Friday, October 2, 2020

≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ সৌমি আচার্য্য ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
সৌমি আচার্য্য



অণুগল্প~দ্বীপান্তর 


রোজ নতুন নতুন দ্বীপ ঘুরে বেড়ানোই সোমবুদ্ধের কাজ।এ ব্যাপারে কারো নিষেধের ধার ধারে না সে।এই তো গতমাসের পয়লা তারিখ হঠাৎ ঘন আঁশটে দ্বীপটা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে,হামাগুড়ি দিয়ে দিব্যি উঁচু চূড়ায় উঠছিলো কিন্তু ঐ যে বনমানুষের উৎপাতের বিষয়টাই মাথায় থাকে না।ওর ঘাড় ধরে ছুঁড়ে ফেলে দিলো নোনা সমুদ্রে।আগেও কতবার হাত ভেঙে দিয়েছে,পিঠের নুনছাল উঠিয়ে দিয়েছে।কি আর করা ভাসতে ভাসতে মার খাটের কিনারে এসে মাথা খুঁটে পড়ে রইলো সারারাত।

-কি বজ্জাত,কি বজ্জাত!

-মুখ সামলে কথা বলো গৌরীর মা।যা নয় তাই চিৎকার করে দশজন শোনাচ্ছো?

-পরেরবার বেশী নোলা দেখলে তোমার হুলোর দাঁতগুলোই শিলনোড়া দিয়ে গুঁড়ো করে দেবো বুঝেছো?

সোমবুদ্ধ এসব কলপাড়ের ঝগড়ায় কান গলায় না।নাইটির উপর গামছা ঝোলানো ঢিলে মহিলাগুলোকে দেখলেই ওর পিত্তি জ্বলে।এই ঝগড়ার আগেই ওর মা দিব‍্যি ওকে টকদই খাইয়ে দিলো।আদর করে কপালে চুমু খেলো।সেই মা এখন খিস্তি খেউর করছে।

রাধা বোষ্টমী রবিবার গান শোনাতে এসেছিলো।কি সুন্দর গলায় সুর খেলে যেন স্রোত।সোমবুদ্ধ ভেলা ভাসালো সুর কানে রেখে।দ্বীপটায় চন্দন গন্ধ।কি মনোরম।ওর শিশ্ন ধুয়ে মুছে ঘুম পাড়িয়ে দ্বীপটা স্রোতের মধ‍্যে মিলিয়ে গেলো।কত রবিবার অপেক্ষা করলো তবু বোষ্টমী আর এলো না।সুরটা  আজকাল মনে থাকছে না একবার শুনিয়ে যেতে পারে।দ্বীপটা খুঁজতে খুঁজতেই রোজ ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে।এবার আস্তানাও বদল।এইখানে চারিদিকে অনেক উঁচু উঁচু বাড়ি।যে ঘরটায় সোমবুদ্ধ ওর মা আর বোন থাকে সেটা বড্ড ছোটো।নর্দমার গন্ধটাও উগ্র।মন খারাপ করে লাভ হয়নি।দুদিন জ্বরের বাহানা করে ঘাপটি মেরে পড়েছিলো।কিচ্ছু দাঁতে কাটেনি।মা বাবা জোর করে হাঁ করিয়ে বার্লি গলায় ঢেলে দিয়েছে।ঔ তেমনি সবটা উগরে বালিশ ভিজিয়েছে।

-একুশ বছরেই এতো নোলা!বয়সের বাছ বিচার নেই।পেলেই হামলায়।এরপর তো কোনদিন লোকজন পিটিয়ে মেরে ফেলবে।

-এতো বড়ো সব্বোনাশ নিজের চোখে দেখার আগে একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।বারবার বাসা বদলে লাভ হবে না।

সমুদ্রের ঢেউটা এখন বড়ো অস্থির।আজ যে করেই হোক তাকে দ্বীপ খুঁজতেই হবে।আশ্রয় না নিলে চলবেনা।সোমবুদ্ধের ডানদিকে বড়ো এক ঘন সবুজ দ্বীপ।কিন্তু বড্ডো দুঃখ দুঃখ ফুল।নাহ্ এ তার পছন্দ নয়।বামদিকে ছোট্ট দ্বীপটা কি নরম।সোমবুদ্ধ আশ্রয়ই পাচ্ছে না এতোই ছোটো তার পরিসর।জোর লাগাতেই ভলকে ভলকে লাভা বেরিয়ে আসছে চিৎকার জলোচ্ছ্বাস।

-পাগল এ পাগল?নিজের বোনকে পর্যন্ত রেয়াৎ করে না।

-ওগো আর মেরো না মরে যাবে যে।ছেড়ে দাও।তোমার দুটি পায়ে পড়ি ছেড়ে দাও।

বড়ো দুঃখের ফুলওলা দ্বীপটায় কি শান্তি।সোমবুদ্ধের খুব ঘুম পাচ্ছে।।আহ্ আর কোনো কষ্ট নেই। রাধা বোষ্টমীর সুর স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্রমশ।


≈ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা ≈ শুভদীপ সেনশর্মা ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত সংখ্যা
শুভদীপ সেনশর্মা



অন্তর্বর্তী শূন্যতা

১.
একটি নীরব ঘর।
শূন্য। ফাঁকা।

ঘরের সমস্ত জানলায় হাজার বছরের ঝুল
ঝুলের সুক্ষতার মতো জীবন আমাদের
কোথাও কপট নেই। খিল নেই।

অনধিকার প্রবেশও লেখা নেই।

২.
একটি নীরব দরজা।
শূন্য। ফাঁকা।

একটি নীরবতা।
অদৃশ্যকে ঠেলে রোদ এসে পড়ে মেঝেতে।

৩.
একটি ঘর। একটি দরজা। একটি জীবন।
সন্ধের পর হারিয়ে যায়...


Sunday, September 27, 2020

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || 
| নভেলেট |
অরিজিৎ চক্রবর্তী



ডারউইনের চিঠি ~ ৪ র্থ পর্ব 

( ৪ )

দীনেন্দ্রস্ট্রিটে সাধনদের বাড়িতে একটা লম্বা সুড়ঙ্গ পেরিয়ে আসতে হয়। দুপাশে উঁচু পাঁচিলের পলেস্তারা মাঝে মাঝেই ভেঙে পড়ে মাটিতে। দিনের বেলা একটা চল্লিশ পাওয়ারের বাল্ব জ্বলে। এই আলোর নিচ দিয়ে বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ আরো পাঁচটা পরিবারের। সুরঙ্গ যেখানে শেষ তার ডানদিকে একটি পরিবার।বাঁ দিকে একটি। প্রায় ত্রিশ বছরের বাক্যালাপ বন্ধ। একটু এগিয়ে এজমালি বাথরুম। তার ডানদিকে ও বাঁদিকে দুটো পরিবার। আর শেষ মাথায় সাধনদের দুটো ঘর। মাসে পঞ্চাশ টাকা ভাড়া।সাধন সম্মোহের কলেজ জীবনের বন্ধু। সেই বন্ধুত্বের বিশ্বাসযোগ্যতা দীর্ঘ সময়ের। সাধনের মা খুব আন্তরিক এবং সম্মোহের প্রতি অনেকটাই আস্থাশীল। সাধন কিছুটা উড়োনচন্ডী, বামপন্থী ধারায় উদ্বুদ্ধ এবং সব সময় অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ার মানসিকতা। কাকে হসপিটালে ভর্তি করতে হবে, কাকে রক্ত দিতে হবে, আবার কারও মেয়ের বিয়ে দেবার জন্য অর্থ জোগাড় করতে হবে ইত্যাদি নানান কর্মকান্ডে তার জীবন জীবন্ত। রোজগারের বালাই নেই। চাকরির চেষ্টা নেই। বাবার সামান্য রোজগারে আর কাকিমার ফল্স পিকো বসিয়ে কোনরকমে সংসার চলে। কুড়ি উর্ধ্বো একমাত্র বোন তনিমা। সে মাকে কাজে সাহায্য করে। সুন্দর গানের গলা। তবে গান নিয়ে সেভাবে এগোনো সম্ভব হয়নি আর্থিক কারণে।

কাকিমা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তনিমাকে বিয়ে দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সম্মোহ এড়িয়ে গেছে। উল্টে বলেছে ওর জন্য ছেলে দেখুন কাকিমা আমরা তো আছি। কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

সম্মোহ সাধনকে বলেছে একটা চাকরির চেষ্টা কর। মাথার উপর বোন আছে, ওর বিয়ে দিতে হবে।তোর দায়িত্ব অনেক। এবার সংসারের হাল ধর। সাধন সেসব কথায় কান দেয়নি। হেসে উড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে সম্মোহ সাধনদের বাড়িতে গেলেই কাকিমার অতিরিক্ত আপ্যায়ণ বারবার সম্মোহকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। ফলে সম্মোহের ও বাড়িতে যাওয়া ধীরে ধীরে কমেছে।

কিন্তু আজ প্রায় চারমাস পর একবার যেতেই হচ্ছে সাধনের কাছে। দার্জিলিং এর একটা হোটেলে একজন সৎ দায়িত্ববান ম্যানেজার চাই। স্যালারিও ভালো। সম্মোহের পরিচিত রায়চৌধুরীবাবু কথায় কথায় সম্মোহকে এই কাজের জন্য একজন লোক খুঁজে দিতে বলেছিল গতপরশু। শুনেই সম্মোহের সাধনের কথা মাথায় আসে। তাই আজ বিকেলে অফিস ফেরত সে সাধনের কাছে যাচ্ছে। সঙ্গে সাধনের অতি পছন্দের মিত্র ক্যাফের মাছের চপ্। সম্মোহ ভাবছে এবার একটা হিল্লে হবে সাধনের। গান্ডুটাকে দূরে পাঠিয়ে সমাজসেবা আর বিপ্লবের ভূত মাথা থেকে বার করতে হবে।

সম্মোহ যখন ওদের বাড়ির সুরঙ্গে পা বাড়ালো তখন ওই চল্লিশ পাওয়ারের বাল্বটাকে দেখে বড্ড হাসি পেল সম্মোহের। ভাবলো এই মলিন আলোর নেগেটিভিটি থেকে এবার বেরিয়ে আসবে সাধন। তারপর ধীরে ধীরে ওদের পরিবারের সবাই।

-- "কাকিমা!"

-- "আরে এসো এসো"

-- "সাধন কোথায়?"

--" কোথায় আবার, ক্লাবে গজল্লা করছে! তুমি বসো, আমি ডেকে পাঠাচ্ছি।"

--" কাকিমা এটা রাখুন। "

---" এটা আবার কি!"

---" মাছের চপ্"

---" কি দরকার ছিল এসবের। তুমি না সত্যি! এই তনিমা দেখ তোর সম্মোহদা কি এনেছে দেখ! তোর পছন্দের মাছের চপ্!"

সাধন ঘরে ঢোকে।

--" কিরে কি খবর? হঠাৎ পথ ভুলে! অনেক দিন এদিকে আসিসনি! অফিসে কাজের চাপ বেড়েছে নাকি রে!"

--" তা একটু বেড়েছে। শোন না তোর জন্য একটা ভালো খবর আছে। চাকরি পাকা। দার্জিলিং যেতে হবে। রায়চৌধুরীদের হোটেলের ম্যানেজারি করতে হবে তোকে। ভালো স্যালারি দেবে।"

-- " এই শোন, আমার চাকরি নিয়ে কে ভাবতে বলেছে তোকে। মা তুমি বলছো? শোন শালা বেশি দরদ দেখাস না। আমার মা-তো তোকে আরো অনেক কিছুই বলেছিল। সেটা কি শুনেছিস তুই? আবার দরদ মারাতে এসেছিস। চল শালা ফোট্।"

কাকিমা আর সাধনের বোন পরিস্থিতি সামাল দিতে চায়। সম্মোহ আর কোনো কথা না বাড়িয়ে ওদের বাড়ি থেকে সোজা হনহন করে বড় রাস্তায় এসে পড়ে। তারপর একটা সিগারেট ধরিয়ে নিজে নিজেই বলতে থাকে, বোকাচোদা লেনিনের নাতি, নিজের পরিবারের কথা ভাবে না। নিজের বোনের কথা ভাবে না। বুড়ো বাপের কথা ভাবে না। শুধু বোনটাকে আমার ঘাড়ে ঝোলানোর ধান্দা! তুই সব জানিস। লীমার কথা জানিস। শালা কুঁড়ে চোদা। একটা কাজের হদিস নিয়ে এলাম। ঠিকই বলেছিল লীমা, " এরা হচ্ছে গুড ফর নাথিং..."

না সাধনদের বাড়িতে সম্মোহ আর কোনদিন যায়নি। শুধু বারবার মনে হয়েছে ওই চল্লিশ পাওয়ারের আলোর সুরঙ্গ গলিটাই ওর জীবনের কাল। অথচ সাধন ছেলে হিসেবে খারাপ নয়। প্রত্যেকের আপদে বিপদে সব সময় পাশে থাকে। দিনের পর দিন অসুস্থ রুগির বেডের পাশে রাত জাগে নিঃস্বার্থ ভাবে। অথচ নিজে কোনো কাজ করবে না।

পৃথিবীর সব মানুষেরই ক্রোমোজোম সংখ্যা ছেচল্লিশ। এই ক্রোমোজোম মানুষের দেহের প্রতিটি কোষের মধ্যেই উপস্থিত। প্যারিসবারে প্রবীরের সঙ্গে মদ খেতে খেতে কেন যে হঠাৎ বারেবারে এই কথা গুলো মনে আসছিল তা বোঝার চেষ্টায় সম্মোহ আর একটা সিক্সটি এম এল চাইলো। বার ডান্সারের প্রতি মুহূর্তের যৌনতা বুঝিয়ে দিতে একটা দশটাকার নোট দিয়ে এলো। একটা সিগারেট ধরালো। তখন সিঙ্গার গান ধরেছে " প্রিয়া তু আপ তো আজা..." আর দুজন বার ডান্সার নাচের তালে তালে তাদের বুকের ঘুলঘুলি প্রর্দশন করছে। আর চারপাশের হুল্লোড় ফূর্তি মানুষ বক্ষদেশ আইসকিউব সব কিছুকেই মনে হচ্ছে এক একটা ক্রোমোজোম।

-- "হ্যালো প্ররররবীর! কি দেখছো ভায়া!"

---" হ্যাঁ, বলো কি বলছো?"

--" তুমি কি বিজ্ঞানের ছাত্র?"

--" হ্যাঁ! কেন গো?"

--" ভালো করে দেখ?"

--" কি দেখবো বস্!"

--- "ক্রোমোজোম! '

---" মানে এই প্যারিসবারটা আর আমরা সবাই ষাটটা ক্রোমোজোমের ধারকবাহক, মানে আই মিন গরুর ষাটটা ক্রোমোজোম!"

---" ভাই মাল খেতে এসে এ্যাতো কিছু মাখায় ঢুকছে না। তোমার শালা নেশা হয়ে গেছে। আর নিও না। চলো ওঠা যাক।"

--- " সাধনেরও ষাটটা ক্রোমোজোম।গরু একটা।"

--- " আরে ছাড়ো। মজা নিতে এসছো। মজা নাও। "

প্রবীর ইশারায় বিল দিতে বলে। সম্মোহ টলতে টলতে টয়লেটের দিকে এগিয়ে যায়। খানিকবাদে ফিরে আসে। পার্সে হাত রাখতেই প্রবীর বাধা দিয়ে বলে, " গুরু আজকের টা আমার।"

সম্মোহ বলে, " নো! নো! দিস ইস নট ফেয়ার। টুডে ক্রোমোজোম ডে! মাই ডে!"

প্রবীর বাধা দিয়ে বিল মিটিয়ে সম্মোহকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে আসে। তারপর একটা ট্যাক্সিকে হাত নেড়ে ডেকে নেয়।"

Thursday, September 24, 2020

|| ছক্কা ফর্মের কবিতা ≈ সম্পাদকীয় নয় কিন্তু ||

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
ছক্কা ফর্মের কবিতা
অভিজিৎ দাসকর্মকার 


সম্পাদকীয় নয় কিন্তু___
যদিও একটা কবিতার ফর্ম আর তত্ত্বের তফাৎ, ফর্ম কবিতাকে একটি নির্দিষ্ট আকারে সীমাবদ্ধ করে আর তত্ত্ব সকল ধরনের যৌক্তিক সাহিত্যের  কাজকে উদারতা দেখায় দুই মলাটের মধ্যে । 

15th August, 2020 অনিন্দ্য  রায়ের লেখা ছক্কা ফর্মের কবিতা বিশেষ সংখ্যা করে প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিনের তরফ থেকে। ১দিনে এই সংখ্যার ভিউয়ার ৩৭৯ জন এবং ১০ দিনে ১৭৫৬ জন ভিউয়ার । সংখ্যাটি প্রকাশিত হওয়ার ৬দিন পর অনিন্দ্য দা আর আমি একসাথে আলোচনা করি এবং ছক্কা ফর্মের কবিতার ১টি বিশেষ সংখ্যা করার ইচ্ছে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিই তাতে অনেক লেখাই আসে।

তাদের মধ্যে ১২ জন কবি নিয়ে এই সংখ্যা প্রকাশ করলাম আজ। সকলে পড়ুন। মতামত দিন।আগামীদিনে যেনো এই ধরনের আরো নতুন কাজ নিয়ে আসতে পারি, তাই পাশে থাকুন


|| ছক্কা ফর্মের কবিতা ≈ অনিন্দ্য রায় ||

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
ছক্কা ফর্মের কবিতা 
অনিন্দ্য রায় 
গত ১৫ th August অনিন্দ্য রায়ের সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিনে প্রকাশিত ছক্কা ফর্ম কবিতার সংখ্যার কিছু অংশ আজও___


ছক্কা ফর্ম কবিতার_ভূমিকা

 লুডোর ছক্কা ৬টি তল প্রতিটি তলে থাকে ফুটকি: ১, ২, ৩, ৪, ৫ আর ৬ 
 যদি এভাবে কবিতা লেখা হয়? 
 ছক্কা কবিতা, ৬ লাইনের, লাইনগুলির শব্দসংখ্যা ছক্কার মতো: ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬
 ছক্কা তো একভাবে থাকে না। কখনও ওপরের তলে ৩, কখনও ২ বা ৫ বা ১ থেকে ৬-এর মধ্যে  যে-কোনও  একটি। তাই ছক্কা কবিতার প্রথম লাইনে ১টি শব্দ, দ্বিতীয়টিতে ২টি... এইরকমই যে হতে হবে সবসময়, তা নয়।
 প্রথম লাইনটি ১ থেকে ৬টি যে কোনও শব্দের হতে পারে। শুধু খেয়াল রাখতে হবে প্রথম ও চতুর্থ লাইনের শব্দসংখ্যার যোগফল হবে ৭ 
 একইভাবে দ্বিতীয় আর পঞ্চম লাইনের এবং তৃতীয় আর যষ্ঠ তলের শব্দসংখ্যার যোগফল ৭ হবে। 
 (লুডোর ছক্কায় যেমন থাকে, বিপরীত তলগুলির ফুটকির সংখ্যার যোগফল হয় ৭)। 
 মোট শব্দ ২১টি

প্রতিটি লাইন হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ, নিজেকে প্রকাশ করতে অন্য কোনও লাইনের ওপর তা নির্ভরশীল হবে নাপরস্পরের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক অবশ্যই থাকবেএকেকটি লাইন একেকটি স্তবক, তাদের মধ্যে স্পেস দেওয়া হবে।  

 কবিতাটি যে কোনও বিষয়ে লেখা হতে পারে। 
 প্রতিটি কবিতার শিরোনাম থাকবে।
 অন্ত্যমিল থাকতে পারে, না-ও থাকতে পারে। 

 এইভাবেই আমাদের কবিতা আঙ্গিক: ছক্কা 



মধ্যরাত 

শরীর তালের বাদ্য  

বাতাস ভেতরে

গোপনে ভিক্ষার জন্য ছুঁয়েছি অন্ধের সততায়

অনিচ্ছায় কঁকিয়ে উঠেছ বারবার 

অদক্ষকে ভুল করে লোলুপ ভেবেছে


প্রথমে গায়ের ছাল ছাড়িয়ে নিতে হয়  

একাটা কাঠি, গাঁথা  

রসের ফোঁটা 

কলসি

একটু গেঁজে উঠলেই সুখ 

নেশাই যৌনতাকে সম্পূর্ণ করে তোলে 



উত্তেজনায় দারুণ সক্রিয় অঙ্গ

তোমার দিকে তাকিয়ে থাকি আমি 

ভালোবাসার সময় ঠিক করে কীভাবে দেখব

অন্ধকারে অনেকটা ফাঁক

আলোয় ছোটো

কনীনিকা 



হাততালি 

উড়ল সারসেরা  

কেঁপে উঠল নিঃসঙ্গতার ঝিল

তোমার হাসির কথা মনে পড়ল শুধু

নিসর্গকে এইভাবে ভাঙাচোরা করে মেয়েরা

আমরা ছবি তুলি


৫ 

স্বপ্নে মহিষ

লাল চাদরের ঘুম কখনও পাব না  

নেহাৎ দর্শক নেই বেডরুমে  

চিৎকারে ক্ষেপে তাড়া করত আমাকে

উৎকণ্ঠা  

আমি আর অ্যালপ্রাজোলাম