Wednesday, October 6, 2021

শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়


দু টুকরো 

১)  

তবুও মানুষ বাঁচে গভীর আশ্বাসে জীবনের সবটুকু ছায়া নিয়ে কায়ার আড়ালে অন্ধকারে বাঁচে সব পরিচয়পত্রের জেরক্স কপিতে স্বপ্ন লিখে ভবিষ্যৎ লিখতে লিখতে অগণিত মানুষের ভিড়ে জমায়েতে নিজেকে লুকিয়ে ফেলে অনায়াসে বারবার সেইসব ছায়াদের খুঁজে সেইখানে হারাবার আগে জেনে নিও তুমি কি মানুষ সত্যি নাকি কোনও দূরতম পাহাড়ের নির্জনতা অথবা ঘন জঙ্গলে নীল অন্ধ রাত্রি আরও জীর্ণতা ভরে নিতে নিতে বুকের পকেটে
      ক্লান্তি,
      যদিও,

২) 

গ্রাম উজাড় পঙ্গপাল মরছে দ্যাখ্ সামলে চল্। সামনে ক্ষেত ধানজমি শুকনো সব দিন অচল। লাইন দাও লাইনে চল্ লাইনই সব মানতে শেখ্। বাঁচা-ই পথ তা যেমনই হোক পোকামাকড় জীবন শেখ্। কার মুখে নেই কথা স্তব্ধ জিভ কি অস্বাভাবিক ?  বন্ধ মন বদ্ধ ঘর

ঘর কোথায় দিগ্বিদিক ছুটছে সব ঘরছাড়া সেই যারা

রাত্রির পাশে রাত হয়ে শুয়ে ছন্দের পাশে শোনে পতনের শব্দ

আচমকা একটু বেঁচে যাওয়ার আনন্দে ঝাড়বাতি সাজায় নক্ষত্র 
নামিয়ে অন্ধ প্রাণ নিয়ে আপনারও দরকার এই
বেঁচে থাকা এই মর্গের কালো অন্ধকারেই
পৃথিবীর সমস্ত আরোগ্য ও অসুখ নিয়ে
মৃত্যু নিয়ে
আড়ালে,

হাসপাতালে, 




শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় সব্যসাচী হাজরা

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||  কবিতায় সব্যসাচী হাজরা


আগামীর কুহু

নিত্যবৃত্ত বাঘের সমান আকুতি দুধের বোতল দাঁতসমান
হুল ফাটছে বিশুদ্ধ মিসেস ফরিদা ও মিস্টার ফরিদে
কে ও কার হৃদচলনের পাখি
সমাজব্রহ্মের চাকা রেফযুক্ত রেপের দলন বলন ও উচ্চশ্রেনীর ঊরু
কেন বাংলাভাগে?
দাঁড়িয়ে গ্রহণ দেখছে শিশুপালের শিশু
মাথা তবুও থামিয়ে রাখছে শীত সংবাদ ও আগামীর কুহু
ফ-হৃদ তবু যন্ত্রময়
শ্রীচরণেষু সার্চে
মিস্টার ফরিদে
মিসেস ফরিদায়…

বিলম্বিত ছায়ায়

ক্ষয় মানুষের সীমানা আঁকছে হাত
যদিও অক্ষয়বাবুর দিন, হাইজেনবাবুর ক্ষতিপূরণ
মানুষপোর্টে কারা যেন পৃথিবীখেলায়
                                            টুকে রাখছে পাখি
মেটামানুষ অদৃশ্য হোলো কি?
আসুন বিমিং পাঠাই ধনধান্যে
সত্যদা শব্দপাখি করে আর
                   গুনে রাখে ওড়ার গুণগান
আমরা তীক্ষ্ণতম গানে
বিলম্বিত ছায়ায় দেখি দ্রুতমানুষের মাথা
মিথ্যেদা'র অলিগলি দেখি
মানুষে মানুষে ব্লিংক ও বর্জন আমরা হারিয়ে ফেললাম
একহারা দুইহারা
বহুহারার আমরা 
          
নিজেদেরই  নাম 
                          ভাগ করলাম 
                                         আলো-ছায়ায় ব'সে...


কুহুতানের মানুষ

আসুন নক্ষত্র ছাড়িয়ে বসি
ধার দিই নিজের ক্ষুর ও আলোকে

কিউবিক মানুষগুলো কিউ ছাড়িয়ে মানসিক
কুহুতানের মানুষ গ্রীষ্মের আগের গরমে ডুবছে
এবার মানুষ ছাড়িয়ে বসি
আপনি নক্ষত্র
আপনি মানুন
গণিতমহল আমাদের ভাসিয়ে দিলো ০ ও ১-এ
০১। ০২। ০৩।
শূন্যের এপারওপার
আলো ভাসানোর গানে মিসেস উদয়
বাড়িয়ে দিচ্ছে ভবযান

ব্রহ্মে আমি হাততালি দিই
গ্রীষ্মের পরে এই আরম্ভ
আমর বিন্দু স্থানাঙ্ক ছাড়িয়ে ঘুড়ি হবার আগে
ধার দিই আলো ছাড়া ক্ষুর ছাড়া
একমাত্র আমাকে…



শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় সুকান্ত ঘোষাল

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় সুকান্ত ঘোষাল



ঘুষের বসন্ত


যথাক্রমে  প্রথম , দ্বিতীয় ও তৃতীয়
বিচারকের  আদেশে
আমায় ঘর থেকে বের করে দেওয়া হল
এই ঘুষের বর্ষায়
কীভাবে আমি মেরামত করি ভিজে টুপি

ওরা কুয়োতলার লোক
ওরা পাথর ঘষে

ছেঁড়া হাওয়ায় পাতলা হচ্ছে ব্যথা
উড়ে যাচ্ছে
যেভাবে সকলের চোখ এড়িয়ে
আহাম্মক
রাজার চেয়ারে দাগ দেয়


থ্রি-ডি


ক্যাশ-অন-ডেলিভারি স্রোতখণ্ডটির গায়ে
আমার ঠিকানা
ভুল লেখা আছে

বাঁশবাগানের পাশ দিয়ে রাস্তা
সেখানে ঢালাইয়ের কাজ চলছে
তার রাতপাখির চুমুতে
শিয়ালকাঁটার অতিথিনিবাস

আমার ডিজিটাল রেশনকার্ড
গেটে দাঁড়িয়ে হাওয়া খায়

চেয়ারে বসে চাঁদ ঘুমিয়ে পড়েছে
ট্রাভেলব্যাগের চাকা
এখানে গড়াতে পারে না



শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় রণজিত্ পাণ্ডে

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||  কবিতায় রণজিত্ পাণ্ডে  



ভেতরের  সীমানা

আবেগের  মুখে ঠুসি পড়িয়ে
বুকের ভেতর  কেমন যেন বেঠিক বেঠিক আওয়াজ হচ্ছিল

তবুও আতঙ্কের প্রাচীর টপকে নীচের দিকে তাকিয়ে দেখলাম-

ওপাড়ের নোংরা জানোয়ারগুলো
                             ধর্ম খাচ্ছে প্রকাশ্যেই

সাহিত্যের ইতিহাস ঘেঁটে অঙ্ক মেলানোর চেষ্টা করতেই
           কে যেন ধমক দিয়ে  বলল-
নেতাদের মতো একদম  মিথ্যে বলবে না

          ইদানিং সব ঘটনার পিছনেই রয়েছে
ভুল বোঝা আর ভুল বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা

মনের পাখিটি তাই  মনখুলে উড়তেই চাই না
                 লম্বা পায়ে পালানোর চেষ্টায় ব্যস্ত

কারণ এভাবে তাদের  বিপদ এড়ানো নাকি সহজ হয়

উল্টো দিকটায় ক,দিন ধরে   তারস্বরে বিশাল  প্রচার হচ্ছে
   তাতে  গোপন অঙ্গটিও নড়ে গেল হঠাৎ

  কেননা -
যারা  যারা  নবাব  সিরাজদৌল্লাকে ইংরেজদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ছিল
     তারাই এখানে রাজনীতির কোচ দিচ্ছে

আমি ঠিকানা শুনবার  জন্য উদগ্রীব হতেই
              ভিতরের সীমানাটা সিল হয়ে গেল অজান্তেই




উপযোগী


   ইদানিং বাস্তবের দলিল খুবলে দেখি
   নৈরাজ্যের বীজেই ফসল বলছে খুব বেশি

তাই রাত জেগে লক্ষ্মীপেঁচা ধরতে ব্যস্ত থাকি না

     আবার  এটাও  লক্ষ্য করেছি -
               বুদ্ধি কেনার জন্য টাকা লাগালেও
                                     চুক্তিপত্রটাই  খুব জরুরি

একদিন এক কাছের  বন্ধু আমাকে বলেছিল-
           তোর মাথাটা আমার চায়
উত্তরে আমি বলেছিলাম-
যারা বাথরুম করে প্যান্টের চেন  টানতে টানতে বেড়িয়ে আসে
       তাদের ঠিকঠাক মনে হয় না আমার

কেননা
ভোরের সূর্য উঠলেই উপলব্ধিগুলো যখন প্রকট হয়
তখন বুক পকেটে হাত ঢুকিয়ে  অবস্থিতিটা মালুম করি

এবং সেটা আমাকে বিপদেই টেনে আনে

আমার অশিক্ষিত ঠাকুমা অবিশ্বাস্য কিছু শুনলেই বলত-
"ষাঁড়ের মাথা- গিরগিটি আর ব্যাঙের মতো কেউ পাল্টাতে পারে না "

তবুও  আমি উপযোগী হবার চেষ্টায়
                   অভ্যেসগুলো ছুঁড়ে ফেলছি ক্রমাগত




শারদীয় সংখ্যা~কবিতায় বাপন চক্রবর্তী

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || কবিতায় বাপন চক্রবর্তী



ঐশ্বরিক

মহাজাগতিক সেই মলমের স্বাদ নিয়ে পাগল হয়েছ

মধ্যবর্তী গ্রীষ্মকাল ক্রমশ উত্তপ্ত হল রোমকূপগুলি

বিকেল গড়িয়ে এলে, কলমের সব কথা লেখা হল হলুদ পাতায়

সবদিকে রৌদ্রগাছ সবদিকে অনি:শেষ হাওয়া...

যেভাবে শরীরে সেই তরলের গ্রীষ্মদিন ধারন করেছ

সেইভাবে, যৌনতা শব্দটি ওরা, সকালে ভাতের সঙ্গে খায়...

শাশ্বত মাছের ঝোল; আর থাকে অভ্যাস শব্দটি...

অভ্যাস পকেটে নিয়ে রোজ রোজ গ্রহণ বর্জন;

গ্রহণ করেছ যেই তখনি তুচ্ছাতিতুচ্ছ দেহ

যাত্রাশেষে জলযানে বারংবার পীড়িত হয়েছে

আশ্চর্য নদীর গন্ধ যেভাবে মাংসের মধ্যে পাও

সেভাবে ঈশ্বর আজ বিকেলের পরাজিত জলে




স্মৃতি থেকে উদ্ধৃত


মনে হয় অন্ধকারে সে আমাকে ছুঁয়েছিল। আর আমি

জ্যামিতি বাক্সের মধ্যে কী খুঁজেছিলাম, এখন আর মনে পড়ে না।

এভাবেই বৃষ্টি আসে। স্যাঁতস্যাঁতে মুহূর্তে ভরে যায় সবকিছু...

মনে হয় অন্ধকারের মধ্যে, বৃষ্টির চেয়েও বেশি কোনও আর্দ্রতায়

সে আমাকে লিখে ফেলেছিল। 

তারপর মেঘলা হাওয়া দীর্ঘদিন আমাদের মুছে চলেছে...

এভাবেই সে বর্ষাকালের ভিতরে মাছ হয়ে ঘুরে বেড়ায়...