আমি তো আছি ই-
পিঠের পেছনে শেষ চুম্বন
অগ্নির্দ্যুতির মত জীবন্ত হল আমার ফ্যাকাসে মুখ।
আমার খোঁপার গুঁজে দেয়া কাঁটা
তুমি হাসলে !
আমার লজ্জাতুর লজ্জা সাত সাগর থেকে
জল তুলে নিল,
উল্কার চোখ সূর্যমুখী আমার
আমি তো আছি ই-
দূর দরান্তের খসে পড়া নক্ষত্রগুলো
এক এক করে জড়ো হতে থাকে
আমার হৃৎপিণ্ডসাঁকো
আমি পাখির মত পথ চিনে ফিরে আসি
মুঠো ভরা শর্ষে ফুলের ঘ্রাণ নিতে।
তুমি কেন থামাও পথ বিধাতা !
আমিতো ঢাকতে চাইনা চোখ আমার
সোনায় মুড়ানো সুখ।
সবুজের সংসারে ফুল ফলের রেণুমাখা প্রজাপতি আমি
জড়িয়ে রাখ কেন হলদে শেকড় ?
আমিতো ভাসিয়ে দিয়েছি জীবনের মোহনা
আমাকে ডেক না-
আমি আর ফেরাবোনা মুখ।
হুমায়ন আজাদের ঢাকা
তোমার কাছ থেকে কিছুই নিতে পারেনি-ঢাকা
বহু দূরে নিবাস ছেড়ে এসে
শুধু মুখের রেখাগুলিই হারিয়েছি সাঁঝ বেলায় !
দাবার ছকের মত সাজানো শহরে কত মুখ
কত গল্প কত ঝলমলে ঝিলিক।
কাকতাড়ুয়ার ভয় !
ঝলসানো রোদের ভয়,শুয়রের থাবার ভয়
কাজলা দিদির মত সন্ধ্যা নামেনি আমার ভাড়াটে ঘরে।
যে স্বপ্ন দেখেছি
স্বপ্নের মত হারিয়ে গেছে থমথমে আকাশে।
এই যে আসছি বলে
জ্বলজ্বলে একটি নক্ষত্র মিলে গেছে ওই দূর পাহাড়ে।
দুখিনী হয়েছি দ্বিগুণ, জমে থাকা ডোবার মত
হেরে গেছি !
তোমার কাছ থেকে কিছুই নিতে পারেনি-ঢাকা
তোমার এলিয়ে দেয়া চুলে
রুপোর একটি কাঁটা গুঁজিয়ে দিতে পারেনি আমি,
হতে পারেনি রঙিন একটি কাঁচের মার্বেল।
হকারের কোলাহল থেকে কাকতাড়ুয়ার ভয় থেকে
নিসর্গের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি।
বৈঠক খানার ছিমছাম ঘরে ইন্টার্ভিউ নামে কুটিল রাজ্যপট ছেড়ে
আমি ঘাসফুলের পসরা সাজিয়েছি।
ফেলে দেয়া বেহালার ছেঁড়া সুতো দিয়ে দোতরা বানিয়েছি।
উদোম শরীরে গুটিগুটি পায়ে ছুটে আসবে সব ল্যাংটশিশুর দল
আনন্দে নড়ে উঠবে হেঞ্চি লতার ডগা।
তোমার কাছ থেকে কিছুই নিতে পারেনি-ঢাকা।
হলদে ঘুড়ি
জীবন যখন হৃদয়ের কথা বলে
হারিয়ে যায় সবকিছু !
যে গৃহে থাকে না ফুলের শোভা শূন্য ভেজা ভাস
সুখের দেখা মেলে না তখন।
হাতছানি দিয়ে ডাকে অরণ্যের ছোট্ট জোনাক
বন্ধ চোখে অন্ধকারে উদ্দীপ্ত ভোর।
বিপন্ন একটা ক্ষুধা দাঁড়িয়ে থাকে
ফেলে দেয়া মাংসের হাড়ে লেগে থাকে এক চিমটে রস।
কেউ ছুঁয়েও দেখেনি বাড়ন্ত ঘাসের ডগা
শরতের আকাশে প্রসন্ন স্বর্গ।
প্রতিবন্ধী একটি দিন চলে যায়
হলদে ঘুড়িটা জানে না নিশীথে
একটি দিন চলে যায়।
সময়ের আকাশে হলদে ঘড়িটা
জীবনের কাছেই তবুও কতদূরে...
উষ্ণদ্বীপ হয়ে মরুভূমি
আমি আলো ছড়িয়ে দেব শুষে নিব অন্ধকার
ক্ষুব্ধ শ্লোগানে হেঁটে যাব দুর্গম পথ
আমি চিত্রময়ি জান্নাত!
চলছে তালাস মানুষের বাস ঘাতকের কামড়ের দাগ,
কুঁড়েঘরে হৃদপিণ্ড রেখছি জীবনের কাছে প্রেম চেয়েছি ।
শেকড় খুঁজতে অরণ্য কেটেছি উষ্ণদ্বীপ হয়ে মরুভূমি ।
ঠিকানাবিহীন ধর্মশালা দেখছি বিদ্যাপীঠ
আইনের পথ মাতালের পথ অচেনা গাঁয়ের পথ।
দ্রোহ ছড়াতে জনস্রোত দেখেছি
ছায়াতল তলিয়ে নকশিকাঁথা বিছিয়ে দিয়েছি ।
জন্মাবধি পরিতেক্ত হয়েছি পরাধীনতার কবোর খুঁড়েছি ।
ছুঁয়ে দেখেছি সভ্যতা ছিন্ন করেছি কাঁটাতার
দিয়েছি অনুপ্রবেশের অধিকার ।
শতাব্দীর স্বরতন্ত্র ছিরে উষ্ণতা গিলেছি
দেখেছি ধু ধু মাঠ আমার কোন বংশধর নেই
ধূসর দূর্বাচল ।