Tuesday, July 20, 2021

আমন্ত্রিত সংখ্যা≈পিনাকীরঞ্জন সামন্ত

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||










পিনাকীরঞ্জন সামন্ত-এর কবিতা


সাপ্তাহিক...

১)

এই সন্ধ্যা আমাকে ভাবায় না
এই সন্ধ্যায় পাখিরা আসে না আর
তবু এই সন্ধ্যাকে ডেকে নিই কাছে
সন্ধ্যা - ক্রমশ রাত্রি হবে জেনে
এই সময় এক কাপ চা ও একটি সিগারেট
এবং obviously একটি নারী...
প্রয়োজন... যদি সে হয় নদী
সঙ্গে নিয়ে..., ভেসে যাব
ব্ল্যাক হোল টু দি পয়েন্ট ঐ ভূমধ্যসাগরে ।।

২)

একটি অঙ্ক ও একটি ছবি
পাশাপাশি
পথের পাঁচালীর সুর
একটি জীবন ও একটি মৃত্যু
পাশাপাশি
হেঁটে হেঁটে বহুদূর ।
আজ মোটোর-বাইকের চাকা পাংচার
পকেট অঙ্কে জিরো...
তাই অঙ্ক নিয়ে কোনো প্রশ্ন নয়
ছবি নিয়ে ক্লান্তি শুধূ...
সিগারেট আমি ও ভাবনা - পাশাপাশি
পুড়তে পুড়তে... ক্রমশ....।

৩)

কলকাতা চিত্রনাট্যের আনাচে কানাচে
টিভির চ্যানেলে চ্যানেলে
তর্কে বিতর্কে
চাষে বাসে - শিল্পায়নে শপিংমলে
সরকারি প্রশাসনে
বিশেষ্য বিশেষণে
অথবা হতে পারে - কৃষি বিল থেকে কৃষক আন্দোলনে
গুষ্টির মাথা...
কলকাতার গোপালরা - বড় সুবোধ বালক
কী চমৎকার ঐ কন্ডম 
কী চমৎকার ঐ মরীচিকা বাহার
হাওড়া স্টেশন, ফেরিঘাট - ভাগীরথী
পেরিয়ে পেরিয়ে অবশেষে ...

৪)

ছুড়ে দিলাম অঙ্কের খাতা অবাধ্য রসিকতার মাঝে
উঠে এল নূপুরের ঢল বিষ্ণপ্রিয়া সাজে
কে বলেছে ? অঙ্কে হলো ভুল
সারিবদ্ধ রঙিন পুতুল....
ঢেউ'এর বিস্তারে পুষ্করিণী সাজে
নগ্ন কাঠবিড়ালি আর আমি রসিকতার মাঝে
চলো যাই ....
আবার আমরা অঙ্ক নিয়ে বসি
আমি, কাঠবিড়ালি, তুমি ও বিষ্ণুপ্রিয়া সখী ....

অঙ্ক নিয়ে হোক আজ লুকোচুরি খেলা
জলের ভিতর বাজুক অঙ্গ - নতুন বর্ণমালা ।।



আমন্ত্রিত সংখ্যা≈স্বপন রায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||










স্বপন রায়-এর কবিতা


সীমান্ত সংঘর্ষ

পড়ে গেল, অনেকদূরে নয়, প্রায় বিন্দু

 
 বিন্দুরা ডানা মেলার পরে
 বিশ্রামের রোদ

শব্দ বা ট্রিগার তখনো নয়

হায় হায় করছে একটা লোক
তিরতিরে একটা ঘুড়ি
লেপ্টে আছে
কাঁটাতারে
                                    

অপেক্ষাথামা সামান্য রক্তে পাখিটা আর পাখিরা

লোকটা চুট্টা ধরায়
দেখে ওপারেও পড়ে যাচ্ছে হাল্কা অপেক্ষাশেষের রোদ
কয়েকটা ভাঙা বিন্দু
ডানা

আর রোজকার মত গান ধরে সে, সজনওয়া বৈরি হো গয়ি হমার...


মিষ

মাংস রাখে
কিন্তু খায় না

শরীর নিরামিষাশীর

রাখা আর  ভেতরে
ছাগল,ভেড়া,গরু
মাংস খায় না
মাংস হয়

প্রাণ ধুকপুক করে
প্রাণ আবার নামও, ভিলেন ছিল মনে নেই?

আমিষ,নিরামিষ মানুষেরা
মাংস ছুঁয়ে ছুঁয়ে
বানালো

মানুষ
মাংস রাখেই

কেউ কেউ খায় না


জানলা আমার-১

শুঁয়োপোকা প্রজাপতির জন্য,

পুরো ব্যাটালিয়ান আকাশবানীর জন্য

 শান্টিং-এর বাংলায় এসে দাঁড়িয়ে আছে ২৯ ডাউন,বেশ কুয়াশাও

পেরিয়ে আসার পরে মনে হল সব ঠিক আছে,এমনকি টোলটাও!
করার কথা নয়,করল
শরীর এরকমই
সল্টলেক বা গরফার ভাপ যেরকম নয়

চলে যাচ্ছে ২৯ ডাউন এরকমও নয় কিন্তু

ভোরে ষন্নতা থাকে,ভোরে “আমরা তো ছিলাম,আমাদের ছায়াও পড়তো” এই টানে শুরু হয় মার্চপাস্ট

আকাশ অ্যাব্রাহামের বেহালা
বানী শুধুই মাধবী, শুধু শুধু মাধবীমূলক

এবার এলো অরুণ,উদিত পরিবারে
আর কি চলো বাজার
 আজ কুমড়োফুল কিনবো আর ইহলোকের পাবদা...


জানলা আমার-২

তুমি যেভাবে হেসেছিলে
সেই হাসি এখন ব্রিজ

মেঘের রঙে জিনসের রঙ
পিপাসা স্টিচ করা
ফুল ফল জায়গা বদলে নিচ্ছে
গ্রাম যে!
নদি পেরিয়ে এই সেই বিশ্বাসযোগ্য v
সুইং আছে
পড়লো ব’লে নিউটনও আছে
জানলা জানালায় রিয়ার ক্লু, সেও এক দূরের ক্রেয়ন

তেহাই তেহাই আজ নদীপেষা হাওয়া
তুমি কী ভাবে যেন
ব্রিজ কী ভাবে যেন 
হাসি তো আছেই, গ্রাম যে হাসিকেই রাখে নবীনার কাঁধে ঈষৎই 

সেই নদী কিভাবে যেন আর পেরিয়ে যেতে পারিনি



আমন্ত্রিত সংখ্যা≈প্রকাশ ঘোষাল

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||










প্রকাশ ঘোষাল-এর কবিতা


১.

আগামীকাল 

অহং গুহা থেকে টেনে আনি তোমার বিশেষ্যপদ 
দ্যাখো- 
হালকা আলোর নীচে গাছেরা মন্ত্র পড়ছে ভবিষ্যতের
অন্ধ দ্রাব্যতার বিষয়ে কথা বলবে বলে দাঁড়িয়ে আছে ভূমধ্যসাগর। 

সন্ধেবেলায় নদীর ছায়া ছুঁয়ে লিখে রাখছি ক্ষত্রিয়ের গান
নাম দেব আগামীকাল। 


২.

স্বাভাবিকতা 


মৌসুমি বায়ুর টেবিলে গোল তর্ক চলছে।এফোঁড় ওফোঁড়। লা-জবাব।

এবার গেঁড়ি-গুগলির ভবিষ্যৎ নিয়ে নাসার কিছু ভাবা উচিৎ। 

আজকাল নেটেই চাষ হচ্ছে দার্শনিকের ঘুম, ঈশ্বরের স্মৃতি।
ঢালাও বিক্রি হচ্ছে দেহের অমনিবাস।

বিজ্ঞাপনের চেয়ে বিছানা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর,উচ্চ ফলনশীল
বেঁচে থাকা মানেই তো আলিপুর চিড়িয়াখানা।

ধর্মকে ধর্ষণ করে দিব্যি চলছে হাটবাজার 
শুধু নির্বাচনের আগে একটু গা-ঝাড়া কিংবা ঘুমিয়ে পড়া
এটাই এখন স্বাভাবিকতা।


৩.

স্বর্গের সিলেবাস

লম্বা এক সামিয়ানার নীচে বসে আছে ঈর্ষা আর সন্দেহ। 
যে যার বাঁশিতে তাল ঠুকছে।
টপাটপ ঝরে পড়ছে ইহজন্মের ফুল।
হাততালির লঙ্গরখানায় দু'একটা বিছের ইয়ার্কি দেখে
ডিগবাজি খাচ্ছে ডিজিটাল দশাবতার।

হাজার কথার ফাঁকে স্ট্যাচু অফ পভার্টি উঁকি মারছে মড্যুলার কিচেনে 
শ্বাসনালীর সরগমের পর ইদানীং হ্যালোজেন পরিবার পিছু একমুঠো চাল হরিণের ছুট
মনপসন্দ নয় বলেই আজকাল যতিচিহ্ন খুলে দিচ্ছে স্বর্গের সিলেবাস।



Sunday, July 18, 2021

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||      অরিজিৎ চক্রবর্তী 
 



ডারউইনের চিঠি ( পর্ব১৮ )


তাহলে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে যৌথ চেতনা কি উন্নয়নের পথে এক বাধা? যে সমস্ত সমাজে যৌথ চেতনা প্রবল সেখানে কি উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতে অসুবিধা হয়? "গাছেরও খাবো আবার তলারও কুড়োব"---এই দুই দিক একসঙ্গে সামলানো যায় না বলে, মফস্বল আগের মতোই থাকবে আবার, আধুনিক নগোরোন্নয়ন প্রক্রিয়া গড়ে উঠবে--- তা একাধারে চাওয়া যেন ভাবের ঘরে চুরি করার মতোই।

ট্রেনে এরকম বিজ্ঞ মানুষের সংখ্যা আমাদের দেশে কম নয়। উল্টোদিকের ভদ্রলোক তার সামনের সিটে বসা মানুষটিকে এই কথাগুলো বলছিলেন। সম্মোহ পাশের সিটে বসে সেটা মন দিয়ে শুনছিল। এমন সময় ট্রেন ছাড়লো। ১৮নং প্লাটফর্ম থেকে হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেস।

পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের সঙ্গে সম্মোহের সম্পর্ক বহুদিনের। আজ গন্তব্য বাঁকুড়া। ওখান থেকে প্রাইভেট কারে সুতান। গাড়িতে ঘন্টা দেড়েক সময় লাগে। সত্যজিৎ স্টেশনে থাকবে ফলে রাত হলেও চিন্তার কিছু নেই।

---" চা গরম চা। ঝালমুড়ি।"একে একে হকাররা আসছে। বিকাশ চায়ের ইচ্ছা প্রকাশ করতে সম্মোহ কানে কানে বলল," এখন নয়, একটু বাদেই ভালো চা আসবে। তখন খাবো"।

সম্মোহ পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের সমস্তটাই জানে। কে ভালো চা বানায়। কার ঝালমুড়ি ভালো। খড়্গপুর স্টেশনের সমস্ত চা জঘন্য! মেদিনীপুরে গাড়ি পৌঁছলে ট্রেনের দরজার বাইরে একজন চা নিয়ে আসে, যেটা খেলেই এনার্জি আসে।

সাঁতরাগাছি স্টেশন ছাড়িয়ে ট্রেন এগিয়ে চললো ঝড়ের গতিতে। সম্মোহ বিকাশকে জলের বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল," জল খা। চা আসবে।"

---" কি করে বুঝলি?"

---" সাঁতরাগাছি পেরোলেই চা নিয়ে উনি আসেন তাই!"

---"ইন্টারেস্টিং!"

---"বড়দা কেমন আছো? দুটো চা দাও?"

---" চলে যাচ্ছে গো। অনেকদিন পর!"

---" হ্যাঁ তা প্রায় মাসতিনেক পর। আগের মতো আর কলকাতায় আসা হয় না। বিকাশ চা- টা খেয়ে দেখ! চার্জ হয়ে যাবি।"

সম্মোহের কথা শুনে চা দাদা হাসল। পাশের সিটে বসা সহযাত্রী দুজন পরস্পরের মধ্যে হাসি বিনিময় করলো। জানলা দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া আসছে। আর সেই হাওয়ায় যেন ভেসে যাচ্ছে চারপাশ। ডেলিপ্যাসেন্জারের চেনা মুখ হাত নেড়ে চলে যাচ্ছে পাশের বগিতে। কেউ দাঁড়িয়ে খানিক কুশল বিনিময় করছে সম্মোহের সঙ্গে। 

---" তুই তো একেবারে ট্রেনের পরিচিত মুখ। অনেকেই তোকে চেনে দেখছি।"

---" আরে না না, তেমন কিছু নয়। আগে মাঝে মধ্যেই যেতে হতো কলকাতায়। সেই যাওয়া আসার কারণে আলাপ পরিচয়। আর তুই তো জানিস আমি একটু টকেটিভ! বন্ধুত্ব হয়ে যায়।"

----"এটা তোর বরাবরের গুণ ! সেবার পুরী বেড়াতে যাওয়ার ঘটনাটা ভোলার নয় ! মোদের পন্ডা ওছি! অমরপন্ডা। পন্ডা বলে অমরপন্ডা ওছি। পন্ডাগুলো বিদায় হওয়ার পর সেকি হাসি আমাদের। সারা পুরী জুড়ে অমরপন্ডা চালু হয়ে গেল!"

কোলাঘাট ব্রিজের উপর ট্রেনটা আরো গমগম করে উঠলো। সঙ্গে এলোমেলো বাতাস। বিকাশের বাকি কথাগুলো শোনা যাচ্ছিল না। থার্মাল প্ল্যান্টের নীল ধোঁয়া তখন সম্মোহকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। কি অদ্ভূত মায়াময়! প্রতিবারই এখান দিয়ে ট্রেনটা গেলে সম্মোহ একটা ট্রেম্পারার মোটিফ খুঁজে পায়। ভাবে বাড়ি পৌঁছে আবার ক্যানভাসের সঙ্গে একাত্ম হবে। কিন্তু হয়ে ওঠে না। ভাবনা গুলো কিভাবে যেন হারিয়ে যায়।

--- " কিরে কোথায় হারিয়ে গেলি! কিছু মাথায় এলো! ছবি আঁকাটা আবার শুরু কর।"

---" নারে আর ভালো লাগে না। নিপুণ ধান্দাবাজ না হলে আজকাল ক্রিয়েটিভিটি করে কোন লাভ নেই।"

---"তোর নিজের জন্য তুই কাজ কর। ওসব ধান্দা ঝান্ডার দরকার নেই।"

--" দরকার নেই তো বুঝলাম। কিন্তু এই না দরকারটাও যে শত্রুতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বুদ্ধিবিচিরা রেগে যায়। কারণ তারা চিরকালই তাঁবেদার হয়ে কোন না কোন পার্টির ছত্রছায়ায় থাকে। অর্থাৎ দাদা দাদা করো। মাঝে মধ্যে সেই দাদার বাড়িতে পৌঁছে যাও। মুখ দেখিয়ে আসো। তরুণ ছেলেমেয়েদের নিয়ে গ্ৰুপ তৈরি করো। ফেসবুক পোস্টে লাইক কমেন্ট দাও! দূর বাল এই মামেগাদের থেকে দূরে আছি ভালো আছি। বুঝলি।"

---" অবশ্যই তুই আমার থেকে এই বিষয়টা ভালো জানবি। বাইরে থেকে এতকিছু বোঝা যায় না।"

---" একারণেই এরা বুদ্ধিবিচি! তোর আমার কালো বিচি!"

---" হা হা হা হা! বললি বটে।"

বিকাশ সম্মোহের কানের কাছে মুখটা এনে ফিসফিস করে বলল, " আস্তে বল, খিস্তি করছিস! পাশের লোকজন শুনছে।"

ট্রেনের দরজার পাশে দাঁড়ানো অল্প বয়েসী একটি ছেলে প্রায় চেঁচিয়ে বলল, " সম্মোহদা ফড়িং আসছে ! ফড়িং!"

----" ডাক ডাক শালাকে! ছোট্ট করে পোঁদে লাগি!"

এমন সময় পাশের কামড়া থেকে কাটাবগি দিয়ে ফড়িং এলো।

---" ফলিং,  তি এনেছিস আজ!"

----" লয়নগরের লোয়া! "

---" উলে বাবা, এতটা খাওয়া দেখি। কেমন লোয়া তোর!"

---"খেলে তিতে হবে তুলো প্যাকেট!"

সম্মোহ ফড়িংয়ের কাছ থেকে একটা মোয়া নিল। একটা কামড় দিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো," মাগো বাবাগো কি ঝাল!"

ব্যস, ফড়িং গেল ক্ষেপে। 

---" থাল নেই। তিথ্যা কথা বলছে। তোয়া কখনো থাল হয়! হালামি এ্যাতটা!"

---" ঝালকে মিষ্টি বলছিস! বিকাশ খেয়ে দেখ!"

----" না না আমি খাবো না। ঝাল লাগবে!"

বিকাশের কথা শুনে ফড়িং আরো ক্ষেপে গেল।

---" তোয়া কখনো থাল হয়! এটাও হালামি!"

সম্মোহ হো হো করে হাসছে। সঙ্গে অন্যরাও। সম্মোহ এবার ফড়িংকে আরেকটা মোয়া দিতে বলল।

---" তেব দা!"

---" শোন না দে দুটো মোয়া দে! "

----" থাল বললে মেলে মুখ থাতিয়ে দেব!"

সম্মোহ ফড়িংয়ের কাছ থেকে মোয়াটা নিয়ে মুখে পুরলো!

--- ওরে বাবারে রে! মরে গেলাম গো! মাথা ঘুরছে। বিকাশ জল দে!"

---" ফড়িং তোর মোয়া খেয়ে যদি দাদা মরে যায় তোকে পুলিশে দেব!"

---" তাতক করচে ছব! আমাল পয়সা দে। ত্যাপসা নত্ত করছে আমাল!"

পাশ থেকে অন্যজন বলল, " না না ফড়িংয়ের জেল হবে না। মোয়াগুলো তো আর ও বানায়নি!"

--- "কে বানিয়েছে?" একজন জিঞ্জেস করল।

---- " ওল শছুল বানিয়েছে!" পাশ থেকে একজন বলল।

----" থ্যামলা পয়সা দে, আমি তাই!

সম্মোহ হাসতে হাসতে পকেট থেকে দুশো টাকা বের করে ফড়িংয়ের হাতে দিল। তারপর বললো," দে চার প্যাকেট ঝাল মোয়া দে।"

---" থাল নয় মিষ্টি!"

ফড়িং চারপ্যাকেট মোয়া সম্মোহের হাতে ধরিয়ে পাশের বগিতে চলে গেল।

----" পারিসও বটে! বুড়ো হয়ে গেলি তাও শিং ভেঙে বাছুরের দলে!"




   

Tuesday, July 13, 2021

বিশেষ সংখ্যা~পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||                             

গান্ধীজী ও উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি সাহেব...
(ক্যায়া করুঁ সজনী আয়ে না বালম)
পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়



স্বাধীনতা লাভের কিছুদিন আগে  রাষ্ট্রের উদ্দেশে রাষ্ট্রপিতা গান্ধীজীর ভাষণ দেওয়ার  পূর্বে একটা প্রার্থনাসভার কথা ছিলো।  গান্ধীজীর ভাষণ এবং প্রার্থনার আগে,অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান  সাহেবের অনুষ্ঠান ছিলো,কিন্তু ওনার আসতে দেরি হয়। খান সাহেব বোম্বাইয়ের ট্রাফিকে আটকে পড়েছিলেন। সমগ্র দেশের সঙ্গে সঙ্গে বাপুজীও সাগ্রহে প্রতীক্ষা করছিলেন। 
     খান সাহেব আসতেই উপস্থিত জনতা হাততালি দিয়ে ওনাকে স্বাগত জানান। উস্তাদজী হাঁফাচ্ছিলেন। ওনার স্হুল শরীর,এবং বড় বড় গোঁফ দেখে মনে হতো যেন কোনো আখড়ার প্রৌঢ় পালোয়ান। 
গান্ধীজীর দৃষ্টি খান সাহেবের ওপর পড়ে। এই গুরুত্বপূর্ণ সমারোহে দেরিতে আসার জন্য তিনি লজ্জিত হয়ে পড়েছিলেন। গান্ধীজী যখন দেখলেন খান সাহেব অস্বস্তি বোধ করছেন তখন বাপুজী ওনার দিকে তাকিয়ে বললেন "খান সাহেব আপনি হট্টাকট্টা মানুষ আর আমি রোগা পটকা,এইজন্য আপনার সঙ্গে লড়তে পারবো না।" এটা শোনার পর খান সাহেবের লজ্জাভাব দুর হয়ে যায়। এবং তিনি গান শুরু করেন। 
  স্বাধীনতা লাভের এই স্মরণীয় সমারোহে উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান সাহেব "পাহাড়ি"তে একটা বন্দিশ শুরু করেন,যার মুখড়া ছিলো ---হরি ওম তত্ সত জপা কর জপা কর ....
উস্তাদজী ভজনও শোনান। ভজন শোনার পর গান্ধীজী বলেন "মানব আত্মার কোনো বিনাশ নেই। আত্মা কোনকিছু খায় না। তার যদি কিছু খাবার থাকে,তাহলো এই ভজনই তার ভোজন হতে পারে।"গান্ধীজী উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান সাহেবের দিকে ইশারা করে বিশুদ্ধ সংস্কৃতে কিছু বলেন,যার অর্থ ছিলো "মানবতার মঙ্গলের শিক্ষা এক মহান আওয়াজে অমর হয়ে গেলো।" তারপর জোরদার তালিতে চারদিক গুঞ্জরিত হয়ে ওঠে এবং খান সাহেব দীর্ঘক্ষণ সঙ্গীত পরিবেশন করেন। 
    গান্ধীজী উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি সাহেবের অত্যন্ত প্রশংসক ছিলেন। 1944সালে 26শে মে উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি সাহেবের মহান কৃতির সম্মানে গান্ধীজী একটা চিঠি লিখেছিলেন।  তিনি লেখেন "আপনি এখানে এসে মধুর ভজন শোনানোর জন্য আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। যদিও সঙ্গীতের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ওস্তাদদের গান খুবই কম শুনেছি,এইজন্য বুঝিও কম। কিন্তু যে সঙ্গীতে ঈশ্বরের নাম আসে,সেটা আমার ভীষণ ভালো লাগে। "'
              -----আপনার মোহনদাস করম চন্দ গান্ধী।