Friday, October 2, 2020

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ শ্রীপর্ণা গঙ্গোপাধ্যায় ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
শ্রীপর্ণা গঙ্গোপাধ্যায়


ঘুমহীন  রাত্রিগুলি ভেলায় ভাসিয়ে দিই তাই  ...
 
জিজ্ঞাসা চিহ্নের মতো তোমার শরীর ।
আমি অনিবার্য গতিতে তাকে প্রদক্ষিণ করি ।
আহ্নিক গতির শেষে রাত নেমে এলে
কটুস্বরে  ডেকে ওঠে রাতজাগা পাখি ।
জেগে থাকে  রাত্রির  তৃতীয় প্রহর ।

আমি প্রথম পঙ্ ক্তি লিখি
দ্বিতীয় পঙ্ ক্তি  লিখি
তৃতীয় পঙ্ ক্তি লিখি
জিজ্ঞাসা চিহ্নটি তার পাশে এসে বসে।

পূর্ণচ্ছেদের  পর যে ঘুমটি আসে
আমার আর তার সাথে  দেখাই হল না ।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ নবনীতা সরকার ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
নবনীতা সরকার


অপঘাত

ভাতের মাড়ে ডুবে এলে চাঁদ
একটা প্রকোষ্ঠবিহীন 'আমি' এসে 
চুষে খায় পা। জাগতিক ধমনী জুড়ে
গিজগিজ করে ঘাতক অক্ষরজন্মের অক্ষমতা।
কাল পেড়িয়ে যতখানি প্রেম খুঁটে খেল চিল
তারই ছেঁড়া পালকে লিপিবদ্ধ খড়কুটোর সংসার,
আর ব্যবসায়ী সংগঠনের এক্কা দোক্কা।
যুগান্তর যোগ সাধনে কাষ্ঠবৎ শূন্যের গুণিতকেরা শুধু জানে-

আমরা বায়ু অন্বেষণের নামে আজীবন
আত্মশ্লাঘায় খুঁড়ে চলেছি
বিস্মৃতির পাতকুয়ো,
আসলে সব চরিত্রই ধ্রুবক এর অপঘাত।।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ তাপস গুপ্ত ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
তাপস গুপ্ত


চায়ের দোকানে মেঘ নেই

চায়ের দোকান ঘিরে মেঘ নেই
ঝুপ ঘন কুয়াশা চার চালা ঘিরে
তখন ব্যাধি হীন ভোর আর নির্মেদ ধোঁয়া
অলস সময় ধরে পাক মারে,
সূর্য ছেঁড়া পীত লাল আকাশ
আর পোড়া কয়লায় আঁকা হয় চারকোল
অথবা অ্যাক্রিলিকে স্বর্গ অভাগীর,
পাশে বসা কিশোর কাঙালি চোখে
না জানি কেন ঘোর ধোঁয়া ধুম জ্বর,
রব তুলে পাখি সব ডানা ঝাড়ে শিস কেটে
সাত রঙ অশ্ব রথ এখুনি
ধুলো ছোঁবে গেঁয়ো মৃত্তিকায়,
দূরে দুচাকার সাইকেলে লালমাটি
মিঠে রোদ মেঠো রাস্তায় দোল খায়
ব্যাকুল কিশোরী রাঙা শঙ্কায় বিনুনি ঝাঁকায়,
ঝোপের ভাসানো ঝিঁঝিঁ ডাক থেমে যায়
বীজধানে ভারী মেঠো বউ আলপথে
আনমনে লজ্জাতুর থমকায়,
গোলাপি গাল আরো ঘন লাল হয় ভৈরবী রোদে,
এই কুয়াশায়
কোনো মেঘ নেই চায়ের দোকান ঘিরে,
ঘনঘোর ফুটন্ত আগুন
আরো টগবগে চায়ের পাতায়,
কিশোর হাতের সেই
ধুমায়িত চা ঠোঁটের চুমু চায়,
 ঘন্টি  বাজে স্পষ্ট কিশোরী দুচাকায়
সিল্যুয়েটে ম্যুরাল হল গোলাপি ওড়নায়,

সোনালী বর্শার মত ভোরের সূর্য সুখ
কিশোর চোখ জুড়ে বিঁধেছে কন্যায়।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ ময়ূখ হালদার ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা 
ময়ূখ হালদার


অপেক্ষা 

প্রিয় মাটির জন্য অপেক্ষারত, ক্লান্ত... 

লাইটহাউসের মাথায় অন্ধকার আলো। 
জেগে আছি, নাকি ঘুমিয়ে পড়েছি-
বুঝতে পারছি না!

শিস দিতে দিতে একটা রেখা উঠে গেল অনামিকার পাঁচিল বেয়ে।
ডেকের ওপর সদ্য গজিয়ে ওঠা নক্ষত্র, 
উৎসব করছে কানামাছির দল
আর
আমি দেখছি- 
বন্দরে ফিরতে চাওয়া নাবিক
ক্রমশ মিশে যাচ্ছে নীল, গভীর নীলে...



≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ রাইমোহিনী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
রাইমোহিনী



৩রা মে ২০১৯/১৯শে বৈশাখ-১৪২৬

টেরাকোটার শাঁখে ফুঁ দিয়ে সেদিন ঝড়ের মধ্যে নেমে দাঁড়ালো রাইমোহিনী। জীবনকে আশ্বস্ত করবার আর কোনো উপায় নেই, তাই ঝড়ের মুখোমুখি–অন্ধের কিবা দিন কিবা রাত, তবু মাঝে মাঝে প্রতিযোগিতার গন্ধ পেলে বিস্মৃত অন্ধকার থেকে নতজানু মন খুঁড়ে বের করতে চায় শ্বাপদের জন্মভূমি।পিঠটান দেবার আগে দেওয়ালে চেপ্টে যাক জঙ্ঘার মাংসল ধিক্কার।চিৎ করা বুক হয়ে নিক মুষ্টিতন্ত্রের আঘাত; নীলিমার নীল কৃষ্ণ লুটিয়ে পড়বে দুর্বল পঙ্গুত্বের গায়ে , আরোগ্যের প্রার্থনার জন্য সাজানো অর্ঘ্যে সামর্থ্যেরা লিখে ফেলবে উপসংহার,তবুও শতছিন্ন ওড়নার শেষাংশ ছিঁড়ে আছড়ে পড়া সমুদ্রের ঢেউয়ে কলঙ্কের সব রক্তপাতকে দৃঢ়তায় ঘনপিনব্দ্ধ রূপ দেবে রাইমোহিনী।ঝড়ের বাড়তে থাকা গতিবেগের সঙ্গে অবিশ্বাসের অসহায়ত্ব জায়গা জুড়তে থাকে। আগ্নেয়গিরির বিনির্মাণতত্ত্বে যাজ্ঞসেনীরা যেখানে আজও অবিচল , সরীসৃপের পৃষ্ঠদেশে বিদ্ধ বল্কলের মত প্রতিস্পর্ধী সহিষ্ণুতায় একের পর এক নশ্বরতাকে অতিক্রম করে যায়। রাইমোহিনীর আগুনের মত খোলা চুল হাওয়ার তীব্রতায় উড়ে যায় আকাশের দিকে,ঝড় নেমে আসে ওর চোখে... শরীরে। হৃদপিণ্ডের বন্ধ দরজায় দহন শুরু হয়। কাঁচুলির গিঁট ঠেলে উঠে আসে উত্তপ্ত নাভিশ্বাস; আজ নারী আর প্রকৃতি একই সঙ্গে যেন উন্মাদ হতে চায়।