠায়
ঝরেপড়া হাওয়ার পাপড়িগুলো জুড়ে জুড়ে
আমি একটা শূন্যযোগ শূন্যবাসা নির্মান করে চলেছি
যেখানে জলচাঁদ আমাকে জলছাপ ভেবে নিয়ে
ডুবে যাওয়া কঞ্চির ডগায় বসে  লাফাচ্ছে
দৃশ্যের অভ্যন্তরে ঘাই মারছে বাইফোকাল দেবদারু বন

যোনিপথই মগ্নপথ।আলপথে দাঁড়িয়ে
দূরবীন ছাড়াই মাতৃভূমির দেখা মেলে
মেঠোপথ;এঁকেবেঁকে মিলিয়ে যাচ্ছে দূর দিগন্তে
বারোআনাই ফকিরি তার
ঈগলের নিরীশ্বর নখর থেকে শামুকের জিভ খসে পড়ে
শুকিয়ে আসা মজাপুকুর;মোহনায় অনৈচ্ছিক কার্লভার্ট
আমি ঝেড়েঝুড়ে কানপেতে শুয়ে থাকি,শুনি জলের প্রলাপ


 ভাষ্য 

ছায়ার মাথায় পা দিয়ে দিয়ে দিব্যি তো হেঁটে গেলে তুমি
মুক্তি নেই;ছায়া আঁকড়ে ধরছে
বখতিয়ারের ঘোড়া ও তৎসম শব্দের সাঁকো
ঢোঁড়া সাপের বুকের তলায় শুয়ে
গান গাইলে তুমি আর আমরা দুঃস্বপ্ন দেখলাম

মালতীদের উঠোনের এক কোণে চারা গাছটায়
আকাশের গান জুরিদারহীন বাতাসের গান
মিহিন খরগোস ও নালিঘাসের অতিবাহিত তানে
জল মিশে গেল খণ্ডহর জলে,হেলে পড়ল ভাঙা মই

বলো,নিজস্ব কান্নাকে কীভাবে খুঁজে পাবো আমি
বলো কীভাবে আলিঙ্গন করে নেবো নিজস্ব ঘেন্নাকে
যে আকাশ অলক্ষ্যে বয়ে যায় প্রতিনিয়ত
ফিরে সে তো আসে না
আকাশচুম্বী বৃক্ষের বাকল বেয়ে
খিলখিলিয়ে নেমে আসে খালি নক্ষত্রবাসের তরল সোহাগ


চাঁদ ঢুলুঢুলু  

প্রার্থনাহীন যাপনচিত্র থেকে বহুদূর ঘন মাত্রিক বিকেলের
অস্ফুট এক চায়ের ক্রন্দন
বিতর্কের মরুভূমি

পাশার দান সাজিয়ে বসে আছে কেউ কেউ
আমরা কেউ হারছিনা-তবু খেলা চালু রাখা হয়েছে
আমরা কেউ জিতছি না
তবু খেলা খেলাকে অতিক্রম করে বয়ে যাচ্ছে
খেলা চলছে হিপ্পোক্রিনিক এবং হিসেব বহির্ভূতভাবে

গত ২৪ ঘন্টায় পৃথিবীতে কত গ্যালন বৃষ্টিপাত হলো?
কত শতাংশ ভেজালো বালিয়ারি আর 
কত শতাংশ
শুধুমাত্র ঝড়ের খেয়ায় অবিমিশ্র বিনোদন
বিনোদন প্রশ্নে বিসমিল্লা খান
শেষরাতে সানাই বন্ধ ।আবহাওয়ার পূর্বাভাস ছাড়াই
চাঁদ ঢুলুঢুলু
চুপিচুপি মরুভূমি পার হয়ে গেল একটা অনাবৃত জিরাফ

Friday, August 6, 2021

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈কাজল সেন

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||









কাজল সেন



ভালো থেকো

আনন্দ নিয়ে এসেছ যখন
সারাটা দিন আনন্দেই থেকো
গোধূলি আলোর শেষটানে
আয়নায় দেখো তোমার মুখ
এমন তো নয় যে তোমাকে
হতেই হবে সুন্দরী শ্রেষ্ঠা
আড়ে ও বহরে
বেঁধে রাখতে হবে দুধেলা গড়ন
সেই সেবার যেদিন সাজানো হয়েছিল শুধু
আমের বাগান
দু’একটা চন্দ্রমল্লিকা শ্বেতজবা আর
নয়নতারা ফুলের বাগান
সেদিন কিন্তু কোনো প্রচলিত উৎসব ছিল না
কোনো গাছের তলায়
শান্ত বিছানায় ছিল না কোনো উদ্বেগের ঝড়
যতটা ভালো থাকলে মনে হয়
এই তো বেশ ভালো আছি
ততটাই ভালো থেকো
তোমার জন্মের পরিসরে
সন্ধ্যে হলে না হয় নিজেকে
কিছুটা গুটিয়ে রেখো আবডালে
তালপাতার বাঁশি বাজিয়ে যে যায়
রাতের অন্ধকারে সে নিজেকে হারায়

নৈঃশব্দ যখন মুখরিত হয় শব্দহীনতায়

একটানা নৈঃশব্দের শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়
আমি ইতঃস্তত হাতড়াই শব্দহীন নৈঃশব্দের সন্ধানে
রাত এখনও বাকি অনেকটা রাত বাকি
বাকি রাত আমার জেগে থাকা এভাবেই নিবিড় অন্বেষায়
মধ্যরাতে তখনও জেগে থাকে অরণ্যের স্পর্ধিত মহীরুহ
চরাচরে দাদাগিরি যাবতীয় গুল্মলতার
নিকষ অন্ধকারে চোখে আলো জ্বেলে
শ্বাপদেরা হেঁটে যায় রাস্তায়
আমি জেগে থাকি আমার ব্যক্তিগত শয্যায়
রাত যেন অস্ত না যায় এই প্রার্থনায়
কথাটা বলতে গিয়ে হয়তো কিছুটা বাড়িয়ে বলা হলো
সাজিয়ে বলতে গিয়ে যৎসামান্য ত্রুটি থেকে গেলো
যতটা প্রাপ্তি ছিল মধ্যাহ্নের আলোর উজ্জ্বলতায়
প্রত্যাশা ছিল বেশি আরও নিপাট অন্ধকারে প্রাপ্তির সম্ভাবনায়
নৈঃশব্দ যখন মুখরিত হয় শব্দহীনতায়
দুচোখে আমার নেমে আসে অরণ্যের এলায়িত ঘুম
নিশ্ছিদ্র অরণ্যের বুকে আমি ঘুমিয়ে পড়ি নির্ভাবনায়
জেগে থাকে শুধু অসামান্য গুল্মলতা
নিশাচর শ্বাপদ আর দীর্ঘ মহীরুহ

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈আলোক মণ্ডল

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||









আলোক মণ্ডল



ব্রাকেট

একবার জলের ভেতরে গিয়ে
জলশূন্য করি
মুখের ভেতরে মুখ। আমি'র এন্টিবায়োটিক 
দিনে তিনবার গুলে যায় আফটার ফুড। এসব কথা রিকসাওয়ালারা জানে না।

মাছের সংসারে স্মরণীয় ওয়ার্কলোড লিঙ্ক  চায় মৎসপুরানের,
ব্যতিক্রমী মাৎসন্যায়।ডোজহীন।
নো-আফটার নো-বিফোর! 

ঘুঙুরবাঁধা সাবধানী মুখ ঘরমুখী  
যে-যার জমিতে স্প্রে 
বিসর্গ চিহ্নে 
মরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত চড়কগাছের নীচে ঘোষধ্বনি বরাবর আট-ছয় গৎ 
একটি ব্রাকেটে শুধু লেখা হয় চাঁদের ক্ষয়।


লাবডুক

মেঘের আড়ালে আলো চলে গেল
চলে গেল আলো আলোর আড়ালে
টিপটিপ অন্ধকার 
টিপকে ঢিপ টিপ বাঁধল 
ঝড়ে উড়ে যায় বুকের আঁচল খানি
আলো
ঢিপ 
অন্ধকার
চাষযোগ্য জমি বুলেটপ্রুফ 
অনশনে অবস্থানে কামান বিপুল তরঙ্গ 
লাবডুক হে 
ডুগডুগি বাজাও ঐ লাইট হাউস ডাকছে
জাহাজ!


কাঁঠাল

স্পর্শ দোষ কিংবা জাদুদন্ড   তিনশ ছয়
গুনিতক ধারাপাত
নৃসিংহপ্রসাদ প্রসাদ যেমন বলেন,পাকলে
কাঁঠাল। রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী অদ্ভিন্নযৌবনা / আ প্রত্যয় বাদে গোঁফে অলিভ 
বহুবীজ সেমিকোলন আর কমা কোলন ধু্ন্ধুমার অনির্ণীত থিওরি প্যাভেল
ফুলবাড়ি-গজলডোবা কুড়ি মিনিটের পথ
পোস্টকার্ড বিলুপ্ত ।  মনোগতি প্রজাপতি মাপহীন।
যাপিত সময় বদহজমি, ঘর্ঘর বৃন্তচ্যুত পাতার স্পর্শ!

 

সমুদ্রে ডুবতে থাকা বিকেলের বুকে অ আ ক খ যাই লিখুন নিফটি পতনে খড়কুটোর কোন ভূমিকা থাকে না।
এমন সরল নিপাতনের চিত্রকল্পে মশারির চারকোন ছেঁড়া জাল চেপে ধ'রে বৈকালিক প্রতিবিম্ব।পেট ফোলা মশার রক্ত অণুচক্রিকায় একটি হত্যা দৃশ্যের দরকার পড়ে না কেননা কল্পিত আখ্যানটি  তে কোন কান্না থাকেনা, থাকে রিরংসা।
সেপ্টেম্বরে উল্কাপাত নিয়ম মাফিক- স্টিফেন হকিংয়ের হাসিটুকুই বুঝতে যথেষ্ট, হুইল চেয়ারও জানে তাকে নিয়ে যতই মস্করার "ম" কিংবা আশ্রয়স্থানভোগী বর্ণের লুম্পেনসি হোক
বর্গের শেষ বর্ণ নাসিক্য কান্নাধ্বনি, নির্ঘাত নাস্ত্রাদামুস!