Thursday, April 15, 2021

১-লা বৈশাখ সংখ্যা || কবিতায়~রঞ্জনা বসু

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||   

রঞ্জনা বসু

নতুন প্রভাতে 


              পাশের কোন বাড়িতে টেলিফোন বাজছে
                             বেজে যাচ্ছে একটানা
                 ওপারে বসে আছে কেউ ,অপেক্ষা নিয়ে
                   হবে শুভেচ্ছা বার্তা সাথে মত বিনিময়
                             কাল ভোরে নববর্ষ এসে
                      ওঠাবে নতুন সূর্য,এনে দেবে জয়।

                    উৎফুল্ল বৈশাখ, তুমিও দেখবে চেয়ে 
                          চৈত্র যাবে চলে যাবার নিয়মে
                   তুমি তার অন্তিম প্রাণে থেকো মালা হয়ে।
                    দিগন্তে দাঁড়িয়ে মাটি দেখবে তোমাকে
                   সেও জানে, একতারা বাজিয়ে একদিন
                       তুমিও পৌঁছে যাবে চৈত্র আকাশে।
                                পুরোনো বন্ধুকে ডেকে
                               শেখাবে নতুন কোন কথা
                       ভেঙ্গে দিয়ে এ ঋতুর অনিবার্য সীমা,
         
                                 টেলিফোন বেজে যাবে
                          মঙ্গল ঘটখানি সাজানো প্রাঙ্গনে
                          বোশেখের বুক জুড়ে চৈত্র থাকে।



১-লা বৈশাখ সংখ্যা || গল্পে~কৃষ্ণ রায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||   

কৃষ্ণ রায়

স্বপ্ন 


সুরেশ জানে তাঁর দৌড় কদ্দূর। কিন্তু তাঁর নিজের সন্তানের ছোটো ছোটো স্বপ্ন গুলোকে সে সবসময় চায় পূরণ করতে। পূরণ করতে চায় তাঁর জন্য একটা রিমোট কনট্রোল গাড়ি কেনার শখ। পূরণ করতে চায় মহাদেবের ছেলের হাতে থাকা সুন্দর ঘড়িটার মতো একটা দামী ঘড়ি রতনও পড়ুক। রতন সেসব কিছু বোঝে না। সে বায়না করে শুধু। বায়না করতে কোনো  ক্ষতি হয়না। 
স্কুল থেকে বাড়িতে এসেই মাকে বলল, মা, মা, আজকে আমাদের স্কুলের দোকানটাতে একটা নতুন চকলেট এসেছে, চকলেট সঙ্গে না গিফ্টও পাওয়া যায়। আকাশ একটা রকেট পেয়েছে আজ। মা আমাকেও কিনে দেবে?'
- হ্যাঁ, বাবা, দেব। তোর বাবা আসুক আগে তারপর তোকে টাকা দেব।'
রতন খুশি হল খুব। এই খুশিটুকুই তাঁর জন্য বরাদ্দ। আর তারপর কিছু নেই। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে রতন। মা অপেক্ষায় বসে থাকে। সুরেশ অনেক রাত করে বাড়িতে ফেরে। কাজ থেকে ছুটি হয় অনেক দেরি করে। আজকাল সেই কাজ ছাড়া কোনো কাজও নেই সুরেশের। বাড়িতে এসে রমার সঙ্গে কথা বলার সুযোগও পায় না সে। পরিস্কার হয়ে খেতে বসে। খায়। তারপর ছেলের পাশে ঘুমিয়ে পড়ে সুরেশ। অন্যদিকে রান্না ঘরে বেঁচে যাওয়া ভাত খেয়ে বাসন মাজতে থাকে রমা। খুব সকালে আবার উঠতে হবে তাঁকেও। তারপর কাজে যেতে হবে। অনেক রাত পর রমা ছেলের ডানদিকে ঘুমোতে যায়।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই সুরেশ কোনোরকমে মুখ ধুয়ে ভাত খেতে বসে। রমা আরও অনেক আগে ঘুম থেকে উঠেই রান্না করে রাখে। রতনের যখন ঘুম ভাঙে তখন সে দেখে বাবার সাইকেলটা আর নেই। বুঝতে পারে বাবা কাজে চলে গেছে। আর সে টাকা চাইতে পারবে না। সে মায়ের কাছে টাকা চায় না। কারণ মা বলে দিয়েছে, মাস শুরু হলে পরে তাঁকে মা একটা নতুন স্কুলের ব্যাগ কিনে দেবে। তাই সে মায়ের কাছে এখন আবদার করে না।

সকালে ঘুম যখন ভাঙল রতনের তখন সে দেখে যে তাঁর বিছানার পাশে একটা নতুন স্কুলের ব্যাগ আর একটা রিমোট কনট্রোল গাড়ি। সে এইসব দেখে অবাক হয়ে গেল। সে এক মুহূর্তের জন্য চমকে উঠল। 
সে কখনো ভাবতে পারেনি যে, সত্যি সত্যিই সে এগুলো পাবে। রতন বিছানা ছেড়ে বাইরে এল। দেখল, বাবা মা দুজনেই আজ বাড়িতে। কেউ কোথাও যায়নি। সে এই দৃশ্য দেখে যারপরনাই খুশি হল। সে এইরকম একটা দিনের কথা কখনো ভাবতেই পারে না। কারণ সে জানে, বাবা যেখানে কাজ করে সেখানে এক সপ্তাহ পর পর টাকা দেয়। মা যেখানে কাজ করে সেখানে তিরিশ দিন পরে টাকা দেয়। মা এসব তাঁকে বলেছিল। কিন্তু আজ তো পনের তারিখ মাত্র। যা হোক, আছ তাহলে সেও আকাশের সামনে গিয়ে রিমোট কনট্রোল গাড়িটা চালাতে পারবে। স্কুলের চঞ্চলকে দেখাতে পারবে তাঁরও নতুন ব্যাগ আছে।

হঠাৎ করে রতনের মা, রতন ওঠ, ওঠ' বলতেই রতনের ঘুমটা ভেঙে গেল।




১-লা বৈশাখ সংখ্যা || কবিতায়~মধুমিতা রায় চৌধুরী মিত্র

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||  

মধুমিতা রায় চৌধুরী মিত্র

শুভ নববর্ষ

আম গাছের ঘন সবুজ পাতার চিঠিখানা যেন বছর পর প্রাণ পেলো।
হৃদয়ের গোপন ঘরে যে শব্দ দুটি আবছা হয়ে এসেছিলো ধীরে ধীরে--
ঋতুর তারতম্যে ঢেকে গিয়েছিলো যে পান্তা-ইলিশের স্বাদ--
আজ হঠাৎ সে চিৎকার করে বললো "শুভ নববর্ষ"!!






১-লা বৈশাখ সংখ্যা || কবিতায়~বন্যা ব্যানার্জী

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||     

বন্যা ব্যানার্জী

অস্তিত্ব

আছো?
জানিনা। লোকে তো বলে আছি।
আমি ঠিক বুঝতে পারিনা।এই যে কত কিছু ঘটে  চলেছে চারপাশে।সব মানে বুঝে উঠতে পারিনা।এই দেখ সবে কাল ফাগুন শেষ হয়ে চৈতি ফুল ফুটলো,অথচ ঘরের কাছে মৃত সৈনিক ফিরে এলো কফিন বন্দী হয়ে।আমি নিজেকে যুদ্ধের সঙ্গে মুড়ে ঘুমিয়ে পড়লাম তার 
 পাশে। তারপর গড়াতে গড়াতে ঘুমের ভেতর,স্বপ্নের ভেতর একা একা স্নান সেরে সূচী হলাম।  
বড়ো লিখতে ইচ্ছে হলো তোমায় দু - চার লাইন। লিখে যাব , হয়তো বা তোমার উত্তর সাজানো নৈবেদ্য হয়ে থেকে যেতে ও পারি।




১-লা বৈশাখ সংখ্যা || কবিতায়~হামিদুল ইসলাম

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || ১-লা বৈশাখ সংখ্যা ||     

হামিদুল ইসলাম

ফসিল সুখ

দুঃখ প্রসব করে মেঘ
রোমকূপে নিরন্তর প্রবহমান উদগ্র আগুন 
অমাধূলোয় মিশে যায় ক্লেদার্থ ঘাম স্বপ্ন 
রক্ত ক্ষরণ ও সঙ্গম যাপন  

সুখ মরিচীকা 
নিষ্ঠুর ধনুকের ছিলায় ডাকে মৃত‍্যুবাণ
পাশাপাশি জঙ্গম স্বপ্ন আর আমাদের শৈশব
নদীগর্ভ অকাল বোধন 

মন মদিরা সূর্য
চর সমন্বিত মুখরা তর্পণ
ছায়া ঢাকা মেদরশ্মি ভূগোল ধারক বাহক 
উঠোনে ব‍্যস্ত এখন শব্দ শরীর 

হাতের উপর হাত 
কামনার শুষ্ক বিষ দুঠোঁটে ধারণ করি 
সিক্ত হয়ে ওঠে নুন রক্ত ও পরিমিত শ্বেত চন্দন 
ফসিল সুখে দুঃখ বশংবদ  ।