Saturday, October 24, 2020

≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ আমিনুল ইসলাম ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা 
আমিনুল ইসলাম



পথ

ওদিকটা বদ্ধ

    জানালা নেই
চোখ পারাপারে
নিষেধাজ্ঞা

১টা দীর্ঘ আড়াল
জমেছে মনে...
বরফের শুভ্রতা দিয়ে
ছড়িয়েছে শীতল স্নায়ুযুদ্ধ

নিজের সাথে নিজের
অন্যের সাথে পরের
এবং
দিকনির্ণয় যন্ত্রের মতোই
তাদের আচরণ!

ওইদিকেই দেয়াল...
শক্ত কঠিন
কংক্রিটের
যেখানে পৌঁছে গেলে
পিঠ ঠেকে যায়!

অভিমুখ বদলে যায় নদীর...



≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ শীর্ষা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা
শীর্ষা


রঙ ও খিদে

কালো রঙ আমাকে গ্রাস করে একটু একটু করে। রোজ। একটি ফুটফুটে জ্যোৎস্না মেখে রাত্রির বুকে মাথা রেখে হাওয়া খেতে বেরোই। আমার ললাটের সঙ্গে মালতীলতা পাতিয়ে গুটি গুটি পায়ের একটা কালো বেড়াল সিগারেট ধরায়। ঈর্ষার সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে জ্যোৎস্নারুটির সাদাকে আরাম করে চিবোয় সে। এরপর আমার সাদা দাঁতের দিকে তাকায়। সাদা চোখের মণির দিকে তাকায়। আমি না না করে উঠি চিৎকার আর ভয়ের সমন্বয় রেখে। কালো বেড়াল ওর হাঁ-টুকু নিয়ে তেড়ে আসে আমার দিকে। যন্ত্রণার কালো গন্ধ আমার পরাজিত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ধীরে ধীরে। ওঁ শরীরকাঠ দেখে সবটুকু সাদা খাবার পর আমার পিঠে কালো লোমশ চুলের ঝরনা এলিয়ে দিয়ে আরামের বমন তুলছে বেড়ালটি। ফিরিয়ে দিচ্ছে লালামাখানো সাদাকে। পরবর্তী ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য।



≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ মৌসুমী চৌধুরী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা
মৌসুমী চৌধুরী
 


অণুগল্প~বিপণন  


     "তেরে বিনা জিন্দগী সে কো-ই শিকওয়া নেহী"------- দুপুরের নিস্তব্ধতা খান খান করে সুরেলা রিংটোনটা ভাতঘুম ভাঙিয়ে দিল শ্রীতমার। একটা প্রবন্ধ পড়তে পড়তে সবে চোখটা একটু লেগে গিয়েছিল। অচেনা নাম্বার!.... 
---- হ্যালো, কে বলছেন?
---- শ্রীতমা, আমি দেবুদা বলছি। দেবরাজ বটব্যাল, "দৃষ্টিপাত" পত্রিকার সম্পাদক। ওই যে সেদিন সাহিত্যসভায় পরিচয় হয়েছিল...
         এত বিখ্যাত কবি তাকে ফোন করছে! একটু ঘাবড়ে যায় শ্রীতমা। 
---- ওহ্, হ্যাঁ হ্যাঁ.... বলুন বলুন। 
---- এই এমনি তোমার সাথে একটু কথা বলতে ইচ্ছে হল। সেদিন তোমার কবিতাটা কিন্তু খুব ভালোলেগেছিল আমার... নিপীড়িতা মেয়েটির কথা কী যে জোরালোভাবে তুলে ধরেছ তুমি! আমি তো মোহিত!
---- ধন্যবাদ। আপনার ভালোলেগেছে, এ তো আমার প্রাপ্তি ! তা মানে... আমার নাম্বরটা কার কাছে পেলেন, দাদা?
---- ওহ্...ওই বরুণের কাছে পেলাম। কেন তোমার কি আপত্তি আছে? 
---- না না, ঠিক আছে...
---- শোন, আমি কিন্তু একটা টার্গেট নিয়েছি। তোমাকে আমি কবি হিসাবে পরিচিত করাব। এটা আমার একটা মিশান বুঝলে?
      মনে মনে থমকে যায় শ্রীতমা তাকে কবি হিসেবে পরিচিত করাবে অন্য কেউ! তাহলে তার পড়াশোনা, শিক্ষা এসব কিছুই নয়? ভারী আজব লাগে কথাগুলো!
---- নাহ্... মানে আমি লেখালিখি করি শখে। তেমন সিরিয়াস কিছু নয়।
--- না না বিষয়টা এত হালকাভাবে নিও না। তোমার মধ্যে প্রবল সম্ভাবনা আছে। আমার মিশানে তোমাকে সচেতনভাবে আমার পাশে দাঁড়াতে হবে।
---- না... মানে....আমি ঠিক...
   অস্বস্তিকর লাগতে থাকে শ্রীতমার। এ আবার কী আপদ রে বাবা!
--- শোন শ্রীতমা, আমি সবাইকে দেখিয়ে দিতে চাই পাড়াগাঁয়ে থেকেও একজন কবি একদম আধুনিক ভাবধারায় কবিতা লিখতে পারে! আমার পত্রিকায় তোমাকে আমি এক নম্বর কবি হিসেবে তুলে ধরতে চাই।
      ভীষন রাগ হয়ে যায় শ্রীতমার। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,
--- কে বললো আমি পাড়াগাঁয়ে থাকি? আমি কলকাতার উপকণ্ঠে থাকি। আর...
--- ওহ্। সরি... সরি....শোন যেটা বলছিলাম, তোমাকে আপ-ডেটেড-কবিতা পড়তে হবে। তুমি কি সাম্প্রতিকতম প্রকাশিত আমার কবিতার বইটা সংগ্রহ করেছিলে সেদিন?
--- নাহ্....না তো।
--- ওহ্, আচ্ছা.. আমি লিঙ্ক দিয়ে দেব। অন-লাইনে অর্ডার করে দিও, পেয়ে যাবে বুঝলে?
        এবারে মুখ খোলে শ্রীতমা, 
--- কিন্তু আমি ঠিক আপনার কবিতার রসাস্বাদন করতে পারি না। মানে বুঝি না, বড্ড কঠিন লাগে!
--- আরে এজন্যই তো তোমাকে ফোন করা। আমার বইটা তুমি পড় । তোমার ভেতরে কবিতা  সংক্রান্ত যে সেকেলে সংস্কারটা আছে তাকে আমি ভেঙে দিতে চাই।
--- তার মানে!... আপনি নিজের বই কেনানোর জন্যই এতক্ষণ ধরে....
---- আরে না না, বিষয়টা এভাবে ভেব না। শোন না, একদিন এসো আমার ফ্ল্যাটে। পাঁচ-ছ' ঘন্টা তোমাতে-আমাতে কবিতা নিয়ে গভীর আলোচনা হবে। কবিতা বিষয়ে তোমার ভেতরে যে একটা রাবীন্দ্রিক-সংস্কার আর সাবেকী-মনন আছে তাকে আমি একদম ভেঙেচুরে দিতে চাই। হাঃ হাঃ হাঃ...
       কট্ করে ফোনটা কেটে দেয় শ্রীতমা।


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ কামরুল হাসান কামু ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা  
কামরুল হাসান কামু


মাঠের কাছে

 সটিগন্ধামাঠ কি কথা বলো?কেমন করে বলো?
 -ফিরে আসতে হয়।
 সেসব কাজলবর্ণা দিনে,প্রিয়াও অমন গন্ধ মেখে ডাকতো।
 থোকা থোকা কাশফুল বুকে,কেমন করে তাকাও?কেমন করে?
 -ফিরে আসতে হয়।
 সেসব রৌদ্রে,প্রিয়াও অমন করে মেঘরঙ মাখতো,ডাকতো আমায়।
 সমুদ্র দেখাতো নীল আঁচলে,মেঘফুল পরশে বউচি খেলতাম এই মাঠে।
 মনে পড়ে?পড়ে মনে?
 ও মাঠ,আরো ডাকো,ডাকো আমায়।


≈ বিকাশ দাস সংখ্যা ≈ কাজী শোয়েব শাবাব ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
বিকাশ দাস সংখ্যা
কাজী শোয়েব শাবাব



টিকটিকি


কালো খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে ছোট্ট তেলাপোকা সাদা শরীর নিয়ে সময়ের সাথে হেঁটে যেতে যেতে— স্মৃতির মায়ায় পড়ে যায়। 
পেছনে ফিরে আসে অতীতের কাছে
বিগত খোলসের মুখোমুখি বসে থাকে, বসেই থাকে। 

এদিকে সময় চলে গেছে হেঁটে হেঁটে বহুদূর। 

ঘটনার মাঝখান অকস্মাৎ ঢুকে পড়ে টিকটিকি
খপ করে মুখে পুরে হেলেদুলে চলে যায়—
আরেক সময়ের অন্ধকারে।