Wednesday, October 14, 2020

≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ কার্তিক ঢক্ ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা
কার্তিক ঢক্


চিরহরিৎ ধূপ

গর্ভকেশরটি ধূপ জ্বালে
চিরহরিৎ পোশাকে নৌকোয় পাল খাটায়
শঙ্খমাধূর্যে শান্ত করে হাওয়া...

গর্ভকেশরটি এন্ড্রয়েড বোঝে না। 
রিংটোনের ব্যাতিক্র বোঝে না-
ঠোঁটের শব্দে গান গায়।

সাপটা শাড়ির মিহি আলোয় 
মদুনিতে চাঁদ ঝোলায়।
রুক্ষ সূর্যের বিগলিত জলে
আঁচলকে ছাঁকনী ক'রে জলতরঙ্গের
ধুন শোনায় --

অশান্ত বাগিচায় আগাছারাও
আজ তার কাছে পোষ্য...


≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ অরিজিৎ চক্রবর্তী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা
অরিজিৎ চক্রবর্তী


উপনিবেশের উল্টো পিঠ

বিলুপ্ত জীবের আকার ও গঠন সম্পর্কিত 
দুরাশা লাভ করার পর একটি ঘুমন্ত 
যোনির ভিতর আঙ্গুল রাখলাম 

আর ভাবলাম 
বনমানুষ থেকে মানুষের বিবর্তনের 
জ্বলন্ত প্রমাণ এভাবেই

তোমার দিকে এগিয়ে যাবে...


≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ সুলেখা সরকার ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা
সুলেখা সরকার


গদ্য~শট

২৫শে ডিসেম্বর। রাত তিনটে। খ্রিস্তভ কিয়েসলোভস্কিকে একটি প্রেমপত্র লিখবো বলে ঐতিহাসিক চিন্তাভাবনা চলছে। কখনো ঢুকে পড়ছি 'ওয়র্কর্স '৭১' -এ। কখনো 'ক্যামেরা বাফ' -এ কিন্তু চমকে উঠলাম ১৯৮৮-৮৯ -এর ভেতর। 'ডেকালগ' -এর ভেতর। একটি প্রেম, ওপাশে হত্যা। আহা, ট্যাক্সি চিৎকার করছে। লেবার ফেস্টিভেল। দেহের ঘাড়ে দেহ ঝুলছে। মাতাল বৈঠকখানা বাজার। যারা চট গায়ে ভ্যানের উপর ঘুমিয়ে পড়েছিল তারাও নড়েচড়ে নিল কিছুটা। ছাদ থেকে স্পষ্টই দেখছিলাম একটি খুশির মদ-উড়ান। 
 আচ্ছা, এটা কোন জায়গা?  
 এটাতো কোলে মার্কেট। চেনেননি? ওই শুনুন,  কোন মাইক নয় রেডিওতে আনন্দ বাজছে। পরিপূর্ণতা দেখুন। 
 দেখছি, সব দেখছি, আপনাকেও। 
 আহা, আমাকে কেন? তৃপ্তি দেখুন। দেখুন, একটি বাহানাকে কিভাবে ভাগ করে নিতে পারে মানুষ। সারাদিন শরীর হত্যার পর কিভাবে প্রেম জেগে ওঠে মানুষের মনে। ওই দেখুন ফুটপাতে সঙ্গম করছে দুটি শরীর। এটা কোন আকস্মিকতা নয়, অপ্রাসঙ্গিকও নয়, প্রয়োজন। একটি খুনের পর খুনির মৃত্যুদণ্ড যদি হত্যার সমান না হয়ে শাস্তির সমান হয় তবে এভাবে প্রেম ও প্রয়োজন বেঁচে থাকারও যুক্তি আছে প্রচুর। 
 এইতো প্রেমপত্র লিখছিলেন, সেসব নাটকীয় মুহূর্ত ছেড়ে এখানে কেন? 
এটা আমার ছাদ। স্বাধীনতা। মতামত। রাস্তা থেকে ঘর, ঘর থেকে রাস্তা এক আবর্ত। যে আবর্তে একই চরিত্রগুলো প্রতিদিন ঘোরাফেরা করে। বাইরের লোকেরা ভাবে সমাগম। বাই দ্য ওয়ে আপনি কে? এতোরাতে বকবক করছেন একলা ছাদে। 
 আমি কে, মানে? আমি তো আপনার চারপাশ? 'ডেকালগ' সিরিজ।

≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ সঞ্জয় চক্রবর্তী ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা
সঞ্জয় চক্রবর্তী

অণুগল্প~উত্তুরে হাওয়া 

আজ সকাল থেকে ভর সন্ধে হয়ে গেল । দেবারতি বসে আছে উঠোনের একধারে, ভাঙা রোয়াকের উপর । দিন পনেরো আগেই তো শিমূল এসেছিল তার জীবনে । আজ শুধু স্মৃতিটুকু পড়ে আছে । কুসুমের বিয়ের দিন প্রথম আলাপ হয়েছিল শিমূলের সাথে । কুসুমের স্বামী অলোকের বন্ধু শিমূল । বরযাত্রীর দলে ছিল সে । কুসুমের পাশে বসে গল্প করার সময় শিমূল নিজেই এসে আলাপ করল দেবারতির সাথে । প্রথম দ্যাখাতেই এক দূরন্ত ভালোলাগায় ঋদ্ধ হয়েছিল দেবারতি । অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত কাটানোর পর, গভীর রাতে বরযাত্রীর গাড়িটি চলে যাওয়ার সময় শিমূল দু-পা এগিয়ে এসে বলেছিল তাকে --- "অনেক রাত হলো । আপনি খেতে বসবেন কখন ? আমার তো খাওয়া হয়ে গিয়েছে । ভেবেছিলাম, আপনি আর আমি একসাথে খেতে বসব । কিন্তু তা আর হলো কই ? ফিরে যাওয়ার তাড়ায় আমাকে আগেভাগেই খেতে বসতে হলো ।"

দেবারতি শুধু একটা ঝলক তাকিয়েছিল শিমূলের দিকে । তারপর মুচকি হেসে বলেছিল --- দেখেশুনে যাবেন ।

এই তাঁতের শাড়ীটা পড়েছেন বলেই হয়তো আপনার সৌন্দর্য যেন বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে । --- অকপটে বলেই শিমূল তাকিয়ে রইল দেবারতির দিকে ।

কথাটা শুনে লজ্জায় যেন মাটিতে মিশে যাচ্ছিল দেবারতি --- কী যে বলেন আপনি !

আমি যেদিন বাড়ির লোককে সাথে নিয়ে আপনার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলতে আসব, তখন কিন্তু আপনি এই শাড়ীটাই পড়বেন, কেমন ?

--- সেই যে বলে গেল শিমূল ! তারপরের দিন সকালে একটা দুঃসংবাদ দেবারতির কানে এসে ধাক্কা দিয়েছিল --- "বরযাত্রীর গাড়িটা সংকীর্ণ রাস্তার ধারে চলতে চলতে অন্ধকার একটা খাদের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে ।" --- বাকিটা আর শুনতে চায়নি সে । কান দুটোতে হাতচাপা দিয়ে রেখেছিল । কারণ শোনার মতো মানসিক জোর তার ছিল না ।

এই সন্ধেবেলায় উত্তুরে হাওয়াটা বেশ জোরে বইছে । বাতাসের সোঁ-সোঁ আওয়াজ থেকে উঠে আসা একটা ভয়ের শিহরণ খেলে যাচ্ছে দেবরতির সারা শরীরটা জুড়ে । তার শরীরের প্রতিটি রোম কাঁটার মতো যেন খাড়া হয়ে আছে ।

"দেবারতি.....দেবারতি....? আমার সাথে এসো ।" --- কে বলছে ? তার কানের কাছে এসে কে ফিসফিস করে ডাকছে ? কার গলা এটা ? এত চেনা-চেনা লাগছেই-বা কেন তার ? শিমূল নয় তো ? --- ভাবতেই ভাবতেই কোনো এক অচেনা আকর্ষণে দেবারতি উঠে দাঁড়াল । তারপর সোজাসুজি হাঁটতে লাগল সামনে দিকে । ময়ূরাক্ষী নদীটার পাড় ধরে । বেশ কিছুক্ষণ হাঁটতে হাঁটতে নৌকা বাঁধা এক ভাঙাঘাটের কাছে এসে থেমে গেল সে । হঠাৎই দেবারতি দেখতে পেল --- ঐ ঘাটের নীচেই কাদামাখা পাথরটার উপর একটা পদ্মপাতার মধ্যে ধান, দূর্বা, চন্দন, হলুদবাটা, তেল, সিঁদুর এবং শাখা-পলা সাজানো রয়েছে ।

≈ চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা ≈ অর্ণব মণ্ডল ≈

|| সাপ্তাহিক ব্ল্যাকহোল ওয়েবজিন || || ১টি মাসিক স্বতন্ত্র সাহিত্য প্রয়াস...||
চারণকবি বৈদ্যনাথ সংখ্যা
অর্ণব মণ্ডল

স্বতন্ত্র চিন্তারা

"slow down you crazy child"

তোমাকে আর থামতে বলবো না, বলবো না তারাখসার মতো এই ন্যায়বিচারের পৃথিবীতে ঝরে পরতে। ঝরে পরা আত্মারা যে এক একটি অ্যাবসার্ড, প্রতিটি অলক্ষ্যের জন্য কুড়িয়ে রাখা অবশিষ্ট সংযম। 

আসলে আভিনয় দিয়ে মেট্রোসিটি ঘিরে ফেলা যায়

কিন্তু স্নায়ুর খেলায় ফেরা যায় না। 

আমরাও তো ক্ষমতার দক্ষ মালিক, কাঁচা মাংসের নিপুণ কারিগর। ঘাম উবে যাওয়ার পরবর্তী আড়াই ঘন্টা নিশ্চুপ থেকে আমরাই তো গলা কাঁপিয়ে কবিতা পড়ি, পড়তে না পারলেও তলপেট ভিতরে টেনে, আছড়ে পড়ি। 

আদতে তোমরাই জুভেনাইল, বন্য প্রেমের জন্য ভীতু ও কাঙাল। মিথ্যে স্ল্যাং তোমাদের দিনান্তের মূলমন্ত্র।

আত্মহত্যা আমাদের রক্তে আছে, কিন্তু মহাভারত নেই। রিপাবলিকের নেটওয়ার্কে আছে, কিন্তু সারমর্ম নেই। এই যে একটা রহস্য নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে সারাক্ষণ তাতেও কি ঘোরঘুম ভাঙছে না!

ওভার ডোর্স জিনিসটাই এরকম, কেউ দেয়, তো কেউ নেয়। এই পথের বাঁকে বাঁকে নীলাভ রক্তিম ছায়া আর ময়নাতদন্তের জীর্ণ গাছ প্রশস্তি মেলে রেখেছে, সমস্ত রাত কেবল সেইসব হিসাব মিলিয়ে দ্যাখা হবে।

তোমরাও এসো ভক্তদয়, কমরেডকেও নিয়ে এসো...

দ্যাখো--নেপো কিভাবে দই মারতে মারতে অভ্যস্ত স্টার হয়ে উঠেছে! সম্পদকে মূলধন না বলা...একটা গাছ আত্মহত্যার জন্য দায়ী হতে পারে কিন্তু একটা সাড়ে তিন হাতের চেয়ে নিচু সিলিং......

কীভাবে!

শুধু উত্তর নয় প্রশ্ন করো কীভাবে! 

একশ পঁয়ত্রিশ কোটি অবালচোদা প্লিজ আর মন খারাপ নয়। মনে রেখো ঈশ্বর নামক অক্ষম অভিভাবক তোমাকে প্রশ্ন করতে শিখিয়েছে! এবং বিপ্লবী হতেও! সদুত্তর তোমার প্রাপ্য।

Slow down you crazy child

তোমাকে আর থামতে বলবো না! তবে অদৃশ্য টেলিস্কোপটা এই মায়াজন্মের দিকে স্রেফ একটিবার তাগ করো।