শিরোনামে ঝুল জমে আছে
১
ছাদ শুনলেই কার্নিশ ভেঙে পড়ার আওয়াজে কান ফেটে যায়,
ঝুলন্ত তার থেকে নেমে আসা শাড়ির
ফাঁসে আটকে গেছে টবের গন্ধরাজ,
সাবানের ফেনা মাখা শব্দেরা পিছলে পড়ে যায় টাইলসের।
আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলি,
কিছুই ভাবছিলাম না, ভাবনার বড় জ্বর
জলপটি দিয়ে ওকে ঠাণ্ডা করি আগে।
২
বৃশ্চিক রাশিতে চাঁদ প্রবেশ করলে
আমার কেমন দংশন পায়।
প্রচুর বিষ ঢেলে সান্ধ্য চাঁদকে পুড়িয়ে
দিই, কুকুর কুণ্ডলী পাকিয়ে থাকে আত্মগত রাত।
আমি আধখাওয়া নখের কোনে সূর্যোদয়ের আগ ভাগ তুলে রাখি।
৩
নির্বাসিত স্রোত, তোমার ঘুমের মধ্যে
অজানা তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বকুলের গন্ধ ভাসায়,
কিশোরী নিঝুম হাতে শব্দবন্ধ
নৌকা বানায়,
একা একা বেয়ে চলে
প্রেমিক -তরঙ্গ নির্মাণ,
ঠোঁটে তার অমৃত-রোদ।
নির্বাসিত স্রোতে
হেঁটে যায় পাথরের বুক খুঁড়ে উঠে
আসা পুঁজ -রক্ত।
জখম এক মাধুর্যের নাম।
ছুঁয়ে থাকে নির্বাসন, আনাগোনা,
স্মৃতির পলল..
নির্বাসিত স্রোত, তোমার সিঁড়ির নীচে
কেঁপে ওঠা দীর্ঘ কবিতারা কেঁদে উঠে
বলে পাতালপুরীর মুখে অশ্লীল
ব্রণের ক্ষত। ধকধকে চোখের চিৎকার ধীরে পোড়ায়
ধীরে শোক-স্বপ্ন-মায়া...
৪
চিৎ সাঁতারে দেখি
আমাকে শূন্য করে তুমি
অঞ্জলি দাও ,
অনুভূতির গায়ে বনতুলসীর ঘ্রাণ।
মাথার উপর গুমঘর;
আলুঝালু অজ্ঞান আনন্দ হয়ে
নেমে আসে বিমূর্ত শরীরে,
আমার এঁটো তোমাকে খাওয়াতে
গিয়ে দেখি চারে চন্দ্র মুড়কি বাতাসা
দুর্ভিক্ষের অভিমান ভাঙে,
উপোসী রাতে দোতারার ঘরণী আমি
গহীন রাতে বাওরে চাঁদ আর সূর্যের সঙ্গম।
৫
আমার কোনো পড়াশোনা নেই,
আমি ঘুমন্ত মুখের এক পাশ দিয়ে
ঝরে পড়া লালায় শিখেছি লোভ আর
নির্লিপ্তি।
আমি আপনাদের শেকসপিয়র পড়িনি,
দেরিদা কে জানিনা, মনে হয় সময়ের চাবিওয়ালা ছিলেন, আবছা আলোয়
মায়ের মুখের মেচেতার দাগ দেখে শিখেছি নারী মানে ইনভেস্টমেন্ট,
প্রফিটের দোর গড়ায় দাঁড়িয়ে সন্তান
কেমন ক্যাপিটাল হয়ে যায়।

1 comment:
অসাধারণ কবিতাগুচ্ছ
Post a Comment