Sunday, November 8, 2020

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||
| নভেলেট |
অরিজিৎ চক্রবর্তী

ডারউইনের চিঠি ( ১০ ম পর্ব )
----" আরে তুমি! খানিক আগে তো উঠতে পারছিলে না! এখানে এলে কিভাবে? আর তোমার আক্কেল জ্ঞান কবে হবে? "

---" বাবু আইছি তো! একটু হেঁড়ে খেয়ে নিলাম। তুমি গেছিলে। হুঁস ছিল নি। ভাগনা লিয়ে এল।"

----" শুন, কাকা আসতে চাইছিল নি। আমি জোর করে লিয়ে এসেছি।"

---" ভাগনা, চুপ দে। মিথ্যা বলবি নি। তোর পুলি মেরে দিব..."

লালুকাকার কথা শুনে ভাগনা খিল খিল হেসে ফেলে। সম্মোহ হাসি চাপতে পারে না। লালুকাকার উপর সমস্ত রাগ জল হয়ে যায়। আসলে লালুকাকা একটা আজব মানুষ। ভালো মানুষ। ওর ওপর বেশিক্ষণ রেগে থাকা যায় না।

---" তোমার জন্য লিয়ে এয়েছি বাবু। বনমুরগী !"

---" বন্ধুক চালিয়ে ধরলে?"

----" তিনটা ধরেছি। আমি বলেছি একটা দিতে হবে। বাবুর জন্য লিয়ে যাব।"

----" তা ভালো করেছো। কিন্তু ওর মাংস কি এখন ঠিক আছে? নষ্ট হয়ে যাবে তো!"

----" আমি ছাড়িয়ে রেখেছি গো লবণ হলুদ মাখিয়ে। নষ্ট হবে নি। এই বুলির মা, মশলা বাটবি। মিক্সিতে করবি নি।বাটা মশলায় ভালো হবে খেতে!"

লালুকাকাকে হাতের কাছে পেয়ে সম্মোহ নিশ্চিন্ত হলো। বলল," তোমরা এদিকটা দেখ, আমি, ওঁরা কি করছে দেখে আসছি।"

নন্দিনী সেন এবং বাকিদের রুমে আলো জ্বলছে। একসঙ্গে অনেকগুলো কন্ঠ ঘরে ফেরা পাখিদের মতো কিচিরমিচির করছে। সম্মোহ এগিয়ে গেল।‌ নন্দিনী সেনের রুমের কাছে আসতেই তোয়া বলল, " দাদা আমি কি দেখতে খারাপ! আপনি নন্দিনীদিকে বাইক রাইড করালেন, জঙ্গল ঘোরালেন! এতক্ষণ সেসব গল্পই শুনছিলাম।"

----" আপনি দেখতে খারাপ হবেন কেন! আপনাকে নিয়ে আমি চন্দ্রালোকিত সফরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। আপনি কি সম্মতি দিচ্ছেন?"

সম্মোহের কথা শুনে আবার হাসির ফোয়ারা! তোয়া বলল," কোথায় নিয়ে এসেছো দিদি! এতো রসালো আবিষ্কার! সম্মোহ বাবু, রাত্রির কোলাহলে আপনাকে চাই... কবিতার অজুহাতে আপনাকে চাই... জ্যোৎস্নার বৃষ্টিতে আপনাকে চাই..."

আবার হোহো হাহা হাসি। সম্মোহ এবার একটু লজ্জা পেল। মনে মনে বলল, " ধন্যিমেয়ে!!"

কিন্তু ঘন্টাখানেক বাদে পরিবেশটা যে এতটা অস্বস্তিকর হবে সম্মোহের কল্পনার বাইরে ছিল! রাত প্রায় ১১ টা। সবাই কমবেশি তিন-চার পেগ নিয়ে ফেলেছে। ভালোই আড্ডা চলছিল। গান, ছবি আঁকা, কবিতা, নাটক। অথচ এখন খিস্তির বন্যা বইছে। কাউকেই থামানো যাচ্ছে না। মহিলারা যে নিজেদের মধ্যে এরকম বাওয়াল করতে পারে সম্মোহের জানা ছিল না। কথা হচ্ছিল সুফি মেলা নিয়ে। নন্দিনী সেন প্রতিবছর ওটা এ্যারেঞ্জ করেন। মেলার প্রসঙ্গ উঠতেই ঝগড়াটা দানা বাঁধল!

---" নন্দিনী প্লিজ, আপনি শান্ত হোন। তোয়া, শতাক্ষী প্রত্যেককেই বলছি,প্লিজ... ঝগড়া কলকাতায় গিয়ে করবেন। ছিঃ ছিঃ আপনাদের মতো শিক্ষিত লোকজন সম্পর্কে এখানকার মানুষ কি ধারণা করবেন একবার ভাবুন। অনন্ত আমার সন্মানটা রাখুন..."

----" এইসব জানোয়ারদের আপনি বোঝাতে পারবেন না সম্মোহবাবু! " নন্দিনী সেন বলল।

---" শোন নন্দিনীদি কি বলছে! আমরা জানোয়ার! প্যাকআপ, আর এক মুহূর্ত এখানে নয়!"

----" দিদি বলছিস মাগীটাকে! চল প্যাকআপ। আর এক মুহূর্ত এখানে থাকা যাবে না! সম্মোহবাবু আপনি আমাদের জন্য একটা গাড়ির ব্যবস্থা করুন। এখনই কলকাতায় ফিরবো!"

সম্মোহ কাউকেই আর শান্ত করতে পারে না। সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করে, আগামীকাল সকালে কলকাতায় ফেরার ব্যবস্থা করে দেবে। এতরাতে এই জঙ্গলে গাড়ি পাওয়া সম্ভব নয়।

----" শালা মাগী সুফি মেলা মারাচ্ছে। পোস্টার বানিয়ে স্টেজ সাজিয়ে পয়সা দেয়না। আর উনি প্রেসিডেন্ট হয়ে ফুটেজ খাবেন, মিডিয়াকে বাইট দেবেন!"

----" এইইইইই! চুপপপপ! ইতরের দল। আমি প্রেসিডেন্ট হতে চাইনি। তোরা বলেছিলি!আর ফান্ডতোলার মুরদ আছে তোদের! কত টাকা চাস, বল! এখনই নিয়ে নে।" নন্দিনী সেন উত্তেজিত হয়ে রুমের দিকে ছুটে যান। তারপর হন্তদন্ত হয়ে পার্স নিয়ে বেরিয়ে লনের সামনে এসে ওদের উদ্দ্যেশ্যে টাকা ছুঁড়তে থাকে। সম্মোহ নন্দিনী সেন কে  যতটা সম্ভব আটকাতে চেষ্টা করে। তারপর টানতে টানতে গেটের বাইরে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। ---"শান্ত হতে হবে এবার। প্লিজ! কি ছেলেমানুষী হচ্ছে এসব!"

নন্দিনী ভেউ ভেউ করে কাঁদতে থাকে। সম্মোহ নন্দিনী কে বুকের কাছে চেপে ধরে শান্ত করতে চায়।

---" লালুকাকা, এক বোতল জল দিয়ে যাও। তাড়াতাড়ি।"

সম্মোহের কথা শুনে লালুকাকা জল নিয়ে আসে। সম্মোহ নন্দিনীর চোখে মুখে জলের ছিটে দেয়। তারপর লালুকাকাকে ইশারা করে!

তখনও ভেতরে উত্তেজনা প্রবল। গালিগালাজ চলছে। এরমধ্যে বুলির মা চেচিয়ে ওঠে," হাতি হাতি,হাতি এসেছে। তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকে যান। হাতির সামনে পড়লে আর বাঁচার উপায় নেই।"

সবাই বেশ ঘাবড়ে যায়। কেউ কেউ প্রশ্ন করে," কোথায় হাতি! দেখতে পাচ্ছি নাতো! "

---" ওই যে ওই জঙ্গলের ভেতর। একদল হাতি এসেছে। তাড়াতাড়ি ঘরে যান।বিপদ হয়ে যাবে!"

হুইস্কির নেশা প্রায় কেটে গেছে। সবাই পড়িমরি করে যে যার রুমের দিকে যাচ্ছে। আর লালুকাকা বলছে," বেশি চেঁচামেচি করবেন নি। হাতি আইছে!"

--- " এই নন্দিনীদি কোথায় গেল! রুমে নেই তো! " তোয়া বলতে থাকে।

তোয়ার কথা শুনে বাকিরাও নন্দিনীর খোঁজ করে। ততক্ষণে লালুকাকা বিদ্যুতের মেন স্যুইচ অফ করে দিয়েছে। আর সেই সুযোগে সম্মোহ নন্দিনী সেন কে মুখে চাপা দিয়ে তার ঘরে নিয়ে এসেছে।

----" কথা বলবেন না। চুপচাপ থাকুন। হাতি এসেছে। ভয় নেই। আমি আছি।"

নন্দিনী সেন চুপ করে খাটের উপর বসে পড়ে। চাঁদের আলোয় নন্দিনীর কাঁচুমাচু মুখটা দেখে খুব মায়া হয়। ইচ্ছে করে একটা আলতো চুমু খেতে। সম্মোহ দেখে নন্দিনী একটা কিশোরী মেয়ের মতো ভয়ে উৎকন্ঠায় কেমন টুকটুকে ফর্সা মুখটা লাল করে বসে আছে।

---" লালুকাকা হাতিগুলো গেল!"

----" যাইনি গো! কাছেই আছে। "

----" আমাদের ঘরের কাছে?"

----" না গো, একটু দূরে।"

----" আচ্ছা, এবার আলো জ্বালিয়ে দাও!"

অন্ধকারের ভেতর থেকে আলো জ্বলে ওঠে।‌ একেবারে থমথমে পরিবেশ। শেয়াল ডাকছে। সেই সঙ্গে সমস্বরে কুকুর।

---" এবার ডিনার করে নিন।।"

---" আমার ভয় করছে!"

----" ভয় নেই। হাতির দল অনেকটাই দূরে। ওরা এদিকে আর আসবে না। আপনারা খাওয়াদাওয়া করে শুয়ে পড়ুন।"

প্রত্যেকের ঘরে দরজা লাগানো। কেউ বাইরে নেই। সম্মোহ লালুকাকাকে, রাতের খাওয়ার প্রত্যেকের রুমে পৌঁছে দিতে বলল।

এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছে। মদ্য মাতালদের থেকে বাঁচার এবং তাদেরকে ঠান্ডা করার এই উপায় লালুকাকার মাথাতেই প্রথম আসে। তবে এখানে সারাবছরের বিভিন্ন সময় হাতি দাপিয়ে বেড়ায়। তাদের নিয়ে এলাকার মানুষদের সতর্কতা ও উৎকন্ঠা দুই থাকে। ট্যুরিস্ট আসা যাওয়ার পথে বনদপ্তরের সাইনবোর্ড দেখতে পায়," হাতি চলাচলের রাস্তা, আস্তে গাড়ি চালান"! সুতরাং এলাকায় যে হাতির আনাগোনা আছে এটা তাদের জানা। গতবছর শীতের ঘটনা তমোঘ্ন সেনগুপ্ত কলকাতা থেকে দু'দিনের ছুটিতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। তারপর রাতে তুমুল ঝগড়া। কাউকেই শান্ত করা যায়। অ্যাশট্রে, কাঁচের গ্লাস ছোঁড়া থেকে কিছু বাকি নেই।লালুকাকা চেঁচিয়ে উঠলো, "হাতি  হাতি, বাবু হাতির পাল! আপনারা চেঁচাবেননি, ক্ষেপে যাবে ওরা..."

মুহূর্তে সবাই চুপ। সেনগুপ্ত বাবুর স্ত্রী ভয়ে কেঁচো। আর চেঁচামেচি নেই। শান্ত চারপাশ।এবারেও সম্মোহ একই ওষুধ প্রয়োগ করতে বলেছিল লালুকাকাকে। কারণ সম্মোহ বুঝেছিল নন্দিনী সেন- দের এই ঝগড়া থামার নয়! বরং বাড়বে। এখন হাতির আতঙ্কে সবাই গুটিয়ে গেছে। সম্মোহ ট্যুরিষ্ট এলেই কথাচ্ছলে হাতির গল্প শুনিয়ে দেয়। হাতি কিভাবে ভোরের অন্ধকারে ছাতু তুলতে আসা নেপু লোহারের বউকে মেরে ছিল! একেবারে সামনের পা দিয়ে চেপে মাথাটা থেতলে দিয়ে ছিল! কিভাবে বিটবাবুকে দৌড় করিয়েছিল! তবে এই ঘটনা গুলো মিথ্যে নয়। কিন্তু নন্দিনী সেনরা থাকাকালীন হাতি আসার ঘটনাটা একটা আস্ত ঢপের চপ্। এই চপ্ বাধ্য হয়েই লালুকাকাকে দিয়ে ভাজাতে হলো। নাহলে মাল গুলোকে থামানো যেত না! পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতো।

নন্দিনী সেনারা যে যার রুমেই ডিনার করেছে। সম্মোহ পরিস্থিতি সামলে কিছুটা নিশ্চিন্ত। এবার লালুকাকাকে সঙ্গে নিয়ে অল্পবিস্তর হুইস্কি সেবন করে ঘুমোতে যাবে। সঙ্গে পর্যাপ্ত চাট থাকার কারণে ডিনার করবে না।

মোবাইলে রিং বাজলো! সম্মোহ হ্যালো বলতেই, " আমি তোয়া বলছি, একবার আসবেন প্লিজ" কাঁদো কাঁদো কন্ঠস্বর!

---" যাচ্ছি" । সম্মোহ নিজেকে নিজেই বলল," বাঁড়া শান্তি নেই! শান্তি সেই যে কবে আন্টির বাড়ি গেল! আর ফিরল না!"

---" বলুন, কি হলো আবার!" সম্মোহ কথা শেষ করে একটু অবাক হলো! দেখলো, সবাই নন্দিনী সেনের খাটের চারপাশে বসে ভেউ ভেউ করে কাঁদছে!

---" সম্মোহ বাবু আপনি প্লিজ নন্দিনীদিকে বলুন আমাদের ক্ষমা করে দিতে!"

----" সে উনি করে দিয়েছেন! আপনারা ঘুমতে যান। আশেপাশেই হাতির দল আছে। বেশি রাত পর্যন্ত আলো জ্বালিয়ে রাখা ঠিক হবে না!"

নন্দিনী কাঁদো কাঁদো গলায় বলল," হ্যাঁ রে! তোরা ছাড়া আমার কে আছে! তোদের আমি ক্ষমা করে দিয়েছি অনেক আগেই! যা ঘুমোতে যা!"

সম্মোহ নন্দিনী সেনের দিকে তাকিয়ে বলল," আচ্ছা, গুডনাইট! কাল সকালে ব্রেকফাস্টে আপনার গান শুনবো!"

নন্দিনী প্রসন্নতার ভঙ্গিতে সম্মোহের দিকে তাকালো।যেন চাহুনির গভীরে অনেক তারা লুকিয়ে রেখেছে নন্দিনী!

লালুকাকার সঙ্গে হুইস্কি খেতে খেতে বার বার নন্দিনীর কথা মনে পড়ছিল। লালুকাকা যুদ্ধ জয়ের ভঙ্গিতে বলে উঠল," পুলি মেরে দিছি বাবু! মাতাল গুলার পুলি মেরে দিছি।"

সম্মোহ হেসে ফেলল। নেশার ভেতর নন্দিনীর পারফিউমের গন্ধটা নাকে এল। লাস্ট পেগটা নিয়ে সম্মোহ লালু কাকাকে বলল," অনেক রাত হলো, এবার শুয়ে পড়।"

একটা সিগারেট ধরালো। ধীর পায়ে নন্দিনী সেনের ঘরের দিকে এগিয়ে চললো। নন্দিনী কি ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘরের কাছাকাছি পৌঁছে দেখল ভেতরের বড় আলো গুলো নেভানো। নাইট ল্যাম্পের ক্ষীণ আলো জ্বলছে।

Friday, November 6, 2020

||বিশেষ সংখ্যা ≈ মোনালিসা চট্টোপাধ্যায় ||

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||
মোনালিসা চট্টোপাধ্যায়

পরিচিতি: মোনালিসা চট্টোপাধ্যায়,জন্ম সেপেটম্বর ১৯৭৫,১০৮/৫৯ ওল্ড ক্যালকাটা রোড ,বারাকপুর ,কলকাতা ১২৩.শিক্ষাগত যোগ্যতা এম কম বিএড.কবিতার বই ১৩ টি ,উপন্যাস  ,ছোটদের বই টি ,গল্প সংকলন টি,এবং উপন্যাস এর জন্য পেয়েছেন দুটি পুরস্কার সাহিত্য একাদেমি থেকে কবিতা পড়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন অল ইন্ডিয়া রাইটার্স মিট কোচিতে দিল্লিতে কবিতা পড়েছেন সাহিত্য একাদেমির আমন্ত্রণে ,এছাড়া বাণিজ্যিক অবাণিজ্যিক পত্রপত্রিকায় আজ দু-দশক ধরে লিখ চলেছেন কবিতার জন্য এবং উপন্যাস এর জন্য পেয়েছেন নানাবিধ পুরস্কার দূরদরশনে কবিতা পড়েছেন ২০০৯ আকাশবাণীতে এবং সরকারী বেসরকারী অনুষ্ঠানে নিয়মিত ডাক পান কবিতা পড়তে পত্রিকা স্বয়মাগতা সম্পাদনা করছেন সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত আছেন লেখালেখির পাশে গানবাজনা করেন রবীন্দ্র ভারতী থেকে সঙ্গীতে মাস্টার্স করেছেন ছবি আঁকা বই পড়া গান শোনা নেশা

 


সিরিজ~ঈশ্বরজন্ম 

তাকিয়েছি  যেই নেই --- কোনো ভুল সাড়া থেকে কোনো ভালোবাসা জন্ম নেয় না , যা আমার  শ্বাস 

ভরানো শব্দ তাকে নিজের মতন ঘন ঘন পোশাক বদল করতে বলো না ।

অক্ষমকে  রূপ দেয় যে সক্ষম তাকে ভগবান বলি ।প্রতিটি জীবন এক এক মোড়কের আচ্ছাদনে ।আমি ভাসমান যে বায়ূস্তরে তুমি নও 

তুমি ভাসমান যে স্তরে আমি নও

তুমি সেই ভগবান যে আমি আমাতে  শুধু বহমান ।

যে জীবন বোধের কথা বলতে শেখেনি তাকে সূর্যোদয় দেখাতে চাই না ।বরং যে জীবন বোধের তার সঙ্গে সৃষ্টির সূচনা শুরু হোক ।

যে পথ আমায় নিয়ে কমললতাকে ছুঁতে  চায় , পেতে চায় বিষবৃক্ষ , সেই পথের অপেক্ষা ,  সারাদিন গাছের মাথায় আজ হাওয়ার শনশন আমি ঝাঁপ কাটি অজানাকে ছুঁতে যদি নতুন লেখাটি লিখি তার নড়চড়া প্রাণের অধিক ।

 বস্তুগত স্বরে সাড়া নেই সমস্ত সাড়ার শব্দে বস্তু প্রাণ পায় একথা কথার কথা নয় ।

 তাকে দেখার চেয়েও অধিক দেখেছি বহু

তাকে পাবার চেয়েও অধিক পাওয়া হয়ে গেছে

তাকে খোঁজ বলি যদি সে নিজের খোঁজের অধিক ।

 এতসব পরে বলো সে কি আমার ঈশ্বর নয় ! 

( ২ )

 ধর্ম নেই তার,  অথচ ধর্মের কত ব্রতকথা ! 

বয়স বাড়েনি কোনো, বিকেলেই যে সব ফুলেরা জন্ম নেয় , তারা সন্ধ্যাবাতি নয় জেনো ।

 কোনো এক ছেলেমানুষি অবাক টানে !  

অলীক মানুষ হাসে ;  যার ঘোরে দিনরাত্রি ডিঙিয়েই ঘট পেতেছি জলের ।

নিয়ম মানি নি  কোনো , ছায়ার নিয়মাধীন ছায়া।  

 

ভেবে দেখো তবে ধর্মের কাহিনী শুনছি না বলে চোর ভেবো না কখনো ।

যে সম্পর্ক  বোধের অস্তিত্ব তাকে বই বলি ।

সব বই মানুষের জন্য নয় , কিছু ভূত ও শয়তান লাফালাফি করে ভগবান হতে চায় ।

 যে আলো অন্ধকারের জন্য দূরগামী,  তার দূরত্ব  

আস্তিক নাস্তিকে নেই  ; দূরত্ব মোটেই  নয় 

জীবন যেমন চলে চলুক আমিও যুক্তিবাদী।

মুখ ভাসে আর ডোবে বলো তবে কার ? কার কার ? 

 স্বচ্ছ প্রাণ --------- 

সৃষ্টি যার স্থিত হয় নি ----কেবল সেই ভগবান ।

বহু বহু রূপ জন্ম নেয় টলিপাড়ায়,  নির্মান নিপুন  অতি , 

তাই অভিনয়ের বিজ্ঞাপন হয়  অভিনয় দেখিয়েই । অতি তুচ্ছ আমি প্রসাধনী ধূপ জ্বালি সুগন্ধি ফুলেল 

 হাওয়ায় আমি নিরালায় সকলের অলক্ষেই  হাসি।  

 কেন শোনো অট্টহাস্য ! দোষ গুণ ভুলে ঘ্রাণ রেখে যাচ্ছ  ল্যাম্পপোস্টে  জ্যোৎস্নায়  -----

 ব্রতকথা  শেষ হলে ভগবান ঘুমিয়েই পড়ে ।

উপবাস ভঙ্গ হলে সময়কে পাহারা দেয় অন্য আরেক সময় ,তুমি ভিজে যাও  নিতান্ত বৃষ্টিতে , 

জ্বর আসে খুব জ্বরের উত্তাপ নেই , জেগে আছে ঘোর ।

 ফুল ফোটে  পরিচ্ছদে , দেশীয় ভাষায় তুমি বার বার জেগে ওঠো শুদ্ধাচারে  আচমন করে করে ।

  তোমাতে স্বর্গীয় সুখ  মনে করি , 

যে আমার ভালো মন্দ কিছু না জেনেই ভালবাসে,  আমি  তার ভগবান সেও আমারই ভগবান ! 

পারস্পরিক শ্রদ্ধায় বেঁচে থাকি এসো ।

 

( ৩ )

 মনোযোগ সমর্পন করি ; নিজের নিঃস্ব এক নিয়তি আমার দেহ ও চিত্তে ।

যেভাবে বিষয় জুড়ে জুড়ে ভগবানের নিকট যাই ঠিক সেইভাবে ফিরে আসি , শর্তটি নিতান্ত জড় ও চেতন জুড়ে ! 

প্রকৃতি প্রলয় যেন তুমি,  সেইরূপে আমিও যেমন , তুমি তেমনই ,;  আকাশে বাতাস দ্রুত  চলাচল করে আমি সৃষ্টি রাখি পাপ পুণ্যে ।

মোহশূন্য একেবারে নয় তবে যে তোমাকে আমি আর আমাকে পাবে না তুমি ---- কেউ রাজা প্রজা নই তবু যা কিছু সবই কত অপরূপ সমর্পন ।

 উপাসনার গভীরে যেন প্রেম  কত অনায়াস বর্ষা আনে, কত কান্নায় ভাসাই বুক , 

যে বাতাস  আমায় জীবন দেয়   আমি তারই প্রতিমা।

  আপন শ্রীমুখে তাই অতঃপর প্রেম ও প্রণয় ।

( ৪ ) 

 মৃত দেবতা ভাসিয়ে দিই জলে, জলে জল মগ্নদেবতায় জাগে ঐশ্বরিক রাজসুখ ।

 চাষযোগ্য জমিতে ফসল দিয়ে বলি অনুষ্ঠান ।

 আলস্য জানে না তেজ মত্ত মায়া ---- ফুল ছুঁড়ে

 যে অঞ্জলি মহাশূন্যের সূচনা করে সেখানে ঈশ্বর আছে কিম্বা নেই তর্ক নয় --- এই কর্ম সাহসের জীবনের ; ।

বিশ্বাস মনেই জন্ম নেয় আবার মনেই ভাঙে এই ভাঙাগড়া পরিধান করে আত্মা আত্মরূপে বারবার, 

খেলা শেষ মাঠে তুমিও আচ্ছন্ন উপস্থিত হতে পারো, আমি মাঠ কিম্বা খেলা সৃষ্টি করি তবে ! 

 জোড় ও বিজোড়ে অন্ধ সংখ্যায় কে তুমি কে আমি !  তাই পাঠ যদি পুজো হয় ; পূজাপাঠ দখলদারির।

 জমির ঘনত্বে কর্ম  মাপি,  মোহময়ী আলো ছুটে আসে গান নিয়ে দেহে।

 যখন  তোমার তুমি আমার আমিকে চিনে নিতে পারবে সেদিনই একে অপরের ভগবান  হবো , দুজনেই নিজ নিজ শঙ্খ বাজাব সম্ভাব্য সুখে ।

 

( ৫  )

 ভক্ত ও ভগবান দুজনেরই জন্ম হল এইমাত্র ।

 জন্ম দেখতে দেখতে সেই পূর্বরাগ।

 আচম্বিতে তিথিডোর ,   অপরাহ্নে চিন্ময়ী মৃন্ময়ী রূপ নিলে কাকঠোকরার কাঠুরে কথা বদলে ফেলে আহ্লাদিনী।

যে মনন অগোচরেই দর্শিত তার সাক্ষাতে কাতর কৃষ্ণ , জীবন জীবিত মানি ------এ শুধু গল্প নয় ।

 সান্নিধ্যে আরোগ্য লাভ;  যদি সবটুকু নিয়ে নিও

থেকে যাবে নিবিষ্ট সময় কাল ।

নবরত্ন ছুঁলে জানি শুদ্ধ হয় দেহ , 

রাধার নুপূরে কেকা আর কে কার নুপূরে বাজায় রিনিরিনি ----শান্ত মিহি সুরে দোতারা তুমিও 

 জীবন যেখানে থমকে যায় ঠিক সেইখান থেকেই আবার চলা,সোজা তরল টানের লম্বকোণ যেন ।

  টিলায় আটকে যাওয়া ঝর্ণা তুই অপরাজিতার ।

  

 (৬ )

 তুমি জানো আমি ভিড়ে নেই ।

নিশ্চুপ আরোগ্য এলে তোমাকে আমার হতে হবে একথা কখনো বলব না আমি , বরং একদিন আকাশের ছাদে বৃষ্টিশিলায় আনন্দ থৈ থৈ রবে যোগিয়া গাইব ।

 নিরুপায় ভ্রমণের গতি তুমি , তোমাকে চেনাবো সেই অচিনপুরের কোনো ডাকহরকরা যার

 ঝুলিতে আমার ভগ্ন হৃদপিন্ড ।

 কাছে পিঠে পুজোপাঠ হলে কাঁসরের ঝমঝম শব্দে ভরি কাঁখের কলস , নীল যমুনার জলে ডুব দিয়ে দেখি বাঁশিটি কেবল বাজে,  কোনো রং নম্বর নয় 

সে রং ভুলের ভুলে ঠিক এবং সঠিক বেহাগ ।

 বেহায়া বাঁশিটি সেই সুর তুলে গায় পল্লবিনী রাধা ওগো কতকাল ডাকবো তোমায় ।

ভরা জলাধারের ছায়াটি দুলে ওঠে চশমায় ।

চেয়ে আছি নদীর মতোই 

চেয়ে আছি মেঘ পালকের দেশ 

চেয়ে আছি আজন্ম জন্মের জন্মে ।

 

নিশ্চিত অপেক্ষা জুড়ে কথা নাও , কথার সদরে বসে কথামালা আমি মেঘমালা টপকিয়ে পৌঁছে যাই ,   যেখানে মুরলী বাজে রাধে রাধে বলে ।

 (৭ )

 ফুল তোকে শিখিয়ে দিয়েছি জন্ম তোর পৃথিবীতে , তুই ঈশ্বর পাহারা দিবি বলেছি কখনো ! 

অদৃশ্য দিশায় যত হামাগুড়ি দেয় দিক , একদিন জেনে যাবে কোলাহল নৈর্ব্যক্তিক  ।

 অনন্ত মহিমা নিয়ে আমিও  ঈশ্বর দেখি ।

 অনিচ্ছায় কিছু নেই -----

 ইচ্ছেতে স্বাধীন যার অর্থ তুমি না বললেও বুঝি , শেষ বলে কিছু নেই ।

 আমাকে লিখতে দিও শালপাতায় উড়াল , 

আমাকে বলতে দিও --- গাছের ভিতর ছায়া , 

যে ফুলে তুমিও পাও সুখ , খুঁজে নিও

সব কথা অপেক্ষার নয় 

সব বলা অপেক্ষা অধিক

ঠিক তেমনি শব্দের চলাচলে শব্দ জন্ম নিলে আমি অনন্তের অন্ত পাই না ।

নিদ্রা নেই ---

 অনন্ত অসীম তুমি , 

 যা পারো তেমনি সৃষ্টি করো , কিন্তু মনে রেখো

সকলের জন্য সব কাজ নয় আর সকলকে মিলনের মালা গাঁথতে বলো না ।

এজীবন শুকনো ডালপালা নিয়ে পাথরের নড়াচড়া  দেখে , জাগ্রত দেবীর জন্য কোনো  ভগবান সৃষ্টি হয়নি এ যুগে , ভগবানের নৈকট্যেই দেখো রঙ্গশালা, যুদ্ধের দামামা মৃত্যুভয় এসব উপেক্ষা করে স্বর্গোদ্যানে রোজ ফুল ফোটে ।

 ফুল কি ঈশ্বর ? 

ঈশ্বর কি ফুল ? 

 

(৮ )

 দর্শন করার সাধ আমার কখনো নেই , স্নানসারা এলোচুল;   হাওয়া থেমে গেছে , আমার এ মুখ সরে গেছে তাই আপাতত চুপ ! ঈশ্বরের দেহহীন মন জীবন্ত ফসিল !  তাই আমিই ঈশ্বর হয়ে খুঁজছি অতল ! 

 রহস্য কোথায় শেষ আর কোথায় কতটা শুরু , প্রশ্ন নয় ,এখানেই ছিল শান্ত করতল ।

তখন সেসব প্রশ্ন ছিল মিলনের ডাক ! আজ ভাঙা মেঘে উচ্চারণ স্পষ্ট নয় , তাই মেঘে মেঘে বৃষ্টি এলে আর চমকে উঠি না আমি ।

 ঘুম ভেঙে গেলে শূন্য দশমিকে হাত রাখি , 

ধাতুর ঈশ্বর ঠিক যতদূর ,ততদূর আমিও মনকে রাখি মনে , যে জন্ম আমাকে ইচ্ছে দেয় সেই জন্মে জন্মেছি নিজের মত বারবার ।

 যার যতটুকু চাওয়া পাওয়া সে ততটুকু পাবে

চাইলেই সব পাওয়া যায় না ।

   ঈশ্বরের কলম  আমিও তাই শুকতারা লিখি মনে মনে ; যে হাতে সম্ভব ছিল আজ সব অসম্ভব ।

 এই সৃষ্টিতে  জীবন আমার,  তাই অন্য কোনো  জীবন্ত ঈশ্বর নেই ।

 

( ৯) 

 মর্ত্যভুবনে  তুমি যে আজ  ক্লান্ত , আমিও অপার মুগ্ধ হয়ে দৃশ্যলোকে নাটক রহস্যে  গভীরতা অনুভব করি -----দ্রুত শিহরণ ! 

 তবে কি নির্দিষ্ট ছিল সন্ধ্যা  সুদূরে স্বাধীন নিজ সিদ্ধিলাভ । 

ঈশ্বর বলেছ মানি,  আমি ঈশ্বরের শাস্ত্রবিধি মেনে   মনোনীত যেমন বিখ্যাত হয় --------

সন্ধানে বেরিয়ে পড়ো আমার জন্যেই ! 

 বিকেল গড়ায় , গাড়ি বাড়ি আলো জল, 

 বৃষ্টি আজ  বিকশিত,  সেকথা অগ্রাহ্য করে 

তবু যে সমস্ত তুমি আমারই হয়ে প্রশ্ন করো"------- ভালোবাসবে তো ? " 

 আমি প্রশ্ন এড়িয়ে তরঙ্গ -----

সে শুধু নিশঃব্দগামী ছায়া , সে রহস্য গভীর ।

 উপেক্ষা করেছি রক্ত কত ! কেন মহাকাশে

 সৃষ্টি হয় প্রণয় লক্ষণ --- তাকে ভালোবেসে 

এলে তুমি এত পথ ! নাট্যকারের সংলাপ নয় --- আশ্চর্য ক্যামেরা তাক করে তুমি ঈশ্বরের মুখ ছোঁও ।

 আজ  পথ  শুধু স্বাধীনের , 

আজ শুধু আকাশ বিস্তারে , 

আজ শুধু বহুদূর দিগন্ত সাজায় ।

 ঈশ্বর আমি না তুমি ? তুমি খোঁজো  আমার অন্য এক মন , দুজনে দুজন আছি কী গভীর অনুরাগে !  সৃষ্টি জুড়ে যেমন মায়াবী টান তেমনই পিপাসিত সৃষ্টির কামনা এই একমাত্র পৃথিবীতে

 কত আলো রৌদ্র গানে আমরাই নিয়ন্ত্রিত ।

  

( ১০)  

এস্কিমোর শীলমাছ ধরার মধ্যে যে মনোযোগ থাকে তা ঈশ্বর , আর আমি ? 

লিখিত জন্মের কেউ ।

 ঈশ্বরের ছোটবেলা বড়বেলা নেই ।

সাবালক নন তিনি !    প্রাণের প্রতিষ্ঠা পায় প্রাণ ! 

প্রতিটি  জন্মের জন্য  প্রাণ টি তখন 

ভালবাসা দাবি করে , জীবন --সৃষ্টির জন্ম হয় ।

হৃদস্পন্দনের সঙ্গে যুক্ত  বিশ্বাসী মানুষ , যত সূক্ষ নৈপুন্য অর্জন করে ঈশ্বর তা টের পায় কিনা জানিনা , জানার সব প্রয়োজন নেই ।

জানা ও অজানা তার ধারাবাহিক ধ্বণির ছন্দ তাল লয়ে----  ইন্দ্রিয় তারই উচ্চারণ ! 

যে সৃষ্টিতে  অসামান্য তুমি সেই সৃষ্টিতেই চেতনার জন্ম ! যে শ্রম যন্ত্রকে ব্যবহার করে তার হুঁশিয়ারী মোহন বাঁশিটি যেন অনুভবে অবিরত ।

 হোম একটি মনোনিবেশ তার ব্যক্তিত্বে অস্থির সব হলেও ঈশ্বর হাসে মনে মনে , মূর্তি ছেড়ে শিল্পী যেমন শ্রমের দিকে তাকিয়ে থাকে , ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু নামে গাল বেয়ে , দেবী তার অতুলন নিঃসীম 

 মাটির থালায় ভেসে যায় শীতল প্রদীপ , সারা গায়ে মেখে নিই অগুরু আতর , চিহ্ন চরণ নীলাভ আলো -----

 মানুষের মুখ আমি গড়ি ভাঙি 

মানুষের  মুঠিভরা ছিরিছাঁদে 

 পুজো পাই বার বার ! 

 জন্ম থেকে যায় কাদামাটিজলে 

ধ্যানস্থ দেহটি জেগে বসে সারারাত ।

ঈশ্বর এসবে নেই কোথাও কি ছিল কোনোদিন ? 

 

 



 



Tuesday, November 3, 2020

|| বিশেষ সংখ্যা ~ প্রভাত চৌধুরী ||

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
প্রভাত চৌধুরী



সপ্তদশ≈ সিরিজ

□ প্রথম

প্রথম থেকে নির্বাচন করলাম ' প্র ' , প্র আমাকে
পৌঁছে দিয়েছিল একটি প্রবচনে
সেই প্রবচনটি একটি পাঁচ রাস্তার জংশন
এখান থেকে একটি ট্রেন থার্ড ব্রাকেটের দিকে যাচ্ছে
আমি এখন দাঁড়িয়ে আছি ফার্স্ট ব্রাকেটে

09 .09 .2020♢ 22 : 59

□ দ্বিতীয়

আমি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় কবিতাটিতে 
কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্বকে ঢুকতে দেব না
একটা পার্শ্বিক ধ্বনি ঘোরাফেরা করবে
আমাদের অজানা নয় , আমরা পছন্দ করি
ধনধান্য থেকে পুষ্পভরা এক ভূখণ্ডকে

09 .09 . 2020 ♢23 : 12

□ তৃতীয়

তৃতীয়-র সঙ্গে চাঁদের কোনো নিবিড় সম্পর্ক আছে
কিনা জানি না , তবে তৃতীয়ার সঙ্গে আছে
পূর্ণিমা এবং অমাবস্যার পরের তৃতীয় দিন
তৃতীয়া একটি স্ত্রীবাচক শব্দ, পুংবাচক শব্দটি
দ্বিতীয় এবং চতুর্থ-র মধ্যবর্তীতে বসবাস করে

09 . 09. 2020♢ 23 : 19

□ চতুর্থ

চতুর্থজনের পকেটে কোনোদিন তুলোটকাগজে লেখা
পুঁথি-র কোনো অংশ চোখে পড়েনি
কাজেই চতুর্থজন নিয়ামক হতে পারবেন না
এটা ভেবে বসবেন না , দেখবেন এই চতুর্থজন
সন্তরণ প্রতিযোগিতার পদকজয়ী

09 . 09 . 2020 ♢ 23 :30

□ পঞ্চম

পাঁচ একটি শুভ সংখ্যা, এই সংখ্যাটি থেকেই
গঠিত হয় পঞ্চায়েত, এখানে এসেই থেমে যেতে হচ্ছে
কারণ জানানোর অধিকার আমার নেই
আগেই আমি আমার পঞ্চেন্দ্রিয় বা পাঁচটি
ইন্দ্রিয়-কে বন্ধক দিয়েছিলাম ভোটবাক্সে

10 .09 .2020 ♢ 09 : 26

□ ষষ্ঠ

তখন পালকিবাহকের সংখ্যা ছিল ছয়
পালকি বিলুপ্ত-যান রূপে স্বীকৃত হবার পর
এই ' ষষ্ঠ ' সংখ্যাটিল বড়ো বিপদ, এমন কী
শহরাঞ্চল থেকে ষষ্ঠীতলাগুলোও উঠে গেল
জন্মনিয়ন্ত্রণের ঠেলায় মা ষষ্ঠীর কৃপাও  তলানিতে

10. 09 . 2020 ♢ 09 : 36

□ সপ্তম

সপ্তম থেকে সপ্তমীতে যেতে সমর্থ হলেই
সপ্তমী-র অনেকগুলি অপসন: ব্যাকরণপথে গেলে
একটি বিভক্তির দ্যাখা পাব , যেখানে ' বাঘ আছে আমবনে ' , আর 
পুরাণপথে পাবেন সপ্তর্ষি-কে
আর আকাশপথে বিরাজ করেন সপ্তর্ষিমণ্ডল

10 . 09 . 2020 ♢ 10 : 59

□ অষ্টম

অষ্টমগর্ভের সন্তানদের সম্পর্কে বলতে শুরু করলে
অন্য বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করা হবে , 
বলা হবে না অষ্টাবক্র মুণিবরের কথা, অষ্টধাতুর গুণাবলির কথা আর 
অষ্টাদশী যে কিশোরীর সঙ্গে আমার অবসরযাপন,গর্জনতেল সহ 
তারা গর্জন করতে শুরু করবে

10 .09 .2020 ♢ 11 : 20

□ নবম

নবম-এর একদিকে বিক্রমাদিত্যর নবরত্নসভা
অন্যদিকে বটুকদার নবজীবনের গান , তাহলে তো 
মাছরাঙাপাখিদের কোনো কথা-ই জানানো যাবে না বিল্বদণ্ড বা সারস্বত কথাও, 
আসুন 
দরগা রোডের ৯ নম্বর বাড়ির কলিংবেলটি বাজানো যাক

10 . 09. 2020♢ 11: 43

□ দশম

দশচক্রে যখন ভগবান ভূত হয়ে যান , তখন
কবিরাজ-প্রদত্ত দশমূলের পাঁচন ব্যবহার করা যেতে পারে , এ বিষয়ে 
রূপকথার ডালিমকুমার কী নির্দেশ দিয়েছিলেন, জানা নেই ,
জানা আছে ত্রৈলোক্যনাথের
১০টি ভূতের কথা , ভূতের গল্পকথাও

10 . 10. 2020♢ 12 : 01

□ একাদশ

একান্নবর্তী পরিবারের সন্ধান করার আগে একটি দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সন্ধান করুন , 
মনে রাখবেন আপনি এন্ট্রান্স পাশ দিয়ে এখানে এসেছেন, আপনার নাক
' জবাকুসুম '-এর গন্ধ চিনে গেছে 
আলাদা করে প্লেয়ার লিস্টে প্রথম একাদশে আছেন কিনা 
দেখে নিন

10 . 09 . 2020 ♢ 12 : 17

□ দ্বাদশ

আমি কোনোদিন দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হইনি , হয় প্রথম একাদশে, 
নচেৎ টিমের বাইরে
অতএব দ্বাদশ ব্যক্তির ভূমিকা আমার অজানা
যেমন অজানা খোদার খাসি কিংবা ধর্মসভার অ্যাজেন্ডা , 
মৃদঙ্গ যে বাদ্যযন্ত্র এটা জেনেই বাদ্যযন্ত্র লিখেছি

10 .09. 2020 ♢ 12 : 29

□ ত্রয়োদশ

' থার্টিন ' এই বিশেষ্যটির পূর্বপদে ' আনলাকি ' বিশেষণটি কীভাবে জুড়ে গিয়েছিল 
সেগল্প আমার জানা নেই , ইংরেজরা আসার আগে 
ত্রয়োদশ একটি ধ্যানগম্ভীর শব্দ ছিল,
তার খুব কাছেই ত্রিলোক
ভাবছি বেশ কয়েকটি ত্রিপদী রচনা করব

10. 09. 2020 ♢ 21 : 04

□ চতুর্দশ

শিব-চতুর্দশীকে কেউ কেউ ভূত-চতুর্দশী বলে থাকেন
আমি কিন্তু সত্য শিব এবং সুন্দরকে একাসনে বসাই
আর চতুর্দোলায় যিনি কেদারনাথ দর্শন  করে এলেন
সেই পূণ্যের কতভাগ তিনি পাবেন তা গণিতের বিষয়
১৪ বছর বনবাসের গল্প সকলেই জানেন

10. 09. 2020♢ 12 :57

□ পঞ্চদশ

পঞ্চ + দশ = পঞ্চদশ , আর এই পঞ্চদশের
পাশাপাশি যাঁরা বসবাস করেন ,এঁদের মধ্যে যেমন বিষ্ণুশর্মা-র ' পঞ্চতন্ত্র ' আছেন , 
তেমনি পঞ্চবটীরও সন্ধান পাবেন , আর 
রোগ নিরাময়ের জন্য যাঁরা পঞ্চকর্ম করান 
তাঁদের সঙ্গে আমার দূরত্ব অনেকটাই

10 . 09. 2020 ♢ 13 : 09

□ ষষ্ঠদশ

আমরা ষষ্ঠদশ বা ষোলো সংখ্যাটিকে অনেকভাবে
যোগ করতে পারি, ৮ + ৮ = ১৬ 
আবার ১০ + ৬ = ১৬ 
যোগফল দিয়ে কিছুই প্রমাণিত নয় , বিয়োগফল দিয়েও , 
একমাত্র ষোলো আনা সম্পত্তি বাটোয়ারার

10 .09 . 2020 ♢ 13 : 15

□ সপ্তদশ 

সপ্তদশ শব্দটি চোখে এলেই দেখতে পাই
সপ্তদশ অশ্বারোহী ,বলে রাখি, 
আমার কোনো ব্যক্তিগত অশ্বশালা নেই , অশ্বারোহণেও আমি দক্ষ নই , তবু 
অশ্বারোহীদের দেখত পাই, 
অশ্বনীকুমারদ্বয়ের কথা পরবর্তী এপিসোডে

10 . 09. 2020♢14 :21




Sunday, November 1, 2020

| নভেলেট | ডারউইনের চিঠি |

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন ||
| নভেলেট |
অরিজিৎ চক্রবর্তী

ডারউইনের চিঠি~( নবম পর্ব )

লীমাকে খিস্তি দেওয়ার পরমুহুর্তেই সম্মোহের খারাপ লাগে। ভাবে বেচারা ভালো মানুষের যা হাল হয় লীমা তাই। তবু ওর প্রতি মাঝে মাঝেই বিরক্তি দানা বাঁধে।লীমার কথা ভাবতে ভাবতে সম্মোহ খানিক অন্যমনস্ক হয়ে যায়। ফেলে আসা স্মৃতিগুলো যেন প্লেব্যাকে বেজে ওঠে। তবু সম্মোহ আজ ভুলে থাকার উপায় খুঁজে নিয়েছে। এই জঙ্গল তাকে অনেক কিছু দিয়েছে। একটা নতুন জীবন দিয়েছে।

--" দাদা আপনার নামটা কে দিয়েছিল? খুব আনকমন মিষ্টি নাম!"শতাক্ষীর প্রশ্নে সম্মোহের অন্যমনস্কতা কাটলো।

---"আমার ছোটমাসি। উনি যেমন সুন্দরী তেমন আপডেট সব সময়। ছোটবেলা থেকে দেখছি। এখনো এই সত্তর বছর বয়সেও সব সময় পরিপাটি। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম সবেতেই এ্যাকটিভ।"

---" বাঃ! ওনার তারিফ করতেই হচ্ছে। আপনার লুক কথাবার্তা হাঁটাচলা সবেতেই একটা সম্মোহ দাঁড়িয়ে আছে।"

----" আপনার ওরকম মনে হচ্ছে! আসলে আমি একটা মরিচীকা! দূর থেকেই মায়াবী! কাছে এলেই খাঁ খাঁ শূন্যতা!" সম্মোহ একগাল হাসির ভেতর কথাগুলো বলে চলে।

---" এত ভালো কথা বলতে পারেন আপনি! ফলে আমাদের বলা গুলো হারিয়ে যায়.."

---" পেগটা শেষ করুন। নাকি ভালো লাগছে না? ভালো না লাগলে জোর করে খাওয়ার দরকার নেই। একটু চড়া গন্ধ আছে। সবাই নিতে পারে না।"

--- " ভালোই লাগছে। আচ্ছা ফাস্ট কাটের মাল ব্যাপারটা কি?"

---" আসলে গুড় , চালগুড়ির বাখর, মহুয়া ফল দিয়ে একটা হাঁড়িতে পাঁচ-ছ'দিন জিনিসটাকে পচানো হয়। তারপর আগুনের জালে হাড়ির ওপর হাঁড়ি রেখে প্রথম যে মদটা পাওয়া যায়, ওটাই ফাস্টকাট। বিশুদ্ধ তীব্র মহুয়া। র-খাওয়া যায় না। জল মিশিয়ে নিতে হয়।"

---" আমাদের মতো পাগলের পাল্লায় এর আগে পড়েছেন?"

----" পাগল নিয়েই তো আমার কারবার। পড়েছি পড়েছি, সেসব অনেক কাহিনী আছে! রাতে আপনাদের দুএকটা ঘটনা শেয়ার করবো। চলুন এবার লাঞ্চ করে নিন। বেলা পড়তির দিকে।"

---" হ্যাঁ ঠিক আছে, এবার লাঞ্চ দিতে বলুন।"

---" নন্দিনীদি এত তাড়া কিসের! আর একটু আড্ডা হোক!"

নন্দিনী সেন সবাই কে আদেশের সুরে বলল," না না, আগে লাঞ্চ করে রেস্ট নিয়ে নাও সবাই। রাতের জঙ্গলে আসল মজা! তখন কেলিয়ে গেলে চলবে না।আর খিদেও পাচ্ছে। সম্মোহবাবু লাঞ্চের ব্যবস্থা করুন।"

খেতে খেতে সবাই রান্নার তারিফ করলো। তারপর যে যার নির্ধারিত রূমে রেস্ট নেবার জন্য চলে গেল। সম্মোহ এই ফাঁকে নিজের খাওয়া শেষ করে আবার লালু কাকাকে খুঁজতে বেরোলো।

সন্ধে নেমে আসছে। জঙ্গল আরো ঘন হয়ে উঠছে বুনো গন্ধ আর ঝিঁঝিঁর ডাকে । না লালুকাকার খোঁজ কেউ দিতে পারছে না। আচ্ছা পাগলাচোদা লোক।বাইরের লোকজন আছে আর ও খেল দেখাচ্ছে। ডবির মুরগি ফার্মের কাছে গাড়িটা নিয়ে আসতেই কেলে সন্ধান দিলো লালুকাকার। বললো, " দুপুরে হাঁড়িয়া ভাটিতে ছিল লিটনের সঙ্গে। তারপর লিটনের বন্ধুক নিয়ে জঙ্গলে পাখি মারছিল। এখন গিয়ে দেখ আটচালায় নেশায় ঘুমোচ্ছে।"

কথাগুলো শোনা মাত্রই সম্মোহের মাথাটা রাগে ঝনঝন করে উঠলো। গাড়িতে স্টার্ট দিয়ে সোজা আটচালার দিকে এগিয়ে গেল।

শালাকে আজ রাত্রে এক ফোঁটাও মদ দেব না। খেয়ে খেয়ে আশ মেটে না। এসব লোককে আর এখানে রাখা যাবে না। বুড়ো হয়ে মরতে চললো...

---" ও লালুকাকা ওঠো, এখানে কি করছো। চলো। ঘরে চলো"

লালুকাকার কোনো হুঁশ নেই। অচেতন হয়ে ঘুমোচ্ছে। সম্মোহ এবার লালুকাকাকে ঠেলা দিল। ওঠো ওঠো।চলো।

লালুকাকা হুঁ শব্দে আবার অচেতন হয়ে রইলো।সম্মোহ বুঝলো ওর বাড়ি ফেরার মতো হুঁস নেই। তাই এখানে বেশি দেরি না করে সোজা বাড়ির দিকে রওনা দিলো।

বাড়ি ফিরে দেখলো কেউ রুম থেকে বাইরে বেরোয়নি। হয়তো তখনো ঘুমাচ্ছে। কারণ, কারো ঘরের ভেতর কোনো আলো জ্বলছে না।সম্মোহ বুলির মা'কে চা করতে বললো। এখন দিনের আলো নেই। চারপাশ ঘন অন্ধকার। রাতের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। বনফায়ার হবে। অথচ বনমুরগির জোগাড় নেই। ওটা লালুকাকার জোগাড় করার কথা। কিন্তু লালুকাকার যা অবস্থা তাতে আজ কখন যে সে স্বাভাবিক হবে কে জানে! আর একটু পরেই নন্দিনী সেনরা উঠে পড়বে। ওদের আবদার মেটানোই সম্মোহের কাজ। বলা ভালো সম্মোহের বর্তমান রুজিরুটি। এই বিষয় গুলো একদম বুঝতে চায় না লালুকাকা।

বুলির মা চা এনে দিয়েছে। চায়ে চুমুক দিতে দিতে সম্মোহ কি করবে ভেবে পাচ্ছিল না।
এমন সময় একজন মহিলা এসে বলল," সম্মোহবাবু, আমি শর্মিষ্ঠা। সবাই ঘুমোচ্ছে। আর আমার ঘুম না আসার জন্য একা একা বোর হচ্ছিলাম। দেখলাম আপনি বসে আছেন। তাই চলে এলাম।"

---" ভালো করেছেন ম্যাডাম। একটু চা বলি?"

--- "সিওর। আপনার এখানে একা থাকতে বোর ফিল হয় না! ফ্যামিলি কোথায় থাকে?"

---" মা-বাবা কলকাতায়। আর আমি এখানে। এখানকার গাছপালা মানুষজনই আমার পরিবার।"

---" বিয়ে করেননি?"

----" সে আর হয়ে উঠলো না। আপনার কথা বলুন।"

----" গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে পড়াশুনা। এখন ছবি আঁকাটাই পেশা। একটি মেয়ে। হাসবেন্ড ডাক্তার।গোলপার্কে থাকি। নন্দিনী আমার স্কুল জীবনের বন্ধু।"

----" ও! আপনি ছবি আঁকেন। খুব ভালো। আপনার ছবি দেখার ইচ্ছে থাকল।"

---" অবশ্যই। আমার একটা ওয়েবসাইট আছে। ওখানে আমার কাজগুলো আপনি দেখে নিতে পারেন। আর নতুন কোন এক্সিবিশন হলে আপনাকে নিশ্চয় জানাবো।"

----" অবশ্যই। আপনার এক্সিবিশন দেখার ইচ্ছে থাকল। ম্যাডাম স্ন্যাক্সে কি খাবেন বলুন। "

---" আপনি যা খাওয়াবেন তাই খাব। আর একটা কথা। আমাকে নাম ধরে ডাকলে খুশি হবো।"

----" মাথায় থাকলো। ধীরে ধীরে হবে। এখন ঘড়িতে সাতটা বেজে গেছে। ওদের কি ডেকে দেবেন এবার!"

----" হ্যাঁ ডেকে দেওয়াটাই ঠিক হবে। আমি ডেকে তুলছি। আপনি ওদের চায়ের ব্যবস্থা করুন।"

সম্মোহ বুলির মা'কে চা বসাতে বলল। শর্মিষ্ঠা যাওয়ার আগে একটা সিগারেট ধরালো। সম্মোহকে অফার করলো। সম্মোহ বললো," থ্যাক্স্ , এই খানিক আগেই খেলাম। আপনি খান। আমি ববং রাতের খাবারের জন্য রান্নাঘরের গাইডলাইনটা বানিয়ে দিয়ে আসি।"

---" অদ্ভুত মানুষ আপনি! এতকিছু মাথায় রাখেন কি করে!"

----" এ আর এমন কি! আপনার ছবি আঁকা কাজ। আমার আপনাদের হসপিটালিটি দেওয়াটাই কাজ।" সম্মোহ হাসতে হাসতে কথা গুলো বলে রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে গেল। রান্নাঘরে গিয়ে দেখে লালুকাকা বিড়ি টানছে।