সুবোধ সরকার-কে নিবেদিত কবিতা
সুবোধ আলোয় অভিজিৎ দাস কর্মকার
তুমি যেদিন প্রথম এসেছিলে আমার কাছে
তোমার হাতে মায়াকভ্ স্কি
আর চোখে
সকালবেলার আলো। বলেছিলে
আমেরিকা
যেখানে স্বাধীনতাও একটি মূর্তি।
আমি মল্ল পথ থেকে তিলোত্তমা নগরে
ছুটে গেছি দীর্ঘ সাহিত্য নিয়ে। তোমাকে
আমরা বাঁচাতে পারিনি কবিতা।
সারা দেশ জুড়ে আমরা কেঁদেছি,
সারা দেশ জুড়ে আমরা ফুঁসেছি।
এতো প্রেম সারা শরীর জুড়ে তবুও মেয়েটিকে
বলা হয়নি কতোটা ভালোবাসার পর
মন আঙার হয়।শুধু মনে পড়ে
অফ্ পিরিয়ডে ত্রৈলোক্যনাথের ডমরু চরিত পড়ছিলাম
ওটা কেড়ে নিয়ে একটা পেপারব্যাক ধরিয়ে
মেয়েটি হাসতে হাসতে চলে গেল। এখন
আমি পলাশপুরের সেই ছেলেটিই হলাম!
পলাশপুরের ছেলেটি এই প্রথম মেয়েটিকে দেখল
একটি মেয়ের চলে যাওয়া দেখল।
পলাশপুরে কি বৃষ্টি এসেছে ?
কতদিন বকফুল ভাজা খাই নি।
স্টিরিওতে বেজে উঠল গমগমে জ্যাজ, আফ্রিকান ড্রাম
পাশের বাড়ি থেকে চার জন নর্থ স্টার এসে দাঁড়াল
অন্ধকার করে শুরু হল নাচ
এবার সবাইকে নগ্ন হতে হতে, পলাশপুর, পলাশপুর
কাম অন, আমি, আমি, টাচ মি হিয়ার !
অন্ধকারে একটা চাপা কান্না শোনা গেল।
সুইচ অন করতেই কেঁদে উঠল কবিতা
অক্ষরের সাথে বেঁকে বসা অনুসন্ধিৎসা
মাকে চিঠি লিখলাম। শ্রীচরণেষু মা…
আমার খাতার ভিতর সুবোধ সরকারের কবিতা
আমি, সে-রকম একটা কবিতার বই লিখবো
যেখানে প্রেম, প্রেম, আর প্রতিবাদ আসবে উঠে
আমি কোনো দোষ করিনি তো?
আমি বিহারের কথা, দামিনীর কথা, ভিয়েতনাম
সব
সব অনায়াস মুখস্থ করে নেবে, মা। আমি
রবীন্দ্রনাথের দিব্যি করে বলছি, তোমার মেয়ে ফিরোজা
আমার মৃন্ময়ী, আমার লাবণ্য
আমার সুচরিতা । মা গো, আবারও
সুইচ অন, দেয়ালে পিঠ দিয়ে
নগ্ন পলাশপুর কাঁদছে
তার পুরুষত্ব পান করছে সালোয়ার কামিজ
যেন প্রাচীন গ্রিসের কোনও ছবি।
হে চোখের জল, রজনীগন্ধা কফিন-এ
বন্দী থাকা রূপম-এর আর্ত, দামিনীর স্মরণ
এখন বদলে যাওয়া রামবাবুকে আর ভালো না লাগা
সবই লিখবো এভাবে
বিহারের মেয়েরা
উত্তরপ্রদেশের মেয়েরা
রান্না করতে করতে কাঁদবে
আর চোখ মুছবে। আমি-ও
আজ তোমার জন্য কাঁদছিলাম মা
টাকা পাঠালাম, ঠিকমতো ওষুধ কিনে নিও
গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়
এখনো অনেক গ্রন্থ পড়া হয় নি।



