Friday, October 2, 2020

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ গৌরীশঙ্কর সিংহ ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
গৌরীশঙ্কর সিংহ



স্রোত

ঋজু গাছটির কাছে রোগা নদীটি এগিয়ে আনল স্রোত
সবুজ খানিকটা উপড়ে গেলে
শেকড় মাটির ঘ্রাণে আহত বাতাস উড়ে গেলো তেপান্তর

সম্ভবত নদীর বারমাস্যা হাঁটাচলা
খাতে আর উপচে উঠে ডাঙায়
গাছেদের আকাশে হাত বাড়ানোর ছলে
দীর্ঘ হয় সুপ্ত চাওয়া

জলে বাতাসে গাছে সবুজে মাখামাখি 
ঝড় ফিরে  ঈষাণ কোনে উন্মুখ  হয়ে
একটি ঘুরপাক ফেলে গৃহস্থকোন থেকে জমানো
সব নিয়ে যেতে চায়
হাতছাড়া স্রোত উঠোনে ফেলে যায় কুটোকাটা

ঋজু গাছটি খানিক নদীর  দিকে ঝুঁকে পড়ে
প্রবাহের ঝাপটা চোখে লাগলে ঘুম ভাঙে

একটি অরণ্য  একদিন তার কাছে এসে দাঁড়ায়...

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ দেবার্ঘ সেন ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
দেবার্ঘ সেন



চোখতত্ত্ব

বাঁদিকে শূন্য লিখে তার পাশে একটা লেস দ্যান চিহ্ন বসিয়ে
নীচে সেই শূন্য আর লেস দ্যান চিহ্নের মাঝ বরাবর নৌকা
ভাসিয়ে দিয়ে,

তুমি আমায় চোখ মারতেই পারো
কিন্তু আমি ওভাবে চোখ তত্ত্ব শিখিনি।

আমি তো ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থেকেই রচনা করে গেছি
পাপ আর তার প্রায়শ্চিত্তে দোলা খাওয়া
প্রেম ও মহৎ প্রেমের তাত্ত্বিক এবং কাব্যোপাখ্যানের
দুটি দিকের কথা..

যন্ত্রণার অর্ধনারীশ্বর। 


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ শ্রাবন্তী বটব্যাল ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
শ্রাবন্তী বটব্যাল


বিষ 

সবটুকু উজাড় করি, 
দেখে নিই প্রসারিত রোদ
সমস্ত আগল ভেঙে
 বাকি থাকে কতটা বিরোধ

সাবধানে মেলেছি ডানা 
রঙ মাখি নিয়ত মুখোশে
ঈর্ষাকে জড়িয়ে রাখি
বিধিবদ্ধ সতর্কতাপাশে

হিসেবি সকাল থেকে 
টেনে নিই আগুনের স্বাদ
নিজস্ব যাপন জীবন
অথবা গোপন প্রতিঘাত 

নিমেষ দাঁড়ালে ক্ষণকাল
দুহাত রিক্ত হয়ে আসে
বিষ- সে তো মিশে আছে
আমারই প্রলয়ভরা শ্বাসে।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ সৌমি আচার্য্য ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
সৌমি আচার্য্য



অণুগল্প~দ্বীপান্তর 


রোজ নতুন নতুন দ্বীপ ঘুরে বেড়ানোই সোমবুদ্ধের কাজ।এ ব্যাপারে কারো নিষেধের ধার ধারে না সে।এই তো গতমাসের পয়লা তারিখ হঠাৎ ঘন আঁশটে দ্বীপটা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে,হামাগুড়ি দিয়ে দিব্যি উঁচু চূড়ায় উঠছিলো কিন্তু ঐ যে বনমানুষের উৎপাতের বিষয়টাই মাথায় থাকে না।ওর ঘাড় ধরে ছুঁড়ে ফেলে দিলো নোনা সমুদ্রে।আগেও কতবার হাত ভেঙে দিয়েছে,পিঠের নুনছাল উঠিয়ে দিয়েছে।কি আর করা ভাসতে ভাসতে মার খাটের কিনারে এসে মাথা খুঁটে পড়ে রইলো সারারাত।

-কি বজ্জাত,কি বজ্জাত!

-মুখ সামলে কথা বলো গৌরীর মা।যা নয় তাই চিৎকার করে দশজন শোনাচ্ছো?

-পরেরবার বেশী নোলা দেখলে তোমার হুলোর দাঁতগুলোই শিলনোড়া দিয়ে গুঁড়ো করে দেবো বুঝেছো?

সোমবুদ্ধ এসব কলপাড়ের ঝগড়ায় কান গলায় না।নাইটির উপর গামছা ঝোলানো ঢিলে মহিলাগুলোকে দেখলেই ওর পিত্তি জ্বলে।এই ঝগড়ার আগেই ওর মা দিব‍্যি ওকে টকদই খাইয়ে দিলো।আদর করে কপালে চুমু খেলো।সেই মা এখন খিস্তি খেউর করছে।

রাধা বোষ্টমী রবিবার গান শোনাতে এসেছিলো।কি সুন্দর গলায় সুর খেলে যেন স্রোত।সোমবুদ্ধ ভেলা ভাসালো সুর কানে রেখে।দ্বীপটায় চন্দন গন্ধ।কি মনোরম।ওর শিশ্ন ধুয়ে মুছে ঘুম পাড়িয়ে দ্বীপটা স্রোতের মধ‍্যে মিলিয়ে গেলো।কত রবিবার অপেক্ষা করলো তবু বোষ্টমী আর এলো না।সুরটা  আজকাল মনে থাকছে না একবার শুনিয়ে যেতে পারে।দ্বীপটা খুঁজতে খুঁজতেই রোজ ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে।এবার আস্তানাও বদল।এইখানে চারিদিকে অনেক উঁচু উঁচু বাড়ি।যে ঘরটায় সোমবুদ্ধ ওর মা আর বোন থাকে সেটা বড্ড ছোটো।নর্দমার গন্ধটাও উগ্র।মন খারাপ করে লাভ হয়নি।দুদিন জ্বরের বাহানা করে ঘাপটি মেরে পড়েছিলো।কিচ্ছু দাঁতে কাটেনি।মা বাবা জোর করে হাঁ করিয়ে বার্লি গলায় ঢেলে দিয়েছে।ঔ তেমনি সবটা উগরে বালিশ ভিজিয়েছে।

-একুশ বছরেই এতো নোলা!বয়সের বাছ বিচার নেই।পেলেই হামলায়।এরপর তো কোনদিন লোকজন পিটিয়ে মেরে ফেলবে।

-এতো বড়ো সব্বোনাশ নিজের চোখে দেখার আগে একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।বারবার বাসা বদলে লাভ হবে না।

সমুদ্রের ঢেউটা এখন বড়ো অস্থির।আজ যে করেই হোক তাকে দ্বীপ খুঁজতেই হবে।আশ্রয় না নিলে চলবেনা।সোমবুদ্ধের ডানদিকে বড়ো এক ঘন সবুজ দ্বীপ।কিন্তু বড্ডো দুঃখ দুঃখ ফুল।নাহ্ এ তার পছন্দ নয়।বামদিকে ছোট্ট দ্বীপটা কি নরম।সোমবুদ্ধ আশ্রয়ই পাচ্ছে না এতোই ছোটো তার পরিসর।জোর লাগাতেই ভলকে ভলকে লাভা বেরিয়ে আসছে চিৎকার জলোচ্ছ্বাস।

-পাগল এ পাগল?নিজের বোনকে পর্যন্ত রেয়াৎ করে না।

-ওগো আর মেরো না মরে যাবে যে।ছেড়ে দাও।তোমার দুটি পায়ে পড়ি ছেড়ে দাও।

বড়ো দুঃখের ফুলওলা দ্বীপটায় কি শান্তি।সোমবুদ্ধের খুব ঘুম পাচ্ছে।।আহ্ আর কোনো কষ্ট নেই। রাধা বোষ্টমীর সুর স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্রমশ।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ শুভদীপ সেনশর্মা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
শুভদীপ সেনশর্মা



অন্তর্বর্তী শূন্যতা

১.
একটি নীরব ঘর।
শূন্য। ফাঁকা।

ঘরের সমস্ত জানলায় হাজার বছরের ঝুল
ঝুলের সুক্ষতার মতো জীবন আমাদের
কোথাও কপট নেই। খিল নেই।

অনধিকার প্রবেশও লেখা নেই।

২.
একটি নীরব দরজা।
শূন্য। ফাঁকা।

একটি নীরবতা।
অদৃশ্যকে ঠেলে রোদ এসে পড়ে মেঝেতে।

৩.
একটি ঘর। একটি দরজা। একটি জীবন।
সন্ধের পর হারিয়ে যায়...