Friday, August 6, 2021

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈সুকান্ত ঘোষাল

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||









সুকান্ত ঘোষাল


আমি-বিন্দু , আপনি-বিন্দু

ধরা যাক A-বিন্দু = আমি , আর B-বিন্দু = আপনি।
A-বিন্দু আর B-বিন্দু পরস্পর যোগ করে একটা সরলরেখার সাহায্যে C-বিন্দু পর্যন্ত বর্ধিত করা হল।
এরপর সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত একটানা বিরামহীন বৃষ্টির মধ্যে - যেন বর্ষাকাল ; অথচ ঘটনাচক্রে বর্ষাকাল নয় , আমরা দুজন C-বিন্দুর দিকে যাত্রা করলাম। এটা দেখার জন্য যে দুর্যোগ অতিক্রম করে কে আগে সেখানে পৌঁছোতে পারি।
হাঁসের খামারে জল ছেটানোর লোকটা তখনই বলল , ' জানতাম, সমস্ত বিন্দুগুলো যোগ করা হয়ে গেলে প্রতিযোগিতা ছাড়া আপনারা এক মূহূর্তও আলাদা কিছু ভাবতে পারবেন না। '


ইঁদুর

' উফ্ , আলো কী সাংঘাতিক ! ' দেওয়ালের ফুটো দিয়ে সরলরেখায় রোদ ঢুকছে দেখে ইঁদুরটা বলল ,
ও পুরোনো জুতোর বাক্সের পিছনে নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে ঢুকে গেল। এখন ধরা যাক ইঁদুরের প্রথম স্থানটি P-বিন্দু আর পরবর্তী স্থানটি Q-বিন্দু এবং উভয়ের যোগফল একটি বক্ররেখা। ওই বক্ররেখা ধরে হাঁটতে থাকলে বোঝা যাবে অন্ধকার আসলে পুরোপুরি সোজা আর রাস্তাটাকেও কখনও কখনও নিজের উপরে পা ফেলে হাঁটতে দিতে হয়।


R-বিন্দু , S-বিন্দু

একটা বাক্যকে যতদূর সম্ভব প্রসারিত করতে গেলে  একজোড়া হাত  তৃতীয় একটি হাতকে সযত্নে রাস্তা পাড় করে দেয়  আর  একটা মারাত্মক ভাঙা দরজার পিছনে আমি আত্মগোপন করার চেষ্টা করি   বাক্যটির মাথা এবং লেজ যথাক্রমে    R-বিন্দু এবং S-বিন্দু হিসাবে একটি সরল বা বক্ররেখার দ্বারা যুক্ত থাকে  তখন রেখাটি মুছে দিয়ে আমি বিন্দু দুটি   আলাদা করে দিই কারণ    R-বিন্দু = আমি   ও   S-বিন্দু = ভাঙা দরজা  হলে উভয়ের মধ্যেকার সম্পর্ক কখনও নির্দিষ্ট করে সরল বা বক্র হয় না।



Tuesday, August 3, 2021

বিশেষ সংখ্যা~পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||           

মহান গায়ক মুহম্মদ রফি সাহেব সম্পর্কিত এক অজানা তথ্য....
পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়



একবার এই উপমহাদেশের মহান গায়ক মুহম্মদ রফি সাহেব মৌলবিদের কথায় এমন এক সময় গান গাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন যখন তিনি খ্যাতির শীর্ষে অবস্থান করছিলেন।  
  1971 সালের ঘটনা,যখন রফি সাহেব ও তাঁর মা হজ করে দেশে ফিরে আসেন। মৌলবিরা বলেন "হাজী হওয়ার পর গান গাওয়া চলে না।  নাচ,গান ইসলাম ধর্ম মঞ্জুর করে না। এখন আর আপনার গান গাওয়া উচিত নয় "। তারপর রফি সাহেব ফিল্মে গান গাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বেশ কিছুদিন তিনি আর গান করেননি। 
   বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক নৌশাদ সাহেব ও আরো কিছু ব্যক্তির কথায় রফি সাহেব আবার গাওয়া  শুরু করেন। নৌশাদ সাহেব বলেন "তুমি সততার সঙ্গে পেশা করছো,কারো মনে কষ্ট দিচ্ছো না। এটাও একটা উপাসনা। অনেক হলো,তুমি আবার গাওয়া শুরু করো"। 
   রফি সাহেবের পরিবারে রোজগারের আর কোনো মাধ্যম ছিলো না।  যাইহোক,ঈশ্বরের অপার করুণা,উপমহাদেশের এই মহান গায়ক শীঘ্রই উপলব্ধি করেন ফিল্মে গান গাওয়া কোনো অপরাধ বা পাপ নয়। 
   রফি সাহেব সহজ,সরল মনের ও অতি ভদ্র মানুষ ছিলেন। মৌলবিদের কথায় হঠাৎ গান গাওয়া ছেড়ে দেওয়ায় চলচ্চিত্র জগতে হৈচৈ পড়ে যায়। ভারতীয় ফিল্ম সঙ্গীত জগতে এতো বড় ঘটনা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।  যদিও কিছু লোক এটাকে গুজব বলেছিলেন,'কেউ কেউ বলেন "না এধরণের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। "
কিন্তু রফি সাহেবের পুত্র শাহিদ রফি সাহেব এই ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। 

   মুহম্মদ রফি সাহেবের জন্ম...1924 সালে 24শে ডিসেম্বর।  পাকিস্তানের কোটলা সুলতান সিং এ। 
মৃত্যু.....1980সালে 31শে জুলাই।  মুম্বাই।


Monday, August 2, 2021

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||           

অরিজিৎ চক্রবর্তী

ডারউইনের চিঠি      পর্ব-২০

মহুয়ার কথা বলতে বলতে ধলু কেমন যেন উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বলল, " বাবু , মহুয়া আর দিশি মুরগি! আমি এখনই জিতেন সর্দারকে খবর করছি।"

সম্মোহ পকেট থেকে একটা পাঁচশো টাকার নোট বের করে এগিয়ে দিল। 

ধলু চলে যাওয়ার পর বিকাশ বলল, " রানীবাঁধ থেকে সুতানের রাস্তাটা বড় অদ্ভুত লাগল! মনে হয় দার্জিলিং এর কোনো পাহাড়ি পথ। হেয়ারপিনের মতো তীক্ষ্ণ বাঁক। আর চারপাশে পাইনের বদলে শালের জঙ্গল।‌ফারাক এটুকুই।"

----" এই জন্যই তো এখানে থেকে গেলাম। মোট পঁচাশিটা পরিবার নিয়ে সুতান গ্ৰাম। তার মধ্যে আমি উড়ে এসে জুড়ে বসে ছিয়াশি নম্বর পরিবার। বেশির ভাগ সাঁওতাল জনজাতি। মূলত চাষবাসই জীবিকা।"


 ---- " তোর নির্বাচনের তারিফ করতেই হচ্ছে! জায়গাটা সত্যিই সুন্দর রে। কিন্তু ভয় লাগে না তোর? জন্তু-জানোয়ার, সাপ-কোপের ভয়তো আছেই। সঙ্গে অচেনা জায়গায় অচেনা মানুষের ভয়!"

----" কোনো ভয়ই হয় না রে। এরা আমার সহচর। যাপনসঙ্গী! "

----"পশু-পাখিরা হয়তো দেকার্তের মতো ভাবতে পারে না? আই থিঙ্ক দেয়ারফোর আই একজিস্ট"। সে কারণে তারা নিশ্চয়ই মানুষের তুলনায় ' নিন্মচেতনাসম্পন্ন'?" বিকাশ বলল।

----" নিন্মচেতনাসম্পন্ন" কথাটায় ঘোর আপত্তি রাখছি! অথচ তাদের মধ্যে এমন এমন অনুভূতির সন্ধান পাওয়া যায় যা সহজেই আমাদের ঈর্ষার কারণ হতে পারে। বহু আলোচিত ঘ্রানশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তির কথা না হয় বাদই দিলাম।
সৌন্দর্যের বোধই কি মানুষের একচেটিয়া? ময়ূরী কে আকৃষ্ট করতে ময়ূর পেখম মেলে যে দৃশ্য সৃষ্টি করে তা মানুষের ভাষায় অপরূপ সুন্দর। অর্থাৎ'নিম্নচেতনাসম্পন্ন'প্রাণীর স্নায়ু উত্তেজিত হচ্ছে যে দৃশ্যে তা মানুষের মতো উচ্চচেতনাসম্পন্ন' প্রাণীর মনে সৌন্দর্যের সৃষ্টি করছে।ব্যাপারটা কি বিস্ময়ের নয়!"

----" ফাটাফাটি বন্ধু। তোকে একটু নেড়ে দেখলাম আগের মতো আছিস কিনা! পড়াশোনাটা করিস তাহলে এখনো?"

----" ছাড়, অনেক তাত্ত্বিক আলোচনা হল। এবার মহুয়া-মাংসের আয়োজন কদ্দূর খোঁজটা নিই চল।" 

সম্মোহ বাইক স্টার্ট দিল। বিকাশ সম্মোহের পেছনে বসে পড়ল। আবার সেই আঁকাবাঁকা খাড়াই রাস্তা।

লেদাপুকুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র পার করে কিছুটা এগিয়ে সম্মোহ বাইকটা থামাল। বাড়ির সামনে কতগুলো বাচ্চা নিজেদের মধ্যে খেলছে। কালো রঙের কাঠের দরজা। সম্মোহ দরজার মাথার শিকল ধরে নাড়া দিল। 

----" খুড়ো ও খুড়ো কই গেলে"!

কাঁচা-পাকা চুলের এক বুড়ো বেরিয়ে এসে, হাতজোড় করে বলল, আসেন বাবুরা আসেন।"

সম্মোহ বিকাশকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো।  মাটির দালান ঘেরা উঠোন। একটা খাটিয়া আর চৌকি পাতা। মেঝেতে তালাই বেছানো। দূরে বালতিতে জল রাখা।

চারপাশে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার আভাস। বিকাশ বেশ অবাকই হচ্ছিল। 

---" চল ভালো করে হাতমুখ ধুয়ে নিই। এবার দুই বন্ধু মিলে একসঙ্গে স্বর্গের সিঁড়িতে পা রাখব।"

----" সেটা আবার কেমন! রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি!"

----" পাবে পাবে আরো অনেক কিছু পাবে!"

দালানের ভেতরের ঘর থেকে ধলু বেরিয়ে এলো। হাতে একটা জামবাটি আর কচুপাতা।ধলু তালাই বেছানো মেঝের উপর পাশাপাশি দুটো কচুপাতা রেখে তার ওপর কাঁচা লঙ্কা জলজিরা আর কয়েকটা শসা কুচি দিয়ে সম্মোহকে ইশারায় ডাকল। 

সম্মোহ বিকাশকে নিয়ে ওখানে  বসল। ততক্ষণে খুড়ো মহুয়ার বোতল সম্মোহের সামনে রেখেছে।

----" আমি কিন্তু চেক করবো, মালটা ঠিকঠাক কিনা! "

----" করো বাবু করো। দেখে লাও। জীবন সর্দারের মাল বটে।"

সম্মোহ বোতলের ছিপিতে সামান্য মহুয়া ঢালল। তারপর লাইটার বের করে জ্বালাল। ছিপির মহুয়া দপ করে জ্বলে উঠলো।

 ----" একদম ঠিক আছে ধলু। তাই তো তোদের কাছে আসা।"

সম্মোহ দুটো গ্লাসে মহুয়া ঢালল। তারপর তাতে খানিকটা জল মেশাল। 

----" নে এক চুমুকে মেরে দে। তারপর লঙ্কায় জলজিরা লাগিয়ে একটা কামড়। তারপর এককুচি শশা। আহা...!"

বিকাশ বলল, " পাগল! আমি তোর মতো দক্ষ মাতাল নই। আস্তে ধীরে নিচ্ছি।"

দ্বিতীয় পেগ ঢালতে ঢালতে একটা মাটির পাত্রে মাংস নিয়ে হাজির খুড়ো।

সম্মোহ খুড়োর হাতে মাংস দেখে যেন আরো খানিকটা এনার্জি পেল। বিকাশ তখনও আগের পেগটা শেষ করতে পারেনি। বিকাশের কাছে মহুয়ার গন্ধটা বেশ চড়া লাগছে।

সম্মোহ বিকাশকে বলল, " শোন পুরো মালটা এক নিঃশ্বাসে মেরে দিশি মাংসটা মুখে দে। দেখবি অতটা অসুবিধে হবে না। তারপর তিন পেগ হলেই মহুয়া তোর বন্ধু হয়ে যাবে।"


 ----" পাগল! আমি আর একটা নেব। তাও তোর জন্য। আমার এসবে আসক্তি বা অভ্যেস কোনোটাই নেই।"

-----" তা বললে হবে না বন্ধু! আমার সম্মান রাখাটা তোমার দায়িত্ব!"

----" শোন ঢলু তোরা ওইদিকটায় মহুয়া নিয়ে বসতে পারিস।" সম্মোহ বলল।

----" সে হবে। আগে বাবুরা ফূর্তি করুক।"

দালানের ভেতর ঠান্ডা হাওয়ার একটা আমেজ আসছিল। তাও সম্মোহের গরম লাগছে দেখে ঢলু একটা টেবিল ফ্যান চালিয়ে দিল। ফ্যানের হাওয়ায় নেশাটা টানটান হয়ে উঠল। 

---" মাথাটা ঝিমঝিম করছে রে। বেশ লাগছে! তুই মাইরি সত্যি খুব ভালো।"

বিকাশের কথায় সম্মোহ বেশ মজা পায়।বলে ," এই বার পথে এসো খোকা! প্রিয় বন্ধু বুড়ো খোকা!"

-----" আমি বুড়ো খোকা! আর তুই ছোটখোকা! ছোটখোকা বলে অ আ... হিহিহিহি হাহাহা..."

------" গাঁড় মেরেছে! এতেই ধরে গেল! "

----" এই শোন! লীমা কেমন আছে রে। ওর সঙ্গে তোর যোগাযোগ আছে?" বিকাশ বলল।

--- "কে লীমা?"

---- " কেন তোমার প্রেমিকা হবু বউ! "

----" হবু বউটউ বলে লাভ নেই। সেসব গতজন্মের রিংটোন। এখন ও  একটা সাংসারিক ছাগল! "

---- "বললি বটে সাংসারিক ছাগল!"

---" বলবো না! মা-ভাইয়ের কথা ভাবতে ভাবতে কলুর বলদ হয়ে গেল! সংসারের ঘানি টানছে!"

----"ওকে একবার এখানে নিয়ে আয়। দেখবি তোদের মিল হয়ে যাবে।"

----" ও এখন অসম্ভব সাইকো! ওর আর কিছু হবে না।"

Friday, July 30, 2021

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈রঞ্জন মৈত্র

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||










রঞ্জন মৈত্র-এর কবিতা



অস্তরাগ

যেন সে ছবির মধ্যে জব্দ শব্দগুলো
যুদ্ধের মধ্যে খানিক রক্ত এবং পতাকা
রাগপথে সম অসম মেঘালয়
ঘুরে যাও, দেখো, আবার দেখো
শব্দরা পথ পথ করছে
রক্তরা যতদূর লং শট যায়
অস্ত উদয় উপমা
যুদ্ধকে মেরে ফেলো অনুপমা, যেন সে-ই
ক্যামেরা হাতে বড় হতে দিলো না তোমাকে
কামানটি বসে রইলো দলে ও মাদলে
যেন সে হাসিটুকু
গড়ন্ত দেয়ালে মিশে থাকা সুর
ফের দেখো, ঘুরে ঘুরে শেষ হচ্ছে ফোর্থ পিরিয়ড
টিফিনবেলার দিকে উড়ে গেলো বিদ্রোহী কবিতা 
                   

নিঃশব্দ ওয়ার্ড

গড়ানো জলের কাছে মুখ যায়
কথা নেই কোন কথা নেই
যে তালে আলো নাচছে
তাতেই ড্রামস আর গাছটি ছম্মক ছল্লো 
মুখ একটি শব্দ কথা আর একটি
ওহো কেউ কারও জন্য তৈরি ছিলো না 
ওয়ার্ডে সার বেঁধে শুয়ে অসুখেরা
জল তার সময়ে গড়ায় 
ওষুধ গড়িয়ে যায় সদরের দিকে 
তোমার বিগ বেন আমি দু' কাঁটার বেশি
পড়তে পারিনি ক্ষমা কোরো
ডালে ডালে আলো জ্বলছে ধ্বনির মাইমে
কথা নেই কোন কথা নেই
           
দ্বিতীয় ডোজ

শুনিয়েছিলেম গান
লেম এক্সকিউজ কিনা বুঝতে পিছোই আর পিছোই
সুখেরা আওয়াজ দেয়, ফস গয়ে বে!
অসুখেরা গম্ভীর, বারো সপ্তাহের আগে নো স্মাইলিং
কত অন্ত কত রকমের মিল
গান বান সন্ধান মায় বিধানচন্দ্র
ডাকতার বাঁকুড়ায় থাকে
ওদিকটায় তেমন গেলেন না বাবামশায়
ময়দানেও তেমন না
কত শিল্ড ছড়িয়ে শরতে বসন্তে
ফুটবলের উদয় অস্ত
তোমার কান্নাগুলো সুন্দরের সিন্দুকে রয়েছে
পাহাড় জঙ্গল মেঘ অনিন্দ্য ডাকতার 
ছিপছিপে সূচকে গান শোনাচ্ছে আমার চামড়া পেশী
এক লাইনের গান
অন্ত ও মিলের তরীটি উধাও
প্রিয় জ্বর আসতে পারে এই খুব অপেক্ষায়
জানলায়, মন কেমন করে 



আমন্ত্রিত সংখ্যা≈প্রদীপ চক্রবর্তী

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||










প্রদীপ চক্রবর্তীর কবিতা 


মতো 

মতো শুধু অবধারিত করো | দৃশ্য কী বাজবে তুলনা ছাড়া ?
মতো' র মনকেমনের মনে যেভাবেই শরীর মোচড়ায় , তাই - ই মোক্ষম লাস্য | পাগলটাকে সব তামাদি হয়ে গেছে বললেই , হেসে কুটিপাটি 


ভাতের মতো নিরন্ন মানুষের জগৎসীমা 
যেন কঙ্কাল হয়ে যাচ্ছে  | 
মতোকে ধুলোবালি বেসুরো মুখোশের ভেতর 
ছেড়ে এসো ,
ওপারে ঘুমিয়ে আছে দেয়ালগিরি 
মৌজা মহকুমার জরিপরেখায় রেখে এসো , 
চুল্লিঘরের চাঁদনিরাতে কিছু ফাঁকফোকর থেকেই যায় , এবার বসন্ত কাটাবো   অহর্তের কাছে 

দুদিনের অশ্বারোহী এসেছে রাজপোশাকে ,
মতো তবু অবধারিত 

ছেঁড়া কানি পরা লোক সবুজে বাড়ছে বাৎসরিক হারে ,

শ্যাম গয়নার মতো দেহে তার পাগলের মাতোয়ারা 

দেশান্তরে আঁধিয়ারে পুরোনো গাছের ফুল নুয়ে পড়ে 

ছায়ার ছন্নে উচ্ছন্নে 
দ্রিমিকি দ্রিমিকি দিম 
অথৈ অব্দি ছেনালিপনায় 
মেঘের দেহাতি দিয়ে অতলের পরিধি মাপে পাগল ...

অধিক 


অধিক তাই অপবাদ | একবগ্গা কুয়াশা ঘুরতে থাকে আর রাস্তার  ঠাঁইনাড়া হয় না | রাস্তা না জেনেই নিঃশব্দে ছড়িয়ে পড়ে সাইকেলের চলনদারি | সাইকেল চলতে শেখে নি তাই মানুষের শ্রেণীচরিত্র নিয়ে তার মাথাব্যথা নেই |
বিষণ্ণ দীর্ঘসঙ্গী একজন চলে গিয়েছিলো সাইকেল ছেড়ে বন্ধ পৃথিবীর তালাচাবি নিয়ে 

রংচটা চিলেকোঠায় যতবার ফিরে আসি  সোঁদাগন্ধ ঘুণধরা কাক খুঁটে নেয় এবং আলতো হয়ে বাতাসে ছেড়ে দেয় সরলরেখা | কোথাও কোনও বাঁক নেই | প্রয়োজনভিত্তিক চিৎকারের মূল্য তাকে চিনিয়েছে ' স্বেচ্ছা রক্তদানে'র
 গরিমা | বাড়িঘর হিজিবিজি ঢ্যাঁড়া গোল্লা শিশুর ম্যুরাল | 
ভূত ও ভবিষ্যতের মাঝে অবস্থিতি স্বভাবত সবিকল্প , ইতস্তত উদ্দেশ্যবিহীন আলোরকণিকা 


নিগ্রহকারীদের সম্পর্কগুলো রাস্তার মতন , অনুশীলনে গাঁথা | 
অধিক কী ভাবে গিয়েছে ঝরে এই নিদাঘে কনককান্তায় অস্পষ্ট শ্যামকণা - শস্যখেত !

কবে যেন আমি নেমে দেখি পাড়াটির এক্কেবারে কিনারার কাছে টবের রঙ্গনে কুঁড়ি এলো | মরসুমি ফুলেদের মেঘ ঝরা গুলাবিগ্যাং |
হরিৎ ছায়ার বিজুবন | তমাল মৃগমাটি , কী প্রসন্নফুল্লরা ! 

আদল 

নিস্তরঙ্গ শ্রাবস্তী আমাদের ছোট বাঁশঝাড় 
মেঘরং - পরা বৃষ্টি আজ 
মেয়েটির আদলে গড়া 

দরজা ভাঙলো 
মনের মহার্ঘ্য দিয়ে 
শস্যের জখম থেকে সংক্রমিত ভ্যান গঘ 
তাকে পত্রমোচন দেওয়া যাচ্ছে না 
দেওয়া যাচ্ছে না ছায়ার বিন্দিয়া 
চিবুকের তিল গড়তে 
কেন যে চোখে জল আসে অবনীর 

অবনী বিজনে সুহাসিনী যাকে ছেড়ে এলে পমেটম 
রং -  মিলান্তি সবুজের কাছাকাছি একটা মেলা 
মেলার গঞ্জ 
তরঙ্গ ছুঁয়ে মরা কাক 
কয়েকফোঁটা জন্মান্ধ বৃষ্টি 
সে তো সর্বনামের টপক 

অনেক যুগের হরিণ পড়া বাবাই ...