তাকিয়েছি যেই নেই --- কোনো ভুল সাড়া থেকে কোনো ভালোবাসা জন্ম নেয় না , যা আমার শ্বাস
ভরানো শব্দ তাকে নিজের মতন ঘন ঘন পোশাক বদল করতে বলো না ।
অক্ষমকে রূপ দেয় যে সক্ষম তাকে ভগবান বলি ।প্রতিটি জীবন এক এক মোড়কের আচ্ছাদনে ।আমি ভাসমান যে বায়ূস্তরে তুমি নও
তুমি ভাসমান যে স্তরে আমি নও
তুমি সেই ভগবান যে আমি আমাতে শুধু বহমান ।
যে জীবন বোধের কথা বলতে শেখেনি তাকে সূর্যোদয় দেখাতে চাই না ।বরং যে জীবন বোধের তার সঙ্গে সৃষ্টির সূচনা শুরু হোক ।
যে পথ আমায় নিয়ে কমললতাকে ছুঁতে চায় , পেতে চায় বিষবৃক্ষ , সেই পথের অপেক্ষা , সারাদিন গাছের মাথায় আজ হাওয়ার শনশন আমি ঝাঁপ কাটি অজানাকে ছুঁতে যদি নতুন লেখাটি লিখি তার নড়চড়া প্রাণের অধিক ।
বস্তুগত স্বরে সাড়া নেই সমস্ত সাড়ার শব্দে বস্তু প্রাণ পায় একথা কথার কথা নয় ।
তাকে দেখার চেয়েও অধিক দেখেছি বহু
তাকে পাবার চেয়েও অধিক পাওয়া হয়ে গেছে
তাকে খোঁজ বলি যদি সে নিজের খোঁজের অধিক ।
এতসব পরে বলো সে কি আমার ঈশ্বর নয় !
( ২ )
ধর্ম নেই তার, অথচ ধর্মের কত ব্রতকথা !
বয়স বাড়েনি কোনো, বিকেলেই যে সব ফুলেরা জন্ম নেয় , তারা সন্ধ্যাবাতি নয় জেনো ।
কোনো এক ছেলেমানুষি অবাক টানে !
অলীক মানুষ হাসে ; যার ঘোরে দিনরাত্রি ডিঙিয়েই ঘট পেতেছি জলের ।
নিয়ম মানি নি কোনো , ছায়ার নিয়মাধীন ছায়া।
ভেবে দেখো তবে ধর্মের কাহিনী শুনছি না বলে চোর ভেবো না কখনো ।
যে সম্পর্ক বোধের অস্তিত্ব তাকে বই বলি ।
সব বই মানুষের জন্য নয় , কিছু ভূত ও শয়তান লাফালাফি করে ভগবান হতে চায় ।
যে আলো অন্ধকারের জন্য দূরগামী, তার দূরত্ব
আস্তিক নাস্তিকে নেই ; দূরত্ব মোটেই নয়
জীবন যেমন চলে চলুক আমিও যুক্তিবাদী।
মুখ ভাসে আর ডোবে বলো তবে কার ? কার কার ?
স্বচ্ছ প্রাণ ---------
সৃষ্টি যার স্থিত হয় নি ----কেবল সেই ভগবান ।
বহু বহু রূপ জন্ম নেয় টলিপাড়ায়, নির্মান নিপুন অতি ,
তাই অভিনয়ের বিজ্ঞাপন হয় অভিনয় দেখিয়েই । অতি তুচ্ছ আমি প্রসাধনী ধূপ জ্বালি সুগন্ধি ফুলেল
হাওয়ায় আমি নিরালায় সকলের অলক্ষেই হাসি।
কেন শোনো অট্টহাস্য ! দোষ গুণ ভুলে ঘ্রাণ রেখে যাচ্ছ ল্যাম্পপোস্টে জ্যোৎস্নায় -----
ব্রতকথা শেষ হলে ভগবান ঘুমিয়েই পড়ে ।
উপবাস ভঙ্গ হলে সময়কে পাহারা দেয় অন্য আরেক সময় ,তুমি ভিজে যাও নিতান্ত বৃষ্টিতে ,
জ্বর আসে খুব জ্বরের উত্তাপ নেই , জেগে আছে ঘোর ।
ফুল ফোটে পরিচ্ছদে , দেশীয় ভাষায় তুমি বার বার জেগে ওঠো শুদ্ধাচারে আচমন করে করে ।
তোমাতে স্বর্গীয় সুখ মনে করি ,
যে আমার ভালো মন্দ কিছু না জেনেই ভালবাসে, আমি তার ভগবান সেও আমারই ভগবান !
পারস্পরিক শ্রদ্ধায় বেঁচে থাকি এসো ।
( ৩ )
মনোযোগ সমর্পন করি ; নিজের নিঃস্ব এক নিয়তি আমার দেহ ও চিত্তে ।
যেভাবে বিষয় জুড়ে জুড়ে ভগবানের নিকট যাই ঠিক সেইভাবে ফিরে আসি , শর্তটি নিতান্ত জড় ও চেতন জুড়ে !
প্রকৃতি প্রলয় যেন তুমি, সেইরূপে আমিও যেমন , তুমি তেমনই ,; আকাশে বাতাস দ্রুত চলাচল করে আমি সৃষ্টি রাখি পাপ পুণ্যে ।
মোহশূন্য একেবারে নয় তবে যে তোমাকে আমি আর আমাকে পাবে না তুমি ---- কেউ রাজা প্রজা নই তবু যা কিছু সবই কত অপরূপ সমর্পন ।
উপাসনার গভীরে যেন প্রেম কত অনায়াস বর্ষা আনে, কত কান্নায় ভাসাই বুক ,
যে বাতাস আমায় জীবন দেয় আমি তারই প্রতিমা।
আপন শ্রীমুখে তাই অতঃপর প্রেম ও প্রণয় ।
( ৪ )
মৃত দেবতা ভাসিয়ে দিই জলে, জলে জল মগ্নদেবতায় জাগে ঐশ্বরিক রাজসুখ ।
চাষযোগ্য জমিতে ফসল দিয়ে বলি অনুষ্ঠান ।
আলস্য জানে না তেজ মত্ত মায়া ---- ফুল ছুঁড়ে
যে অঞ্জলি মহাশূন্যের সূচনা করে সেখানে ঈশ্বর আছে কিম্বা নেই তর্ক নয় --- এই কর্ম সাহসের জীবনের ; ।
বিশ্বাস মনেই জন্ম নেয় আবার মনেই ভাঙে এই ভাঙাগড়া পরিধান করে আত্মা আত্মরূপে বারবার,
খেলা শেষ মাঠে তুমিও আচ্ছন্ন উপস্থিত হতে পারো, আমি মাঠ কিম্বা খেলা সৃষ্টি করি তবে !
জোড় ও বিজোড়ে অন্ধ সংখ্যায় কে তুমি কে আমি ! তাই পাঠ যদি পুজো হয় ; পূজাপাঠ দখলদারির।
জমির ঘনত্বে কর্ম মাপি, মোহময়ী আলো ছুটে আসে গান নিয়ে দেহে।
যখন তোমার তুমি আমার আমিকে চিনে নিতে পারবে সেদিনই একে অপরের ভগবান হবো , দুজনেই নিজ নিজ শঙ্খ বাজাব সম্ভাব্য সুখে ।
( ৫ )
ভক্ত ও ভগবান দুজনেরই জন্ম হল এইমাত্র ।
জন্ম দেখতে দেখতে সেই পূর্বরাগ।
আচম্বিতে তিথিডোর , অপরাহ্নে চিন্ময়ী মৃন্ময়ী রূপ নিলে কাকঠোকরার কাঠুরে কথা বদলে ফেলে আহ্লাদিনী।
যে মনন অগোচরেই দর্শিত তার সাক্ষাতে কাতর কৃষ্ণ , জীবন জীবিত মানি ------এ শুধু গল্প নয় ।
সান্নিধ্যে আরোগ্য লাভ; যদি সবটুকু নিয়ে নিও
থেকে যাবে নিবিষ্ট সময় কাল ।
নবরত্ন ছুঁলে জানি শুদ্ধ হয় দেহ ,
রাধার নুপূরে কেকা আর কে কার নুপূরে বাজায় রিনিরিনি ----শান্ত মিহি সুরে দোতারা তুমিও
জীবন যেখানে থমকে যায় ঠিক সেইখান থেকেই আবার চলা,সোজা তরল টানের লম্বকোণ যেন ।
টিলায় আটকে যাওয়া ঝর্ণা তুই অপরাজিতার ।
(৬ )
তুমি জানো আমি ভিড়ে নেই ।
নিশ্চুপ আরোগ্য এলে তোমাকে আমার হতে হবে একথা কখনো বলব না আমি , বরং একদিন আকাশের ছাদে বৃষ্টিশিলায় আনন্দ থৈ থৈ রবে যোগিয়া গাইব ।
নিরুপায় ভ্রমণের গতি তুমি , তোমাকে চেনাবো সেই অচিনপুরের কোনো ডাকহরকরা যার
ঝুলিতে আমার ভগ্ন হৃদপিন্ড ।
কাছে পিঠে
পুজোপাঠ হলে কাঁসরের ঝমঝম শব্দে ভরি কাঁখের কলস , নীল যমুনার জলে ডুব দিয়ে দেখি বাঁশিটি কেবল বাজে, কোনো রং নম্বর নয়
সে রং ভুলের ভুলে ঠিক এবং সঠিক বেহাগ ।
বেহায়া বাঁশিটি সেই সুর তুলে গায় পল্লবিনী রাধা ওগো কতকাল ডাকবো তোমায় ।
ভরা জলাধারের ছায়াটি দুলে ওঠে চশমায় ।
চেয়ে আছি নদীর মতোই
চেয়ে আছি মেঘ পালকের দেশ
চেয়ে আছি আজন্ম জন্মের জন্মে ।
নিশ্চিত অপেক্ষা জুড়ে কথা নাও , কথার সদরে বসে কথামালা আমি মেঘমালা টপকিয়ে পৌঁছে যাই , যেখানে মুরলী বাজে রাধে রাধে বলে ।
(৭ )
ফুল তোকে শিখিয়ে দিয়েছি জন্ম তোর পৃথিবীতে , তুই ঈশ্বর পাহারা দিবি বলেছি কখনো !
অদৃশ্য দিশায় যত হামাগুড়ি দেয় দিক , একদিন জেনে যাবে কোলাহল নৈর্ব্যক্তিক ।
অনন্ত মহিমা নিয়ে আমিও ঈশ্বর দেখি ।
অনিচ্ছায় কিছু নেই -----
ইচ্ছেতে স্বাধীন যার অর্থ তুমি না বললেও বুঝি , শেষ বলে কিছু নেই ।
আমাকে লিখতে দিও শালপাতায় উড়াল ,
আমাকে বলতে দিও --- গাছের ভিতর ছায়া ,
যে ফুলে তুমিও পাও সুখ , খুঁজে নিও
সব কথা অপেক্ষার নয়
সব বলা অপেক্ষা অধিক
ঠিক তেমনি শব্দের চলাচলে শব্দ জন্ম নিলে আমি অনন্তের অন্ত পাই না ।
নিদ্রা নেই ---
অনন্ত অসীম তুমি ,
যা পারো তেমনি সৃষ্টি করো , কিন্তু মনে রেখো
সকলের জন্য সব কাজ নয় আর সকলকে মিলনের মালা গাঁথতে বলো না ।
এজীবন শুকনো ডালপালা নিয়ে পাথরের নড়াচড়া দেখে , জাগ্রত দেবীর জন্য কোনো ভগবান সৃষ্টি হয়নি এ যুগে , ভগবানের নৈকট্যেই দেখো রঙ্গশালা, যুদ্ধের দামামা মৃত্যুভয় এসব উপেক্ষা করে স্বর্গোদ্যানে রোজ ফুল ফোটে ।
ফুল কি ঈশ্বর ?
ঈশ্বর কি ফুল ?
(৮ )
দর্শন করার সাধ আমার কখনো নেই , স্নানসারা এলোচুল; হাওয়া থেমে গেছে , আমার এ মুখ সরে গেছে তাই আপাতত চুপ ! ঈশ্বরের দেহহীন মন জীবন্ত ফসিল ! তাই আমিই ঈশ্বর হয়ে খুঁজছি অতল !
রহস্য কোথায় শেষ আর কোথায় কতটা শুরু , প্রশ্ন নয় ,এখানেই ছিল শান্ত করতল ।
তখন সেসব প্রশ্ন ছিল মিলনের ডাক ! আজ ভাঙা মেঘে উচ্চারণ স্পষ্ট নয় , তাই মেঘে মেঘে বৃষ্টি এলে আর চমকে উঠি না আমি ।
ঘুম ভেঙে গেলে শূন্য দশমিকে হাত রাখি ,
ধাতুর ঈশ্বর ঠিক যতদূর ,ততদূর আমিও মনকে রাখি মনে , যে জন্ম আমাকে ইচ্ছে দেয় সেই জন্মে জন্মেছি নিজের মত বারবার ।
যার যতটুকু চাওয়া পাওয়া সে ততটুকু পাবে
চাইলেই সব পাওয়া যায় না ।
ঈশ্বরের কলম আমিও তাই শুকতারা লিখি মনে মনে ; যে হাতে সম্ভব ছিল আজ সব অসম্ভব ।
এই সৃষ্টিতে জীবন আমার, তাই অন্য কোনো জীবন্ত ঈশ্বর নেই ।
( ৯)
মর্ত্যভুবনে তুমি যে আজ ক্লান্ত , আমিও অপার মুগ্ধ হয়ে দৃশ্যলোকে নাটক রহস্যে গভীরতা অনুভব করি -----দ্রুত শিহরণ !
তবে কি নির্দিষ্ট ছিল সন্ধ্যা সুদূরে স্বাধীন নিজ সিদ্ধিলাভ ।
ঈশ্বর বলেছ মানি, আমি ঈশ্বরের শাস্ত্রবিধি মেনে মনোনীত যেমন বিখ্যাত হয় --------
সন্ধানে বেরিয়ে পড়ো আমার জন্যেই !
বিকেল গড়ায় , গাড়ি বাড়ি আলো জল,
বৃষ্টি আজ বিকশিত, সেকথা অগ্রাহ্য করে
তবু যে সমস্ত তুমি আমারই হয়ে প্রশ্ন করো"------- ভালোবাসবে তো ? "
আমি প্রশ্ন এড়িয়ে তরঙ্গ -----
সে শুধু নিশঃব্দগামী ছায়া , সে রহস্য গভীর ।
উপেক্ষা করেছি রক্ত কত ! কেন মহাকাশে
সৃষ্টি হয় প্রণয় লক্ষণ --- তাকে ভালোবেসে
এলে তুমি এত পথ ! নাট্যকারের সংলাপ নয় --- আশ্চর্য ক্যামেরা তাক করে তুমি ঈশ্বরের মুখ ছোঁও ।
আজ পথ শুধু স্বাধীনের ,
আজ শুধু আকাশ বিস্তারে ,
আজ শুধু বহুদূর দিগন্ত সাজায় ।
ঈশ্বর আমি না তুমি ? তুমি খোঁজো আমার অন্য এক মন , দুজনে দুজন আছি কী গভীর অনুরাগে ! সৃষ্টি জুড়ে যেমন মায়াবী টান তেমনই পিপাসিত সৃষ্টির কামনা এই একমাত্র পৃথিবীতে
কত আলো রৌদ্র গানে আমরাই নিয়ন্ত্রিত ।
( ১০)
এস্কিমোর শীলমাছ ধরার মধ্যে যে মনোযোগ থাকে তা ঈশ্বর , আর আমি ?
লিখিত জন্মের কেউ ।
ঈশ্বরের ছোটবেলা বড়বেলা নেই ।
সাবালক নন তিনি ! প্রাণের প্রতিষ্ঠা পায় প্রাণ !
প্রতিটি জন্মের জন্য প্রাণ টি তখন
ভালবাসা দাবি করে , জীবন --সৃষ্টির জন্ম হয় ।
হৃদস্পন্দনের সঙ্গে যুক্ত বিশ্বাসী মানুষ , যত সূক্ষ নৈপুন্য অর্জন করে ঈশ্বর তা টের পায় কিনা জানিনা , জানার সব প্রয়োজন নেই ।
জানা ও অজানা তার ধারাবাহিক ধ্বণির ছন্দ তাল লয়ে---- ইন্দ্রিয় তারই উচ্চারণ !
যে সৃষ্টিতে অসামান্য তুমি সেই সৃষ্টিতেই চেতনার জন্ম ! যে শ্রম যন্ত্রকে ব্যবহার করে তার হুঁশিয়ারী মোহন বাঁশিটি যেন অনুভবে অবিরত ।
হোম একটি মনোনিবেশ তার ব্যক্তিত্বে অস্থির সব হলেও ঈশ্বর হাসে মনে মনে , মূর্তি ছেড়ে শিল্পী যেমন শ্রমের দিকে তাকিয়ে থাকে , ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু নামে গাল বেয়ে , দেবী তার অতুলন নিঃসীম
মাটির থালায় ভেসে যায় শীতল প্রদীপ , সারা গায়ে মেখে নিই অগুরু আতর , চিহ্ন চরণ নীলাভ আলো -----
মানুষের মুখ আমি গড়ি ভাঙি
মানুষের মুঠিভরা ছিরিছাঁদে
পুজো পাই বার বার !
জন্ম থেকে যায় কাদামাটিজলে
ধ্যানস্থ দেহটি জেগে বসে সারারাত ।
ঈশ্বর এসবে নেই কোথাও কি ছিল কোনোদিন ?