Friday, July 30, 2021

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈তুলসীদাস ভট্টাচার্য

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||








তুলসীদাস ভট্টাচার্য



কবিতা থেকে দূরে

কবিতার পঙতি ধরে এগোলেই 
রাতের আকাশে চাঁদ ওঠে। 

ছায়াপথের ভেতর হাঁটতে হাঁটতে 
কখন যে কাঁকুরে মাটিতে পা ঠেকে! 

লন্ঠনের আলোয় মাটির দাওয়ায়
অসুস্থ পিতার শ্বাস ওঠে। 

নিভে যায় কবিতার আলো 
ছানিপড়া চোখে উপন্যাসের পাতায়
হাতড়ে বেড়াই কবিতার পঙতি গুলি। 

লালমাটি 

তোমাকেই ছুঁয়ে থাকতে চেয়েছি 

লালমাটি জুড়ে অসমাপ্ত ইতিহাস 

শীর্ণ অক্ষরে বাউল বাতাস 
হাতে বৈষ্ণবীর তুলসীর মালা 

ফাঁকা মাঠে চেয়ে থাকা 

আখড়ার অস্থায়ী কাঠামোয় শুধু লালন। 


বৈরিতা 

কবিজন্ম শেষ হলে মৃগশিরা ঝরে পড়ে 

পর্ণমোচীর বাকলে চড়া রোদ 
ছায়াহীন মাটি 
হারিয়ে ফেলে আর্দ্রতা 

বসন্তের হলুদ মাখামাখি জীবন ‚
কর্পূরের মত উবে যাওয়া 
ক্ষনিকের হিমেল হাওয়া 

বনসাই টবে এত বিরহ ও যন্ত্রনা 
কুন্ডলী পাকানো পুঁটলির মত শেকড়ই 
শুধু জেনেছিল নুড়িপাথরের সাথে
ফুল ও ফলের কতখানি বৈরিতা। 



আমন্ত্রিত সংখ্যা≈বিনীতা সরকার

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||










বিনীতা সরকার-এর কবিতা


খোলা চিঠি

রাতের আকাশে জেগে 
একলা একা তারা
চুপিচুপি রাত ভোর হবার গান শোনায়
ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকি 
জানালার গ্রিল ধরে
ঝিঁঝিঁ ডাকা কোনো এক সন্ধ্যায় 
একান্তে,খুব নির্জনে,নিরালায়
বাতাসে ভেসে আসে শিউলির ঘ্রাণ
উড়ে যায় আঁচল হাওয়ায়
দু'চোখে শুধুই মাতাল চাওয়ার ঘোর
তোমার স্পর্শে নতুন প্রাণ
তোমার ছোঁয়া মনে শিহরণ জাগায়
তুমি আসবে বলে
কেটে যায় দিনের পর দিন
মাস,বছর, ঘুম না আসা 
রাতের প্রহর অবলীলায়
জেগে আছি আলো হয়ে 
তোমার বুকের ভেতর
তুমি ছুঁয়ে দেখো হৃদয়বন্দর
চিনে নাও আমায়
ঘুম না আসা স্বপ্নেরা
দু'হাত বাড়িয়ে শুধু 
তোমাকে ছুঁতে চায়
তোমাকে কাছে পেতে চায়


ক্ষয়

একটা সরু সুতোর উপর দুলছে জীবন
দুলছে যাবতীয় স্বপ্নের মিছিল
রাত বাড়ছে বুকের ভেতর 
গভীর অসুখ
অসুখ ভিতরে-বাইরে
শুশ্রূষাহীন সময় নদীতে
বসে আছি পা ডুবিয়ে
কোন বন্ধুর হাত এগিয়ে আসছে না
মৃত্যু গভীর ছায়া ফেলছে চোখেমুখে


নীড়


তোমার ঘন নীল আকাশ বুকে 
হারিয়ে যাওয়া
আমার নিত্যদিনের অভ্যেস 
দিনান্তের রঙ মেখে ঘরে 
ফেরা ক্লান্তি তোমাতে হয় বিলীন
তোমার ওই পাখির নীড়ের মত চোখ
আর ঘন কালো চাহনি
যেন এক গভীর মায়া
টলটলে বিশ্বাস ভেসে ওঠে তাতে  
আমি ডুব সাঁতারে খুঁজে পাই মুক্তো 
বারংবার
তোমাতেই খুঁজে পাই 
এক নির্মল শান্তি ঘেরা আশ্রয়
বট বৃক্ষের দীর্ঘ শীতল ছায়া
ক্লান্তি মুছে দেওয়া মিষ্টি বিকেল
তপ্ত মরুর বুকে অবারিত বারিধারা
স্নিগ্ধ শান্ত চাহনি
যেন ভৈরবী সুরের আলাপ
তুমি ক্ষত সারিয়ে দেওয়া ঔষধি প্রলেপ
শান্তির বাতাবরণ
এক উদার উন্মুক্ত আকাশ
তোমাতেই খুঁজে পাই নিবিড় প্রশান্তি
খুঁজে পাই এক বুক নীড়…



আমন্ত্রিত সংখ্যা≈উদিত শর্মা

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||








উদিত শর্মা



পিৎজা কনফিডেন্স 

শুধুমাত্র কতগুলো কফিব্রেক দিয়েই 
একখানা আস্ত বাড়ি বানানো যায়। 

সেখানে কোনো কুয়াশা বিকেল বা
ডুবসাঁতারের স্থান নেই। 

শুধুমাত্র শিশিরের বারকোডেই
পাওয়া যাবে প্রবেশাধিকার । 

দেয়ালবিহীন সেইসব বাড়িতে আমাদের 
ইজিচেয়ারের কয়েকটি হাতলই যথেষ্ট । 

গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী ফুলকাটা
টি- সার্ট আর উচ্ছল স্নিকার। 

ছড়ানো ছিটানো মিনারেল আলাপ থেকেই
উঠে আসবে আমাদের পিৎজা কনফিডেন্স । 


প্যানিক মোড অন

মধ্য দুপুরের পা-ধা-নি-সা থেকে প্রেম ডট কম। 
ব্রিদ ইন , ব্রিদ আউট 
বাঁ দিকের বুক পকেটের গোপন দ্বারে
ওপেন এন্ডেড সংলাপ... 

প্রতিটি টি ব্রেকে দেড় চামচ চিনি
এবং লাঞ্চ ব্রেকে এক চামচ চিলি সস্
বিকেলের চুমুকে জিব বের করা ভূতের স্মাইলি 
প্যানিক মোড অন... 

টাইট জিনসে গীটারের ঝংকার :
 " বসন্ত বাতাসে সই গো বসন্ত বাতাসে "


ধন্যবাদ 

যেকটি ধন্যবাদ পকেটে জমা হয়েছে 
সেগুলো ভাঙিয়ে কয়েকটি ধবধবে দিন
কিনতে চাই। 
আর একটি হুডখোলা পাহাড়। 
সময়ের হা থেকে বেরিয়ে ফুঁ এ ফুঁ এ
জীবন কাটাবো। 
ফিরে যাবো সেই দরবারি বিকেলের কাছে। 
রূপসী বাঁশির ভাইব্ স্  এ বুঁদ হয়ে
এক চুমুকে শেষ করে ফেলবো
সবকটি ঠোঁটের সুপ্রভাত। 

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈রুবি রায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||










রুবি রায়-এর কবিতা



শ্যামাসঙ্গীতের ব্ল্যাকমেইল 

যে চিন্তাগুলি অদৃশ্য দ্রাব হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বটম টু বটুয়ায় --
তারা সকলেই ম্যাটিনি শো ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে।
মগডালের স্ক্রিনশট তুলে এগিয়ে গেছে বহুকোশী ইমেজে ।
গোলাপি তৃপ্তিতে ভরপুর সকল আদিমরস ।
এক আটপৌরে ঢেকুর থেকে ওড়ে সাদা পায়রা ।
তবে, দূরে কোথাও শ্যামাসঙ্গীত ব্ল্যাকমেইল করে উঠলে আদিমতা হ্রাস পায় । 
হোমোসেপিয়ান্স থেকে ঝোলে ঝিরণী নৈতিকতা ।
গুপ্তবীজী মন্থর ঘটনার উদাহরনগুলি নিজস্বতা কায়দায় শিশির ফলিয়ে যায় ভ্রু অঞ্চলে । 

সুতরাং, বলা যায় আদিমতা # লুকোনো তৃতীয় জ্ঞানচক্ষু । 

                   
রুদ্রাক্ষ

আমার বুকের গ্লোবাল ওয়ার্মিং যখন বেড়েই চলেছে তখন রুদ্রাক্ষ দুপুর বিষিয়ে গিয়ে ফুলপ্যান্টে তুমি  কবিতা লিখছ ।
ফরটি এইট মেগাপিকসেল ভেদ করে তিন দশ তিন পরিধি সমৃদ্ধ যমজ উষ্ণতা হালকা হল তোমার ছেদহীন অঞ্চলে ।
      তৈলাক্ত সিরিজের কাঠামোয় লাগল পদান্তর ।

আতরমাখা এক্সক্লুসিভ ফেমিনিজমে ভিজে এসেছি তোমার তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলির অসামান্য যোজ্যতায় ।
যখন সেগুলো ঠোটস্থ করি ,পাসওয়ার্ড খুলে বেরিয়ে আসে কিছু তুলতুলে আদুরে শব্দ ।

যদি কখনো , বইমেলার কোলে আমার ধ্যানস্থ আঁচল খসে পড়ে .....তখন তোমায় বেঁয়ে উঠুক সর্পগন্ধা । 
     লিগামেন্ট থেকে কিছু সময় ধার করে ট্রেকিং করো , এরপর একটা পরিভ্রমনের কাহিনী শুরু হবে ৩৫ পৃষ্টা থেকে ।

  
গবেষনার ঠিকানা

সন্দেশ পাঠালাম আমার ব-দ্বীপ সমভূমির ।ঘেমে যাওয়া মাইক্রো সেকেন্ড গুলিতে লাগুক উন্মাদিত বাঁশির সুর ।

          জ্বালামুখ গবেষক হয়ে দাঁড়াক ।

উরুর প্রশস্ত পথ ধরে প্রদীপ নিয়ে সাবধানে পাড়ি দিও এক নতুন মাটিতে ।

তৃষ্ণার্ত ঘাসগুলি সরিয়ে এগিয়ে গেলেই ম্যাচিওর কামিনীর গন্ধে লেখা থাকে শঙ্খ লাগার আবেদন । 

খোলা বোতাম জানালায় চশমা টানলেই দেখতে পাবে দুটো শ্বেত পদ্ম। তাদের বৃত্তাকার দানায় নিম্নচাপের কালোমেঘ ....

সাম্রাজ্য বিস্তার ভঙ্গিতে ফুলগুলোকে হাতের মুঠোয় চেপে ধরো-- মেঘ ভেঙে বেরিয়ে আসুক শান্তির বাণী ।

ঠোটের দাওয়ায় বসে আছে যে বুলবুলি -তাকে ভিজিয়ে দিয়ে নাচিয়ে দিও।

শ্বেত চন্দনে পরিপূর্ণ হোক তিতলির সমভূমি!সঠিক ঠিকানায় চেপে প্রভু চলে এসো ।

দুলে উঠুক সিংহাসন । পরাজিত বসন এবার ধুলো মাখুক । 



Wednesday, July 28, 2021

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈নীলিমা সাহা

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||










নীলিমা সাহার কবিতা



'মা নিষাদ প্রতিষ্ঠাং ত্বমগমঃ শাশ্বতী সমা'

1)  

প্রজ্ঞাপারমিতা স্কুল ।অঙ্কের ক্লাস থেকে 
   ভেসে  আসছে পিথাগোরাস...
   জ্যামিতিপরিমিতির বাইরে ওই তমসরাজসিক    ক্ষেত্রফল----কোকুনের স্থানে উই-এর বাসা
   চৈত্র-স্লেটে উষ্ণ পুকুর--ছমছম ঝমঝমে রাঙা     হাসিরা বুঝলেও পাশেই বাংলা-দিদিমণি 
   টের পায়নি সিঁড়ির মধ্যমা 
   কী ভাঙছে--সন্ধি না প্রত্যয় !

দুপুরমেঘের নূপুরে ততক্ষণে অজস্র  শ্রাবণ--
ভাঙা-গড়ার পাড়ে শীত-সব্জি যেন--ফিজিক্স-পাতায় ইন্টারন্যাশনাল ফিজিওলজি-খেলছে ফেয়ারিরোদ,প্রেমহরকরা...

গৃহান্তরে আর পৌঁছায় না স্যুররিয়েল চিঠি

পাড়াকে পাড়া তবু  ছুটছে নেশা আর নেশায়


2)

নতুন বাড়িটা পুরোনো ইঁটেই গাঁথা--
  
অথচ কী সাধে নামাঙ্কিত 'নতুন বাড়ি'
কুহুকুহু কুহক --পুরোনো ছায়ারই যাতায়াত 
হু হু মনকেমনিয়া শনশন গায়

পর্দায়  দোলে অ-সুখনামা--
বিকেল  আগলে চকচকায় অদূর-সূর্যাস্ত 

নির্নিমেষ ব্যাকুল বকুলকথারা
 
নতুন সাজে  সেজে ওঠে অলীক গর্ভের দুঃখ
প্রথম  বন্ধনে আঁকে মর্মর জ্যোৎস্না 


3) 

দীর্ঘছায়া।আতঙ্ক ।শীৎকার
             ক্ষুধা ...
 জন্মান্তরে রূপকথা--নির্ঘুম সোসিওপ্যাথস