Thursday, April 15, 2021

১-লা বৈশাখ সংখ্যা || কবিতায়~সাত্যকি

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||     

সাত্যকি

বৃষ্টিহীন থেকে বৃষ্টি, একটা সফর 

জানলা বন্ধ, ঘরের চালের উপর কয়েক টুকরো জল 
কাল রাতে বৃষ্টি হয়েছে এখানে - আজ আর ধুলো নেই - 
যখন হাওয়া উঠল কাল - ইলেকট্রিক তারের গা থেকে 
কয়েক হাত উপরে উঠেছিল ধুলোর শরীর 
বহুদিন এখানে বৃষ্টি হয় নি -  

এখন গাছের পাতা চকচকে 
রোদ কিছুটা ঝিমানো 
রাস্তার শরীরে জল 
দূরে ছায়া ছায়া মানুষ আর 
বিশ্রাম নিচ্ছে একটা ঝিনুক সকাল 




১-লা বৈশাখ সংখ্যা || কবিতায়~ঝুমা মল্লিক

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||    

ঝুমা মল্লিক

লজ্জা



আলো-আঁধারিতে সামনে চেয়ে দেখি,

কেউ কোথাও নেই,সামনে শুধু আতস কাঁচ।

পথ জুড়ে তখন মিছিল এগিয়ে চলে।

স্লোগান দিয়ে হেঁটে চলে ওরাও।

           কে তুমি ?

পথিক তুমি কি তোমাকে চেনো ?

বলো, চিনতে পারছো?পারছো না।

এই আতস কাঁচে নিজেকে দেখো।

তোমার শরীর জুড়ে ধূলোবালি,

     মুখে মিথ্যে বুলি।

তোমার জিহ্বাতে অহংকারী পুটলি ।

চোখ জুড়ে তীক্ষ্ন লজ্জা।

কপালে কাটাকাটি খেলে শিরা ।


সব দেখে আতস কাঁচ নিমেষে মাটিতে পরে যায়।

ভেঙে যায়,টুকরো টুকরো হয়ে যায়।

মানুষের মন যেমন ভাঙে তেমনই ।





১-লা বৈশাখ সংখ্যা || কবিতায়~ রানা সরকার

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||       

রানা সরকার 

অতি সত্ত্বর 

চিৎকার করো, অতি সত্ত্বর গর্জন তোলো
ছিটিয়ে দাও বোবার জন্ম কথার মৌনতা

সবুজ শুকিয়ে আকাশ কালো
মস্তিষ্কের ধূসরতায় রাত্রির মৃত্যু

জেগে জেগে ল্যাম্পপোস্টের চোখ ক্লান্ত 
গাছ ছুঁড়ে ফেলছে অন্তিম ক্লোরোফিল

গোলাপ চুরি হয়ে পথে রয়েছে শুকনো কাঁটা 
কাঁটার উপরে রক্ত পায়ে হাঁটছে নীরব দেশ

ব্যার্থস্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন জীবন-বালিচোখ-অন্ধকার
প্রেমিকেরা ছুরি রাখছে নরম লাল ফুসফুসে

নাট্যমঞ্চে ঝড় থেমে যায় আলো নিভে যায় 
ঈশ্বর নেশায় সিংহাসনে বসে হাততালি দেয় 

আজকাল কেউ কবিতা লিখছে না প্রতিবাদের লাল কালিতে
আজকাল কেউ অতিসত্ত্বর কবিতা লিখছে না শুকনো রক্ততে





১-লা বৈশাখ সংখ্যা || অণুগল্পে~স্বপন শর্মা

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||    

স্বপন শর্মা

মেরুদন্ডী

রাস্তার ধারে জমায়েত। উদ্দেশ্য পথসভা। ফেস্টুন টানানো হয়েছে অনেকটা এলাকা জুড়ে। সুব্রতদের বাড়ির গেটে, এবং রাস্তার ধারের সবকটা সুপুরি গাছে লাগানো হয়েছে দলীয় পতাকা। যে কেউ দেখলে বুঝবে, সুব্রতরা ঐ দলের সমর্থক।
ঘরের ভেতরে সুতপা রাগে গর্জে ওঠে । কিন্তু বারণ করার সাহস নেই। কারণ গত বছর পঞ্চায়ত ইলেকশানের আগে  ওদের বাড়িতে দলীয় পতাকা, কাট -আউট ফেস্টুন ইত্যাদি লাগাতে বারণ করেছিল।  রাতে সদল বলে এসে সুব্রতকে ওরা মারধর করেছিল।সুব্রতর সামনে সুতপাকে রেপ করার হুমকি দিয়েছিল ।
সুতপার রাগের পরিপ্রেক্ষিতে সুব্রত বলে, আর বারণ করব না। তোমার  আর অরিনের নিরাপত্তাই আমার কাছে আসল কথা ।                                                  
--কি অসভ্য দেখ । আমরা  ওদের দল করি না। ওরা সব জানে। তবু বেশি করে আমাদের গেটে , রাস্তার ধারের সবকটা সুপুরিগাছে  ওদের দলের পতাকা  টানায়। মাইক এর চোং  আমাদের বাড়ির দিকে তাক করে দেয়। ঘরে অসুস্থ শাশুড়ি জেনেও  ওরা এটা করে।
--আসলে জোর যার মুল্লুক তার। আমাদের রায়পাড়ায় ওদের লোকই বেশি। আমাকেও ওদের দলে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।   আমি নিজের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। সুব্রতর পরিষ্কার কথা ।
--- ঠিক । একদম যাবে না। ওরা টাকা ছাড়া কিছু বোঝে না । মনে আছে ছেলের রেশন কার্ড করার জন্য নীলুদা পাঁচ হাজার চেয়েছিল ? আমার প্রাইমারি স্কুলের চাকরিটা হল না তিন লাখ দিতে পারিনি বলে । 
-- আরে ওরা তো ওদের দলের লোকের কাছ থেকেই টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছে। তবে টাকার পরিমাণ একটু কম । আমার টিউশন না থাকলে তো বিপদে পড়ে যেতাম। লক-ডাউন কবে উঠবে কে জানে ? গার্জিয়ানরা ছেলে-মেয়েদের পড়তে পাঠাতে  ভয় পাচ্ছে। ফলে ইনকাম এখন অর্ধেক।  ভাবছি একবেলা অন্য কাজ করব।
--দরকার নেই। রেশনটা তো ফ্রী পাচ্ছি। । ছেলের স্কুলও বন্ধ । ফলে কোনরকম চালিয়ে নেব।  
-- তোমার এবং আমার দু'জনের  যখন প্যানেলে নাম আছে, চাকরি আমাদের দিতেই হবে । আজ হোক বা কাল । তবে ঘুষ দেব না। চাকরি হলে হবে , নাহলে নয় । 
--আমারও একই কথা। 




১-লা বৈশাখ সংখ্যা || কবিতায়~বিশ্বজিৎ

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||    

বিশ্বজিৎ

যুবক,ভালোবাসা আর অন্ধকার

বিশ্বাস করো
আমি কিছুই বলতে চাইনি।
কিছুই বোঝাতে চাইনি

ধ্বনির গভীরে
বারবার ঢুকে গেছে-
এক নি:সঙ্গ চিৎকার...
তরুণ কবির বসন্ত

একবার ছিঁড়ে- খুঁড়ে দ্যাখো।
ডুব দিয়ে দ্যাখো

কান্না ছাড়া,আর কী-ই বা অবশিষ্ট আছে...